কাল কি হবে এনিয়ে কোনো ভাবনাই ছিল না : আসাদুজ্জামান নূর

পাঁচ মিনিট তাঁর কথা শুনলেই মন ভরে যায়। সেখানে একটানা প্রায় আড়াই ঘণ্টা আপন জীবনের কথা বললেন তিনি। মহিলা সমিতি মঞ্চে বিরামহীন আড়াইঘণ্টা ফেলে আসা জীবনের কত কথাই না শোনালেন তাঁর ভক্ত ও শুভাকাঙ্খীদের। যা শুনে মন্ত্রমুগ্ধ সবাই। কখনও পিন পতন নীরবতা, আবার কখনও হাসির ফোয়ারা মেলে ধরেছেন দর্শক। শুধুমাত্র কথা শোনার অনুষ্ঠানও যে কতটা হৃদয়গ্রাহী, আনন্দমুখর হতে পারে তার প্রমান দিলেন সহজেই।
প্রিয় পাঠক, এতক্ষনে নিশ্চয়ই বুঝে ফেলেছেন কার কথা বলছি? তিনি হলেন দেশবরেন্য নাট্যজন, সবার প্রিয় অভিনেতা, রাজনীতিবিদ আসাদুজ্জামান নূর। অতি সম্প্রতি মহিলা সমিতি মঞ্চে থিয়েটার স্কুল ও থিয়েটার পত্রিকা আয়োজিত ‘এক বক্তার বৈঠক জীবন ও অভিনয়’ শীর্ষক অনিন্দ্য সুন্দর এক অনুষ্ঠানে আসাদুজ্জামান নূর ফেলে আসা জীবনের প্রিয় জানালাটা খুলে দিয়েছিলেন তার অগনিত ভক্ত ও দর্শকের জন্য। তিনি যখন জীবনের গল্পগুলো বলছিলেন তখন মনে হচ্ছিলো যেন বড় পর্দায় একের পর এক ঘটনাগুলো ঘটে চলেছে। তাঁর কথা হয়ে যাচ্ছে চলমান ছবি। যেমন শুরুতেই তিনি যখন তাঁর জন্মভ‚মির কথা বলছিলেন তখন দর্শক যেন দেখতে পারছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িকে। আসাদুজ্জামান নূর পরম মমতায় বলছিলেন সে কথাÑ আমার জন্ম পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে। কিন্তু সেখানকার কোনো স্মৃতিই আমার মনে নাই। আমার বয়স যখন মাত্র দেড় বছর তখন আমরা ভারতের জলপাইগুড়ি থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের নীলফামারীতে চলে আসি। জলপাইগুড়িকে নিয়ে একটা আবেগ এখনও কাজকরে। তবে কোনো স্মৃতি নেই। মঞ্চে নূরের পাশে বসেছিলেন থিয়েটার স্কুলের অধ্যক্ষ নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার ও থিয়েটারের সদস্য নাট্যকর্মী আপন আহসান। শ্রোতা দর্শকের মতো তারাও মন্ত্রমুগ্ধের মতো নূরের বক্তব্য শুনছিলেন।
একই স্কুলে মা প্রধান শিক্ষক বাবা তার সহকারি
আগেই বলেছি প্রিয় নাট্যব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর যখন কথা বলেন তখন তার প্রতিটি বাক্যই যেন বাস্তবে ছবি হয়ে ধরা দেয়। সেদিনের অনুষ্ঠানে শুরুতে তিনি বললেন, ছোটবেলা থেকেই ভবিষ্যতে কি হব? এনিয়ে আমার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। আগামীকাল কি করব তা কখনও ভাবিনি। দেশ বিভাগের কারনে জলপাইগুড়ি থেকে আমরা নীলফামারীতে চলে আসি। তখনকার দিনে নীলফামারী ছোট্ট একটা শহর। কুড়ি/পঁচিশ মিনিটেই শহরের এ মাথা থেকে ও মাথা ঘুরে আসা যায়। খুবই শান্ত শহর। আমার মা ছিলেন গার্লস স্কুলের হেড মিসট্রেস আর বাবা একই স্কুলের সহকারি শিক্ষক। অথচ মা গ্রাজুয়েট। বাবা মাস্টার্স ডিগ্রীধারী। বড় হয়ে কৌতুহল বশতঃ কথাটা বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তখনকার দিনে মুসলমান মেয়েরা সহজে স্কুলে পড়তে আসতে চাইত না। বাবা এই প্রসঙ্গটার প্রতি জোর দিয়ে বলেছিলেন, শোনো, এমনেিতই মুসলমান মেয়েরা স্কুলে পড়তে আসতে চায় না। তার ওপর যদি দেখে যে স্কুলের হেড মাস্টার একজন পুরুষ তাহলে তো যাও দুই একজন স্কুলে আসা যাওয়া করছে তারাও হয়তো স্কুলে আসা বন্ধ করে দিবে। তাই তোমার মাকেই হেড মিসট্রেস করা হয়েছে। যাতে মেয়েরা স্কুলে পড়াশুনার প্রতি আকৃষ্ট হয়।
মনের বয়স যখন বাড়ে না
সেদিনের অনুষ্ঠানে সত্যিকার অর্থে অন্য এক আসাদুজ্জামান নূরকে আবিস্কার করেছেন তার ভক্ত শুভাকাঙ্খীরা। কী প্রানবন্ত, হাসিখুশি দিল খোলা পরিবেশ তৈরি করেছিলেন তিনি। শুরুর দিকে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও মিডিয়ার বন্ধুদের উদ্দেশে বললেন, আজ অনেক কথা বলব… একটু এডিট করে নিও ভাই… তারপর প্রাণবন্ত হাসি ছড়িয়ে ছোটবেলার কথা তুললেন। গার্লস স্কুলের কম্পাউন্ডের ভিতরেই আমাদের বাসা ছিল। বলতে গেলে মেয়েদের মাঝেই আমি বড় হতে থাকলাম। মেয়েদের সঙ্গ আমার ভালো লাগতো এখনও ভালো লাগে (গোটা মিলনায়তন জুড়ে আনন্দ আর হাসির ফোয়ারা জেগে ওঠে) যা সত্য তা বলতে তো দোষ নাই। বয়স হয়েছে তো কি হয়েছে? মনের বয়স তো আর বাড়ে নাই। প্রসঙ্গক্রমে আসাদুজ্জামান নূর বললেন, ‘আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অনেক মেয়ে বন্ধু আমাকে বাঁচিয়েছে…. আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, বছর দুয়েক বাবা খরচ দিয়েছেন। তারপর বলা যায় আমার মেয়ে বন্ধুরাই আমাকে চালিয়েছে। তাদের কাছে আমি ঋণী। তারা এখন দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে আছে।
বাবা এবং প্রিয় শিক্ষক প্রসঙ্গ
জীবনে চলার ক্ষেত্রে কারও না কারও প্রেরনার প্রয়োজন পড়ে। বাবা-মা ছিলেন আসাদুজ্জামান নূরের প্রেরনার উৎসস্থল। বিশেষ করে বাবার কথা উল্লেখ করে বললেন, বাবা চাইতেন আমি যেন আইনজীবী হই। স্কুলের একজন শিক্ষকের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে বললেন, বলা যায় তিনি ছিলেন আমার আইডল। এক সময় পরম পুজনীয় ওই শিক্ষক এদেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। বড় বেলায় বহুবার ভারতে গিয়ে তার সাথে দেখা করে এসেছেন আসাদুজ্জামান নূর। একবার ছেলে-মেয়েদেরকেও সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলেন। প্রিয় শিক্ষকের সাথে ছেলে-মেয়েদেরকে পরিচয় করিয়ে দিতে পেরে তার খুব ভালো লেগেছে। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের কথা তুলে তিনি বললেন, শিক্ষক মানেই তো ভবিষ্যতের পথ নির্দেশক। আমার বাবা ও সেই প্রিয় শিক্ষক সত্যিকার অর্থেই আমার পথ প্রদর্শক ছিলেন।
খান শব্দটিকে চিরতরে বিদায়
অনেকেই আসাদুজ্জামান নূরের এক সময়ের পুরো নামটা বোধকরি জানেন না। এক সময় তাঁর পুরোনাম ছিল আসাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী খান। কিন্তু ১৯৫৮ সালে স্বৈরাচারী আইয়ুব খান যখন ক্ষমতা দখল করে তখন নূরের নামের শেষে খান শব্দটি বাদ দিয়ে দেন তার বাবা। সেই ইতিহাসটাই গর্বের সাথে তুলে ধরলেন সবার প্রিয় অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর। এক সময় আমার পুরো নাম ছিল আসাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী খান। আমাদের পুর্ব পুরুষেরা আফগানিস্তানের বাসিন্দা ছিলেন। এই অঞ্চলে তারা এসেছিল সৈনিক হিসেবে। এক সময় তাদেরই একটা বড় অংশ বাংলাদেশের টাঙ্গাইলে আশ্রয় নেয়। খেয়াল করলে দেখবেন টাঙ্গাইলে একটা জেনারেশনের নামের শেষে খান রয়েছে। আমার বাবার চাচাত ভাইয়েরা টাঙ্গাইলের বাসিন্দা। তো… ১৯৫৮ সালে সামরিক অভ‚্যত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী আইয়ুব খান যখন অবৈধভাবে দেশের ক্ষমতা দখল করলো তখন আমার বাবা ব্যাপারটা মেনে নিতে পারলেন না। বললেন, এই ব্যাটাতো আমাদের খান বংশের ইজ্জত মেরে দিল। কাজেই আমাদের ভাইদের নামের শেষে আর ‘খান’ শব্দটা থাকলো না। চিরতরে ‘খান’ শব্দটাকে বিদায় দেওয়া হলো। আমি আসাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী খান হয়ে গেলাম আসাদুজ্জামান নূর। নূর আমার ডাক নাম। সেটাই মূল নামের সাথে যুক্ত হয়ে গেল।
রংপুরের আনন্দময় জীবন
পড়াশুনায় মনযোগ না থাকলেও তখনকার ম্যাট্টিক পরীক্ষায় সারাদেশে ১২০জন সেরা ছাত্রের সারীতে নাম লিখিয়েছিলেন আসাদুজ্জামান নূর। এতো ভালো ফলাফল করার পরও বাবা খুশি হতে পারেননি। বিষয় ভিত্তিক নম্বর ধরে ধরে বলেছিলেন তুমি আরেকটু চেষ্টা করলে এখানে ভালো করতে পারতে। ম্যাট্টিক পাশের পর কলেজে ভর্তির ব্যাপারে তোড়জোড় শুরু হয়। নীলফামরীতেই একটি নতুন কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল সেই সময়। মেধাবী ছাত্রদের নতুন কলেজে ভর্তি করাতে পারলে সাধারন ছাত্র-ছাত্রীরাও ভর্তি হতে আগ্রহী হবে। তাই বাবার ইচ্ছায় আসাদুজ্জামান নূর নীলফামারীর সেই নতুন কলেজটিতে ভর্তি হন। কিন্তু বিশেষ এক জটিলতার কারনে তিনি আর ওই কলেজে থাকেননি। বন্ধুদের নিয়ে ভর্তি হন রংপুর কারমাইকেল কলেজে। আসাদুজ্জামান নূরের ভাষায় রংপুর কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হবার পর আমি যেন একটা নতুন সমস্যার মুখোমুখি দাঁড়ালাম। এত সুন্দর পরিবেশে লেখাপড়া করব কি করে? অনেকে হয়তো আমার কথা শুনে অবাক হচ্ছেন। ভাবছেন লোকটা বলে কি? পড়াশুনার জন্য তো সুন্দর পরিবেশ চাই। অথচ সুন্দর পরিবেশ পাওয়ার পরও বলছেন পড়াশুনা করবো কি করে? আরে ভাই সমস্যা তো এখানেই। পড়াশুনার এত সুন্দর পরিবেশ তো এর আগে পাইনি। তাই বুঝে উঠতে পারছিলাম না আমার কি করা উচিৎ। নীলফামারী থেকে সাইকেলে চড়ে রোজ কলেজের নাম করে রংপুর শহরে আসি। ক্লাশে না ঢুকে সাইকেলে চড়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াই, আড্ডা দেই আর সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখি। এটাই আমাদের দৈনন্দিদের রুটিন হয়ে যায়। রংপুরের একটি সিনেমা হলে ‘সোলওয়া সাল’ নামে একটি উর্দু সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। ছবিটির ‘হায় আপনা দিল তো আওয়ারা’ গানটি তখন সবার মুখে মুখে। ১৬ বছরের একটি মেয়ের জীবন নিয়ে ছবিটি তৈরি হয়েছে। তাই আমরা বন্ধুরা যুক্তি করে ১৬ বার ছবিটা দেখেছি।
আসাদুজ্জামান নূর বললেন, আমার রংপুরের জীবনে কোনো নাটক ছিল না। তবে সিনেমা আমাকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করেছিল। ফলে যা হবার তাই হলো উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় আমি ভালো করতে পারলাম না। তখনকার দিনে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ধাপের পরও পাস ডিভিশন নামে একটি ধাপ ছিল। ম্যাট্টিকে সারাদেশে মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া ছাত্র এইচএসসি এসে দারুনভাবে ব্যর্থ হলাম। বাবা বোধকরি খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। রংপুর থেকে আবার ফিরে এলাম নীলমারীতে। এবার যুক্ত হলাম ছাত্র রাজনীতিতে। ছাত্র ইউনিয়নে জড়িয়ে গেলাম।
অবশেষে আইন পড়তে
ঢাকায় আগমন
বাবা চাইতেন ছেলে অর্থাৎ আসাদুজ্জামান নূর বড় হয়ে একজন আইনজীবী হবেন। কিন্তু নূরের পছন্দ ছিল অন্য জায়গায়। নীলফামারীতে বসে ছায়ানটের অনুষ্ঠানের খবরা খবর পত্রিকায় পড়তেন। নানা কারনে ঢাকা শহর তাকে টানতে শুরু করে। কিন্তু বাবার ইচ্ছে নূর যেন রাজশাহীতে গিয়ে আইন বিষয়ে পড়াশুনা করেন। বাবার কথায় আইন বিষয়ে পড়তে রাজী হলেন তিনি। শুধু শর্ত দিলেন রাজশাহীতে নয়, ঢাকায় গিয়ে আইন পড়বেন। বাবা এক পর্যায়ে রাজি হয়ে গেলেন। ঢাকায় এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি হলেন আসাদুজ্জামান নূর। সেখানেই পরিচয় হয় বিভাগের জনপ্রিয় শিক্ষক প্রখ্যাত নাট্যকার নূরুল মোমেনের সাথে এবং নাটকের জগতে একটু একটু করে ঢুকতে শুরু করেন তিনি।

পত্রিকার একটি ছবি ও বাবার চিঠি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে (তখনকার দিনে নাম ছিল ইকবাল হল) থাকার সুযোগ পান আসাদুজ্জামান নূর। একদিনের ঘটনা। সকালে ঘুম থেকে উঠে হলের গোশল খানায় গিয়ে দাঁত মাজতে মাজতে গুণ গুণ করে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে গান গাইছিলেন আসাদুজ্জামান নূর। হঠাৎ একজন তার হাত খপ করে ধরে বললেন, এইতো গায়ক পেয়ে গেছি। তুমি আমার সাথে আসো… তারপর কি হলো? শুনুন নূরের জবানীতে। বাথরুমে গেলে সবাই গুণ গুণ করে গান গায়। আমিও স্বভাবসুলভ একটা গান্রে কলি আওড়াচ্ছিলাম। হঠাৎ একজন আমার ডান হাত শক্ত করে ধরে বললেন, এইযে গায়ক পেয়েগেছি। তুমি আসো আমার সাথে। লোকটি কে ছিল জানেন? মতিউর রহমান। প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। আমাদের মতি ভাই। তিনি আমার হাত ধরে রেখেছেন। আমি যতই বলি, ভাই হাত ছাড়েন। আমি তো শিল্পী না। আমি গান গাইব কি করে? তিনি ততই বুঝাতে থাকেন তোমাকে গান গাইতে হবে না। সবার সাথে গলা মিলালেই চলবে।
তখনকার দিনে ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র-ছাত্রী সংসদ ডাকসুর উদ্যোগে প্রতি বছর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। প্রতিটি ছাত্র সংগঠন প্রায় প্রতিযোগিতার মনোভাব নিয়ে ওই অনুষ্ঠানে নিজেদের কর্মী নিয়ে হাজির হতো। তো, নির্ধারিত দিনে অনুষ্ঠান মঞ্চে গিয়ে হাজির হলাম। আমি আকারে খাটো বিধায় সামনের সারীতে বসিয়ে দেওয়া হলো। গান গাইতে অসুবিধা হলো না। কোরাস তো… ঠোঁট নাড়ালেই চলে। এই অনুষ্ঠানের ছবি পরের দিন দেশের প্রায় প্রতিটি পত্রিকার প্রথম পাতায় ছাপা হল। তখনকার দিনে মর্নিং নিউজ নামে একটি পত্রিকা ছিল। আমাদের নীলফামারীর বাসায় পত্রিকাটি রাখা হতো। ওই পত্রিকায় প্রথম পাতায় আমাদের অনুষ্ঠানের ছবি অনেক বড় করে ছাপা হয়েছে। কয়েদিন পর নীলফামারী থেকে ডাক যোগে বাবার একটি চিঠি পেলাম। বাবা চিঠিতে লিখেছেনÑ দেখিলাম মঞ্চে বসিয়া গান গাইতেছ। বুঝিলাম ঢাকায় সঙ্গীতের কি দুরঅবস্থা!
আসাদুজ্জামান নূর যখন কথাগুলো বলছিলেন তখন গোটা মহিলা সমিতিন মিলনায়তনে শ্রোতা দর্শকদের মাঝে আনন্দ আর উচ্ছ¡াসের ঢেউ খেলে যায়। তারপর ঘটতে থাকে আরও আনন্দময় ও রুদ্ধর্শ্বাসপুর্ণ অনেক ঘটনা…
(পরবর্তি সংখ্যায় আরও বিস্তারিত)

  • সাক্ষাৎকার