সেই দিঘী এখন চিত্র নায়িকা!

কখনও বাবার কোলে চড়ে কখনও মায়ের কোলে চড়ে শুটিং করতে যেতো ছোট্ট মেয়েটি। মায়া ভরা মুখ। কী যে সুন্দর হাসি। হাসলেই গালে টোল পড়ে। মেয়েটি যেখানেই যায় ভক্ত পাঠকেরা ভীড় করে তাকে দেখার জন্য। ছোট্ট বয়সেই মেয়েটি তারকা হয়ে উঠেছিল। তখনই সবার ভাবনায় মেয়েটির একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে। এই মেয়ে একদিন চলচ্চিত্রের নায়িকা হবে।
বাস্তবেও তাই ঘটেছে। গ্রামীণফোনের বিজ্ঞাপনে অংশ নেওয়া সেই ছোট্ট দিঘী এখন সিনেমার নায়িকা। তবে দিঘী যে নায়িকা হবে এমনটা সবারই আশা ছিল। দিঘীর মা দোয়েল এক সময়ে আমাদের সিনেমার পর্দা কাঁপিয়েছেন। বাবা সুব্রতও সিনেমার ব্যস্ত নায়ক ছিলেন। আমাদের চলচ্চিত্রে বোধকরি দিঘীই প্রথম চিত্র নায়িকা যার বাবা-মা দুইজনই এক সময় একই অঙ্গনের নায়ক-নায়িকা ছিলেন। এ যেন রক্তের ধারা। বাবা-মায়ের দেখানো পথেই পা ফেলেছেন গুণী মেয়ে।
সেই ছোট্ট বয়সে গ্রামীণফোনের একটি বিজ্ঞাপনে অভিনয়ের মাধ্যমে মিডিয়ায় তো বটেই দেশের মানুষের মাঝেও তুমুল আলোড়ন তুলেছিল দিঘী। তারপর ছোট্ট বয়সেই কাজী হায়াৎ পরিচালিত কাবুলীওয়ালা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্র যাত্রা শুরু হয়। প্রথম চলচ্চিত্রেই শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন দিঘী। পরবর্তিতে আরও দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পীর পুরস্কার পান।
দিঘী অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো; কাবুলীওয়ালা, দাদীমা, চাচ্চু, সাজঘর, ববা আমার বাবা, এক টাকার বউ, অবুঝ শিশু, রিকসাওয়ালার ছেলে, চাচ্চু আমার চাচ্চু, দ্য স্পিড। পড়াশুনার কারনে দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর মিডিয়ায় অনুপস্থিত ছিলেন দিঘী। এই পরিকল্পনা ছিল বাবার। দিঘীর মা চিত্র নায়িকা দোয়েল জীবিত থাকা অবস্থায় দিঘীর অভিনয় সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ের দেখভাল করতেন। কিন্তু মায়ের মৃত্যুর পর বাবা সুব্রতই দিঘীর ক্ষেত্রে মা ও বাবা দুইজনেরই দায়িত্ব কাধে তুলে নেন। পরম মমতায় গড়ে তুলেছেন মেয়েকে। মূলত বাবা সুব্রতর আগ্রহেই দিঘী চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। তবে মায়ের জন্য এখনও আড়ালে চোখের পানি ফেলেন তিনি। প্রসঙ্গক্রমে বললেন, ছোটবেলায় দেখতাম আমি কোন ছবিতে অভিনয় করবো, কোন ছবিতে অভিনয় করব না তার সিদ্ধান্ত মা-ই নিতেন। মা চাইতেন আমি ডাক্তার হবো। মা বেঁচে নেই। এখন সব সিদ্ধান্ত নেন বাবা। বাবাই আমার মা, বাবাই আমার বাবা…
আমাদের চলচ্চিত্রের দুঃসময়ে দিঘী চিত্র নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেন। বাবা সুব্রত আশাবাদী দিঘী নায়িকা হিসেবে অনেক ভালো করবে। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট মানুষজনও একই মন্তব্য করলেন দিঘী প্রসঙ্গে।
আনন্দ আলোর পক্ষ থেকে অনেক শুভ কামনা থাকলো দিঘীর জন্য।
টুঙ্গীপাড়ার মিয়া ভাই ও ধামাকা নামে দুটি ছবির শুটিং শুরু করেছেন দিঘী। দুটি ছবিতেই হিরো হিসেবে তার সাথে জুটি বেধেছেন শান্ত খান। দিঘীর পুরোনাম প্রার্থনা ফারদিন দিঘী। মা দোয়েল এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্র নায়িকা। আর বাবা সুব্রতও এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক ছিলেন।

  • সাক্ষাৎকার