একজন স্বপ্নবাজ উদ্যোক্তার গল্প

মানুষ তার স্বপ্নের চেয়েও বড়। এই কথার যথার্থতা প্রমান করতে চলেছেন একজন তরুণ উদ্যোক্তা। অকৃত্রিম মায়ায় জড়িয়ে দেশের একদল সম্ভাবনাময় তরুণকে সংগঠিত করেছেন। তাদের চোখে-মুখেও অযুত সম্ভাবনার আলো। দেশকে ভালোবেসে, দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখতে চায় তারা। এজন্য বেছে নিয়েছে একটি আধুনিক নিউজ পোটার্লকে। নামটি খুবই সুন্দরÑ সিটি নিউজ ঢাকা। যুগের চাহিদা মেটাতে কনটেন্ট ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলতে চায় সিটি নিউজ ঢাকা। সেই সাথে তৈরি করতে চায় তরুণ সংবাদকর্মীদের জীবন মানের উন্নয়নও। সংবাদ হোক সত্যÑ এই শ্লোগানকে ধারণ করে সত্যের পথেই হাঁটতে বদ্ধ পরিকর সবাই।
এবার সেই তরুণ উদ্যোক্তার নামটা আপনাদেরকে বলি। গনমাধ্যম জগতের একজন নিবেদিত প্রাণ হিসেবে অনেকেই তাকে চেনেন। সৈয়দ আতিক। একজন স্বপ্নবাজ মানুষ। নীলফামারীর সম্ভ্রান্ত সৈয়দ পরিবারে তার জন্ম। এই করোনাকালে তরুণ মিডিয়া কর্মীদের অনেকের করুণ জীবন সংগ্রাম তাকে মানসিক ভাবে আহত করে। তাদের জন্য কিছু একটা করার কথা ভাবেন। ব্যক্তিগত ভাবে সাহায্য সহযোগিতা পৌছে দেন অনেকের ঠিকানায়। করোনাকালে গত ঈদটা ছিল অনেকটাই নিরানন্দ। ঘরবন্দী জীবন। শিশু-কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভেবে অনলাইনেই আয়োজন করেন প্রেরণাদায়ী এক রচনা প্রতিযোগিতার। ‘কেমন কাটলো তোমাদের ঈদ’ লিখে জানাও। প্রতিযোগিতায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অসংখ্য শিশু-কিশোর অংশ নেয়। তাদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করেন সৈয়দ আতিক। গরু কুরবানী দিয়ে কুরবানীর মাংস অনেক সংবাদকর্মীর বাসায় পৌছে দেন। অনেককে আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেন। কিন্তু এটাকে যথেষ্ট মনে হচ্ছিলো না সৈয়দ আতিকের। তরুণ সংবাদকর্মীদের ভবিষ্যৎ ভাবনাটা তাকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে। সংবাদ মাধ্যমে নতুন কিছু উদ্যোগ দরকার। যেখানে সংবাদ কর্মীদের বেতন-ভাতার নিশ্চয়তা থাকবে পাশাপাশি তৈরি হবে অযুথ সম্ভাবনার আলো। যে আলোয় দিনে দিনে আরও উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।
কথায় বলে সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে। শুধু সংসার নয় আরও বড়, মহৎ কাজে যদি থাকে রমনীর আন্তরিক অংশগ্রহণ তাহলে সেই স্বপ্ন পুরনের রাস্তাটা অনেক সহজ হয়ে যায়। সেই কাজটিই করেছেন সৈয়দ আতিকের সহধর্মিনী সৈয়দ সানজীদা আফরীন লগ্ন। একদিন তিনিই আতিককে বললেন, এককাজ করো, চলো আমরা একটা আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম গড়ে তুলি। প্রচলিত ভাবনার নিউজ পোর্টাল নয়। একেবারে নতুন ভাবনার নিউজ পোর্টাল হবে এটি। যেখানে সংবাদ কর্মীদের পেশাগত মর্যাদা গুরুত্ব পাবে। সহধর্মিনীর কথায় উৎসাহ পেলেন আতিক। করোনার মধ্যেই গুলশান এলাকায় একটি বাড়ির ফ্লাটে স্বপ্নের ভূবন খুলে দিলেন। একে একে জড়িত হতে থাকলেন সম্ভাবনাময় তরুণ সংবাদর্মীরা। সিটি নিউজ ঢাকা এখনও আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেনি। তবে এরই মধ্যে শুধু দেশে নয় গোটা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে সিটি নিউজ ঢাকার আলো ছড়িয়ে গেছে। সংবাদের পাশাপাশি সচিত্র প্রতিবেদন, খবর প্রচার করছে সিটি নিউজ ঢাকা। সম্প্রতি ঢাকার একটি হোটেলে সিটি নিউজ ঢাকার প্রতিনিধিদের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই আনন্দ আলোর সাথে কথা বলেন সিটি নিউজ ঢাকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আতিক। সাথে ছিলেন সিটি নিউজ ঢাকার উদ্যোক্তা পরিচালক সৈয়দ সানজীদা আফরীন লগ্ন এবং আনন্দ আলোর সম্পাদক রেজানুর রহমান। কথা মালার চুম্বক অংশ আনন্দ আলোর পাঠকদের জন্য পত্রস্থ করা হলো।

আনন্দ আলো: গনমাধ্যমে আমরা আপনাকে একজন নিবেদিত প্রাণ জানি। আপনার পক্ষেই একটি নতুন সংবাদ মাধ্যম গড়ে তোলা সম্ভব। কাজেই এটি কোনো নতুন সংবাদ নয়। তবে সিটি নিউজ ঢাকার স্বপ্নটা একটু অন্যরকম। বিস্তারিত বলবেন?
সৈয়দ আতিক: ধন্যবাদ আনন্দ আলোকে। প্রশ্নটা যথার্থ! এখন তো অনেক নিউজ পোর্টাল। সেখানে সিটি নিউজ ঢাকা কেন? এর উত্তরটা অনেক সহজ। যুগের চাহিদা বলে একটা কথা আছে। বর্তমান সময়ে কনটেন্ট খুবই গুরুত্বপুর্ণ ব্যাপার। সংবাদকে বলা হয় কাচামাল। তৈরি হওয়ার সাথে-সাথেই বাসি হয়ে যায়। অর্থাৎ নতুন কোনো সংবাদ সৃষ্টি হওয়া মাত্রই আগের সংবাদ গুরুত্বহীন হয়ে যায়। অনেকটা কাচা মালের মতো। বেশীক্ষণ ধরে রাখা যায় না। কারণ পচে যাওয়ার ভয় থাকে। কাজেই দ্রুত বিক্রি করার তাড়না থাকে। এক্ষেত্রে পন্যের গুণগত মানের ওপর বিক্রির সম্ভাবনা তৈরি হয়। এই বিষয়টিকেই আমরা গুরুত্ব দিতে চাই সিটি নিউজে। খবর যেন সত্য হয়। সত্য হলেই মানুষ তা বিশ্বাস করবে। এজন্য কনটেন্ট ডেভেলপ করার প্রতি আমরা জোর দিয়েছি। আমাদের মূল ভাবনা একটি কনটেন্ট ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলার। সেই লক্ষেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
আনন্দ আলো: অন্যান্য নিউজ পোর্টালের সাথে তুলনা করলে আপনাদের কি কি নতুনত্ব থাকবে?
সৈয়দ আতিক: আমরা কারও সাথে নিজেদের তুলনা করতে চাই না। সংবাদ হোক সত্য এই ভাবনায় আমরা পথ চলতে চাই। সিটি নিউজ ঢাকা সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি সচিত্র সংবাদ প্রচারও করবে। ঘটনার চলমান সচিত্র বিবরণ থাকবে আমাদের পোর্টালে। নিয়মিত সংবাদ বুলেটিন প্রচার করা হবে। আমাদের উদ্দেশ্য দুটি। এক. বস্তুনিষ্ঠ ও বিশ্বাস যোগ্য খবর প্রচারের মাধ্যমে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে গোটা বিশ্বে আরও মহিমান্বিত করে তোলা। দুই দেশের তরুণ সংবাদকর্মীদের জীবন-মানের উন্নয়ন করা। সিটি নিউজ ঢাকা হবে একটি ইন্টারেক্টিভ ডিজিটাল মিডিয়া। এখানে যারা ভিজিট করতে আসবেন তাদের জন্য থাকবে নানা আয়োজন। এই অনলাইন গনমাধ্যমে আমরা একাধারে পত্রিকা, টিভি, রেডিও, লাইভ, সিনেমা, নাটক, গল্প সব ধরনের ফ্লেবার দিতে চাই।
অ্যালাইভা নামে আমাদের একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আছে। সিটি নিউজ ঢাকাকে এর সাথে যুক্ত করা হয়েছে। আমাদের সংবাদ কর্মীরাও এর সাথে যুক্ত থাকবেন। যখনই কারও নিউজ সিটি নিউজ ঢাকার পোর্টালে আপলোড হবে তখনই নির্ধারিত সংবাদকর্মীর সম্মানীর অর্থ তার নিজস্ব অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যাবে। আমাদের আরও অনেক নতুন নতুন পরিকল্পনা আছে। যার সবটাই সংবাদ কর্মীদের স্বার্থ রক্ষা করবে।

আনন্দ আলো: সিটি নিউজ ঢাকা একাধিক ভাষায় সংবাদ প্রকাশ করবে বলে শোনা যাচ্ছিলো। এব্যাপারে কিছু বলবেন?
সৈয়দ আতিক: একটা কথা সবিশেষ গুরুত্বের সাথে বলতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শি নেতৃত্বের গুণে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলেছে। এক সময় যারা আমাদের দেশটাকে তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ বলে অনেকটা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছিল তারাও আজ বাংলাদেশের ভূয়শী প্রশংসা করছে। উন্নত দেশের কাতারে যেতে চলেছি আমরা। কাজেই এখন শুধু দেশের গন্ডিতে নয় বাংলাদেশের খবর এখন বিদেশেও বেশ জনপ্রিয়। পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষ এখন আগ্রহভরে বাংলাদেশের খবর জানতে চায়। কাজেই দেশের মুহূর্তের খবর গোটা বিশ্বে বিশ্বস্ততার সাথে তুলে ধরতে চাই। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ আমাদের মূল শক্তি। সবার আন্তরিক দোয়া ও আশির্বাদ চাই। অবশ্যই একাধিক ভাষায় সংবাদ প্রকাশের ইচ্ছা আমাদের আছে। পথ চলতে চলতে এই দিকটায় আমরা আলো ফেলবো। সংবাদ হোক সত্য। জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত হোক সত্য ও সুন্দরের আলোকমালা।
সিটি নিউজ ঢাকার যাত্রা শুভ হোক। আনন্দ আলোর পক্ষ থেকে এই শুভ কামনা।

  • সাক্ষাৎকার