Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

আমি নিজেকে পলিটিক্যাল ফিল্ম মেকার মনে করি না

অবশেষে সাদকে পাওয়া গেল যোগাযোগ মাধ্যমে। তার পাশে বসে আছেন বাঁধন। একের পর এক প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন সাদ।

প্রশ্ন: এই যে এতো প্রশংসা পাচ্ছে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। কেমন লাগছে? আপনি কেন গণমাধ্যমের মুখোমুখি হতে চান না?
সাদ: (বিনীত ভঙ্গিতে) এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার জন্য একটু ডিফিকাল্ট। আমার কাছে মনে হয় যে এটেনশন পাওয়া উচিৎ আমাদের ছবির সার্বিক বিষয়ে। পুরো টিম কষ্ট করেছে। সো… ছবিটার প্রতি এটেনশন থাকলে আমার খুউব ভালো লাগবে। আমি ইনভিজিবল থাকতেই বেশী পছন্দ করি।
প্রশ্ন: কান-এ এসে কেমন লেগেছে? এখন কেমন লাগছে?
সাদ: পারসোনালি আমি খুবই অ্যাংসাস ছিলাম। সত্যি… স্পেশাল স্ক্রিনিং পর্যন্ত। (ভেবে নিয়ে) আমরা আসলে টিমের সবাই অ্যাংসাস ছিলাম। একটা স্ট্রেচ তো ছিলোই… মানুষ কিভাবে নিবে ফিল্মটাকে। তারপর শেষে যা ঘটল এটাতো আসলে ইনক্রেটিবল… এটা যে হতে পারে, চাওয়া যাইতে পারে আমি ভাবিনি।
প্রশ্ন: সত্যজিত থেকে সাদ, কান-এ বাংলা ছবির এই যাত্রা নিয়ে কি বলবেন?
সাদ: (প্রশ্ন শুনে যার পার নাই বিনীত হয়ে বললেন) এটা আসলে… ছবি বানানোর সময় আমি এসব চিন্তাই করিনি। ফিল্মটা বানানোই আমার কাছে ইমপোটেন্ট ছিল। এখন যা হচ্ছে… আই ফিল লাকী আর কি… যখন ছবি বানিয়েছি তখন এতকিছু ভাবিনি। এখন যা হচ্ছে সেজন্য নিজেকে খুবই লাকী, খুবই গ্রেটফুল মনে করছি। আমরা স্টিল প্রসেস করছি এই ইমোশনাল রেসপন্স গুলো। বাট ফিল্মটা যখন বানাইছি তখন বেস্ট টাই দেওয়ার চেষ্টা ছিল।
প্রশ্ন: কোনো কারণে কি গল্প বদলাতে হয়েছে?
সাদ: ফিল্ম জার্নিতো একটা লং প্রসেস। আপনার কোশ্চেন আমি আসলে ঠিকমত বুঝতে পারছি না। বাট… আমি আসলে কোন ছবিটা বানাতে চাই ঐটা ফিগার করতেও কিন্তু একটা প্রসেসের মধ্যে যেতে হয়েছে। আমি আসলে কি চাই? কোন কোশ্চেন গুলোর বেইজ করতে চাই? কোনো কমপ্লেক্স ক্যারেক্টারটা নিয়ে আমি কাজ করতে চাই এটা ফিগার আউট করতেও কিন্তু একটা লং প্রসেস দরকার। আমার পক্ষে এটা ভাবা সম্ভব নয় ছবিটি বাজারে কেমন করবে? মানুষ কিভাবে রিয়্যাক্ট করবে? এভাবে ফিল্ম বানানো আমার পক্ষে পসিবল না। আমার কাছে যে স্ট্রাগল ছিল সেটা হচ্ছে যে… আমি যে ছবিটা বানাতে চাই ঐটা ফিগার আউট করা। ঐটার জন্য দুই আড়াই বছর সময় গেছে। আমাদের রহিমা নূর প্রজেক্টে বাঁধন যখন ইনভলবড হয় ওর সাথেও আমি নানা বিষয়ে ডিসকাস করা শুরু করি। পরে ধাপে ধাপে অনেক ভাবনার পর ফাইনালি যখন মনে হয়েছে যে হ্যা এখন কাজটা শুরু করা যেতে পারে তখন শুরু করি। এখানে কোনো এক্সটারনাল ইনফ্লূয়েন্স বা অন্য কোন চিন্তাভাবনা করে লেখার চেষ্টা আমি করিনি।
প্রশ্ন: ছবিতে আপনি যে কথা বলতে চেয়েছেন তা পেরেছেন বলে কি মনে হয়?
সাদ: আই হোপ সো… আমি যা চিন্তা করেছি তাই দেখিয়েছি। এখন দর্শকই সব কিছু ডিসাইড করবে। আমরা সবাই বেস্ট ট্রাই করেছি…

প্রশ্ন: রেহানা আপনার মনস্ততেরও কি প্রতিফলন?
সাদ: (ভেবে) আমি আসলে পারসোনাল এক্সপেরিয়েন্সের বাইরে লিখতে পারি না। যা লিখি তা কোনো না কোনো ফর্মে আমি অবজারভ করেছি। এক্সপেরিয়েন্স পেয়েছি অথবা দেখেছি। জানতে পেরেছি। তবে আমার চিন্ত ভাবনাই যে রেহানা মরিয়ম নূর-এর প্রতিফলিত হয়েছে আসলে ঠিক তা নয়।
প্রশ্ন: গল্প লেখার সময় দর্শকের প্রতিক্রিয়া ভেবেছেন?
সাদ: আমি যে ভাবে দেখেছি সেভাবেই রেহানাকে পোট্রেট করতে চেষ্টা করেছি। কিভাবে পোট্রেট করলে এটা অডিয়েন্সের কাছে কেমন ইমপ্যাক্ট তৈরি করবে ওইটা আমার ভাবনায় কাজ করেনি। আমি গল্পটা বলতে চেয়েছি। জীবনে তো অনেক কিছুই দেখেছি। ছোটবেলায় দেখতাম আযান দিলে মহিলারা মাথায় ঘোমটা টেনে দেয়। এই বিষয় গুলো আমার দেখা থেকেই নেওয়া।
প্রশ্ন: রেহানা ছাড়া অন্য চরিত্রকে গুরুত্ব কম দিয়েছেন বলে মনে করেন?
সাদ: আমি আসলে রেহানার চোখ দিয়ে টোটাল পৃথিবীটাকে দেখাতে চেয়েছি। ওটা করতে গিয়ে অনেকের কাছে হয়তো মনে হয়েছে রেহানাই গুরুত্ব পেয়েছে। সেটা মনে হতেই পারে। বাট আমি রেহানার চোখ দিয়ে পৃথিবীকে যতটুকু এক্সপ্লোর করা যায় সেটাই করেছি। অনেকের কাছে এটা সাকসেসফুল মনে হতে পারে। আবার অনেকের কাছে ফেইলরও মনে হতে পারে।
প্রশ্ন: এই সিনেমার গল্প কোনো বিতর্কের জন্ম দিতে পারে?
সাদ: একটা বিষয় বলে রাখা ভালো। আমি আসলে নিজেকে পলিটিক্যাল ফিল্ম মেকার মনে করি না। ডেফিনেটলি কোনো পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট দেয়ার জন্য ইনটেনশন থেকে গল্পটা লিখিনি এবং বানাইনি। আমি রেহানাকে ফলো করছিলাম। ওকে পুশ করতে গিয়ে, বিভিন্ন সিচুয়েশন ফেস করে আমার কাছে যে প্রশ্ন গুলো এড্রেস করা দরকার মনে হয়েছে তাই করেছি। আপনারা দেখেছেন ছবিটা কোনো উত্তর দিকে শেষ হয় না। আরও অনেক প্রশ্ন রয়েছে…
প্রশ্ন: পুরো সিনেমায় নীল রঙের ছোয়া কেন?
সাদ: আমরা যখন ছবিটার কালার স্ক্রীন নিয়ে কথা বলছিলাম ডেফিনেটলি আমার অবজেকটিভ যেটা ছিল কি ধরনের কালার স্ক্রীন, কি কালার ব্যালেট করলে রিয়েলি রেহানার ইনার টাবমুলারটা আমরা ক্যাপচার করতে পারব। ওর সাপোকেশন, ওর কষ্ট, ওর অ্যাঙ্গার, ভিতরের কনফ্লিক্টগুলো কিভাবে, অনেক ক্যাশ বেকিং, অনেক ইনফরমেশন না দিয়েও ফিলিংটা অডিয়েন্সের কাছে কনভে করতে পারব। সো একটা পর্যায়ে আমাদের কাছে মনে হয়েছে নীল রঙের ছোঁয়াটা থাকাই ভালো।
প্রশ্ন: ছবিটা কেন দেখা উচিৎ?
সাদ: কেন ছবিটা দেখতে হবে, অথবা কেন দেখা উচিৎ এটা আসলে আমি বলতে পারব না। ওইটা আমার কাজও না। আমাদের কাজ ছিল বেস্ট এফরট দিয়ে ছবিটা বানানো সেটা আমরা করেছি। বাকীটা… আমি জাস্ট আশা করতে পারি, আশা করি আমাদের অডিয়েন্স আসবে, ট্রাই করবে… ছবিটাকে একটা চান্স দেবে। একটা সুযোগ দিবে এটা আমি আশা করি।
প্রশ্ন: সিনেমাটিকে নিয়ে কতদূর যাওয়ার আশা।
সাদ: আমি এই ছবিতে এখন পর্যন্ত যা পেয়েছি তা অনেক বেশি বলে মনে হয়। এখনই সব বলা সম্ভব নয়। অনেস্টলি বলি, আমি খুব দ্রুত চিটাগাংয়ে ফিরে যেতে চাই। তবে মানুষ তো পাইলে আর পাইতে চায়। এটাই সত্যি। পাইলে তো… আমরা যদি কোনো অ্যাওয়ার্ড পাই তাহলে ডেফিনেটলি অনেক ভালো লাগবে।