এখনো যে এই ধারার খবরের পিছনে পাঠক ছোটে না তা নয়। প্রিয় তারকার নতুন খবর জানার জন্য অনেকে উন্মুখ থাকে। ফলে সেই তারকার কোনো খবর জানা মাত্রই তার পিছনে ছুটতে থাকে। যেমন আমাদের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় জুটি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসকে ঘিরে এক সময় হাওয়া থেকে পাওয়া জাতীয় অনেক খবরই বেড়িয়েছিল। তারা প্রেম করেন। একসঙ্গে থাকেন। বিয়েও হয়তো করেছেন এমন খবর প্রকাশ হলেও এইসব খবরের ডালপালা কখনোই বিস্তৃত হয়নি। আমাদের চলচ্চিত্রের অন্যতম ব্যস্ত নায়িকা হঠাৎ চলচ্চিত্রের পর্দায় অভিনয় থেকে দূরে সরে গেলেন। বেশ কয়েকটি ছবির কাজ বন্ধ হয়ে গেল। এত সংকটের মাঝেও আসল ঘটনাটা কেউই জানলো না অথবা বললোও না। অবশ্য এজন্য বাংলাদেশের দুর্বল বিনোদন সাংবাদিকতাকেও দায়ী করছেন অনেকে। অপু বিশ্বাসের মতো বিপুল জনপ্রিয় নায়িকা হঠাৎ কেন চলচ্চিত্রাঙ্গন থেকে বিদায় নিলেন। এর ভেতরের রহস্য কী তা বের করার জন্য কাউকেই তৎপর হতে দেখা যায়নি….
মিডিয়ায় গরম খবর দরকার। তা নাহলে মিডিয়া নাকি সরগরম থাকে না। কে কার সঙ্গে প্রেম করছে, কে কার সঙ্গে ভেগে গেছে একটা সময় এসবই ছিল মিডিয়ায় গরম খবর। পত্রপত্রিকায় ‘হাওয়া থেকে পাওয়া’ শিরোনামে খবর ছাপা হতো। তুমুল জনপ্রিয় ছিল এইসব খবর। অনেক পাঠক পত্রিকা হাতে নিয়ে প্রথমেই হাওয়া থেকে পাওয়া খবরের সন্ধান করতেন। তারপর সপ্তাহ জুড়ে হাওয়া থেকে পাওয়া খবরই মুখরোচক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠতো। সময় পাল্টে গেছে এখন আর ‘হাওয়া থেকে পাওয়া’ খবরের পিছনে ছোটে না কেউ। ছোটার দরকারই বা কি? এখন তো আমাদের শোবিজে ‘রাখঢাক’ বলে কিছু নাই। অনেকে আগাম জানান দিয়ে প্রেম শুরু করে। আবার প্রেম ভেঙে গেলে প্রকাশ্যে তা জানিয়েও দেয়। এ কারণে ইংরেজিতে ব্রেকআপ শব্দটি এখন আমাদের চারপাশে বেশ জনপ্রিয়। অথচ একটা সময় ব্রেকআপ মানে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাবার পর মেয়ে এবং ছেলে দুজনই দেবদাস হবার দৌড় শুরু করতো। (মেয়েরা কি দেবদাস হয় নাকি শব্দটা হবে দেবদাসি) যাই হোক সময় পাল্টেছে এখন আর সত্যি সত্যি গোপন সংবাদ বলে কিছু নাই। কারও মন খারাপ। ব্যাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মনের কথা বলে দিল। তারপর এই নিয়ে শুরু হলো মন্তব্য প্রকাশের দৌড় প্রতিযোগিতা। অনেকে আবার পরিচিতি বাড়ানোর জন্য যখন যা মনে আসে তাই ফেসবুকে ছেড়ে দেয়। তার কমেন্টস-এর ওপর কতটা লাইক পড়েছে তা দেখার জন্য বিরামহীন অপেক্ষায় থাকে। যেন পুকুরে বড়শী ফেলেছে। মাছ ঠোকর দিচ্ছে কি না তা দেখার জন্য অন্তহীন অপেক্ষা।
‘হাওয়া থেকে পাওয়া’ বিষয়টি নিয়ে আরেকটু বলতে চাই। একসময় চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট তারকারাই বেশি মাত্রায় হাওয়া থেকে পাওয়া খবরের শিরোনাম হতেন। শিরোনাম দেখে মনে হতে পারে হাওয়া থেকে পাওয়া খবরের সবটাই বুঝি ভুয়া। আসলে তা নয়। হাওয়া থেকে পাওয়া অনেক খবরই প্রাথমিক পর্যায়ে ভুয়া মনে হলেও পরবর্তীতে তা সত্যি বলেই প্রমাণিত হতো। কখনো কখনো নায়ক-নায়িকাদের মধ্যে অনেকে নিজেরাই মুখরোচক খবর ছড়িয়ে দিতেন। তারপর সেই খবর নিজেই ডালপালা মেলে ধরে ছোট থেকে বড় হতো। খবরটি নিয়ে পাবলিক ডিমান্ড বেড়ে যেতো এবং এক সময় উড়ো খবরই সত্য হয়ে উঠতো। এজন্যই হাওয়া থেকে পাওয়া খবরের গুরুত্ব ছিল অনেক বেশি।
এখনো যে এই ধারার খবরের পিছনে পাঠক ছোটে না তা নয়। প্রিয় তারকার নতুন খবর জানার জন্য অনেকে উন্মুখ থাকে। ফলে সেই তারকার কোনো খবর জানা মাত্রই তার পিছনে ছুটতে থাকে। যেমন আমাদের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় জুটি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসকে ঘিরে এক সময় হাওয়া থেকে পাওয়া জাতীয় অনেক খবরই বেড়িয়েছিল। তারা প্রেম করেন। একসঙ্গে থাকেন। বিয়েও হয়তো করেছেন এমন খবর প্রকাশ হলেও এইসব খবরের ডালপালা কখনোই বিস্তৃত হয়নি। আমাদের চলচ্চিত্রের অন্যতম ব্যস্ত নায়িকা হঠাৎ চলচ্চিত্রের পর্দায় অভিনয় থেকে দূরে সরে গেলেন। বেশ কয়েকটি ছবির কাজ বন্ধ হয়ে গেল। এত সংকটের মাঝেও আসল ঘটনাটা কেউই জানলো না অথবা বললোও না। অবশ্য এজন্য বাংলাদেশের দুর্বল বিনোদন সাংবাদিকতাকেও দায়ী করছেন অনেকে। অপু বিশ্বাসের মতো বিপুল জনপ্রিয় নায়িকা হঠাৎ কেন চলচ্চিত্রাঙ্গন থেকে বিদায় নিলেন। এর ভেতরের রহস্য কী তা বের করার জন্য কাউকেই তৎপর হতে দেখা যায়নি। অপুর অনুপস্থিতির কারণে একাধিক সিনেমার কাজ বন্ধ রাখতে হলো। অর্থনৈতিক সংকটে পড়লেন একাধিক প্রযোজক। তবুও অপু রহস্য উদঘাটন হলো না।
হঠাৎ একদিন অপু নিজেই হাজির হলেন। একটি টেলিভিশন চ্যানেলের লাইভ অনুষ্ঠানে মিষ্টি চেহারার এক দেবতুল্য শিশুকে কোলে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এক খবর প্রকাশ করলেন। ব্যাপারটা ছিল মুখরোচক খবরের বোমা ফাটানোর মতো। অপু টেলিভিশন চ্যানেলের সেই লাইভ অনুষ্ঠানে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, অনেক আগেই শাকিব খানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়ে গেছে। তাদের কোলের শিশুটি শাকিবেরই সন্তান। অপু তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের তথ্য প্রকাশ করলেন। কিন্তু শাকিব খান অপুর এই ভ‚মিকার যারপর নাই ক্ষুব্ধ হয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন তিনি ছেলের দায়িত্ব নিবেন। কিন্তু অপু বিশ্বাসের দায়িত্ব নিবেন না। এ ব্যাপারে সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণাও দিয়েছিলেন তিনি। এর ফলে আমাদের শোবিজে হাওয়া থেকে পাওয়া বিষয়টিই আবার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। শাকিবের মন্তব্যকে ঘিরে নানান মুখরোচক খবর প্রকাশ হতে থাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
তবে আশার কথা বিষয়টি বেশি দূর গড়ায়নি। অপু বিশ্বাস সম্পর্কে নতুন কোনো স্পর্শকাতর কথাও তিনি আর বলেননি। যদিও শাকিব খানের সঙ্গে নতুন জুটি হিসেবে গড়ে ওঠা নায়িকা বুবলীকে ঘিরে নানা প্রকার তথ্য প্রকাশ হতে শুরু করেছিল। অনেকে মন্তব্য করছিলেন বুবলীর সঙ্গেও শাকিবের বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু এত কিছুর পরও শাকিব আর অপু বিশ্বাসের মধ্যে মনমালিন্য দূর হয়। দেবতুল্য শিশুকে কোলে নিয়ে দুজনই ছবি তোলেন। সেই ছবি আবার নতুন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। শাকিব আর অপু বিশ্বাসের কোটি কোটি ভক্ত প্রত্যাশার জাল বুনতে শুরু করে তাদের প্রিয় তারকা জুটি যেন সংসার জীবনেও সফল হয়।
কথায় আছে ঘরের ভেতর দুটি মানুষকে ঢুকিয়ে দিলেই সংসার হয় না। সংসারের জন্য পারস্পরিক শ্রদ্ধা, মায়া ও ভক্তি জরুরি। আমরা সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি দুজনের মাঝে সেই শ্রদ্ধা আর ভক্তিই যেন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।