সমতার সঙ্গে পরিবর্তনের পথে

সৈয়দ ইকবাল
আমরা প্রায়শই নারী-পুরুষের মধ্যে সমতার কথা বলি। কিন্তু কথা ও কাজের মধ্যে অনেকেরই মিল থাকে না। অথবা মিল রাখার চেষ্টাও করি না। অনেকটাই যেন বলার জন্য বলা। সভা-সমাবেশে নারী-পুরুষের মধ্যে সমতার কথা বললে বাহাবা পাওয়া যায়, হাততালিও মেলে। এজন্যও অনেকে তর্জনী উচিয়ে দীপ্ত কণ্ঠে এমনভাবে নারী-পুরুষের সমতার কথা বলি তাতে মনে হয় এই দেশে নারী-পুরুষে আর কোনো ভেদাভেদ নাই। সবাই সমানাধিকার ভোগ করছে। সবকিছুই ঝকঝকা পরিষ্কার…।
আসলে কি তাই? আমাদের দেশে নারী-পুরুষ সমান অধিকার ভোগ করছে? অনেকে হয়তো বলবেন যে, দেশে প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধী দলীয় নেতা নারী, দেশের বড় একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে রয়েছেন নারী, জাতীয় সংসদের স্পীকার নারী সেই দেশে নারী-পুরুষের সমানাধিকার নিয়ে কথা বলার কোনো যুক্তি আছে? বরং অবস্থাদৃষ্টে তো মনে হয় নেতৃত্বের দিক দিয়ে এই দেশে নারীরাই গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করছে। আসলে কি তাই? বাহ্যিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে মনে হবে নারীরা অনেক এগিয়ে গেছে। এইতো সেদিন ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ঢাকার রাস্তায় কয়েকজন মহিলা পুলিশ সার্জেন্টকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেল। রাস্তায় মোটরসাইকেল চালিয়ে স্মার্টভঙ্গিতে ঢাকার ব্যস্ত রাস্তার মোড়ে এসে নামলেন নারী পুলিশ সার্জেন্ট। শুধু পুরুষেরা নয়, নারীরাও তাকে দেখছিল আগ্রহভরে। কারণ সবার কাছে এই দৃশ্যতো নতুন? পুলিশ সার্জেন্টের মতো ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নারীর দীপ্ত পদচারণা দেখে অনেকে গাড়ি থামিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এক অর্থে নারীর অগ্রযাত্রায় এটিতো একটি আলোকিত দৃশ্য। শুধু সার্জেন্ট পদে নয় দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব পর্যায়েও নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কমিশনার পদেও নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা গেছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদেও নারীর উজ্জ্বল অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। সবই আনন্দের কথা। এত ঝলমল পরিবেশে নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্যের কথা তোলার কি কোনো যুক্তি আছে? হ্যাঁ আছে। অনেক যুক্তি আছে। আমরা অনেক ক্ষেত্রে ঘটনার পুরোটা দেখি না। সামনের অংশ দেখেই অনেকে সিদ্ধান্ত অথবা মতামত দিয়ে ফেলিÑ হ্যাঁ সবকিছু ঠিক আছে। আসলে সবকিছু ঠিক নাই।
নারী-পুরুষের মধ্যে সমতার অভাবটা আমরা দেখতে পাই মূলত পরিবার থেকে। উচ্চবিত্ত পরিবার অবশ্য এক্ষেত্রে অনেক উদার। উচ্চবিত্ত পরিবারে অর্থের অভাব নাই। সে কারণে পরিবারের সবাইকে সমঅধিকার দেয়ার ক্ষেত্রেও কার্পণ্য নাই। সমঅধিকারের সমস্যা সবচেয়ে বেশি প্রকট মধ্যবিত্ত এবং নি¤œবিত্ত পরিবারের মধ্যে। ৭ সদস্যের পরিবারে ৫টি ডিম রান্না হয়েছে। খাওয়ার সময় কে বাদ পড়লো? মা আর একমাত্র মেয়ে। কেন তারা বাদ পড়লো? বাদ পড়লো এইজন্য যে, ওরা দুজনই মেয়ে। পরিবারের পুরুষেরা বাইরে যায়, নানা কাজে জড়িত থাকে। কাজেই ডিমটা তাদেরই প্রাপ্য। অথচ একমাত্র মেয়েটিও স্কুল অথবা কলেজে যায়। পরিবারের কর্ত্রী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অমানুষিক খাটুনি খেটে পরিবারের সবার জন্য রান্না করে, থালাবাসন ধোয়, ঘরদোর পরিষ্কার করে। অথচ তার জন্য ডিম বরাদ্দ হয় না। অথবা মা নিজেই সিদ্ধান্ত নেয় তার ডিমের দরকার নেই।
নারী-পুরুষের সমতার ক্ষেত্রে ডিম বরাদ্দের এই চিত্র যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে। আমরা বরং এই চিত্রটি না দেখে অন্য চিত্রে চোখ ফেরাই। এখনো আমাদের দেশে অধিকাংশ পরিবারে নারী-পুরুষের সমঅধিকার নিশ্চিত করা হয় মূলত অর্থনৈতিক নির্ভরতা ও নিরাপত্তার ওপর। এখনো অনেক পরিবারে মেয়েটির চেয়ে ছেলেটিকে অনেক আদর যতেœ মানুষ করা হয়। কারণ কি? কারণ হলো- ছেলেটি ভবিষ্যতে পরিবারকে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিবে। কাজেই ‘ভালো কিছু’ সবই যেন তার প্রাপ্য। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে ভাবা হয়, একটু বড় হলেই তার বিয়ে হয়ে যাবে। অন্যের সংসারে চলে যাবে। কাজেই তাকে নিয়ে না ভাবলেও চলবে। অথচ একটি পরিবারের ভবিষ্যৎ সাফল্য ও সকল অর্জন নির্ভর করে নারীর সহযোগিতা ও সাফল্যের ওপর। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে যেই পরিবারে নারী সংসারের প্রতি বেশি আত্মনিবেদন করেছেন সেই পরিবারে উন্নতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। অথচ অনেক ক্ষেত্রে নারী তার যোগ্য মর্যাদা পাচ্ছে না। নারী তার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছেÑ ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের একজন নারী সমবয়সী একজন পুরুষের তুলনায় প্রায় তিনগুণ সময়, এমন কাজ করে, যা জাতীয় আয়ের হিসেবে যোগ হয় না।
একজন নারী মজুরি ছাড়া কাজে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮ ঘণ্টা এবং একই কাজে একজন পুরুষ প্রতিদিন মাত্র ২.৫ ঘণ্টা সময় খরচ করে।
একজন নারী প্রতিদিন ১২.১টি এমন কাজ করে, যা মজুরিবিহীন এবং জাতীয় আয়ের হিসেবে (জিডিপি) যোগ হয় না। পুরুষের ক্ষেত্রে এ ধরনের কাজের সংখ্যা মাত্র ২.৭টি।
নারীর যে কাজ জাতীয় আয়ের হিসেবে (জিডিপি) যোগ হয় না, এমন কাজের আনুমানিক বার্ষিক মূল্য জিডিপির প্রায় ৭৬.৮ শতাংশের সমান। (২০১৩-১৪ অর্থবছর)।
শহরে কিংবা গ্রামে গৃহিণীর দিন শুরু হয় সূর্য ওঠার আগেই। আবার, তারা ঘুমাতেও যায় সবার শেষে। এর মাঝে তারা কী করে সেই কাজের ফিরিস্তি অনেক লম্বা। বলা যায় বিন্দু থেকে সিন্ধু। ঘরদোর পরিষ্কার, সবার পছন্দ অনুযায়ী রান্না করা, খাবার পরিবেশন, কাপড় ধোয়া, সন্তানের ও বয়স্কদের সেবাযতœ, ছেলে-মেয়েকে স্কুলে আনা নেয়া, টিফিন তৈরি, পড়ানো এবং আরো অনেক কাজ।
তারপরও হয়তো দিনশেষে স্বামীর কাছ থেকে শুনতে হয় ‘সারাদিন ঘরে করোটা কী?’ সন্তানদের ‘তোমার মা কী করেন?’ এমন প্রশ্ন করলে তারা সাদামাটা উত্তর দেয় ‘আমার মা কিছু করে না।’ মজুরিবিহীন বলে গৃহস্থালি কাজকে ভাবা হয় একজন গৃহিণীর দৈনন্দিন, মূল্যহীন, মেয়েলি কাজ। এই কাজগুলোকে আলাদাভাবে মূল্যায়ন করা হয় না কারণ এগুলোর জন্য কোনো টাকা খরচ করতে হচ্ছে না। একবারও ভাবা হয় না যে যদি অন্য কাউকে টাকা দিয়ে এই কাজগুলোই করানো হয়, তখন কিন্তু সেগুলোকে ‘কাজ’ হিসেবেই ধরা হয়।
এই গৃহস্থালি কাজের মধ্য দিয়ে পুরুষের পাশাপাশি একজন নারীও পরিবারের বিকাশে, সমাজের সমৃদ্ধিতে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। কিন্তু পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং আর্থিকমূল্য না থাকার কারণে নারীর এই মজুরিবিহীন কাজগুলো অবদান হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। তাই পারিবারিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গৃহিণীদের কাজের কোনো মূল্যায়ন এবং স্বীকৃতি নেই। কৃষিতে নারীকে ভাবা হয় পুরুষের সহায়তাকারী।
পুরুষকে ভাবা হয় পরিবারের কর্তা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। কারণ সে রোজগার করে, ঘরে টাকা আনে। সেই টাকায় সংসার চলে। কিন্তু নারী উপার্জন করে না, সংসারের খরচ দেয় না তাই নারীকে পরিবারে নির্ভরশীল হিসেবে গণ্য করা হয়। আর এই ধরনের ভাবনা, অবমূল্যায়ন এবং কাজের স্বীকৃতি না দেয়ার প্রবণতা নারীর প্রতি সহিংসতা এবং নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত ‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন সার্ভে ২০১১’ শীর্ষক বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক সম্পাদিত এক গবেষণার তথ্য বলছে, দেশে বিবাহিত নারীদের ৮৭ শতাংশই স্বামীর মাধ্যমে কোনো না কোনোভাবে নির্যাতনের শিকার।
গত ১৫/২০ বছরের তুলনায় আমাদের আজকের বাংলাদেশ শিক্ষা, দীক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে অনেক বেশী উজ্জ্বল। প্রায় সকল ক্ষেত্রেই নারীর অংশ গ্রহণ বেড়েছে। ঝুকিপুর্ণ পেশায়ও নারীরা জড়িত হয়েছেন। তবুও নানা ক্ষেত্রে এখনও নারীরাই বঞ্চনার শিকার। গ্রামীণ জনপদে নারীরা নানা ক্ষেত্রে তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এখনও কৃষি ক্ষেত্রে নারীর মজুরী পুরুষের তুলনায় কম। অন্যান্য ক্ষেত্রেও নারী-পুরুষের মজুরীর হার এক রকম নয়। গেরস্থালি কাজে এখনও অনেক পরিবারে নারীকেই সকল দিক সামলাতে হয়। এমনও দেখা যায় স্বামী-স্ত্রী দু’জনই ১০টা-৫টা চাকরি করেন। অথচ বাসায় ফিরে স্ত্রীকেই রান্না-বান্নার কাজ করতে হয়। গেরস্থাালির কঠিন কাজগুলো তাকেই করতে হয়। অথচ স্বামী যদি গেরস্থালি কাজে তাকে একটু সহযোগিতা করেন তাহলেই সংসারটা হয়ে উঠতে পারে অনেক সুন্দর ও প্রেমময়।
আসলে যুগটাই এখন সমতার কথা বলে। কারণ নারীকে পিছনে রেখে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র কোনো ক্ষেত্রেই কাঙ্খিত অগ্রগতি সম্ভব নয়। এজন্য সকল ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতার পরিবেশ সৃষ্টি করা জরুরি।
এই তাড়না থেকেই ১৪ মার্চ ২০১৭ চ্যানেল আই ভবনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, ইউকে এইড ও মাত্রার সহযোগিতায় আনন্দ আলো আয়োজিত এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ‘সমমর্যাদার সাথে পরিবর্তনের পথে’ শীর্ষক এই বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আ. আ. ম. স আরেফিন সিদ্দিক। তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, প্রোগ্রাম কো অর্ডিনেটর বনশ্রী মিত্র নিয়োগী, বিশিষ্ট আইনজীবী তুরিন আফরোজ, ব্যাংক এশিয়ার উপব্যবস্থাপক হোমায়রা আজম, সাপ্তাহিক সম্পাদক গোলাম মোর্তোজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রওনক হাসান খান ও রূপা চক্রবর্তী, সাংবাদিক মাহমুদা চৌধুরী, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, রেডিও ভ‚মির স্টেশন ইনচার্জ শামস সুমন, অভিনেত্রী সুমনা সোমা, শাহানা সুমী, সঙ্গীত শিল্পী কোনাল, রঙ বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক বিপ্লব সাহা, সাবেক ক্রিকেটার, অভিনেত্রী ও উপস্থাপক মিশু চৌধুরী প্রমুখ। বৈঠকটি পরিচালনা করেন আনন্দ আলোর সম্পাদক রেজানুর রহমান।

তবেই সমতা প্রতিষ্ঠা হবে

আ. আ. ম. স আরেফিন সিদ্দিক
ভিসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আজকের অনুষ্ঠানে প্রত্যেকের কথা বর্তমান সময় ও বাস্তবতারই প্রতিফলন। ‘মর্যাদায় গড়ি সমতা’ তাই মর্যাদাটা যদি সঠিকভাবে নিশ্চিতভাবে করা যায় তাহলে সমতাটাও ভালোভাবে চলে আসবে। আমার যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী থেকে সকলেরও কিছু দায়-দায়িত্ব রয়েছে। সবাই সবার দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে পারলেই কাক্সিক্ষত অগ্রগতি সম্ভব। ঠিক তেমনি সংসারে নারী-পুরুষ দু’জনেরই কিছু দায়-দায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়িত্ব দু’জনকেই ঠিকমতো পালন করতে হবে এবং এ ব্যাপারে উভয়কেই মর্যাদাটা দিতে আন্তরিক হতে হবে। তবেই সমতা প্রতিষ্ঠা হবে।

বিষয়টিতে আমার আপত্তি আছে

রাশেদা কে চৌধুরী
তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা
এমন একটি আয়োজনের জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই আনন্দ আলো, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এবং ইউকে এইডকে। সমাজে আমি পুরুষকে প্রতিপক্ষ মনে করি না। বরং একজন পুরুষ অবশ্যই নারীর বন্ধু হতে পারে। নারীর সংগ্রাম এবং তার প্রতিটি কাজে পুরুষের আন্তরিক সহযোগিতা জরুরি। আজকাল বিজ্ঞাপনে নারীদের যেভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে তা নিয়ে আমার আপত্তি রয়েছে। টিভিতে একটি বিজ্ঞাপন প্রচার হয়েছিল যেখানে বলা হতো ‘এইচআইভি থেকে নারীরা সাবধান।’ শুধু নারীই সাবধান হবে কেন? পুরুষের কি কোনো দায় নাই? এই যে নারীদের এভাবে উপস্থাপন করা হলো এটার যুক্তি কি? নারীর সম্মান এবং নারীর অধিকারের বিষয়গুলোকে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম নারীদের সম্মান করা শিখবে। পাশাপাশি নারীদেরও উচিত পুরুষদেরকে সম্মান করা, সহযোগিতা করা।

এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার

-শাহীন আনাম
নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
সমাজের নানা ক্ষেত্রে নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীরা অনেকটাই পিছিয়ে আছে। তাদের জীবন সংগ্রামের কষ্ট কোনো ভাবেই সমাজের নেতৃত্ব পর্যায়ে উঠে আসছে না। আমরা এই বিষয়টি নিয়েই কাজ করছি। আমরা নারীর প্রতিটি কাজের স্বীকৃতি চাই। পরিবারে এখনো অনেক নারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নিজের মতামতকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে পারে না। পুরুষের ওপরই নারীকে নির্ভর করতে হয়। এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার। নারী-পুরুষ প্রত্যেকের সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় আমরা কাজ করছি। অনেকেই বলেন, শিক্ষিত নারীদের অনেকেই আছেন যারা চাকরি করছেন না। কিন্তু তাই বলে কি এসব নারী সমাজে, রাষ্ট্রে কোনো অবদান রাখছেন না? গৃহস্থালির কাজ, সন্তান লালনপালনÑ এগুলো কি কোনো কাজ নয়? আজকে কৃষিতে নারীর অবদান সম্পূর্ণ অদৃশ্য। এসব কাজে সম্মানও নেই সমাজে। কারণ এগুলোকে আমরা আর্থিক মানদÐে বিবেচনা করি না। যদি নারীর গৃহস্থালির কাজ, কৃষিতে দেওয়া শ্রমকে আর্থিক মানদÐে বিবেচনা করা যেত, তবে নারীর মর্যাদাও সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতো।
শুধু পরিবারে নয় সমাজ এবং রাষ্ট্রেও ব্যাপক অবদান রাখছে নারী। সেটাই সবাইকে বোঝাতে চাই। নারী পুরুষের মধ্যে সমমর্যাদার পরিবেশ গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা চাই। আমাদের সকলেরই একটা কথা মনে রাখা দরকার পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে নারী-পুরুষের মধ্যে সমতা সৃষ্টি না হলে দেশের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন কখনই সম্ভব নয়।

তাকে অবশ্যই সম্মান করা উচিত

আনোয়ারা সৈয়দ হক
বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক
সমতার কথা শুধু নারীদের বেলায় বললেই হবে না। পুরুষেরও সমতার বিষয় রয়েছে। আজকাল মধ্যবিত্তের অনেক মেয়েদের ক্ষেত্রেই দেখেছি বন্ধুদের মাঝে আড্ডায় বলেÑ কিছুই করি না। ঘর-সংসার করি। অথচ তারা অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করেছে। তাদের মধ্যে অনেকে ঘর সংসারটাও ঠিকমতো করে না। তাই এমন একটি বিশাল নারী সমাজকে নিয়ে কীভাবে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব? নারী স্বাধীনতা মানে শুধু বাইরে কাজ করা কিংবা চাকরি করা নয়। আজকে যেসব নারী সমাজের নানান সেক্টরে অবদান রাখছেন তাদেরকে অবশ্যই আমাদের সম্মান করা উচিত। যে নারী পরিবারে কাজ করে সংসার ঠিক রাখছেন তারও সম্মানটা সমানভাবে হওয়া উচিত।

নারীর অগ্রযাত্রায় নারীই বাধা

তুরিন আফরোজ
ব্যারিস্টার
আজকের আলোচনায় নারীর সমতা নিশ্চিত করার জন্য আমি এ বিষয়ে তিনটি কথা বলবোÑ পিতার সম্পত্তিতে নারীকে সমান অধিকার দিতে হবে। সংবিধান ও ধর্মীয় আইনের ক্ষেত্রে নারীকে সমঅধিকার দিতে হবে। আর বিবাহ আইনের ক্ষেত্রে বর্তমানে যে আইনটি করা হয়েছে তার বিষয়ে নজর দিতে হবে। বর্তমানে অনেক জায়গায় নারীর অগ্রযাত্রায় পুরুষকে প্রতিবন্ধক মনে করা হয়। আমি বলবো একজন নারীর অগ্রযাত্রায় কখনোই পুরুষ বাধা হতে পারে না। অনেক সময় নারীর অগ্রযাত্রায় নারীর বাধা নারীই হয়ে থাকে। আর সবকিছুর পর একজন নারীকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে সে যখন বাসায় ফিরবে তখন সে একজন মা, স্ত্রী, কন্যাও।

এর দায়ভার কে নিবে?

মামুনুর রশীদ
নাট্য ব্যক্তিত্ব
আমি যেহেতু মিডিয়ায় কাজ করি, তাই মিডিয়ায় নারীদের বিষয়েই কথা বলি। আজকে আমাদের টেলিভিশন সংস্কৃতিতে ভারতীয় চ্যানেলের আধিপত্য চলছে। কলকাতার প্রত্যেকটি নাটকে নারীকে দেখানো হয় খুব খারাপ ভাবে। নেতিবাচক চরিত্রে। পুরুষকে দেখানো হয় ভালো মানুষ হিসেবে। এই যে, দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে একটা পরিবার ও সমাজ তৈরি হচ্ছে সেটার দায়ভার কে নিবে? এই সময়ে এসে পাঠ্যবইয়ে কোমলমতি ছেলে-মেয়েদের পড়তে হচ্ছে ‘ও তে ওড়না’? তাই আমরা যখন পরিবর্তনের কথা বলবোÑ তখন সেটা রাষ্ট্র থেকেই হতে হবে আগে। আর পারিবারিকভাবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনটা খুবই জরুরি।

 

নারীকে একজন মানুষ হিসেবে মর্যাদা দিন

বনশ্রী মিত্র নিয়োগী
প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
২০০২ সাল থেকে আমরা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন নারীর উন্নয়নের জন্য কাজ করে আসছি। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কাজ করি আমরা। আজকে সমাজের অনেক ক্ষেত্রে নারীদেরকে যোগ্য সম্মান দেওয়া হয় না। নারীকে একজন মানুষ হিসেবে সম্মান করা হয় না। এই মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ-রাষ্ট্রে নারীদের ব্যাপারে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ও মানসিকতার পরিবর্তনই আমাদের লক্ষ্য। গবেষণায় দেখা গেছে, পরিবারে নারীর কাজকে স্বীকৃতি দিলে জাতীয় আয়ে নারীর অর্থনৈতিক অবস্থান শক্ত হবে। তাই প্রয়োজন নারীদের সকল কাজের স্বীকৃতি। তাদের কাজের বোঝা কমানো, পরিবারের সকল সদস্যদের মাঝে কাজ ভাগ করে দেয়া এবং পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা।

তাদের দিয়েই সম্ভব…

গোলাম মোর্তোজা
সম্পাদক, সাপ্তাহিক
আজকে আমরা যেই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি তা রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারক পর্যায়ে হওয়া উচিত। আজকের আলোচনায় এসে কয়েকজনের কথা বলতেই হবে। স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলেছিলেনÑ সমাজে নারীদেরকে যদি সকল কাজে না আনা যায়, তাহলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে না। তিনি আরো বলেছিলেন, যে দেশে এক কাঁধে শিশু এক কাঁধে কলসি নিয়ে নারীরা কাজ করতে পারেÑ সেই দেশে তাদের দিয়েই সম্ভব উন্নতি করা।

 

 

 

 

 

পরিবারে মায়ের ভূমিকা অনেক

হোমায়রা আজম
উপ-ব্যবস্থাপক, ব্যাংক এশিয়া
একটি পরিবার একজন ভালো মা পেলেই সেই পরিবারের সদস্যরা ভালো কিছু শিখে। তাই পরিবারে মায়ের ভ‚মিকাটা অনেক বড়। আমি যখন বাইরে কাজ করবো তখন আমার ঘরটাকে গুরুত্ব দেয়াও জরুরি ব্যাপার। পরিবারের বাইরে যখন একজন নারী কাজ করে তখন কিন্তু সে বেশ দায়িত্বের সঙ্গেই কাজ করে। আমাদের ব্যাংকেই দেখেছি নারীরা পুরুষের চেয়ে বেশি দায়িত্ববান হয়ে কাজ করছে। তাদের কাজের গ্রোথও বেশি। নারীর প্রতিটি কাজে উৎসাহ দেয়া এবং সম্মান জানানো জরুরি। এতে নারীরা আরো এগিয়ে যাবে।

 

 

চাইলেই সম্ভব!

শামস সুমন
স্টেশন ইনচার্জ, রেডিও ভ‚মি
শত প্রতিবন্ধকতায়ও একজন নারী চাইলেই কাজ করতে পারেন। এগিয়ে যেতে পারেন। তবে তা শুধু গোলটেবিলে বৈঠকে বসে আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না রেখে তা নিয়ে কাজ করলে ভালো। সমাজে সচেতনতা তৈরি করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া উচিত। নারীকে বিশেষ দিবস কিংবা বিশেষ দিনে আবদ্ধ না করে সারা বছর তাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করা উচিত।

 

 

 

 

 

কারও কারও পিছিয়ে যাওয়া দেখে দুঃখ হয়

রূপা চক্রবর্তী
শিক্ষক, ঢাবি.
এমন একটি আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানাই উদ্যোক্তাদের। নারীরা যে আমাদের সমাজে এগিয়ে যাচ্ছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভালো রেজাল্ট করছে নারীরাই। এমনকি প্রথম স্থান অধিকারসহ মেধা তালিকায় নারীরাই এগিয়ে আছে। তবে এতকিছুর পরও আমার কিছু ঘটনায় মন খারাপ হয়। আমরা ছাত্রাবস্থায় ৮৫ জন ছাত্রী ছিলাম। যাদের মধ্যে ৩৩ জন এখন চাকরি করছে। বাকিরা করছে না। অথচ তাদের মধ্যে অনেকেই ভালো ছাত্রী ছিল। দুঃখ হয় অনেক নারীর অগ্রযাত্রার মধ্যে কারো কারো পিছিয়ে যাওয়া দেখে।

 

 

পজিটিভ স্টোরিকে গুরুত্ব দিন

রোকেয়া প্রাচী
অভিনেত্রী
এমন আয়োজনের জন্য আনন্দ আলো, মাত্রা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এবং ইউকে এইডকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি মনে করি, নারীদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রচার মাধ্যমের উচিত পজিটিভ স্টোরিকে সামনে নিয়ে আসা। তাহলে সমাজে পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য তা অনুপ্রেরণা হবে। আজকে একজন নারী অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করে ঘরে বসে থাকে অথচ তার পেছনে পরিবার এবং রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক লগ্নি রয়েছে। তাই নারীকে নানা কাজে যুক্ত করতে হবে। আজকে যে নারী পরিবার থেকে রাষ্ট্রে অবদান রাখছে তার মর্যাদার বিষয়টিও দেখতে হবে।

সৃষ্ট বাধাও দূর করতে হবে

মাহমুদা চৌধুরী
সাংবাদিক
আমাদের সমাজে নারীদেরকে ধর্মের দোহাই দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়। তাই রাষ্ট্রকে এই বিষয়ে দায়িত্ব নিতে হবে। বর্তমানে নারীর বিয়ে নিয়ে যে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে তা খুবই হাস্যকর। যে নারীরা আজ সংসদে রয়েছেন তারাও এটা নিয়ে খুব কথা বলেন না। তাই শুধু নারীকে এগিয়ে যাওয়ার কথা বললেই হবে না তাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে সৃষ্ট বাধাও দূর করতে হবে।

 

 

 

 

 

 

তবেই পরিবর্তনটা আসবে

কোনাল
কণ্ঠশিল্পী
পরিবার থেকেই একজন নারীকে সমমর্যাদা দিয়ে বড় করতে হবে। পুরুষের চেয়ে একজন নারী আলাদা নয়- এটা ছোটবেলা থেকেই শিখাতে হবে। তবেই আসলে পরিবর্তনটা চলে আসবে। আমাদের পরিবারগুলো বাবাদের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। সেটা ছোটবেলায় একটি ছেলে ও মেয়ে দেখে শিখে। যা বড় হলেও সেই ছেলে এবং মেয়ের উপর ভর করে থাকে। তাই আমি বলতে চাই পরিবার থেকেই আমাদের নরমাল অ্যাক্টিভিটিসগুলো চালু করতে হবে। তবেই সমাজে পরিবর্তনটা চলে আসবে।

 

 

 

দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার

সুমনা সোমা
অভিনেত্রী
নারীরা প্রতিনিয়ত নিগ্রহের শিকার। বাসে-রাস্তায়-অফিসে কিংবা পরিবারেও নারীকে কেমন জানি ট্রিট করা হয়। অনেক পুরুষ আছে নারীদেরকে রাস্তায় দেখলে আজেবাজে কথা বলে। এ ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। বাসে নারীদের আলাদা সিট রাখা, বাবা-কিংবা স্বামীর নামের সঙ্গে নাম রাখা- এসব আসলে নারীদের খুব ছোট করে দেখার প্রক্রিয়া। অনেককেই বলতে দেখি ও লিখতেও দেখেছি ‘নারী মানুষ’। এই যে আমাদের মানসিকতা এটার পরিবর্তন দরকার।

 

 

 

 

নারী নয় মানুষ হিসেবে সম্মান করুন

বিপ্লব সাহা
ফ্যাশন ডিজাইনার, বিশ্বরঙ
আমি যে সেক্টরে কাজ করি সেখানে একটি সুতা উৎপাদন থেকে শুরু করে পোশাকটির প্যাকেজিং এবং বিক্রয় পর্যন্ত নারীদের ভ‚মিকা থাকে। আর পোশাকটি ক্রেতাদের কাছে উপস্থাপনের জন্য একজন মডেলের ভ‚মিকা জরুরি। সেও নারী। তার অবদানও অনেক। আমার কাছে যখন কোনো নারী চাকরির কথা বলে তখন তাকে আমি বলি চাকরি নয় উদ্যোক্তা হতে এবং সত্যি সত্যি অনেক নারী কিন্তু আজ উদ্যোক্তা হয়েছেন। একজন নারীকে নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে সম্মান করা আমাদের জানতে হবে।

 

 

 

আমি আশাবাদী মানুষ

শাহানা সুমী
অভিনেত্রী
আজকের এমন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানাই আনন্দ আলো, মাত্রা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এবং ইউকে এইডকে। আজকে নারীদের অনেক বাধা বিপত্তির পরও অনেক অর্জনের পথে তারা এগিয়ে যাচ্ছে। একসঙ্গে মাঠে কাজ করা থেকে শুরু করে বিমান পর্যন্ত তারা চালাচ্ছেন। এই যে পরিবর্তন এটা অবশ্যই সমাজ এবং পরিবারের মানসিকতার পরিবর্তনের জন্যই হয়েছে। আমি আশাবাদী মানুষ। সামনে আরো হবে বলে আমি প্রত্যাশা করছি।

পরিবর্তনের লক্ষ্য দেখতে পারছি

মিশু চৌধুরী
অভিনেত্রী
আজকে নারীরা শহর থেকে গ্রামে বেশি অধিকার বঞ্চিত এবং নিগৃহীত হয়। তাই ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ গ্রাম পর্যায়ে বেশি কাজ করে। আজকে নারীদের ক্ষেত্রে মানসিকতার কিন্তু অনেক পরিবর্তন হয়েছে। যেমনÑ আমি কয়েক বছর আগে থেকে স্কুটি চালাই। শুরুতে দেখতাম এটা নিয়ে অনেকেই আমাকে টিপ্পনী কেটেছে এবং রাস্তায় ছেলেরা বাইক দিয়ে অনেক সময় ধাক্কাও দিয়েছে। আবার বাসওয়ালারা নানান কথা বলেছে। কিন্তু এখনকার সময়ে এসে দেখছি রাস্তায় অনেকেই সাইড দিয়ে দিচ্ছে এবং সম্মানও করছে। এটা অবশ্যই পরিবর্তনের লক্ষণ। সামনে আরো হবে বলে আশা করছি।

  • এক্সক্লুসিভ
Comments (০)
Add Comment