সৈয়দ ইকবাল
‘মনে পড়ে চাঁদের আলো আর কোটি তারা দিয়ে সাজানো একটি রাতের আকাশ/ টেবিলের উপরে দাঁড়িয়ে থাকা-একটি মোমদানী, আর তাতে সাজানো কয়েকটি মোম/ যেন একেকটা বছরের দণ্ডায়মান একেকটা স্মৃতি/ একটি ফুলদানী, তাতে গোলাপ আর রজনীগন্ধার সাজানো মিথ্যে প্রণয়/ যেন একেকটা বছরের কাছে আসার অভিনয়ের গল্প/ কয়েকটি প্লেট আর গ্লাসে সাজানো সংসার…’। কবির ভাষায় হয়তো এভাবে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের বর্ণনা করা যায়।
একটি দিন কারো কারো জন্য অনেক গুরুত্বপুর্ণ। আবার কারো কারো জন্য তা হয়তো আর দশটা স্বাভাবিক দিনের মতোই। যদিও ভালোবাসার জন্য আবার বিশেষ দিন কিসের! তারপরও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বলে কথা। প্রিয় মানুষকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়া, রঙিন সাজে সাজা এবং রঙিন মনে ফানুস উড়ানো সবই তো ভালোবাসা এবং ভালোবাসার মানুষের জন্যই করা। তাই তো ভালোবাসার এই দিনে প্রিয় মানুষকে চমকে দেয়ার জন্য নিয়ে যেতে পারেন তার প্রিয় কোনো জায়গায় ঘুরতে এবং প্রিয় কোনো রেস্টুরেন্টে খেতে। আরেকটু চমক উপহার দেয়ার জন্য তাকে নিয়ে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের একটু মুহূর্ত রচনা করতে পারেন অনায়াসে।
মূলত ‘ক্যান্ডেল লাইট থিয়েটার রেস্টুরেন্ট’ থেকে প্রথম এই ফ্যাসিলিটি চালু হয়। এই রেস্টুরেন্টটি ওয়াশিংটনে অবস্থিত ছিল। তবে এটি সম্ভবত ওই নামে প্রচার ছিল না। বিল পুলিন্সি নামে থিয়েটারের একজন স্টুডেন্ট প্রথম ১৯৫৯ সালে বিনোদনের এই কনসেপ্টটা ঐ রেস্টুরেন্ট থেকে নেন এবং পরে শিকাগোতে নিজেই এ্যাপ্লাই করেন ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের। সেখানে অফিসিয়ালি আরো কিছু আয়োজনের সঙ্গে সঙ্গে ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করার ব্যবস্থা করেছেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করেন। এরপর সারাবিশ্বে ধীরে ধীরে এই ক্যান্ডেল লাইট ডিনার জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আজকের দিনে কপোত-কপোতীদের অনেক প্রিয় একটি বিষয় এই ক্যান্ডেল লাইট ডিনার। একটু রোমান্টিক সময় কিংবা বিশেষ দিন মানেই প্রিয় মানুষকে নিয়ে চলে এই আয়োজন। তাই তো পাঁচ তারকা হোটেল থেকে শুরু করে ছোট-খাটো অনেক রেস্টুরেন্টেই থাকে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের বিশেষ আয়োজন।
একটু আলগা নোঙরের হাওয়ায় বেড়িয়ে পড় ন ভালোবাসার দিনটিতে। দিন না হাত বাড়িয়ে ভালোবাসার মানুষকে। একটু না হয় বেশিই হোক ভালোবাসাবাসি-আলিঙ্গন কিংবা উষ্ণতা। তাই তো আগে থেকে পরিকল্পনা করে নিন প্রিয় মানুষকে নিয়ে কোথায় ভালোবাসার দিনটি কাটাবেন। সারাদিন একটু রোমান্টিক সময় কাটানোর পর সন্ধ্যায় প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে চলে যান কোনো রেস্টুরেন্টে। যেখানে তাকে নিয়ে করতে পারেন ক্যান্ডেল লাইট ডিনার। ডিনারের আইটেমে খুব ভারি খাবার বেছে নিতে হবে এমন কোনো কথা নেই। সুন্দর পরিবেশে সামান্য আয়োজন ও অনেক তৃপ্তির খাবারও বয়ে আনতে পারে অন্যরকম রোমান্টিজিসম। এই দিনে পোশাক হিসেবে বেছে নিতে পারেন ক্যাজুয়াল কিছু পোশাক। তবে যদি সন্ধ্যার পরই শুধু বেড়াতে চান তাহলে অবশ্যই শাড়ি সাঙ্গে নিতে পারেন। ছেলের পরতে পারেন পাঞ্জাবি। রং হিসেবে বেছে নিতে পারেন লাল- মেরুন-নীল কিংবা গাঢ় যে কোনো কালার। চাইলে ম্যাচিং করা ড্রেসও পরতে পারেন দু’জনে। এক্ষেত্রে আগে থেকেই পোশাক নির্বাচন করে নিতে পারেন। সাজের ক্ষেত্রে হালকা ভাব বজায় রাখাই ভালো। দিনের বেলায় ঘোরাঘুরির সময় বেছে নিতে পারেন ক্যাজুয়াল পোশাক। তবে রংয়ের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল রং ব্যবহার করাই ভালো।
মডেল: লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টার শানারেই দেবী শানু, অভিনেতা তানভীর।
ছবি: রাকিবুল হক
পোশাক: ইন-টোটো
ফটোসেশন: মিরপুর ডিওএইচএস ও সেতু’স কিচেন
ছবি কৃতজ্ঞতা: আঞ্জুমান্দ জাহিদ সেতু