Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

লোকসানের পরও থেমে নেই বিদেশি ছবির আমদানি

মাঝখানে লম্বা একটা বিরতির পর দেশীয় প্রেক্ষাগৃহে আবারও শুরু হয়েছে বিদেশি ছবির প্রদর্শন। তবে যে লক্ষ্যে এসব ছবি আমদানি করা হচ্ছে, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়িত হচ্ছে না। প্রতিবারের মত এবারও লোকসান গুনতে হচ্ছে ছবি ব্যবসায়ীদের। বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া আমদানিকৃত ভারতীয় ছবি ভোকাট্টার সেল রিপোর্ট দেখে পুরোপুরি হতাশ হতে হয়েছে তাদের। মুক্তির প্রথম দিনেই মুখ থুবড়ে পড়েছে ছবিটি। ভোকাট্টার ব্যবসায়িক ভরাডুবির কারণে আমদানিকৃত আরও চারটি ছবি মুক্তি দিতে সাহস পাচ্ছেন না তারা। ফলে দেশি ছবির মত বিদেশি ছবি এনেও সুবিধা করতে না পারায় চরম বিপাকে হলমালিকরা। ধারণা করা হচ্ছে, বাকি চার ছবি কিডন্যাপ, শেষ থেকে শুরু, ভূথনাথ ডটকম ও বিবাহ অভিযান ছবিগুলোও দর্শক টানতে ব্যর্থ হবে।
যদিও বিষয়টি নিয়ে অন্যভাবে ব্যাখ্যা দিলেন ভোকাট্টা ছবির আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার সেলিম খান। তিনি বলেন, মূলত আহামরি ব্যবসার কথা চিন্তা করে ছবিটি আমদানি করিনি। খুব কম মূল্যে ছবিটি আমদানি করেছি। সামান্য কিছু উঠে আসলেই চলবে।
কিন্তু একটি বিশ্বস্থসূত্রে জানায়, দেশিয় চলচ্চিত্রের প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়া ছবিটি ভারতের ৩৫ লক্ষ রূপি দিয়ে ছবিটি আনলেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ছবিটি ৪ লক্ষ টাকার ব্যবসাও করেনি।
এর আগেও এভাবে মুখ থুবরে পড়েছে আমদানিকৃত ভারতীয় ছবি। সিনেমাহল বাঁচাতে এবং চলচ্চিত্রশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশের কিছু প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত যতগুলো বিদেশি ছবি আমদানি করেছে, তার সবগুলোই ফ্লপের তালিকায় পড়েছে। জিৎ, দেব, সোহম কিংবা অঙ্কুশের মতো বড় তারকারাও দর্শককে সিনেমাহলে আনতে পারেননি।
কিন্তু এত লোকসানের পরেও কেন বিদেশি ছবি আমদানি করা হচ্ছে? জবাবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, আমদানি করা ছবি যদি একই সাথে দুই বাংলায় মুক্তি পেত সে ক্ষেত্রে ছবিগুলো বেশি ব্যবসা করতো। এখন যেহেতু সেই খানের দুই সপ্তাহ পরে এদেশে মুক্তি পায় সেক্ষেত্রে হলে দর্শক কম হবে সেটিই স্বাভাবিক। কারণ ছবির গুলো মুক্তির পর দর্শকরা ঘরে বসে সোস্যাল মিডিয়ার আর ইউটিউবেই দেখে ফেলেন।
একই দিনে মুক্তি পাওয়ার পর ছবিটি না চলার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ছবিতে বড় কোন তারকা ছিলো না। দেব, জিৎ হলে না হয় কথা থাকত। ওম বাংলাদেশে অতটা জনপ্রিয় নন। তাছাড়া সিনেমা হল বাঁচানোর জন্য তো সিনেমা লাগবে। দেশের সিনেমা না থাকলে বিদেশে সিনেমা দিয়ে আগে তো হল বাঁচাতে হবে। দেশে একমাত্র শাকিব খান ছাড়া আর কারোই ছবি চলে না। যেখানে আমাদের হল বাঁচাতে বছরে মিনিমাম ৫০ টি ছবির দরকার। সেখানে আমরা ছবির পাচ্ছি মাত্র ৫-৭টি। আমরা সিনেমা হল বন্ধ করে দিতে চাই না বলে লোকসানের কথা চিন্তা করে ছবি চালাতে বাধ্য হচ্ছি।
অন্যদিকে দেশি চলচ্চিত্রে দুটি ছবি আব্বাস ও অবতার মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও পরিচালকরা তা নিয়ে বেশ আতংকে আছেন। এ নিয়ে আব্বাস ছবির পরিচালক সাঈফ চন্দন বলেন, বিদেশি ছবি নিয়ে আমাদের কোন ভয় নেই। তবে মুক্তির সময় দেখা যাবে হল কম সংখ্যাটা কমে আসবে। আমাদের দেশে এটা বেশ পরীক্ষিত বিদেশি ছবি দর্শক কখনো দেখেনি আর দেখবেও না। হয়তো ঈদের পাসওয়ার্ড ছবিটি বেশ ব্যবসা করায় তাদের মাথার পোকাটা হয়তো একটু নড়ে উঠেছে মাত্র। তবে যতো বাঁধায় আসুক আগামী ৫জুলাই আমি আমার ছবি মুক্তি দেয়ার জন্য বেশ প্রস্তুতই আছি। বাকী সব আলস্নাহ ভরসা।