Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

চুলেরও যত্ন চাই!

সুবর্ণা হক: আসলে সবকিছুই নির্ভর করে যতেœর ওপর। আপনি গান গাইতে ভালোবাসেন। গায়িকা হবার ইচ্ছে। ওস্তাদ রাখা হলো আপনার জন্য। শুরুর দিকে বেশ আগ্রহ নিয়ে ওস্তাদের কাছে গান শেখা শুরু করলেন। ভালোই যাচ্ছিল দিনকাল। ওস্তাদ আসেন আপনিও আগ্রহ ভরে তার কাছে গান শেখার তালিম নিতে থাকেন। হঠাৎ কি যে হলো, আপনি গানের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেললেন। গান চর্চায় আপনার মন নাই। অথচ আপনি গায়িকা হতে চান। কিন্তু তাকি আদৌ সম্ভব? আপনার গিটারটির কথাই ধরুন না। অনেক শখ করে কিনেছেন। প্রথম দিকে গিটারটির প্রতি আপনার ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা গেল। যেখানেই যান গিটার সঙ্গে থাকবেই। হঠাৎ আবার কী যে হলো গিটারের প্রতি একটু যেন অনীহা দেখা দিয়েছে। গিটার পড়ে রইলো টেবিলের একটা কোনায়। অযত্ন অবহেলায় দিনের পর দিন সেখানেই পড়ে আছে আপনার শখের গিটার। ধুলোবালি জমেছে। অথচ সেদিকে আপনার খেয়ালই নেই। হঠাৎ একদিন গিটারের প্রয়োজন হলো। ভাবলেন আমার গিটার তো আছেই। কিন্তু গিটারে হাত দিয়েই আপনার মন খারাপ হয়ে গেল। অযত্ন অবহেলায় গিটারে ধুলোবালি তো জমেছেই উপরন্তু গিটারের একটা তার ছিঁড়ে গেছে। এটা হয়েছে গিটারটির প্রতি নজর না দেয়ার কারণে। ঐ যে বললাম সবকিছুই নির্ভর করে যতেœর ওপর। গাছের চারা লাগিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন পানি দিতে হবে। মাঝে মাঝে চারপাশের আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। তবেই না গাছটি স্বাভাবিক গতিতে বেড়ে উঠবে। আর যদি মনে করেন গাছের চারা তো লাগিয়েছি। আমার কাজ শেষ। চারা থেকে গাছ হবে। সেই গাছ ফুলে ফলে ভরে উঠবে নিশ্চয়ই। এই ধারণা ভুল। চারা লাগালেই হবে না। গাছের চারার পরিচর্যা করতে হবে। তা নাহলে চারা থেকে ভালো গাছ পাওয়া যাবে না।

আমাদের মাথার চুলও সে রকম। বিশেষ করে মেয়েদের মাথার চুলের নিয়মিত যত্ন প্রয়োজন। অনেকেই আছেন বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন না। মনে মনে হয়তো ভাবেন চুল আছে চুলের মতোন। প্রতিদিনই তো চুল ধুই, চুলে শ্যাম্পু করি। চুলের যত্ন তো করিই। এরপরও মাথার চুল পড়ে গেলে করারই বা কি আছে? যারা এই ধারণা পোষণ করেন তারা আসলে শুধু চুল নয় নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কেও মোটেই সচেতন নন। চুলের যতেœর আগে প্রয়োজন নিজের শরীরের যত্ন নেয়া। আপনার শরীর সুস্থ নয়, নানান রোগে কাবু আপনি। এমন অবস্থায় নিয়ম করে চুলের যত্ন নিলেও কাজের কাজ কিছুই হবে না। কারণ আপনার শারীরিক সুস্থতার ওপর আপনার মাথার চুলের স্বাস্থ্যও নির্ভর করে। দিনে কমপক্ষে ৮/৯ গøাস বিশুদ্ধ পানি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। সবুজ শাক-সবজি বিশেষ করে মৌসুমী ফল খেলে শরীর ভালো থাকে। অথচ আপনি এসব একদমই খেয়াল করেন না। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করেন না। সবুজ শাক-সবজি, ছোট মাছের প্রতি আপনার দারুণ অনীহা। অথচ আপনি চান আপনার চুল ভালো থাকুক। এটা কখনই সম্ভব নয়। মাথায় ভালো চুল পেতে হলে আপনাকে নিয়ম মানতেই হবে। নিয়মিত চুলের পরিচর্যা করতে হবে।

অনেকে বিষয়টিকে কঠিন ভাবেন। অন্যের মাথার লম্বা চুল দেখে হা-পিত্যেশ করেনÑ আহারে আমার যদি এমন চুল থাকতো। যার মাথার চুল দেখে এমনটা ভাবলেন খোঁজ নিলেই বুঝবেন তিনি তার মাথার চুলের প্রতি কতটা যত্নশীল। ব্যাপারটা কঠিন ভাবলে কঠিন। আবার সহজ ভাবলে  খুবই সহজ। অনেকেই আছেন মাথার চুলে নিয়মিত শ্যাম্পু করেন। কিন্তু শ্যাম্পু করার পর চুল শুকানোর ব্যাপারে তেমন যত্ন নেন না। তাড়াহুড়া থাকলে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চটজলদি চুল শুকাতে গিয়ে চুলের স্বাস্থ্যে ব্যাঘাত ঘটান। হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে ভেজা চুল শুকানোরও নিয়ম আছে। এক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করতে নেই। তবে সবচেয়ে ভালো হয় ভেজা চুল পরিষ্কার টাওয়েল দিয়ে মুছে বাতাসে শুকিয়ে নেয়া। চুল ভেজানোর আগে পরিষ্কার চিরুনি দিয়ে চুল ভালো করে আচড়ে নিবেন। এর ফলে শ্যাম্পু করার সময় চুলে জটের সৃষ্টি হবে না। তেমনি বাতাসে চুল শুকানের সময়ও পরিষ্কার চিরুনি দিয়ে মাঝে মাঝে চুল আঁচড়ে নিবেন।

চুলের ক্ষেত্রে একটা সতর্কবাণী মেনে চলবেন। তাহলো- তাড়াহুড়া করতে গিয়ে ভেজা চুলে খোঁপা বাঁধবেন না অথবা ভেজা চুল যেনতেন ভাবে বেঁধে বাসার বাইরে যাবেন না। এটা করলে অনেক সময় চুলের গোড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মাথার খুশকির প্রাদুর্ভাব ঘটে। শীতের এই সময়ে সবচেয়ে ভালো হয় চুল ধোয়ার পর বাতাসে শুকিয়ে নিয়ে পরিষ্কার চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নেয়া এবং বাইরে বের হবার সময় ওড়না অথবা স্কার্ফ দিয়ে চুল ঢেকে রাখা। এছাড়া চুলের যতেœর জন্য প্রিয় বন্ধুর ভুমিকায় কুমারিকাতো আপনার পাশে আছেই।

কুমারিকা বিশ্বখ্যাত একটি হেয়ার অয়েল। অনেকেই জানেন, আদিকাল থেকেই প্রাচীন শ্রীলঙ্কা নৈসর্গিক সৌন্দর্য আর বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক বনৌষধি উপকরণের উৎস হিসেবে সুপরিচিত। সৌন্দর্য চর্চায় বহুল ব্যবহৃত ব্রাহ্মী,অ্যালোভেরার মতো উপকরণগুলো প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় ঐ সিংহল দ্বীপে। ঐ শ্রীলঙ্কাতেই তৈরি হয় সবার প্রিয় কুমারিকা হেয়ার অয়েল।

কুমারিকা তেল শতভাগ প্রাকৃতিক নির্যাস থেকে তৈরি। কুমারিকা হেয়ারফল কন্ট্রোল তেল-এ আছে আমলকী, ব্রাহ্মীলতা, অ্যালোভেরা ও এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেলের নির্যাস। যা নিয়মিত ব্যবহারে নারীর মাথার চুল পড়া কার্যকরভাবে বন্ধ করে। এছাড়াও কুমারিকা হেয়ারফল কন্ট্রোল অয়েল নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলের ক্ষেত্রে বাড়তি আরো দুটি সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

ক. চুলের আগা ফাটা রোধে কুমারিকা হেয়ার অয়েল বেশ কার্যকর। চুলের আগা ফাটা রোধে কুমারিকার আছে মধু ও মেহেদীর গুণসমৃদ্ধ কুমারিকা স্পিøট অ্যান্ড কন্ট্রোল অয়েল। যা চুলে পুষ্টি যুগিয়ে চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধ করে।

খ. কুমারিকা ড্যানড্রাফ কন্ট্রোল অয়েলে আছে মেথি ও লেবু। যা নিয়মিত ব্যবহার করলে খুশকি দূর হয়।

একথাতো সত্য চুলের বিভিন্ন সমস্যা যেমন চুল পড়া, খুশকি, আগা ফাটাসহ নানাবিধ সমস্যার সমাধানে হারবাল উপকরণই সেরা। এক্ষেত্রে কুমারিকা হেয়ার অয়েলের জুড়ি নাই। ১০ জনের মধ্যে ৮ জনেরই মন্তব্য কুমারিকা চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করে লক্ষণীয়ভাবে। কাজেই আর দেরি নয় কুমারিকাই হোক আপনার মাথায় চুল পরিচর্যার অন্যতম বন্ধু।