চোখ ভিজে যায় তাঁর জন্য

রেজানুর রহমান

তাঁকে আদর করে শ্রদ্ধায় কত নামেই না ডাকি আমরা। ব্যান্ড লিজেন্ড। গিটারের জাদুকর। কিংবদন্তি সংগীত শিল্পী। সবচেয়ে বড় কথা, তাঁর বড় পরিচয় তিনি এই দেশের সংগীতপ্রেমী মানুষের অনেক ভালোবাসার ধন। প্রিয় মানুষ আইয়ুব বাচ্চু। আজ তাঁর জন্মদিন। আমাদের প্রিয় শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু এখন না ফেরার দেশের বাসিন্দা। তাই তাঁর জন্মদিনটা যেন একটু অন্যরকম – হাহাকারে ভরা! তবে সারা দেশের সংগীতপ্রেমী মানুষ আজ এই ভালোবাসার মানুষটির জন্য অনেক মায়া, শ্রদ্ধা ও শুভাশিস ছড়িয়ে দিয়েছে। না ফেরার দেশে অনেক ভালো থাকবেন আইয়ুব বাচ্চু। ব্যান্ড গুরু অনেক অনেক ভালোবাসি তোমায়…

ব্যান্ড সংগীতের একটা দিন দিয়ে গেছেন আইয়ুব বাচ্চু। চ্যানেল আইতে তারকাকথন অনুষ্ঠানে ব্যান্ড সংগীতের উন্নয়নে সহায়তা রেখেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। নিজের অফিস কক্ষে বসে ওই অনুষ্ঠান টিভিতে দেখেছিলেন চ্যানেল আই এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগর। বাচ্চুর কথা শুনে তাৎক্ষণিক ভাবে তিনি একটা সিদ্ধান্ত নেন । সিদ্ধান্তটি হল প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিন অর্থাৎ ১লা ডিসেম্বর পালিত হবে ব্যান্ড সংগীত দিবস। সেই থেকে চ্যানেল আই প্রতি বছর ১লা ডিসেম্বর দিনব্যাপী ‘ব্যান্ড ফেস্ট’ নামে একটি সংগীত উৎসবের আয়োজন করে আসছে।

আজ ১৬ আগস্ট আইয়ুব বাচ্চুর জন্মদিনে আনন্দ আলোকে ঘিরে অনেক বেদনাদায়ক স্মৃতির কথা মনে পড়ছে। ১লা বৈশাখ আনন্দ আলো’র জন্মদিন। চ্যানেল আই ও সুরের ধারার আয়োজনে প্রতি বাংলা বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১লা বৈশাখ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের বিশাল চত্বরে হাজার কন্ঠে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে। এই অনুষ্ঠানে আনন্দ আলোর জন্মদিন পালনেরও রেওয়াজ শুরু হয়। জীবদ্দশায় প্রতি বছরই হাজার কন্ঠে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে আনন্দ আলোর জন্মদিনের কেক কাটা অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দিয়েছেন আইয়ুব বাচ্চু। তিনি ছিলেন আনন্দ আলো পরিবারের একজন অভিভাবক।

ছোট্ট একটা ঘটনার কথা মনে পড়ছে। কোলকাতা থেকে ফিরছি। কোলকাতা বিমানবন্দরে আইয়ুব বাচ্চুর সাথে দেখা। বিশিষ্ট চিত্রনায়িকা বিদ্যা সিনহা মিমও একই ফ্লাইটে ঢাকা ফিরবেন। তার সাথেও দেখা হয়ে গেল। তার সাথে শুধুমাত্র হাই, হ্যালো হলো। কিন্তু আমাকে নিয়ে একটা হৈচৈ বাঁধিয়ে দিলেন আইয়ুব বাচ্চু। কোলকাতার একটা অনুষ্ঠানে গান গাইতে এসেছিলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা আইয়ুব বাচ্চুকে এয়ারপোর্টে বিদায় জানাতে এসেছিলেন। তাদের কাছে আমার পরিচয় দিতে গিয়ে একটা হৈচৈ ফেলে দিলেন তিনি – ইনি হলেন আমাদের রেজানুর ভাই, বড় সাংবাদিক। আমাদের দেশে একটি বহুল জনপ্রিয় পত্রিকা আছে নাম আনন্দ আলো। ঐ পত্রিকার সম্পাদক। বাচ্চু ভাই বলেই যাচ্ছেন… কি যে মায়া দেখলাম আনন্দ আলোর জন্য। চোখ ভিজে আসছে আমার… না ফেরার দেশে অনেক ভালো থাকবেন বাচ্চু ভাই।

  • কলাম