স্থাপত্য শিল্পে যারা দেশের জন্য সৃষ্টিশীল কাজ করে চলেছেন তাদের মধ্যে স্থপতি কাজী তৌহিদুল ইসলাম অন্যতম। ২০০০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্থাপত্য বিষয়ে বাচেলর অব আর্কিটেকচার ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষা শেষ করেই যোগ দেন বড় ভাই কাজী অহিদুল ইসলামের ‘ইফেক্ট আর্কিটেকস এন্ড ইঞ্জিনিয়ার্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। বর্তমানে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সিইও। এ যাবৎ তিনি বেশকিছু দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার ডিজাইন করেছেন। ছবি আঁকাআঁকি ছিল তার পছন্দের বিষয়। কবিতা আবৃত্তিতে পারদর্শী ছিলেন। এবার শাহ সিমেন্ট সুইট হোমে তাকে নিয়ে প্রতিবেদন লিখেছেন মোহাম্মদ তারেক
পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে আর্কিটেক্ট কাজী তৌহিদুল ইসলাম কল্পন সেঝ। তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। তবে জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। বাবার নাম কাজী শামসুল আহসান। তিনি একজন স্বনামধন্য আর্টিষ্ট ছিলেন। মা এলিজা আহসান শিক্ষিকা ছিলেন। স্কুলে পড়াকালীন তৌহিদুল ইসলাম সাংস্কৃতিক কর্মকাÐের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কবিতা আবৃত্তি করতেন। ছবি আঁকাআঁকি, বই পড়া ছিল তার পছন্দের বিষয়।
ছোটবেলা থেকে তৌহিদুল ইসলামের ইচ্ছা ছিল বৈজ্ঞানিক হবেন। তবে বৈজ্ঞানিক হতে পারেননি বলে আফসোস নেই। তিনি হয়েছেন সফল একজন স্থপতি। এটাই তার আনন্দ। বিজ্ঞান কলেজ থেকে তিনি এসএসসি পাস করেন ১৯৮৭ সালে। ১৯৮৯ সালে একই কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগে। তার সহপাঠী বন্ধুদের মধ্যে আছেন স্থপতি সুহৃদ, সুতপা, উর্মি, রাশেদ ও শিহাব। এরা সবাই প্রতিষ্ঠিত আর্কিটেক্ট। প্রিয় শিক্ষকের তালিকায় আছেন প্রফেসর সামসুল ওয়ারেস ও খালেদা রশীদ। কাজী তৌহিদুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্থাপত্য বিষয়ে ব্যাচেলর অব আর্কিটেকচার পাস করে বের হওয়ার পর বড় ভাই কাজী অহিদুল ইসলামের ইফেক্ট আর্কিটেক্ট এন্ড ইঞ্জিনিয়ার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানে যোগদেন। বর্তমানে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০০৪ সালে তিনি বিয়ে করেন। স্ত্রীর নাম হাসিনা শামস। তিনিও একজন আর্কিটেক্ট। এই দম্পতি দুই কন্যা সন্তানের জনক-জননী। বড় মেয়ের নাম লুবানাহ। সে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। ছোট মেয়ে আরিবা ক্লাস ওয়ানে পড়ছে। স্থপতি কাজী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, স্থাপত্য বিজ্ঞান ও শিল্পের সমন্বয়ে স্থাপত্যে একটি জনগোষ্ঠীর শিল্প, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, জীবন যাপনের প্রতিফলন ঘটে। স্থাপত্যের ভাষায় যাকে আমরা কনটেক্সট বলি। স্থাপত্য কর্মে কনটেক্সট বড় ধরনের বিবেচ্য বিষয়। ক্লায়েন্টের চাহিদাকে প্রাধান্য দিতে হবে।
প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে ক্লায়েন্ট রিকুয়েরমেন্টকে প্রাধান্য দিয়ে কনটেক্সট বুঝে ইমারত নির্মাণের চেষ্টা করি। পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আলো, বাতাস, সবুজ প্রকৃতির ব্যবহার করতে স্থপতি হিসেবে চ্যালেঞ্জ নেই। তবে শহরের সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের টেকসই উন্নয়নই কেবল আমাদেরকে উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। এসব কিছুর দিকে নজর দেয়া এখন সময়ের দাবি।