ত্যাগের মহিমায় আলোকিত হোক এবারের ঈদ উৎসব

আর মাত্র কয়েকদিন পর পবিত্র ঈদুল আজহা। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ঘরে ঘরে তাই আনন্দ আর খুশির বন্যা বইছে। যদিও এই আনন্দের মাঝে কিছুটা হলেও সংকট সৃষ্টি করেছে দেশের ভয়ানক ডেঙ্গু পরিস্থিতি। ঢাকা সহ দেশের বিস্তৃত এলাকায় ডেঙ্গু রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। উত্তরের জনপদ কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধায় বন্যা হয়েছে। এবারের বন্যাও সবকিছুই ধুয়ে মুছে নিয়ে গেছে। সড়ক ডুবেছে। রেল লাইন ডুবেছে। গ্রামের পর গ্রাম ডুবেছে। কোথাও আশ্রয় নেয়ার উঁচু মাটি পর্যন্ত নাই। দেশের পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন মাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্যার পাশাপাশি ডেঙ্গু পরিস্থিতির ভয়াবই চিত্র উঠে আসছে প্রতিদিন।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে এবারের ঈদটা কি সত্যি সত্যি আনন্দমুখর হবে? অনেকে ঈদুল আজহা অর্থাৎ কোরবানির এই ঈদে পশু কোরবানীর ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতা পালনের পরামর্শ দিয়েছেন। কোরবানীর পশুর রক্ত ও বর্জ্য যত্রতত্র ফেলে যাতে শহরের পরিবেশ দুষিত না করা হয় সে ব্যাপারে আন্তরিক হতে হবে। কোরবানির অর্থই হলোÑ ত্যাগ স্বীকার করা। অন্যকে অর্থ সাহায্য করাও তো একধরনের ত্যাগ। এক্ষেত্রে ধর্মীয় বিধান মেনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়াই হবে যুক্তিযুক্ত।
তবে একটি কথা না বললেই নয়। সময়ের দাবি বলে একটি কথা আছে। ঈদ আমাদের প্রধান ধর্মী উৎসব। ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। তবুও সময়কে গুরুত্ব দিয়েই আমরা যেন আনন্দ ফুর্তির আয়োজন করি।
ঈদুল আজহা ত্যাগের মহিমা ছড়াতেই আমাদের মাঝে আসে। আল্লাহর নির্দেশে প্রিয় নবী হযরত ইব্রাহীম (আ:) তার প্রিয় পুত্রকে কোরবানি দেয়ার জন্য তৈরি হয়েছিলেন। প্রিয় নবীর প্রতি সন্তষ্ট হয়ে মহান আল্লাহ সেদিন পিতা কর্তৃক পুত্রকে কোরবানি দেয়া থেকে বিরত রাখেন। মহান আল্লাহর নির্দেশে প্রিয় নবী হযরত ইব্রাহীম (আ:) একটি উট কোরবানি দেন। সেই থেকে পবিত্র ঈদুল আজহার দিন পশু কোরবানি দেয়ার ধর্মীয় বিধান চালু হয়। ধর্মীয় বিধানে পশু কোরবানি দেয়া প্রসঙ্গে উল্লেখ আছে, ঈদুল আজহায় অনেক আদরে লালন-পালন করা পশু জবাই করতে হবে। অর্থাৎ অনেক আদরের বিষয়কেও ত্যাগ করতে হবে।
মানুষের পাশে দাঁড়ানোও তো এক ধরনের ত্যাগ স্বীকার করা। আমরা যারা এই ঈদে কোরবানি দিব তারা যেন বানভাসী ও ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের সীমাহীন দুঃখ কষ্টের কথাও মাথায় রাখি। আমাদের বিবেচনায় পবিত্র ঈদকে উপলক্ষ করে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোই হবে প্রকৃত ত্যাগ স্বীকারের ঘটনা।
আনন্দ আর দুঃখ পাশাপাশি হেঁটে চলে। কাজেই দুঃখকে সামলে নিয়েই আনন্দের পসরা সাজাতে হবে। এবারের ঈদে আমরা নিশ্চয়ই সেটা করব।
প্রিয় পাঠক, পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা নিন। বিজ্ঞাপন প্রদানকারী সকল বন্ধু, প্রতিষ্ঠানের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ঈদ মোবারক

  • শীর্ষ কাহিনি