পোশাকে আজকের নারীদের প্রথম পছন্দ অম্বর

বর্তমান সময়টাই হলো তথ্য প্রযুক্তি আর ইন্টারনেটের। মানুষের সময়কে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে ইন্টারনেট। সার্চ দিলেই হাতের মুঠোয় পুরো পৃথিবী। যেনো আলাদীনের সেই আশ্চর্য প্রদীপ। আজ থেকে ২০ বছর আগেও এমনটি ভাবা গেছে? বোধকরি না। আজকের দিনে একসাথে কতো কাজ করা যায় শুধুমাত্র ইন্টারনেটের বদৌলতে। অথচ একটা সময় ছিলো যখন অফিস কিংবা ব্যবসায়িক কর্ম ছাড়া অন্যকাজ করা ছিলো প্রায় অসম্ভব আর এখন কেনাকাটা, প্রিয়জনকে সারপ্রাইজ দেয়া, পছন্দের সব খাবার অর্ডার করলেই নিমিষে চোখের সামনে চলে আসে। মানুষের জীবন ব্যবস্থায় বর্তমান সময়ের এক অতি প্রয়োজনীয় এবং অতি পছন্দের একটি বিষয় হচ্ছে ই-কমার্স। ব্যস্ততার জন্য মানুষ যেখানে অনেক সময় প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে যেতে পারেন না, সেখানে ই-কমার্সের বদৌলতে আজকে যে কোনো পণ্য অর্ডার করলেই নির্দিষ্ট ঠিকানায় চলে যায়। আধুনিক জীবন ব্যবস্থায় সকলেই অব্যস্থ হয়ে যাচ্ছে। চাকরিজীবি মানুষরাই বর্তমানে ই-কমার্সের উপর বেশি নির্ভরশীল। আজকের নারীদের কাছে এই ই-কমার্স যেনো দিনকে দিন আরো বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে উঠছে। রাস্তার যানজট। সাংসারিক কাজ শেষ করে মার্কেটে যাওয়ার জন্য সময় বের করতে না পারা কিংবা দোকানে দোকানে জিনিস খোঁজার ঝামেলা এড়ানোর জন্য সবাই যেনো ই-কমার্সের উপরই বেশি নির্ভরশীল হচ্ছে। এটা অবশ্যই তথ্য প্রযুক্তি তথা ইন্টারনেটের ইতিবাচক একটা দিক। আর তাই তো দিন দিন আমাদের দেশে ই-কমার্সের ব্যবসা বেশ সমৃদ্ধি লাভ করছে।
ঠিক তেমনি একটি আস্থা ভাজন ই-কমার্স সাইট হচ্ছে অম্বর। গত বছর থেকে যাত্রা শুরু করা অম্বর-এরই মধ্যে আধুনিক ও রুচিশীল নারীদের কাছে একটা আস্থার নাম হয়ে উঠেছে। ক্রেতাদের পছন্দ, ক্রেতাদের আস্থা আর সময় মতো পণ্য ডেলিভারি করায় ক্রমেই ক্রেতারা অম্বর-এর প্রতি আস্থাশীল হচ্ছে। এটার পেছনেও অবশ্য সুন্দর-সুন্দর গল্প রয়েছে। এই বিষয়ে অম্বর-এর কর্ণধার শ্রাবণী রায় বলেন, আমার প্যাশন-এর জায়গা হচ্ছে এই অম্বর। আমি একেবারেই নিজস্ব ভালো লাগা আর ভালোবাসা থেকেই এই প্রতিষ্ঠানটি করেছি।
ফার্মেসীতে পড়াশুনা করেও কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডের সাথে খুব বেশিদিন থাকতে পারিনি। শুধুমাত্র এমন একটি কাজ করবো বলে। আমার সারাটি দিন যায় অম্বর নিয়ে। কিভাবে প্রোডাক্টের গুনগতমান রক্ষা করা যায়। ক্রেতাদের আরো আস্থা কিভাবে অর্জন করা যায়। নতুন প্রোডাক্ট কি আনা যায় ইত্যাদি বিষয়ে সারারক্ষনই আমার চিন্তা থাকে। আর আমার সবকিছুর আগে থাকে ক্রেতাদের অর্ডারকৃত পণ্য কিভাবে ঠিকমতো এবং সময়মতো তাদের কাছে পৌঁছানো যায় সেটা। কারণ অনলাইনে অর্ডারকৃত পণ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সেটা ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানো। আমি এই চ্যালেঞ্জটি শুরু থেকেই ঠিকমতো গ্রহণ করতে পেরেছি এবং তা ভালোভাবেই সম্পন্ন করছি।
শ্রাবণী রায় আরো বলেন, ছোটবেলা থেকে ফ্যাশন আর লাইফ স্টাইল জনিত পণ্য গুলো আমার সবসময় ভালোলাগে। বিশেষ করে নারীদের শাড়ি আর কুর্তি টাইপের পোশাকগুলো নিজে সংস্কৃতিমনা হওয়ায় নতুন ডিজাইন আর নতুন সব স্টাইলের পোশাকগুলো আমাকে সবসময় টানে। এজন্যই আমি যেনো সবসময় এসবের মধ্যে থাকতে পারি এজন্য নিজের একটা হাউজ করার চিন্তা করি।
অম্বর-এ শাড়ি আর কুর্তির রয়েছে সমৃদ্ধ কালেকশন। নিজস্ব ডিজাইনে করা এসব পোশাক। এই বিষয়ে শ্রাবণী রায় বলেন, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমরা শাড়ি ও কুর্তি তথা কামিজ গুলো কালেকশন করে থাকি। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত কিংবা বর্ষার উপযোগী করে আমার পোশাকগুলো তৈরি করে থাকি। এজন্য আমাদের রয়েছে নিজস্ব কিছু তাঁতী ও জায়গা, যেখানে ডিজাইন করে অর্ডার দিয়ে শাড়ি তথা ড্রেসগুলো তৈরি করে থাকি। আর এজন্যই আমাদের পণ্যগুলো অনেক ইউনিক।
অম্বর মৌসুমী পোশাকের দিকে নজর বেশি দিয়ে থাকেন। গরমের সময় হালকা কাপড়, হালকা রং আর সহজেই ক্যারি করার বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা হয়। যেকোনো উৎসব পার্বনে কালারফুল বিষয়টি মাথায় রেখে পোশাক তৈরি করা হয়। যেমন সামনে দূর্গা পূজার জন্যও প্রস্তুত রয়েছে অম্বর। দূর্গা পূজাকে থিম করে বেশকিছু শাড়ি ও কুর্তি-কামিজ ডিজাইন করা হয়েছে। অম্বর সব সময় থিমেটিক কাজ করে থাকে। পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস কিংবা একুশে ফেব্রæয়ারিতেও থিম ভিত্তিক পোশাক নিয়ে হাজির হয়ে থাকে ক্রেতাদের সামনে। আর দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির দিকেও নজর রেখে পোশাক ডিজাইন করছে প্রতিষ্ঠানটি। ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ শে মার্চ সহ বিশেষ দিবসের জন্যও থাকে নানান ডিজাইনের শাড়ি।
পণ্যের ডেলিভারির বিষয় নিয়ে বেশ সচেতন অম্বর। এই বিষয়ে শ্রাবণী রায় বলেন, আমরা ক্রেতাদের পছন্দ-অপছন্দকে বেশ প্রাধান্য দিয়ে থাকি। কেউ প্রোডাক্ট অর্ডার করার পর তা দেখে যদি পছন্দ না হয় তাহলে রিটার্ন করতে পারেন। আর ছবি দেখে অর্ডার করার পর নির্দিষ্ট ঠিকানায় পণ্যটি দেখে তারপরই পেমেন্ট করার সুযোগ পাচ্ছে ক্রেতারা। আমাদের কাছে ক্রেতাদের প্রাধান্যই সবচেয়ে বেশি থাকে।
অম্বর-এর ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে শ্রাবণী রায় বলেন, আমার অনেক স্বপ্ন এবং প্যাশন-এর একটি প্রতিষ্ঠান এই অম্বর। খুব যতœ করে আমি এটিকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমার খুব স্বপ্ন অম্বর-এর নিজস্ব শো-রুম খুব শিগগিরই হবে। অনলাইনে অর্ডার করার পাশাপাশি আমরা ক্রেতাদের জন্য একটি শোরুম দিতে পারবো। সেই হিসেবে আমরা এগুচ্ছি। আর দেশের বাইরে আমাদের দেশীয় পোশাকের বিশাল বাজার রয়েছে। বিশেষ করে যারা বাঙালি দেশের বাইরে থাকেন যারা কিনা দেশীয় শাড়ি ও জামা পরতে চান তাদের জন্য আমরা একটি ওয়েবসাইট করে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে থাকি। তাদের জন্য পণ্যটি দেশের বাইরে কতো সহজে পৌঁছানো যায় তার জন্যও কাজ করছি। আমার পরিচিত বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে দেখতে পাচ্ছি আমাদের দেশীয় শাড়ি ও জামার কি পরিমান চাহিদা রয়েছে। তাই আমার অম্বর এই কাজটি করার জন্য নিজেদের তৈরি করছে। অম্বর-এর পোশাক কিনতে হলে যোগাযোগ করতে পারেন- facebook/অম্বরambor। ফোন: ০১৯৯৭-৭২১৭১৭

  • ফিচার