জীবনানন্দ বলেছিলেন, প্রেম ধীরে ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন সরে যেতে হয়। সত্যিই কী প্রেম মুছে যায়? এ নিয়ে যথেষ্ট তর্ক আছে। হৃদয়ের অলিন্দে প্রথমবারের মতো কারো জন্য অনুভূতির প্রকাশ তা সিত্মমিত হয়ে যেতে পারে, ঘুমিয়ে থাকতে পারে। কিন্তু প্রথম প্রেম এবং তাঁর কোনো স্মৃতিই মুছে যায় না। বিশেষ বিশেষ মুহূর্তগুলোতে হৃদয় ঠিকই বলে ওঠে, আমাকে খোঁজো না তুমি বহু দিন- কতদিন আমিও তোমাকে খুঁজি নাকো। এক নক্ষত্রের নিচে তবু একই আলো পৃথিবীর পারে আমরা দুজনে আছি… ঠিক সেই মুহূর্তগুলোয় আমাদের মন কখনো ঝিলিক দিয়ে হেসে উঠে, অপার আনন্দে আবার কখনো বিষাদের ধূসর ছায়া গ্রাস করে ফেলে সকল উচ্ছ্বাস। অজানেত্মই চোখের কোণে হাহাকারের সাক্ষী হয়ে জন্ম নেয় এক ফোঁটা জল; যাকে আমরা বলি কান্না। তারকা জগতের মানুষদেরও অনুভূতিগুলো ভিন্নতর নয়। তারাও রক্ত-মাংসের মানুষ। তাদেরও হৃদয় আছে। আছে প্রেম-ভালোবাসা। মানুষমাত্রই ভালোবাসার পূজারি। আর যেখানে ভালোবাসা আছে, তাঁর অন্য পিষ্ঠে আছে কষ্টও। আনন্দ আলোর পাঠকদের জন্য কয়েকজন প্রিয় তারকা বলেছেন তাদের প্রথম প্রেমের কথা। ঝটপট পড়ে নিন, তারা কী বলেছেন প্রথম প্রেম নিয়ে। লিখেছেন মোহাম্মদ তারেক।
পৃথিবীর সব মানুষই ভালোবাসার মানুষের কাছে কিছুটা ভিতু থাকে
–পূর্ণিমা
তখন আমি ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্রী। ওই সময় একটা ছেলেকে আমার ভালো লাগতে শুরু করল। কিন্তু দুঃখের বিষয় কোনদিন ছেলেটাকে কিছু বলতে পারতাম না। আসলে আমার কাছে মনে হয় পৃৃথিবীর সব মানুষই ভালোবাসার মানুষের কাছে কিছুটা ভিতু থাকে। কখনোই সাহসী হয়ে উঠতে পারে না আর সাহসী হয়ে উঠতে পারলে ভীষণ ধন্য হয়। আর রোমান্টিক চরিত্র তো অনেক করেছি। বলতে গেলে অভিনয় জীবনের সবটাই রোমান্টিক অভিনয়। তবে আমার কাছে মনে হয় ‘মনের মাঝে তুমি’ ছবিতে অভিনয় ছিল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক অভিনয়। এর থেকে শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক চরিত্র আমি মনে হয় আর করিনি। এসএকে অলিক পরিচালিত ‘মনের মাঝে তুমি’ ছবিটি এখনো পর্যনত্ম আমার জীবনে শ্রেষ্ঠ প্রেম চরিত্র।
ক্যামেরার লেন্স দিয়েও আমার দিকে তাকিয়ে দেখত
-স্বাগতা
বাবা আমার প্রেমের গল্প শুনে হাসতেন
–আগুন
প্রেমের কথা যখন উঠল তখন এ বিষয়ে কিছু বলি। আমি তখন এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হয়েছি। সেই সঙ্গে গানও করছি। আশেপাশের মানুষ আমাকে বেশ ভালোভাবেই চিনে। ঐ সময়টায় অসংখ্য মেয়ের সঙ্গে প্রেম করেছি। অসংখ্য মেয়ে আমার গান শুনে এবং আমাকে দেখে প্রেম নিবেদন করতো। এই প্রেম নিয়ে অনেক ঘটনাও আছে। আমি যাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি তার সঙ্গে আমার পরিচয়টা খুব ছোটবেলা থেকে। আমি তখন ক্লাস সেভেনে পড়তাম ও তখন পড়তো ক্লাস টুতে। এতো এতো মেয়ের সঙ্গে কথা বলতাম, দেখা হতো কিন্তু ফারহানা মানে আমার স্ত্রীর মুখটাই সবার আগে চোখের সামনে ভেসে উঠতো। ছোটবেলায় বুঝতে পারতাম না কিন্তু এখন বুঝি এটাই হচ্ছে সত্যিকারের প্রেম। ও আমার প্রেম ভালোবাসা সম্পর্কে সব জানত। তরুণ বয়সে এই সব কথা আরো একজনকে বলতাম তিনি হচ্ছেন আমার বাবা খান আতাউর রহমান। প্রতিদিন বাবার সঙ্গে অনেক গল্প করতাম। তাতে প্রেমের গল্পই বেশি থাকত। বাবা আমার প্রেমের গল্প শুনে হাসতেন আর বলতেন তারপর কী হলো? তারপর ১৯৯৮ সালে ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করলাম।
প্রথম প্রেম এবং হালকা ব্যর্থতার গল্প
-আরেফিন শুভ
প্রেম করার খুব ইচ্ছে ছিল
-পপি
ভালোবাসা যদি তরল পানির মত কোন বস্তু হত, তাহলে সেই ভালোবাসায় সমসত্ম পৃথিবী তলিয়ে যেত। এমন কি হিমালয় পর্বতও।
জীবনে একটাই প্রেম করেছিলাম
-ফারাহ রুমা
প্রতিটি মানুষের জীবনেই বিশেষ কিছু মুহূর্ত থাকে যা সে সারা জীবন মনে রাখে। আর আমরা যারা অভিনয় শিল্পী তাদের স্মৃতিতে থাকে সবচেয়ে প্রিয় এবং শ্রেষ্ঠ অভিনয়ের মুহূর্ত। আমি সাধারণত রোমান্টিক অভিনয়ের প্রতি দূর্বল। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক অভিনয় হলো চ্যানেল আইতে প্রচারিত আনিসুল হকের রচনায় টেলিফিল্ম ‘সাঁকো’। আমার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন আফজাল হোসেন। নাটকে একটা সময় আমি আফজাল ভাইয়ের প্রেমে পড়ে যাই। দারুণ রোমান্টিক অভিনয় করেছিলাম আমরা দু’জন। আর প্রথম ভালোবাসার কথা বলতে গেলে সত্যি কথাটাই বলব আমার বয়স যখন ১৬ বছর তখন একটা ছেলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক হয়। জীবনে একটাই প্রেম করেছিলাম। তবে তাতে আমি সফল হতে পারিনি। যেহেতু সে আমার জীবনে নেই। তাই সেটা আর মনে করতে চাই না। সে আমার জীবনের অংশও না। এরপর আর প্রেম করিনি।
ভালোবাসাটা ছিল একপেশে
–নিপুন
তখন আমার বয়স মাত্র সতের। আমি মস্কোতে থাকি। পড়াশোনার পাশাপাশি মস্কো নেসলেতে পার্টটাইম চাকরি করতাম। প্রতি রবিবার আমার ডিউটি ছিল। আমি প্রতিটা রবিবারের জন্য অধীর হয়ে অপেক্ষা করতাম। শুধু একজনের দেখা পাবার জন্য। তার নাম অমর জিৎ সিং। নেসলের ডিরেক্টর ছিলেন তিনি। আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড় ছিলেন। জীবনে প্রথম তাঁর প্রেমে পড়েছিলাম। ভালোবাসাটা ছিল একপেশে। শুধুই আমার দিক থেকে উনি তা জানতেন না। কোনো রবিবার উনি অফিস মিস করলে আমার খুব খারাপ লাগত। আর উনাকে দেখেই আমার মন ভরে যেত। উনি যদি আমাকে কখনো কফি করে দিতে বলতেন উনার জন্য আমার হাত, পা, বুক এক সঙ্গে কাঁপা শুরু করত। চেষ্টা করতাম পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট কফিটা বানাতে। অমর জিৎ সিং এর চেয়ে ভালো আর কাউকে লাগেনি। অমর জিৎ সিং মাঝে মাঝেই ইন্ডিয়া যেত। আসার সময় সবার জন্য গিফট নিয়ে আসত। একবার ইন্ডিয়া যাওয়ার সময় আমাকে ডেকে বললেন, তোমার জন্য কী আনব? আমি খুব নার্ভাস হয়ে বলেছিলাম; আপনার ইচ্ছে। আমার জন্য উনি একটা লেহেঙ্গা নিয়ে এনেছিলেন। কোম্পানির একটা পার্টি ছিল। লেহেঙ্গা আমার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন আমি যেন ওটা পরে পার্টিতে যাই। সেদিন আমি খুব আলোড়িত হয়েছিলাম। খুব এক্সাইটমেন্ট নিয়ে পার্টিতে গিয়েছিলাম। আমি খুব আশা করেছিলাম, হয়তো আমাকে তার সাথে ড্যান্স করার জন্য বলবেন। কিন্তু বলেননি।
ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে সুখে আছি
-ইমন
তখন আমি ইন্টার সেকেন্ডইয়ারে পড়ি। একদম গোবেচারা টাইপ ছিলাম। আমাকে দেখলে ছোটবড় সবাই ভাইয়া ডাকত। ওর সাথে প্রথম পরিচয় হয়েছিল বেইলি রোডে। আমার এক মেয়ে বন্ধুর সাথে ও রিকশায় করে যাচ্ছিল। বেইলি রোডে খুব আড্ডা দিতাম। সেদিনও আড্ডা দিচ্ছি। জোরে চিৎকার করে বন্ধুটির নাম ধরে ডেকেছিলাম। সেদিনই প্রথম কথা হয়। সেই বন্ধুটার মাধ্যমেই ওর সাথে যোগাযোগ করতাম। বন্ধুটি রেগে যেত। এরপর পহেলা বৈশাখে দেখা করার জন্য কথা দেই দু’জন দু’জনকে। আমি একটা ফুলের স্টিক নিয়ে গিয়েছিলাম। ও এত বেশি সুন্দরী, প্রথম একা একা কোনো মেয়ের সঙ্গে সেই প্রথম দেখা করতে যাওয়া। আমি খুব ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। থর থর করে কাঁপছিলাম এবং ঘামছিলাম। কথা হয়েছিল কেমন আছেন, পড়াশোনা কী অবস্থা এগুলো নিয়ে। আমি এত বেশি নার্ভাস ছিলাম এক সময় আবোল তাবোল কথা বলে চলে এসেছিলাম। এরপর আমাদের আর কোনরকম যোগাযোগ হয়নি। কথা বা দেখা কোনোটাই হয়নি আর। আয়েশা ইসলাম নামের একটি মেয়ের প্রেমে পড়ি। ওর সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয় ২০০৭ সালের দিকে। প্রথম পরিচয়ে সে আমাকে ফোন দেয়। তারপর আসেত্ম আসেত্ম কথাবার্তা চলতে থাকে। এইভাবেই এগিয়ে যায় আমাদের প্রেম ভালোবাসা। এক পর্যায়ে তাকে জীবন সঙ্গী হিসেবে বেছে নিলাম। এখন আমি অনেক ভালোই আছি, সুখে আছি।
ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা
-সীমানা
আমার ভালোবাসার মানুষটির সাথে প্রথম দেখা ও পরিচয় হয়েছিল রাজিব সরকারের পরিচালনায় ‘অতি মানব’ নাটকে অভিনয় করার সময়। ওই নাটকের শুটিংয়ের সময় আমাদের মধ্যে অল্প কিছু কথা বিনিময় হয়। এরপর ও নাকি আমার সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে থাকে। এটা অবশ্য আমাকে পরবর্তী সময়ে ইউনিটের একটা ছেলে বলেছিল। সেই থেকেই আমাদের কথাবার্তা হতে থাকে। অনেকের কাছ থেকে খবর নিতে থাকে আমার কারো সাথে কোনো রিলেশন আছে নাকি। সেই কথাগুলো আবার আমার কাছে চলে আসত। তখন আমারও ওর প্রতি ইন্টারেস্ট বেড়ে যেতে থাকে। এমনিভাবে একদিন আমরা সরাসরি কথা বলি। এরপর ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা। ভালোবাসা হচ্ছে পৃথিবীর এক শ্রেষ্ঠ উপহার। ভালোবাসা না থাকলে হয়তো পৃথিবীই সৃষ্টি হতো না।
দু’জনেই গান করতাম
-দিনাত জাহান মুন্নী
আমাদের দু’জনের বাড়ি চাঁদপুরে। ছোটবেলায় শিল্পকলা একাডেমীতে দু’জনেই গান করতাম। ১৯৯৭ সালের কথা। বকুল তখন ভোরের কাগজের সহসম্পাদক। আমি তখন ইডেন কলেজে পড়ি। হোস্টেলে থাকি। এক সন্ধ্যায় হোস্টেলের সামনে এক বন্ধুকে নিয়ে হাজির হন বকুল। অনেক বছর পর দেখা হলো দু’জনের। গান নিয়ে কথা হলো আমাদের মধ্যে। সেই শুরু। তারপর দেখাশোনা কথাবার্তা প্রায়ই হতো। একদিন বকুল তাঁর মনের কথা খুলে বললো আমাকে। বকুলকে দেখে আমার ভালো লাগত। বিয়ের আগে সাড়ে ৩ মাস নতুন করে আবার পরিচয়, প্রেম, ঐ সময়ে বকুলের সবকিছুই ভালো লেগেছে আমার। ফোনে কথা হতো। সেই সময়ে আমার হাতে যে একটা ফোন আছে সেটা ভাবতেও ভালো লাগত। ১৯৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর আমরা বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হই।
আমরা দু’জন ভালো বন্ধু
-ইরেশ যাকের
আমি তখন স্কলাষ্টিকা স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ি। সে বয়সেই প্রথম ভালো লাগায় পড়ে গেলাম। মেয়েটির নাম সাতুয়া। আমার সহপাঠী ছিল। আরও একটা সত্য কথা বলি। ছোটবেলায় আমি খুব দুষ্টু ছিলাম। আমরা ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা বেশি খেলতাম। আর চেষ্টা করতাম টিফিনের ফাঁকে দু’জনে একসঙ্গে কাটাতে। সাতুয়ার সাথে প্রথম যেদিন পরিচয় হলো সেদিন কোনোভাবেই তার বাসার টেলিফোন নাম্বার নিতে পারছিলাম না। এর মধ্যে আমার এক বন্ধু হঠাৎ করে একদিন বলল, সে মেয়েটিকে পছন্দ করে। ত্রিভুজ প্রেম। রাতভর এ চিনত্মা করে মাথায় বুদ্ধি এসে গেল। মেয়েটির কাছে গিয়ে বললাম, তোমাকে একটি ছেলে খুব পছন্দ করে। তাঁর থেকে সাবধান থাকা দরকার। তোমার বাসার ফোন নম্বরটা আমাকে দাও। ছেলেটার বিষয়ে কোনো আপডেট থাকলে সঙ্গে সঙ্গে তোমাকে জানাবো। কথায় কাজ হলো ফোন নম্বর পেলাম। এরপর শুরু হলো ফোনে কথা বলা। ওই যে আগে বলেছি অভিভাবকদের মাঝে আমার নাম ডাক ছিল। তাই বাসায় ফোন দিলে কোনো সমস্যা হতো না। সবাই জানতো আমি হোম ওয়ার্কের জন্য তাকে ফোন করছি। তাই পিতা-মাতাদের মধ্যেও আগ্রহের কমতি ছিল না। তবে এ পর্যনত্মই। আমরা প্রেমের বিষয়ে আর কথা বলিনি। ছোটবেলা থেকে ও-লেভেল পর্যনত্ম আমরা একসঙ্গে পড়েছি। আমরা দু’জন এখনো ভালো বন্ধু।
ছেলেটির কথা গোপনই থাক
-মম
অক্ষর গুলো রক্ত দিয়ে লেখা
-পরীমনি
তখন আমি পিরোজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমার নানা। বুঝতেই পারছেন, স্কুলে কেউ আমাকে প্রেমের প্রসত্মাব দিতে সাহস পায়নি। আমি তখন নবম শ্রেণির ছাত্রী। জুলিয়া নামের আমার এক বান্ধবীর কাছ থেকে জানতে পারি যে পাশের গ্রামের অনিক নামে একটি ছেলে আমাকে খুব পছন্দ করে। ছেলেটি তখন কলেজে পড়ত। আমাদের বাসার পাশেই এক স্যারের কাছে পড়তে যেতাম। দেখতাম ছেলেটি আমাকে দেখার জন্য খুব দূরে মোটর সাইকেলে বসে থাকত। এভাবে প্রতিদিনই ছেলেটি আমাদের গ্রামে আসত। স্যারের বাসায় যাওয়া আসার পথে ছেলেটিকে দূরে বসে থাকতে দেখতাম। একসময় ছেলেটির প্রতি আমারও কিছুটা ভালো লাগা তৈরি হয়। একদিন ছেলেটি ‘আই লাভ ইউ’ লিখে একটি কার্ড বান্ধবীকে দিয়ে আমার কাছে পাঠায়। মনে হলো অক্ষরগুলো রক্ত দিয়ে লিখেছে। গ্রামের পাশে একটা সেতু ছিল। ওখানেই ছেলেটির সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়। প্রথম দেখাতেই আমার মনের মধ্যে দারুণ এক অনুভূতি কাজ করছিল। কাছে যেতেই ছেলেটির মধ্যে লজ্জা লজ্জা ভাব বুঝতে পারলাম। তাকে জিজ্ঞেস করলাম। তুমি কি রক্ত দিয়ে লিখেছ? কথা শুনে ছেলেটি মোটর সাইকেল নিয়ে দ্রুত চলে যায়। পরে জানতে পারি সত্যিই সে এ কাজটা করেছিল। এরপর থেকে ছেলেটিকে আর আমাদের গ্রামে আসতে দেখিনি। ধীরে ধীরে আমার মধ্যেও ছেলেটির প্রতি ভালো লাগার অনুভূতিটা কমে যায়। একসময় স্কুল শেষ করে ঢাকায় এসে কলেজে ভর্তি হই। চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ি। ব্যসত্মতাও বেড়ে যায়। ছেলেটির সঙ্গে আর দেখা হয়নি।
চোখাচোখি হতো বারান্দা থেকে বারান্দা
-নুসরাত ফারিয়া
একসঙ্গে তিনজনের প্রেমে পড়েছিলাম
-ফাহমিদা নবী
টিফিনের সময় আমাদের চোখাচোখি হত
-নাবিলা
আমার স্কুল জীবনটা কেঁটেছে সৌদি আরবে। পড়তাম বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অব জেদ্দায়। সেখানকার পরিবেশ ছিল অন্যরকম। সেখানে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একটি ছেলের প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছিলাম। এটা হয়তো ভালোলাগা। একতরফা ছিল না। কারণ ওই ছেলের চোখ দেখে বুঝতাম সেও আমাকে পছন্দ করে। বিশেষ করে টিফিনের সময় আমাদের চোখাচোখি হতো। কথা হতো। ছেলেটি অন্য ক্লাশের হওয়ায় বিরতি দিয়েই হতো। আবার বাসায় ফিরে ফোনে কথা হতো। স্কুলে এতটা সময় পার করলেও কখনো তাঁর সঙ্গে ভালো লাগার বিষয় নিয়ে কথা বলা হয়নি। এরপর বাংলাদেশে এসে তাঁর সঙ্গে আমার দেখা ও যোগাযোগ হয়। একদিন তাঁকে পছন্দের কথা বলেই ফেললাম। তবে সেটা ছিল স্মৃতিচারণমূলক। তাঁকে বলেছিলাম একসময় আমি তাঁকে পছন্দ করতাম। মনেমনে দূর্বলতাও ছিল। শুনে সে হাসল। হেসে আমাকেও একই কথা বলেছিল। আর প্রথম প্রেম বলতে যা বোঝায় তা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়। আমি পড়াশোনা করেছি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে। পাশাপাশি ক্যাম্পাস হওয়ায় আমাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। আমরা বেশ ভালো সময় কাটিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনটা উপভোগ করেছি।
ওই আমার প্রথম
-আমিন খান
মাত্র নতুন চলচ্চিত্রে অভিনয়ে এসেছি। তখন আমার অভিনীত দু’একটা ছবি মুক্তি পেয়েছে। ওই সময় একটা শপিং মলে আমার স্ত্রীকে প্রথম দেখেছিলাম। যদিও তখনও আমার স্ত্রী হয়নি সে। এরপর ওর পিছু নিয়ে বাসা পর্যনত্ম যাই। সেই থেকে প্রায়ই ওর বাসার সামনে বসে থাকতাম। এভাবেই দেখাদেখি চলতে থাকে। তারপর প্রেম। এক পর্যায়ে বিয়ে করি আমরা। ওই আমার প্রথম প্রেম, ভালোবাসা এবং শেষ ভালোবাসা।