Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

দেশের গানই আমার প্রাণ-অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু

চেয়ারম্যান, সান কমিউনিকেশন, স্কয়ার টয়লেট্রিজ, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাছরাঙা টেলিভিশন

তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়ে গেল উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় লোকসংগীতের আসর ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব ২০১৭’। নভেম্বরের নয় তারিখ থেকে আর্মি স্টেডিয়ামে তৃতীয় বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো এই উৎসব।

তিনদিনব্যাপী এই উৎসবে মোট আটটি দেশের গুণী সংগীতজ্ঞরা মঞ্চ মাতিয়েছেন। নিরাপত্তার প্রয়োজনে এবার রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত চলছে এই অনুষ্ঠান। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে উৎসবে যোগ দিয়েছেন সাধারণ মানুষ এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা। ২০ হাজার মানুষের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন আর্মি স্টেডিয়ামে প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ মধ্যরাত পর্যন্ত উপভোগ করেছে এই উৎসব। এবারের উৎসবে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ইরান, ব্রাজিল, মালী, ফ্রান্স, জাপান প্রভৃতি দেশের ১৪০ জন শিল্পী অংশ নিয়েছেন। ফোক ফেস্টের আয়োজক প্রতিষ্ঠান সান কমিউনিকেশন। ফোক গানের এবারের উৎসবে বাংলাদেশের শাহজাহান মুন্সি, আরিফ দেওয়ান, ফকির শাহাবুদ্দিন, শাহনাজ বেলী, শাহ আলম সরকার, আলেয়া বেগম, বাউলা ও বাউলিয়ানা সংগীত পরিবেশন করে। ভারত থেকে এসেছিলেন পাপন, নুরান সিস্টার্স, বাসুদেব দাস বাউল। মালী থেকে বিশ্বখ্যাত গ্র্যামী বিজয়ী তিনারিওয়েন ব্যান্ডও এসেছিল এই উৎসবে। পাকিস্তান থেকে মিকাল হাসান ব্যান্ড, নেপাল থেকে কুটুম্বা, তিব্বতের ফোক শিল্পী তেনজিন চোয়েগাল, ইরান থেকে রাস্তাক, ব্রাজিল থেকে মোরিসিও টিযুমবাহসহ শেকড় সন্ধানী আরো অনেক শিল্পী উৎসবে উপস্থিত ছিলেন। এবারের আয়োজনের সার্বিক দিকসহ স্কয়ার গ্রæপ-এর নানা কার্যক্রম নিয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে মিলিত হয়েছিলেন সান কমিউনিকেশন্স, স্কয়ার টয়লেট্রিজ, ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চেয়ারম্যান ও মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাজু আলীম।

আনন্দ আলো: ঢাকা আন্তর্জাতিক ফোক ফেস্টিভ্যাল জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবের জন্যে সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন সৃজনশীল মানুষেরা। এবারের আয়োজন সম্পন্ন হলো। এ ব্যাপারে কিছু বলুন।

অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু: ফোক ফেস্টিভ্যাল তৃতীয় বছরে পা রেখেছে। প্রথম বছরে আমাদের দেশের বরেণ্য লোক সংগীত শিল্পীদের দিয়ে আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। এর অন্যতম কারণ ছিল দেশের শিল্পীদের মাধ্যমে এক্ষেত্রে সবাইকে আগ্রহী করে তোলা। তাছাড়া আন্তর্জাতিক মানের দেশীয় শিল্পীদের মাধ্যমে লোকসংগীতের বিশ^ায়নকে তুলে ধরা।  কিন্তু এর পর থেকে নতুন নতুন শিল্পী যারা খুব ভালো গান করছে তাদেরকে সম্পৃক্ত করেছি। যাদের এখনো ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়নি তাদেরকে সম্পৃক্ত করছি। গেল বছর আমরা ভজন ক্ষ্যাপাকে ফোকাস করেছি। এবারও এমন কিছু শিল্পীকে সুযোগ দেয়া হয়েছে এর উদ্দেশ্য হলো আমাদের দেশের লোকসংগীতকে সারা বিশ্বে পরিচয় করিয়ে দেয়া। শুধু বাংলাদেশকে নিয়ে থাকলে তো এই আয়োজনের আমেজ ততটা থাকতো না। কিন্তু যখনই সারাবিশে^র লোকসংগীতকে যুক্ত করেছি তখনই এর গুরুত্ব সারা বিশে^ই ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু প্রবাসী বাঙালিরা নয়, বিদেশিরাও এই উৎসবের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। কানাডা, আয়ারল্যান্ড, চায়না, ইরানসহ বিভিন্ন দেশের লোকসংগীতের সম্মিলন এটি। এতে করে কিন্তু আমাদের দেশের শিল্পীদের মান মর্যাদাও উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে। আমাদের এই যাত্রা শুরু হয়েছে বাংলাদেশের লোকসংগীতকে বিশ^ দরবারে তুলে ধরতে। এটি শুরু হয়েছিল ম্যাজিক বাউলিয়ানা থেকে কিন্তু এটি ছিল একেবারেই আমাদের নিজস্ব বাঙালি শিল্পীদের দিয়ে। ম্যাজিক বাউলিয়ানা থেকে আমাদের পরিকল্পনা এসেছে এটাকে কীভাবে আমরা ভিন্নমাত্রা দিতে পারি এবং এতে আন্তর্জাতিক ছোঁয়া লাগাতে পারি।

আনন্দ আলো: এবারের আয়োজনে বিশেষত্ব কি ছিল?

অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু: প্রতিবারই যেরকম হয়- নতুন নতুন শিল্পীদের আমরা পরিচয় করিয়ে দেই। এটাই এর বিশেষত্ব। কিছু শিল্পী থাকেন পুরনো বাকিরা নতুন। দুই প্রজন্মের সম্মিলনটা যাতে ভারসাম্যপূর্ণ হয় এবারও তারই চেষ্টা ছিল। তৃতীয় বারেরমতো আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠান করার অনুমতি আমরা পেয়েছিলাম। এর জন্যে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

আনন্দ আলো: সরকারের তরফ থেকে কি ধরনের সহযোগিতা হয়েছে?

অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু: আপনারা জানেন এই উৎসব সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেখা গেছে। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন এবং শুধু আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্যে এটি নির্ধারিত ছিল। আমরা সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। বিদেশি শিল্পীদের দেশে নিয়ে আসা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া থাকে। শুধু সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে সহযোগিতাই না, আমাদের যে আইনি প্রতিষ্ঠানগুলো আছে- এনএসআই, ডিজিএফআই, পুলিশ প্রশাসন এই সব জায়গা থেকেই আমাদেরকে অনুমতি নিতে হয়। তার পরে এর সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জড়িত। আমরা সরাসরি শিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ করি তারা তাদের মতো করে চলে আসেন। এই বিষয়গুলো ফ্যাসিলেটেড করা এটিও সময়ের ব্যাপার। ইট উইল টেক সাম টাইম। দ্রæত গতিতে সরকারি কর্তৃপক্ষ এই কাজগুলো আমাদের করে দিয়েছে।

আনন্দ আলো: সান ইভেন্ট বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। এই ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে খুবই ভালো করছে। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?

অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু: এটি একটি উৎসব। আপনি নিজেও গিয়েছেন নিশ্চয়ই। আমরা স্টেডিয়ামে ঢোকার সময় তল্লাশী করি, দীর্ঘ লাইন ধরে মানুষ ঢোকে, অনেকে মনে করে এটি কালক্ষেপণ। কিন্তু মানুষ যাতে লাইনে দাঁড়িয়ে বোরিং না হয় তার জন্যে স্টেডিয়ামে ঢোকার সময় জায়ান্ট স্ক্রিন দেয়া হয়েছিল। ভিতরে ফুড কোর্ট ছিল। ফ্রিতে পানি সরবরাহ করা হয়েছে। মানুষ এত সুন্দরভাবে শৃঙ্খলার সঙ্গে আনন্দ করতে জানে, উপভোগ করতে জানে এবং দেশের মানটাকে এত উঁচু পর্যায়ে নিয়ে যেতে জানে- এটি কিন্তু এই ধরনের অনুষ্ঠান থেকেই বোঝা যায়।

আনন্দ আলো: এবারের আয়োজনে পার্টনার কারা ছিলেন?

অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু: আমাদের সঙ্গে মাছরাঙা টিভি, ইস্পাহানী ছিল। স্কয়ার হসপিটাল, ঢাকা ব্যাংক শুরু থেকেই এই আয়োজনের সঙ্গে আছে। এটির নিবেদক স্কয়ার টয়লেট্রিজ এর মেরিল। বেঙ্গল এবং বেঙ্গল ডিজিটাল ছিল সম্প্রচারে। গ্রীণ ডেল্টা ইন্সুরেন্সও ছিল আমাদের সঙ্গে। এছাড়া আরও বেশ কিছু ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান এবারের আয়োজনের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে।

আনন্দ আলো: বেঙ্গল গ্রæপ-এর ক্ল্যাসিক্যাল ফেস্টিভ্যালের সঙ্গে আপনারাও জড়িত ছিলেন। কিন্তু তারা এবার আয়োজনের অনুমতি পায়নি। এই বিষয়ে কিছু বলুন?

অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু: এটি খুব ভালো উদ্যোগ ছিল এবং এটির মাধ্যমে বাংলাদেশের সংস্কৃতির মান বেড়েছিল। অনেকে এটির সঙ্গে মিলিয়ে তাদের ট্রাভেল প্ল্যান করতো। আমরা ছিলাম স্পন্সর। কিন্তু এবার আমরা এই আয়োজনটি মিস করবো। হয়তো আগামীতে তাদের আবারো পাব সেই প্রত্যাশা করছি। কেন হলো না, কি কারণে হলো তা তারাই জানেন কিন্তু আগামী দিনে আবার হবে এই প্রত্যাশা থাকবে।

আনন্দ আলো: প্রথম আয়োজনের সময় বলেছিলেন আপনার নিজ জেলা পাবনায় এই ধরনের আয়োজন করবেন- ভবিষ্যতে তা কি সম্ভব হবে?

অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু: হ্যাঁ সম্ভব। কিন্তু পাবনায় সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো অবকাঠামো সেইভাবে গড়ে ওঠেনি। শিল্পীদের নিরাপত্তা হয়তো দেয়া যাবে কিন্তু তাদের থাকার যে সুব্যবস্থা তা এখনো পাবনায় গড়ে ওঠেনি। তাই আন্তর্জাতিক মানের কোনো খেলার আয়োজন আমরা করতে পারি না। তাই পাবনায় করা সম্ভব হচ্ছে না। কিছু ডেভেলপমেন্ট সেখানে হচ্ছে। সেখানে ১০০ জনের মতো মানুষের থাকার ব্যবস্থা করতে পারবেন। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট করতে হলে তার সঙ্গে কান্ট্রি ইমেজেরও ব্যাপার থাকে। তাই সবকিছু ভাবতে হয়।

আনন্দ আলো: উৎসবে অনেক দেশের লোক গান শুনেছেন, কোন দেশের শিল্পীদের গান বেশি ভালো লেগেছে?

অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু: আমার দেশের গান, এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। আমার জীবন শুরু হয়েছে পাবনা, নদীর ওই পাড়ে কুষ্টিয়ায়। আমার গানের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে লালনকে  দিয়ে। এখনকার নামিদামি শিল্পী তখন কিন্তু তারা ঢাকাতেও আসেননি। যেমন- রব ফকির, টুনটুন বাউল তাদের কোনো এক্সপোজারই ছিল না ঢাকায়। তারা কুষ্টিয়ায় এবং আমার পাবনার বাসায় আসতো। আমি তাদেরকে আমন্ত্রণ জানাতাম। একেকবার একেকটা দল এসে আমাদেরকে গান শোনাতো। অনেকেই আছে তাদের তখন ঢাকাতে কিছুই ছিল না।

আনন্দ আলো: মাটির গানের প্রতি আকর্ষণ কি আপনার শৈশব থেকে?

অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু: আমি গ্রামের ছেলে। গ্রাম থেকে শহর, শহর থেকে ঢাকা আর ঢাকা থেকে বিদেশ। ছোটবেলা থেকে এই সব মাটির গান শুনে আমরা বড় হয়েছি।

আনন্দ আলো: দেশের সংস্কৃতির উন্নয়নে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে থাকেন। মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার, ফোক ফেস্টিভ্যাল, মাছরাঙা টেলিভিশন, সানি ইভেন্টসহ অনেক উদ্যোগ আপনাদের। জানতে চাই সাংস্কৃতিক জাগরণে আপনাদের মিডিয়া প্ল্যান কি?

অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু: সকালে ঘুম থেকে উঠে এটি আমি চিন্তা করি না যে, সংস্কৃতির জন্যে কি করবো? এটি আসলে ন্যাচারালি আসে। একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং সেটি ধরে আমরা এগিয়ে যাই। এই যে লোকসংগীতের এত বড় আয়োজন এর সূত্রপাত হয়েছিল ম্যাজিক বাউলিয়ানা থেকে। একটি আইডিয়া আরেক পর্যায়ে চলে যায়। পাবনায় ‘বনমালি’ নামে পুরনো আমলের একটি ইন্সটিউট আছে। এটি সংস্কার করা হলো। উদ্বোধনের দিন আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমি গিয়ে দেখলাম, এটি সংস্কৃতির জন্যে না হয়ে কমিউনিটি সেন্টারের মত হয়ে গেছে। আমরা সবাই মিলে এটির পুনঃ সংস্কার করলাম। আসলে পরিস্থিতি সবকিছু করতে উৎসাহ যোগায়। আমি দেখেছি ছোটবেলায় আমার বাবা মা সেখানে গিয়ে নাটক গান শুনতো। পাবনার তো অনেক ঐতিহ্য এই সমস্ত শিল্পীদের নিয়ে। বারিন মজুমদার, গৌরী প্রসন্ন মজুমদার এই রকম অনেকেই পাবনার। এই প্রতিষ্ঠান এখন সুন্দরভাবে চলছে। প্রতি মাসে অনুষ্ঠান হচ্ছে। যেসব নাট্যদল আছে তাদের কোনো স্পন্সর লাগে না। এখান থেকেই স্পন্সর আসে মানে আমরাই স্পন্সর করি। বনমালী নাম বদলে এখন দেয়া হয়েছে শিল্পকলা কেন্দ্র। পাবনার কিছু মানুষ এখানে মুক্তহস্তে সহযোগিতা করে। আমি আসলে জানি আগামীকাল হয়তো কোনো নতুন সাংস্কৃতিক উদ্যোগে চলে যাব। আমরা যেটা চেষ্টা করি মানটা ধরে রাখতে। আমাদের কাছে অনেকে আসে তাদের পরিকল্পনা নিয়ে কিন্তু সেগুলো ততটা কোয়ালিটিফুল না হলে কি সঙ্গে থাকা যায়?

আনন্দ আলো: সাংস্কৃতিক এবং ব্যবসায়িক সব ধরনের উদ্যোগের প্রধান পুরুষ ছিলেন আপনার পিতা স্যামসন এইচ চৌধুরী। বাবাকে কতটা মিস করেন?

অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু: বাবাকে তো প্রতিদিনই মিস করি। আমরা আজকে যে পর্যায়ে এসেছি এর সবই বাবা মায়ের কৃতিত্ব। আমাদের নিজস্ব কোনো কৃতিত্ব নাই। আমি আমার সন্তানদের বলি- আমার মনে আছে কয়টা শার্ট ছিল আমার। আমার খেলনা ছিল দুইটা। কিন্তু কখনো কোনো কিছুর অভাব বোধ করিনি। বাবা মা দুইজনেই ছিলেন সংস্কৃতিমনা। বাসায় দেখেছি রেডিও ছিল। টেপ রেকর্ডার প্রথম আমার বাবাই পাবনায় নিয়ে এসেছিলেন। বাবা গান শুনতেন। তার গানের সংগ্রহ ছিল ব্যাপক। বনমালির কথা বললাম সেটি তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছেন। সারা বিশে^র নামিদামি শিল্পীর গান শুনতেন। গাড়িতে যেতে যেতে গান শুনতেন বাবা।

আনন্দ আলো: কসমেটিক্স, ওষুধ এবং কর্পোরেট অঙ্গনে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। টোটাল স্কয়ার গ্রæপ-এর পরিকল্পনা কি?

অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু:  আমাদের বাবা দেশকে নিয়ে অনেক পজিটিভ স্বপ্ন দেখতেন। অনেকাশে তার সেই স্বপ্ন পুরণ হয়েছে। আমরা দেশ থেকে নেয়ার চেয়ে দিতে ভালোবাসি বেশি। কারণ এই দেশের আলো হাওয়ায় আমরা বড় হয়েছি। বাবার লক্ষ্য ছিল এই দেশের দারিদ্র্যতা দূর করতে ভ‚মিকা রাখা কর্মসংস্থানের মাধ্যমে। অনেক সময় বলতাম, বাবা তুমি এত কাজ করো কেন? তিনি বলতেন, আমার জীবনে যা পাওয়ার পেয়ে গেছি এখন কাজ করছি মানুষের জন্যে। আর একটা বিষয়ে বাবা আপসহীন ছিলেন, তা হলো- পণ্যের কোয়ালিটি।

আনন্দ আলো: বিপিএল নিয়ে কিছু বলুন?

অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু: এবার বিপিএল আমরা যুক্ত হয়েছি কাকতালীয় ভাবে। সিলেট সিক্সার্স দল ঘোষণা করলো এবং এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক হলেন আমাদের মাননীয় অর্থমন্ত্রী। তিনি আর বাবা ৪০ বছরের বন্ধু ছিলেন। আমি তাকে চাচা ডাকি। চাচা যখন বললেন, তুমি আমার সঙ্গে থাকবে, তখন আমি জিজ্ঞেসও করিনি কিসের ব্যাপারে? এইভাবেই বিপিএল-এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছি।