বন্ধুত্ব আসলে কী? কেউ বলেন বন্ধুত্ব মানে আস্থা আর নির্ভরতা। কেউ বলেন বিপদে-আপদে যে মানুষটি পাশে এসে দাঁড়ায় সেই হলো প্রকৃত বন্ধু। প্রতিটি মানুষের জীবনে বন্ধুর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হ্যাঁ, জীবন গড়ার ক্ষেত্রে একজন ভালো বন্ধুর ভূমিকা অনেক। এই বাস্তবতায় ওরা তিনজন স্থপতি রাজীব আহমেদ, স্থপতি সারাওয়াত ইকবাল ও স্থপতি মনন বিন ইউনুস অনেক ভালো বন্ধ্।ু বুয়েটে পড়াকালে তিনজনের মধ্যে সখ্যতা গড়ে ওঠে। তিন বন্ধু মিলেই কিছু একটা করার স্বপ্ন দেখেন। সেই থেকে আজো তাদের বন্ধুত্ব অটল। সুখে-দুঃখে তিনজন তিনজনের পাশে এসে দাঁড়ান। স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন করতে চান তিনজন মিলেই। রাজীব ও সারাওয়াত তারা দুজন স্বামী-স্ত্রী। শুদ্ধ স্থাপত্যচর্চা, স্থানীয় সংস্কৃতি, প্রকৃতি ও মানুষের জন্য স্থাপত্য এই বিশ্বাস তিনবন্ধুর মাঝে তৈরি হয় স্থাপত্য শিক্ষার সময়কালে। ২০১০ সালে তিনজনই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর স্থাপত্য বিভাগ থেকে ব্যাচেলর অব আর্কিটেকচার ডিগ্রি লাভ করেন। তাদের রয়েছে ‘রুফলাইনারস স্টুডিও অফ আর্কিটেকচার’ নামের একটি কনসালটেন্সি ফার্ম। যা এখন এ দেশের প্রতিষ্ঠিত আর্কিটেক্ট প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানকে একটা আস্থার জায়গায় আনার পেছনে রয়েছে তাদের নিরলস সংগ্রাম ও পরিশ্রম। ইতোমধ্যে এই প্রতিষ্ঠানটি বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার ডিজাইন তৈরি করে অনেকের নজর কেড়েছে। তাদের সাফল্যের ঝুড়িতে রয়েছে বেশ কিছু পুরস্কার। এবার শাহ্ সিমেন্ট নির্মাণে আমি’তে তিনবন্ধুকে নিয়ে প্রতিবেদন। লিখেছেন- মোহাম্মদ তারেক
২০১০ সালে তিনজনই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর স্থাপত্য বিভাগ থেকে ব্যাচেলর অব আর্কিটেকচার ডিগ্রি লাভ করেন। পাস করে বের হওয়ার পর পরই রাজীব ও সারাওয়াত যোগ দেন ‘সিনথেসিস আর্কিটেক্টস’ প্রতিষ্ঠানে। আর মনন আরবানা’তে যোগ দেন। ২০১২ সালে নিজেরা গড়ে তোলেন ‘রুফলাইনারস স্টুডিও অফ আর্কিটেকচার’ নামের একটি কনসালটেন্সি ফার্ম। আরবানাতে বছর খানেক কাজ করার পর মনন বিন ইউনুস উচ্চ শিক্ষার জন্য পাড়ি জমান জার্মানিতে। ২০১৩ সালে জার্মানির দেসাউ ইনস্টিটিউট অফ আর্কিটেকচার থেকে আর্কিটেকচারাল ডিজাইনের ওপর মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। একই সময়ে তিনি জার্মানিতে ‘রোহডেকান আর্কিটেক্টস’ নামের একটি ফার্মে কাজ করেন। বিশ্বখ্যাত ফার্ম এইচপিপিতে যোগ দেন। এইচপিপি এর সাংহাই ব্র্যাঞ্চ এ স্থপতি হিসেবে তিন বছর কাজ করেন। মনন বিন ইউনুস বিদেশে থাকাকালিন সময়ে ‘রুফলাইনারস স্টুডিও অফ আর্কিটেকচারের’ সাথেও কাজ করতেন। ২০১৬ সালে তিনি দেশে ফিরে এসে রুফ লাইনারস স্টুডিও অফ আর্কিটেকচার ফার্মে পার্টনার হিসেবে যোগদেন। এরপর থেকে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। বেশ কয়েক বছর ধরে নিরলস একাগ্রতা, কঠোর পরিশ্রম, দৃঢ় সময়নুবর্তিতা, লক্ষ্যে অভিনিষ্ট এই প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তোলেছে ক্লায়েন্টের আস্থার জায়গা। সময়ে সঙ্গে বহুবিধ ট্রেনিং, একাগ্রতা আর মেধার সমন্বয়ে তৈরি করেছে অসাধারণ কিছু সৃষ্টি।
আপনাদের কাজের বৈশিষ্ট্য কী?
এ প্রশ্নের উত্তরে স্থপতি রাজীব আহমেদ বলেন, স্থাপত্যচর্চায় আমরা মূলত দলগত ভাবে করায় বিশ্বাসী। আমাদের দেশ তথা সারা বিশ্বেই বিভিন্ন বিন্যাসে স্থপতিরা কাজ করছে। আমরা বোধ করি দলগত কাজের মাধ্যমে তুলনামূরক বেশি সামগ্রিক ও স্বকীয় ধারণা পাওয়া যায়, যা স্থাপত্যচর্চায় সৌকর্যতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
এ প্রসঙ্গে স্থপতি মনন বিন ইউনুস বলেন, নতুন প্রজন্মের তরুণ স্থপতিদের ওপর আমরা প্রচন্ড আস্থাশীল। আমরা বিশ্বাস করি, তারা তাদের হৃদয়ের ভেতর দিনবদলের একটা তীব্র আকাংখা লালন করে এবং তাদের এই স্বপ্নটাই একদিন এই দেশটাকে স্থাপত্যে বহুদুর এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশের আবহাওয়া, জলবায়ু ও প্রকৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর দেন তারা। এই স্থপতিরা তাদের নিজেদের কাজ সততা ও নিষ্ঠার সাথে করতে ভালোবাসেন। নিজেদের পেশার কাছে দায়বদ্ধ থেকে সেটাকে সততার সাথে শেষ করতে চায় তারা।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থপতি সারাওয়াত ইকবাল বলেন, ভবিষ্যতের ভাবনার চেয়ে আমরা বরং এই সময়টাকে আমাদের কাজের মাধ্যমে উদযাপন করতে চাই। আর যা কিছু সামনে আসে, আসুক না।
তিন বন্ধুর রুফলাইনারস স্টুডিও অফ আর্কিটেকচার
- শাহ্ সিমেন্ট নির্মাণে আমি