গুসি শান্তি পুরস্কার পেলেন শাইখ সিরাজ

গুসি শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ।  টেলিভিশনে তিন দশকেরও বেশি সময় উন্নয়ন সাংবাদিকতা ও দারিদ্র দূরীকরণে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ফিলিপিনের গুসি পিস প্রাইজ ফাউন্ডেশন এই পুরস্কার ঘোষণা করেছে।  আগামী ২৫ নভেম্বর ফিলিপিনের রাজধানী ম্যানিলার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার গ্রহণ করবেন শাইখ সিরাজ।  তার সঙ্গে এ বছর এই পুরস্কার পাচ্ছেন বেলারুশের সাবেক প্রেসিডেন্ট শিক্ষাবিদ স্ট্যারিসলাভ শুশকেভিচ, অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানী ড. গানথের বন, চীনের মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব ড. হুয়াং জিয়েফু।  এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আতিউর রহমান আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মর‌্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কারে ভূষিত হন।

শাইখ সিরাজ কৃষি ও উন্নয়ন সাংবাদিকতায় সুদীর্ঘ পথচলার স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৫ সালে লাভ করেন দেশের অন্যতম সম্মানসূচক জাতীয় পুরস্কার একুশে পদক, ২০০৯ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্হা ক্ষুধার বিরুদ্ধে সফল ও কৃতীত্বপূর্ণ সাংবাদিকতার জন্য প্রদান করে এ এইচ বুর্মা এ্যাওয়ার্ড।  এছাড়া তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিম লে অর্ধশতাধিক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

শাইখ সিরাজের গণমাধ্যম পেশার সঙ্গে সংযুক্তি গত শতকের সত্তরের দশকে।  বাংলাদেশ টেলিভিশনে টানা ১৪ বছর মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠান করে তিনি বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেন।  এদেশে পতিত পুকুরের মাছ চাষ, খাঁচায় হাঁস-মুরগি পালন, বাড়ির আঙিনা ও ছাদে সবজি চাষ, কাজী পেয়ারার চাষ, ধান ও পাটের বাইরে সমন্বিত কৃষিকাজ, উচ্চমূল্যের ফসল আবাদের মতো কৃষিকৌশলের সফল সম্প্রসারক শাইখ সিরাজ।  এই সম্প্রসারণ কাজে সহায়ক হিসেবে তিনি ব্যবহার করেছেন টেলিভিশন।  এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের গণমুখী তৎপরতারও এক নতুন ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।  ২০০৪ সাল থেকে অদ্যবধি চ্যানেল আইতে দিয়ে মাটি ও মানুষ ও হৃদয়ে মাটি ও মানুষের ডাক অনুষ্ঠান করছেন তিনি।  এছাড়া তিনি চ্যানেল আই পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত থেকে প্রতিদিনের বিশেষায়িত কৃষি সংবাদ ও জাতীয় সংবাদের সঙ্গে কৃষি সংবাদকে অপরিহার্য করে এক নতুন নজির প্রতিষ্ঠা করেন।  শাইখ সিরাজ এদেশের কৃষককে অধিকার সচেতন করে তোলা, কৃষকের সঙ্গে সরকার ও নীতি নির্ধারকের সেতুবন্ধন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এক সফল ও বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছেন।  তিনি এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত সেরা অনুশীলনগুলো দেশের কৃষিতে যুক্ত করতে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন।  তিনি স্বপ্ন দেখেন সারা পৃথিবীর কৃষির ক্রমবিকাশ ও উৎকর্ষকে সার্বজনীন করে তোলার।  জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আজকের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার দিক নির্দেশনা অনুসন্ধানে সবসময় সক্রিয় তিনি।  টেলিভিশন, রেডিও, পত্র-পত্রিকা থেকে শুরু করে আজকের বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুততম ও কার্যক্রম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে তিনি খাদ্য নিরাপত্তার, দারিদ্র নিরসন ও কৃষি উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন।  তিনি চ্যানেল আই এর পরিচালক ও বার্তা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

  • প্রতিবেদন
Comments (০)
Add Comment