সত্যি কী আমাদের ক্রিকেট এগুলো?

রেজানুর রহমান

আমার এই লেখা পড়ে অনেকেই হয়তো নাখোশ হবেন। বলবেন, এই লোক বলে কী? বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের সাথে এতো ভালো খেলল, সিরিজ জিতল, অথচ এই লোক বলে কিনা বাংলাদেশ ভালো খেলেনি? এই লোকের মাথায় গন্ডগোল আছে।
তর্কে জড়াব না। ক্রিকেটে বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে এটা সত্য। তা না হলে একটানা ৩টি দেশের বিরুদ্ধে জয় পায় কি করে? বিদেশে অর্থাৎ জিম্বাবুয়েতে গিয়ে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই করল। জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশের কাছে দাঁড়াতেই পারেনি। দেশে ফিরেই খেলতে হল অস্ট্রেলিয়ার সাথে। ৫ ম্যাচ টি-২০ সিরিজের ৪টিতেই জয়। অস্ট্রেলিয়ার পর এলো নিউজিল্যান্ড। ৫ ম্যাচ টি-২০ সিরিজের ৩টিতেই জয়। দৃশ্যত, বাংলাদেশ তো জয়ের ধারাই বজায় রেখেছে। কাজেই এখানে নেতিবাচক মন্তব্যের কি সুযোগ আছে?
না, নেতিবাচক মন্তব্যের কোনো সুযোগ নেই। দল যখন জয়ের মধ্যে থাকে তখন আমরা নেতিবাচক কোনো কিছুই খুজে পাই না! খুঁজে পেলেও বলি না। নিউজিল্যান্ড এর যে সব খেলোয়াড় টি-২০ বিশ্বকাপে খেলবে তারা বাংলাদেশে আসেনি। এসেছিল দ্বিতীয় সারীর দল। তাদের সাথেই বাংলাদেশকে কঠিন লড়াই করতে হয়েছে। প্রথম খেলায় নিউজিল্যান্ড উইকেট ঠিক ভাবে বুঝতে পারেনি বলেই শোচনীয় ভাবে পরাজয় বরণ করে। কিন্তু দ্বিতীয় খেলায় ঘুরে দাঁড়িয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ভাগ্য ভালো বলতে হবে। তাই বাংলাদেশ জিতেছে। তৃতীয় খেলায় নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় সারীর খেলোয়াড়দের কাছে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের অসহায় আত্মসমর্পন আলোচনার দাবী রাখে। ৪র্থ খেলায় বাংলাদেশ অনেক কষ্টে জয় লাভ করে। কিন্তু পঞ্চম খেলায় বাংলাদেশ আবার অসহায় আত্মসমর্পন করে। ঘরের মাঠে এধরনের আত্মসমর্পন সত্যি কী ক্রিকেটের উন্নতির আভাষ দেয়?


পঞ্চম টি-২০ তে সাকিব আল হাসান খেলেননি। বোধকরি তার ধারনা হয়েছিল নিউজিল্যান্ড ৫ম ম্যাচেও হারবে। তাই সামান্য ইনজুরির কারণে মাঠে নামেননি সাকিব। বোর্ড প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপনের সাথে গ্যালারিতে বসে সতীর্থদের খেলা দেখেছেন। মাঠে তার সতীর্থরা আসছে আর যাচ্ছে। এই দৃশ্য দেখার পরও নাকি সাকিব আল হাসান বোর্ড প্রেসিডেন্টকে আশ্বস্থ করেছেন আসন্ন টি-২০ সিরিজে অনেক ভালো করবে বাংলাদেশ।
সাকিব আল হাসানের কথাই সত্য হোক। কিন্তু পরিস্থিতি, পরিবেশ কি তাই বলে? বিশ্বসেরা ক্রিকেটার তামিম ইকবাল এবার বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে নেই। তামিম বিশ্বকাপ খেলতে চান না বলার সাথে সাথেই ক্রিকেট বোর্ড তার সিদ্ধান্ত লুফে নিল। বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা কথা বলা হচ্ছে। তবে কথা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মন্তব্যের ওপর ভিত্তি করে তো আর বোর্ড চলবে না। বোর্ড চলবে বোর্ডের কথায়, বোর্ডের সিদ্ধান্তে। তবুও বোর্ডের কাছে বিনীত একটি প্রশ্ন রাখতে চাই। একটি দলে কে কে থাকলো তার ওপরও প্রতিপক্ষের সমীহ, গুরুত্ব নির্ভর করে। সাকিব, তামিম, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহীম একটি দলে থাকা মানেই অদম্য সাহসের প্রকাশ। বিশ্বকাপ বলেই কথা। তামিম বলল আর আমরা তার সিদ্ধান্ত মেনে নিলাম? কোনো ভাবেই কী তামিমকে বিশ্বকাপ দলে রাখা যেত না?
জয় হোক বাংলাদেশের ক্রিকেটের।

  • খেলা
  • শীর্ষ কাহিনি