তারকাদের প্রথম রোজগার

প্রথম রোজগার বলে একটা চমক থাকে সবার জীবনে। বিশেষ করে তারকাদের জীবনের প্রথম রোজগার নিয়ে কতইনা আগ্রহ থাকে ভক্তদের। সেই আগ্রহ মেটাতেই এই আয়োজন-
অপু বিশ্বাস: ছোটবেলায় নাচের অনেক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। তখন পুরস্কার হিসেবে টাকা পেয়েছি। সে কথা স্পষ্ট মনে নেই। তবে পেশাগত জীবনে কোটি টাকার কাবিন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে প্রথম পারিশ্রমিক পেয়েছিলাম ২৫ হাজার টাকা। টাকাটা পেয়ে মায়ের জন্য স্বর্ণের কানের দুল এবং বাসার জন্য মাইক্রোওভেন কিনেছিলাম। আমার ইলেকট্রনিক জিনিসের প্রতি অনেক আগ্রহ রয়েছে।
আমিন খান: প্রথম পারিশ্রমিক ছিল এক টাকা। সেই এক টাকা এখনো আমার কাছে আছে। অ্যালবামে আমি সংগ্রহ করে রেখেছি। প্রথম ছবির জন্য সাইনিং মানি পেয়েছিলাম এটা। শুধু যে প্রথম ছবি তা নয়, আমার প্রতিটি ছবির সাইনিং মানি থেকে একটা নোট অ্যালবামে রাখি। এটাও বলতে হবে, প্রথম ছবির জন্য এক টাকা পেলেও আমার সব প্রয়োজন প্রযোজক মিটিয়েছিলেন। আমার পোশাক, জুতা, মোজা সবই কিনে দিয়েছিলেন তিনি। একটা ছেলেকে গেটআপে আনতে যা যা প্রয়োজন ছিল, সবটাই তিনি দিয়েছিলেন আমাকে। তাই কষ্ট ছিল না। সেই জন্যই হয়তো এই নামটা হয়েছে।
বিদ্যা সিনহা মিম: সুন্দরী অন্বেষণের প্রতিযোগিতা Ôলাক্স-চ্যানেল আই সুপারষ্টার’ দিয়ে তাঁর পথচলা শুরু। তবে ২০০৮ সালে ‘আমার আছে জল’ ছবির মাধ্যমে নায়কা হিসেবে অভিষেক। এই ছবির জন্যই আগে একটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন মিম। সেটিও ছিল হুমায়ূন আহমেদের পরিচলনায়। নাটকের নাম ‘রহস্য’। নাটকটির জন্য মিমকে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছিল ৫ হাজার টাকা। মিম বলেন, এ নাটকটি করা হয়েছিল প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার পরেই। আমরা যে ছবিটি করব তার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে নাটকটি নির্মাণ করেছিলেন স্যার। যেহেতু এর আগে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াইনি, তারই একটা প্রস্তুতি। নাটক শেষে পারিশ্রমিক পেয়ে মায়ের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। তারপর পরিবারের মানুষদের জন্যই কেনাকাটা করেছিলাম সেই টাকায়।
পূর্ণিমা: জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ ছবির মাধ্যমে নায়িকা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন পূর্ণিমা। সেটা ১৯৯৭ সালের কথা। তখন মাত্র নবম শ্রেণিতে পড়েন। এই ছবির জন্য এক লাখ টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন পূর্ণিমা। ছবি শেষ হতে এক বছর লেগেছিল। পুরো টাকাটা পেয়েছেন কয়েক ধাপে। সাইনিং মানি হিসেবে প্রথশ দিন পেয়েছিলেন ১৫ হাজার টাকা। পূর্ণিমা বলেন, ‘টাকা দিয়ে কী করব অতশত ভাবিনি তখন। আমার পারিশ্রমিকের টাকা জমিয়ে রাখতেন মা। চার-পাঁচটা ছবি করার পর জমানো টাকা দিয়ে পুরোনো একটা টয়োটা গাড়ি কিনেছিলাম।
সজল: প্রথম পারিশ্রমিক পেয়েছিলাম ১২ হাজার টাকা। ২০০০ সালে কোকা-কোলার একটা স্টিল ফটোশুট করে টাকাটা পেয়েছিলাম। আমার সঙ্গে ছিল প্রয়াত মডেল তিন্নি। এজন্যও ওই পারিশ্রমিকের অংকটা আমার মনে আছে। ও আমার চেয়ে বেশি পেয়েছিল কিছু। এ নিয়ে মন খারাপ হয়নি। কারণ ও পরবর্তীতে আমার ভালো বন্ধুও হয়। প্রেথম পারিশ্রমিক পেয়ে যে কি খুশি হয়েছিলাম। কারণ এর আগে কেউ কখনো এতগুলো টাকা আমাকে দেয়নি। টাকাটা পেয়ে প্রথমে আমার মা ও বোনের জন্য শাড়ি কিনেছিলাম। বন্ধুদের নিয়ে ধানমন্ডীর একটা রেস্টুরেন্টে খেয়েছি। আমার জন্য জামা-প্যান্ট-জুতা কিনলাম। এত কিছুর পরও কিছু টাকা ছিল আমার কাছে। এসব কথা এখনো ভাবলে বেশ ফূর্তি লাগে।
কনা: আমি তখন খুব ছোট। বয়স চার পাঁচ হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘এসো গান শিখি’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতাম। সংগীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমান সেই অনুষ্ঠানে আমাদের গান শেখাতেন। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য শিশুশিল্পীদের তখন ২৫০ টাকার একটি চেক দেওয়া হতো। টাকা খরচ করার মতো বয়স তো আর তখন হয়নি। তাই মা আমার পারিশ্রমিকগুলো একটি অ্যাকাউন্টে জমা করে রেখেছিলেন। বড় হওয়ার পরে অনেকগুলো টাকা পেয়েছি সেই একাউন্ট থেকে।
প্রবীর মিত্র: জীবনের প্রথম পারিশ্রমিক ছিল আড়াই হাজার টাকা। ‘জীবন তৃষ্ণা’ ছবির জন্য সাইনিং মানি পেয়েছিলাম। সম্ভবত টাকাটা দিয়ে ছেলেমেয়ের জন্য উপহার কিনেছিলাম। আর আমার পারিশ্রমিক ভাগ্য খুব একটা ভালো নয়। অনেকের কাজ করেছি কিন্তু পারিশ্রমিক ঠিক মতো পাইনি। অনেকে অনুরোধ করে বলতেন,‘দাদা, টাকাটা কম দিলাম,এটাই রেখে দেন।’ আর কিছু বলার থাকতো না। এমনভাবে অনেককিছুই হারিয়েছি।
সিয়াম আহমেদ: প্রথম পারিশ্রমিক ছিল পাঁচ হাজার টাকা। এইচএসসি পড়ার সময় আমি টিউশনি করাতাম। সেখান থেকেই এই পারিশ্রমিক পেয়েছিলাম। আমার স্পষ্ট মনে আছে, টাকাটা পেয়ে বাবা-মাকে দিয়েছিলাম।
ন্যান্সি: এই দিনটা চিরকালই আমার মনে থাকবে। নানা কারণে আমার মনে থাকবে। হাবিব ভাইয়ের বাবা ফেরদৌস ওয়াহিদ অ্যাঙ্কেল হঠাৎ কল দিয়ে বললেন একটু বাসায় আসো। হাবিব তোমাকে দিয়ে সিনেমায় গান করাবে। আমিতো খুশিতে পাগলপ্রায়। মাকে নিয়ে চলে গেলাম হাবিব ভাইয়ের বাসায়। কিন্তু গিয়ে তো যারপরনাই হতাশ। কোথায় কী সিনেমার গান। আমাকে কেবল ‘ভালোবাসবো বাসবো রে’ গানের কোরাস গাইতে দেয়া হল। মনটাই ভেঙে গেল। তবে মজার ব্যাপার হলো, এই অল্প একটু কাজের জন্যই হাবিব ভাই আমাকে একটা পারিশ্রমিকের খাম ধরিয়ে দিয়েছিলেন। এটাই ছিলো প্রথম কাজ। আর রেকর্ডিং করে প্রথম আয়। দুই হাজার টাকা ছিল সে পারিশ্রমিক। শুরুর দিকে এমন অল্প অল্প কাজের জন্য অনেক পারিশ্রমিক পেয়েছি। চুপচাপ বসে থাকতাম গিয়ে। জিজ্ঞেলের কন্ঠ দিতাম। হাবিব ভাইয়ের একটা বদঅভ্যাস আমাকে কিনা বলতো তুমি দেখো এই সুরটা তুলতে পারো কিনা। একটু আসছি। আর খবর নেই। অনেকক্ষন পর এসে এক বা দুবারেই ওকে হয়ে যেত রেকর্ডিং। সেও তেমন কিছু বলতো না। একটা খাম ধরিয়ে দিত। চলে আসতাম। সে এতই কম কথা বলতো। কখনো সাহসই হয়নি বলার যে আপনি এমন বসিয়ে কই চলে যান।
শবনম ফারিয়া: আমার প্রথম পারিশ্রমিক ছিল দুই হাজার টাকা। ফটোশুট করে টাকাটা পেয়েছিলাম। আমার এখনো মনে আছে, টাকাটা দিয়ে আমি হিল কিনেছিলাম। কারণ ফটোশুট করতে তখন হিল দরকার ছিল।

  • আরোও বিভাগ