এ দেশের চলচ্চিত্রে অনেক বিরল ঘটনা আছে। আনন্দময় অনেক মুহ‚র্তও আছে। ২৩ সেপ্টেম্বর ছিল তেমনি একটি আনন্দময় মুহ‚র্ত। এইদিন তিনজন নতুন চলচ্চিত্র পরিচালক আত্মপ্রকাশ করেন প্রযোজনা সংস্থা ইমপ্রেস টেলিফিল্মের তিনটি ছবির মাধ্যমে। এর মধ্যে দুই পরিচালকের ছবির প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হয় ২৩ সেপ্টেম্বর। একই দিনে একজন পরিচালকের ছবির মহরত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির সিনেপ্লেক্সে প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হয় অভিনেতা ও পরিচালক শাহরিয়ার নাজিম জয় পরিচালিত প্রার্থনা এবং আশরাফ শিশির পরিচালিত গাড়িওয়ালা ছবির। ছবি দুটির প্রিমিয়ার শো হওয়ার আগে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর এবং পরিচালক শাহরিয়ার নাজিম জয় ও আশরাফ শিশির। বক্তব্য শেষে যে যার আসন গ্রহণ করেন। আগত অথিতিরা ধরেই নিয়েছিলেন অল্প কিছুক্ষণ পর ছবির প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হবে। কিছুক্ষণের মধ্যে নিভে গেল আলো। হঠাৎ করেই আবার প্রজ্জলিত হলো আলো। সেই আলোই যে এই অনুষ্ঠানের সবচেয়ে চমক তা ঐ সময় কেউ বুঝে উঠতে পারেননি। মাইক্রোফোন হাতে ধীর পায়ে এগিয়ে এলেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর। অনেকটা আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে বললেন- আমাদের বাংলা সাহিত্যের সম্রাট হুমায়ূন আহমেদ তাঁর পরিচালিত শেষ ছবি ‘ঘেটুপুত্র কমলার’ প্রিমিয়ার শোতে এসে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেই ক্লিপটি আমরা এখন দেখবো। নীল রঙের একটি শার্ট গায়ে হাস্যোজ্জল হুমায়ূন আহমেদ অতিথি পরিবেষ্টিত হয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছিলেন, চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে আবার ছবি নির্মাণ করবেন। ঘেটুপুত্র কমলা তার সর্বশেষ ছবি নয়। ভিডিও ক্লিপটি দেখে উপস্থিত অতিথিদের প্রত্যেকেই প্রায় অশ্র“সজল হয়ে উঠেছিলেন। এমন আবেগঘন মুহ‚র্তে ফরিদুর রেজা সাগর অনুষ্ঠান মঞ্চে ডাকলেন বিশিষ্ট গায়িকা ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে। সবাই তখনো
শাওন। শাওন তার বক্তব্যে বলেন, কৃষ্ণপক্ষ হুমায়ূন আহমেদের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি উপন্যাস। আমাদের মাঝে থাকলে হয়তো এই ছবিটি তিনিই নির্মাণ করতেন। তবে আছে তার কর্ম, লেখা, অনুপ্রেরণাও। তাই আমরা সব সময় মনে করি হুমায়ূন আহমেদ মৃত্যুবরণ করেননি। তিনি আমাদের মাঝেই আছেন। এখন তার সকল কাজ আমাদেরই করতে হবে। নাটক বা সিনেমা নির্মাণের আগে প্রথম কাজটি হলো ভালো কাহিনী বা গল্প নির্বাচন করা। আমাদের জন্য সেই কাজটি হুমায়ূন আহমেদ করে রেখেছেন। আমাদের দায়িত্ব এখন সেই কাজের বাস্তবায়ন করা। এ ব্যাপারে নুহাশ চলচ্চিত্রের পুরো টিম প্রস্তুত রয়েছে। দীর্ঘদিন পর নুহাশ চলচ্চিত্রের টিম আবার হুমায়ূন আহমেদের ছবি নির্মাণে ব্যস্ত হবে। আমরা নুহাশ চলচ্চিত্রের পুরো পরিবার মনে করি এবছরের ১৩ নভেম্বর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে কৃষ্ণপক্ষ ছবিটি মুক্তি দিতে পারব এবং আগামীতে তার প্রতিটি জন্মদিন উপলক্ষে একটি করে ছবি মুক্তি দিতে চাই আমরা। চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগরও চান হুমায়ূন আহমেদের প্রতিটি জন্মদিনে তার নিজের লেখা গল্প উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ছবি মুক্তি দিতে। আমি ব্যক্তিগতভাবে চ্যানেল আই ও ইমপ্রেস টেলিফিল্মের কাছে কৃতজ্ঞ হুমায়ূন আহমেদকে প্রতিটি ক্ষেত্রে যথাযথভাবে মর্যাদা দেয়ায়। হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনে হিমু মেলা করা, তার গল্প উপন্যাস নিয়ে প্রতিটি উৎসবে নাটক, টেলিফিল্ম করা। তার নির্মিত ছবিগুলো প্রদর্শন করাসহ হুমায়ূন আহমেদের প্রতিটি কাজে চ্যানেল আইকে আমরা পাশে পেয়েছি। এজন্য তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
শাওনের পরিচালনায় হুমায়ূন আহমেদের কৃষ্ণপক্ষ
- প্রতিবেদন