পরের ভাষার প্রয়োজন আছে কী?

বিশেষ প্রতিনিধি
ভাষা বিকশিত হয় ঘরে, বাইরে উভয় জায়গায়। তবে ভাষার বিকাশের ক্ষেত্রে পরিবারের পাশাপাশি স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ‚মিকাও জরুরি। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য ঘরে বাইরে তো বটেই স্কুল, কলেজেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমাদের মাতৃভাষা দিনে দিনে গুরুত্বহীন হয়ে যাচ্ছে। একটি চারাগাছকে যেমন যতœ করলে তা হৃষ্টপুস্ট হয়ে বেড়ে ওঠে তেমনি ভাষাও যতœ চায়। আদর চায়। কিন্তু আমরা অনেকেই মাতৃভাষার প্রতি মোটেই যতœবান নই। ভাবটা এমন মাতৃভাষা বাংলা সেতো আছেই এবং থাকবেও। তার আবার যতœ কি? তার চেয়ে বরং অন্যভাষায় কথা বলতে পারলে এক ধরনের অহংকার ফুটে ওঠে। সে কারনেই যে অনুষ্ঠানে হয়তো ইংরেজি বলার প্রয়োজন নাই সেখানেও ইংরেজি এমনকি উর্দু, হিন্দীতে কথা বলতেই অনেকে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। যেমন, যে অনুষ্ঠানে সমাগত সুধি মন্ডলী বললেই চলে যেই অনুষ্ঠানই হয়তো শুরু করি লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলম্যান… এর মাধ্যমে। ‘এখন বক্তৃতা করতে মঞ্চে আসবেন… বলার পরিবর্তে হয়তো নাউ আই রিকোয়েস্ট… বলেই পরের বক্তাকে মঞ্চে ডাকতে বেশি উৎসাহ বোধ করি। ‘হাই’ হ্যালো, থ্যাংকস, কনগ্রাচলেশন, ওহ সিওর, হোয়াই নট ইত্যাদি ধরনের অনেক ইংরেজি শব্দ অহরহ ব্যবহার করছি আমরা। ফলে আমাদের প্রিয় মাতৃভাষা কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার মর্যাদা হারাচ্ছে। একথা স্বীকার করতেই হবে সময়ের বিবেচনায় শুধুমাত্র মাতৃভাষা বাংলার ওপর ভর করে আমরা বেশি দূর যেতে পারব না। কিন্তু যেখানে মাতৃভাষাই যথেষ্ট সেখানে পরের ভাষার প্রয়োজন আছে কী? মাতৃভাষার পাশাপাশি বিদেশী ভাষা বিশেষ করে ইংরেজির প্রতিও আমাদের মনোযোগ দরকার। তাই বলে মাতৃভাষাকে অবহেলা করে নয়। এক্ষেত্রে পরিবারের ভ‚মিকা যেমন গুরুত্বপুর্ণ তেমনি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও মাতৃভাষার জয় হোক।

  • বইমেলা প্রতিদিন