ব্যাংকিং সেক্টরে এখনকার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নন পারফর্মিং লোন

আলী রেজা ইফতেখার, ম্যানেজিং ডিরেক্টর এন্ড সিইও, ইষ্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড

আনন্দ আলো: ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন এখনকার সময়ে খুবই আলোচিত বিষয়। এই বিষয়ে আপনার কাছে জানতে চাই?
আলী রেজা ইফতেখার: আমার কাছে মনে হয় এর দুইটা পার্ট আছে। একটা পার্ট হলো যারা নন ব্যাংক পিপল তাদেরকে ব্যাংকিং সেবার মধ্যে নিয়ে আসা। এটার আন্ডারে আরেকটা সিষ্টেম আছে যে, বেসিক ব্যাংকিং যারা করে শুধুমাত্র টাকা লেনদেন করে এর থেকে অন্যান্য ব্যাংকিং যেসব প্রডাক্ট আছে সেই সবে তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা। আর একটা হলো যারা নন ব্যাংকিং এ আছে তাদেরকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে আসা- এটা ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন এর ভেতরে পড়ে।এর আন্ডারে এটাও পড়ে যে, আপনি শুধুমাত্র টাকা লেনদেন করবেন- ইটস নট এনাফ। আমরা প্রাইভেট ব্যাংকগুলো বিভিন্ন ধরণের প্রোডাক্ট অফার করি সেইখানেও তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা। ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন বলতে এই দুইটা বোঝাচ্ছে।
আনন্দ আলো: পোষ্ট মডার্ন ব্যাংকিংয়ের সাথে আগের ট্রাডিশনাল ব্যাংকিংয়ের পার্থক্য কতোটা?
আলী রেজা ইফতেখার: আগের ব্যাংকিং অনেক ট্রাডিশনাল। সেখানে তারা শুধুমাত্র ব্যাঞ্চ ব্যাংকিং করতো। আপনাকে ফিজিক্যালি ব্যাঞ্চে যেতো হতো। এখন আমরা ব্যাঞ্চটাকে চেষ্টা করছি ব্যাংকিং সেবাগুলোকে নন ব্যাঞ্চ প্রডাক্ট দিয়ে সার্ভিস দেওয়ার জন্যে। এটা এজেন্ট ব্যাংকিং হতে পারে, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস হতে পারে, ইন্টারনেট ব্যাংকিং হতে পারে? এটা ছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরণের টেকনোলজি আছে যার ফলে আপনাকে ফিজিক্যালি ব্যাঞ্চে গিয়ে সেবাটা নাও নিতে হতে পারে? এটাকে আমি মনে করি বাংলাদেশের জন্যে বিরাট চ্যালেঞ্জ এবং অপরচুনিটি।সুতরাং প্রতিটি ব্যাংক কোন না কোন ভাবে কিন্তু ইনভলভ। কোন ব্যাংক বেশি ইনভলভ আবার কোন ব্যাংক কম ইনভলভ। এই ক্ষেত্রে আমি চ্যালেঞ্জ যেটি মনে করি আজকে সেই চ্যালেঞ্জ ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশনের ভেতরেই নাই। সেটি হলো নন পারফর্মিং লোন। আপনি যদি আমাকে জিঙ্গেস করেন বিগেষ্ট চ্যালেঞ্জ এখন ইন্ডাষ্ট্রিতে কোনটা? ইট ইজ নট দি ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন? ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন আমি করতে পারবো, আমি করছি এবং আমাকে করতে হবে বেঁচে থাকার জন্যে? কিন্তু আমাদের বিগেষ্ট চ্যালেঞ্জ হলো- নন পারফর্মিং লোন। এই সেক্টরটা যদি একটু ডিসিপ্লিনে আনা যায় তাহলে আমার মনে হয় তাহলে ব্যাংকিং সেক্টরটা আরও বেশি ফ্লারিশ করবে।
আনন্দ আলো: আর ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন এর ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ?
আলী রেজা ইফতেখার: এই জায়গায় কস্ট ইনভলভ আছে। কোন একটা ব্যাংকের গ্রামে ব্যাঞ্চ করার মানে এই না যে, আমার কোয়ালিটি এবং ষ্ট্যান্ডার্ড কম্প্রোমাইজ করছি। আমাকে কিন্তু সেখানে সেই সিষ্টেম দিতে হচ্ছে। যেই সিষ্টেমটা আমি হেড অফিসে চালাচ্ছি তারই একটা এক্সটেনশন দিতে হচ্ছে। ইনিশিয়ালি কস্ট একটু বেশি কিন্তু ব্যাংক হলো একটা সার্ভিস ইন্ডাষ্ট্রি। আমরা তো ফিজিক্যাল কোন প্রডাক্ট সেল করি না আমরা সার্ভিস সেল করি। ইটস এ লং টার্ম প্রজেক্ট। আমি কখনো বলবো না যে, এজেন্ট ব্যাংকিং বা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস এ আপনি আজকে ইনভেষ্ট করলে আর কালকে থেকে প্রফিট হবে। ইটস নট দ্যাট? বিজনেস মডেলটাই হচ্ছে ইটস এ লং টার্ম ইনভেষ্টমেন্ট কিন্তু বেনিফিটটা হচ্ছে যে, একটা সার্টেন টাইম পার হওয়ার পরে ব্যাংগুলো অনেক ভাল বেনিফিট পাবে এখান থেকে। সুতরাং এটার প্রয়োজন নাই এই কথা কেউ বলতে পারবে না। প্রয়োজন আছে- ইনভেষ্টমেন্ট ওই ভাবে করা উচিত যাতে করে আমরা একেবারে পুরোপুরি দোরগোড়ায় যেতে না পারলেও আমি মনে করি যে, ছোট্ট একটি এলাকার মধ্যে যদি এজেন্ট ব্যাংকিং করা যায় বা একটা যদি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস দেওয়া যায় তাহলে মানুষ আস্তে আস্তে ব্যাংকিং সেবাগুলো বুঝতে পারবে। এখন তারা জনেই না যে ব্যাংকিং সেবার ভেতরে কি আছে? অ্যাট লিষ্ট দে উইল ষ্টার্ট ফিলিং- যে, এই জিনিসগুলোর ভেতরে কি আছে?
আনন্দ আলো: মোবাইল ব্যাংকিং বেশ জনপ্রিয় এখন। এতে কি কোন নিরাপত্তা সমস্যা আছে? আর একসাথে বেশি টাকা এতে লেনদেন করা যায় না?
আলী রেজা ইফতেখার: প্রথম বিষয় হলো যে, টেকনোলজি যতো অ্যাডভান্স হবে আপনাকে সিকিউরিটি সিষ্টেমও ততো অ্যাডভান্স করতে হবে। অনেকে জিনিসটা বুঝতে পারে না যে, কেউ কেউ মনে করে আমি টেকনোলজি অনেক অ্যাডভান্সড। বাট আপনার ডিফেন্স কি? একটা সাধারণ কথা বলি। ধরুন- একটা ফুটবল টিম তৈরী এখানে দশ জন কি ফরোয়ার্ড এ খেলে? খেলে না? এখানে ব্যালেন্স করতে হয়। আমরা যখন টেকনোলজিক্যালি অ্যাডভান্সমেন্টে যাই সেটা বিকাশ হোক বা এজেন্ট ব্যাংকিং হোক বা পিএসও হোক। টেকনোলজিক্যাল সিকিউরিটি যদি না থাকে- উই রানিং এ ভেরি হাই রিষ্ক। তাই টেকনোলজি ইম্পুরুভমেন্টের সাথে সাথে সিকিউরিটি সিষ্টেম একই সাথে বিল্ড আপ করতে হবে। ইট জাষ্ট এ রেল লাইন। একটা ট্র্যাকে রেল চলবে না। দুইটা ট্রাক সমান রাখতে হবে। আরেকটি আপনি বললেন যে, ক্যাশ ইন ক্যাশ আউট। ইয়েস দ্যাট ইজ এ রিষ্ক। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যদি একটা দূর্বলতা থাকে সেটা হলো ক্যাশ ইন ক্যাশ আউট করতে হচ্ছে। পুরো দেশ কিন্তু চাচ্ছে নন ক্যাশ ট্রানজেকশন করতে। আমি আমার ওয়ালেট থেকে আপনার ওয়ালেটে টাকা দেব। এটিই তো আমি চাই। তাই আমি বলবো এখানে একটু রিষ্ক রয়ে যায়। কিন্তু রিষ্ক বলে কি ব্যবসা বন্ধ করে দিব? তা কিন্তু আমি বলছি না? কিন্তু রিষ্কটাকে হয় আপনাকে মেডিকেট করতে হবে অথবা রিষ্কটাকে আপনার ম্যানেজ করতে হবে। এখন যারা এই ব্যাপারে এক্সপার্ট বিকাশ, রকেট বা ইউক্যাশ যারা করছেন আমি শিওর তারা এই ব্যাপারে কাজ করছেন।
আনন্দ আলো: ইষ্টার্ন ব্যাংক পোর্ষ্ট মডার্ন ব্যাংকিং করছে ইনোভেটিভ সব প্রডাক্ট নিয়ে- যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন আপনি?
আলী রেজা ইফতেখার: আমাদের ব্যাংকের মেইন ফোকাস পয়েন্ট হলো- টু বিল্ড আপ দ্যা ষ্ট্রং পিপল মেড। এটা আমাদের ফার্ষ্ট ফোকাস। এরপরে আমরা গেছি টেকনোলজিতে এরপরে আমরা গেছি টেনোলজিক্যাল প্ল্যাটফর্মে। ১৪ বছর আমরা পথ চলেছি। আমরা প্রচুর, সময়, অর্থ ও মেধা ব্যয় করেছি আমাদের পিপলকে তৈরী করার জন্যে। সো ওইটা হলো আমাদের ফার্ষ্ট ফোকাস। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন যে, উই ওয়ান্ট টু দ্যা লিডার অব দ্যা মার্কেট। আমরা প্রথম কিছু করতে চাই। কাউকে ফলো করতে চাই না। এটি আমাদের বেসিক প্রিন্সিপাল।

  • সাক্ষাৎকার