ব্যাংকিং সুযোগ সুবিধা নিয়ে যেতে হবে গ্রামের মানুষের কাছে

আনিস এ খান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর এন্ড সিইও, মিউচুয়াল ট্রাষ্ট ব্যাংক লিমিটেড

আনন্দ আলো: ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন আর্থিক ক্ষেত্রে কতোটা গুরুত্ব বহন করে?
আনিস এ খান : বিশেষ ভাবে গুরুত্ব বহন করে। আমাদের দেশের মাত্র ৫০ পারসেন্ট মানুষ ব্যাংকের ছাতার তলে আছে। আমাদের এখন তো উন্নতি হয়েছে তাই আমাদের দায়িত্ব বেড়েছে। ইন্টারনেট গ্রামে গঞ্জে চলে গেছে। ব্যাংকিং সুযোগ সুবিধা নিয়ে যেতে হবে গ্রামের মানুষের কাছে। গ্রামের মানুষকে ব্যাংকের সার্ভিস নেওয়ার জন্যে ১০ মাইল দূরে আসতে হয়। কিন্তু এর মধ্যে অনেক গুলো ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করেছে। এই এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা হলো যে, একটা ছোট পরিসরে ব্যাংকের সার্ভিসগুলো দেওয়া যায়। কারণ ব্যাংকের সব সার্ভিস তো ওই জায়গায় দেওয়ার দরকার নাই। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম হলো- একটা শাখা শহরে করলে একটা শাখা গ্রামেও করতে হয়। কিন্তু খরচ দুই জায়গায় একই। লোকবলও একই? সিকিউরিটি সিষ্টেমও লাগে। তাই ওইগুলো লাভজনক করতেও অনেক সময় লাগে। অনেক লোকসান হয় তবুও আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এটি দায়িত্ব। তাই এজেন্ট ব্যাংকিংর মাধ্যমে খুব কম পয়সার মধ্যে টাকা জমা দেওয়া, তোলা, ডেভিট ক্যার্ডের জন্যে আবেদন করা, এসএমই লোন দেওয়া এবং কালেক্ট করা তাছাড়া বিভিন্ন বিল মানুষ এজেন্ট ব্যাংকে গিয়ে পরিশোধ করতে পারেন। এই সেবা যদি দেশের মধ্যে সব জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া যায় আমি মনে করি তাহলে ব্যাংকিং সেবা নেওয়া মানুষের সংখ্যা ৭৫-৮০ শতাংশে উন্নীত হবে।
আনন্দ আলো: মিউচুয়াল ট্রাষ্ট ব্যাংক মডার্ন ব্যাংকিং করছেন। আপনাদের ব্যাংক এবং বোর্ড সম্পর্কে জানতে চাই?
আনিস এ খান : সবাই বলে আমাদের ব্যাংকের বোর্ড বাংলাদেশে সবচেয়ে ভাল। বাংলাদেশের স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বর এইখানে আছেন। আমাদের ফাউন্ডিং চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। তিনি দুইবার কেয়ারটেকার সরকারের অ্যাডভাইজার ছিলেন। মেট্টোপলিটন চেম্বারের প্রেসিডেন্টসহ অনেক প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বিশাল শিল্প পরিবার। পাশাপাশি ফাউন্ডিং ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন প্রয়াত স্যামসাং এইচ চৌধুরী। পরে যারা চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন বা বোর্ড আছেন তারা সবসময়ই আমাদের অনুপ্রেরণার জায়গা করেছেন। আমাদের ব্যাংকে এসে কোনদিন কোন চেয়ারম্যান বসেন না। শুধুমাত্র মিটিংয়ের দিন আসেন। তার মানে এই নয় যে কোন যোগাযোগ থাকে না। কোন নতুন সার্কুলার থাকলে আমি তাদেরকে পাঠাই। কোন খবর থাকলে ই-মেইল করি। তারাও কোন কিছু জানলে বা শুনলে আমাকে পাঠান এবং উপদেশ দেন। এই রকম একটি চমৎকার বোর্ডের আন্ডারে আমি খুব সুন্দরভাবে আরামে প্রায় সাড়ে নয় বছর কাজ করছি। খুশি লাগছে খুব। তাদের অনুপ্রেরণায় আমরা খুবই ফার্ষ্ট ডেভলপমেন্ট করতে পেরেছি। ব্যাংকের বয়স আজকে প্রায় ১৮ বছর শেষ হতে যাচ্ছে। কিন্তু গেলো ৮-১০ বছরে এর এক্সপানশন এবং ডাইভার্সিফিকেশন হয়েছে। ৩৬ টা ব্র্যাঞ্চ ছিল এখন ১১৪টা ব্র্যাঞ্চ। তিনটা সাবসিডিয়ারী কোম্পানী হয়েছে একটি সিকিউরিটিজ কোম্পানী, একটা মার্চেন্ট ব্যাংক, একটা ষ্মল অপারেশন ইউকে’তে, অফশোর ব্যাংকিং হয়েছে। আগে আমাদের কাছে ডিইজি যারা আগে থেকে ইষ্টার্ন ব্যাংকে আছে ডিইজি বা এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক- আমরা অনেক চেষ্টা করে অনেক দিন পাইনি অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এখন ডিইজিও আমাদের শুধু পার্টনার নয় ফান্ডও পার্টনার, এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংকও আমাদের পার্টনার। অফকোর্স ইষ্টার্ন ব্যাংক আমাদের থেকে অনেক বড়। আমরাও চেষ্টা করছি ভাল সার্ভিস দেওয়ার জন্যে মানুষের কাছে যেন আমাদেরটা একটা ব্যাংকিং বান্ধব ব্যাংক হয়।

  • সাক্ষাৎকার