চলো যাই আকাশবীণায়…

আকাশবীণা। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত হওয়া এই নতুন উড়োজাহাজের সুন্দর নামটি দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আধুনিক সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন বাংলাদেশের এই উড়োজাহাজটি স্বস্থিদায়ক পরিবেশে আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে একটা আস্থার জায়গা তৈরি করেছে। ৫ সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নতুন বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার আকাশবীনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বর্তমানে এটি ঢাকা-সিঙ্গাপুর ও ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে নিয়মিত যাতায়ত করছে। ভবিষ্যতে এটি ঢাকা-লন্ডন রুটে সরাসরি যাত্রী পরিবহন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং বহরে নতুন বোয়িং আকাশবীণার আগমনে বিমান বাংলাদেশ এর পরিবহন সংস্কৃতিতে একটা পজিটিভ পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে নতুন করে আস্তার জায়গা তৈরি হচ্ছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রতি দেশী-বিদেশী যাত্রীদের আগ্রহ দিনে দিনে বাড়ছে। ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুর অথবা ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর রুটে আকাশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এখন স্বস্থিদায়ক ও আরামপ্রদ বোয়িং মানেই বাংলাদেশের আকাশবীণা। চলো যাই আকাশবীণায়… এমনই আগ্রহ এখন সবার মাঝে।
আকাশবীণায় আসন সংখ্যা রয়েছে ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাস ২৪টি আর ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাস। বিজনেস ক্লাসে ২৪টি আসন ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড হওয়ায় যাত্রীরা আরামদায়কভাবে ভ্রমণ করতে পারছেন। দু’পাশের প্রত্যেক আসনের পাশে রয়েছে বড় আকারের জানালা। একইসঙ্গে জানালার বোতাম টিপে আলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়। জানালা ছাড়াও কেবিনেও রয়েছে মুড লাইট সিস্টেম।
টানা ১৬ ঘণ্টা উড়তে সক্ষম এই ড্রীমলাইনার চালাতে অন্যান্য বিমানের তুলনায় ২০ শতাংশ কম জ্বালানি লাগে। এটি ঘণ্টায় ৬৫০ মাইল বেগে উড়তে সক্ষম। বিমানটির ইঞ্জিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জেনারেল ইলেক্ট্রিক (জিই)। বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হয় ইলেক্ট্রিক ফ্লাইট সিস্টেমে। কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরি হওয়ায় এই বিমান ওজনে হালকা। ভ‚মি থেকে বিমানটির উচ্চতা ৫৬ ফুট। দু’টি পাখার আয়তন ১৯৭ ফুট। এর ককপিট থেকে টেল (লেজ) পর্যন্ত ২৩ লাখ যন্ত্রাংশ রয়েছে। প্রতিটি আসনের সামনে প্যানাসনিকের এলইডি এস-মনিটর রয়েছে। যাত্রা পথে সরাসরি ৯টি টিভি চ্যানেল দেখা যায়। একই সঙ্গে ড্রীমলাইনারের ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেমে (আইএফই) আছে ১শ’টিরও বেশি ক্ল্যাসিক থেকে বøক বাস্টার চলচ্চিত্র দেখার সুযোগ-সুবিধা। অত্যাধুনিক বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রীমলাইনারে যাত্রীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য রয়েছে ওয়াইফাই সুবিধাও। এছাড়া আকাশে উড্ডয়নের সময় ফোন কলও করতে পারেন যাত্রীরা।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০০৮ সালে মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে ১০ টি নতুন বিমান ক্রয়ের জন্য ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ইউএস ডলারের চুক্তি করে। সেই চুক্তির আওতায় ইতোমধ্যে বহরে যুক্ত হয়েছে ছয়টি বিমান। বাকি চারটি বিমান এর একটি হলো বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রীমলাইনার। অপর তিনটি বিমানের একটি এ বছর নভেম্বরে এবং সর্বশেষ দুটি আসবে আগামী বছর সেপ্টেম্বর মাসে। এছাড়া ২০২০ সালে বোম্বাডিয়ার তৈরি ৩ টি ড্যাশ ৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ বিমান বহরে যুক্ত হবে।

  • ভ্রমণ