Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

বাঁধন নারীর সংগ্রামী মুখ

অভিনয়কে ভালোবসে শুধু বাংলাদেশে নয় পৃথিবীর আর কোনো দেশের অভিনয় শিল্পী এতটা ত্যাগ শিকার করেছেন কিনা বলা মুশকিল। হয়তো করেছেন। কিন্তু আমাদের আজমেরি হক বাঁধনের ডেডিকেশনের সাথে অন্যদের বোধকরি তুলনা চলে না। কি করেছেন বাঁধন? কি এমন ত্যাগ শিকার করেছেন যে, সে কথা বলতে গিয়ে এতো কথা বলতে হল? ওটিটি প্লাটফরমে গুটি নামে একটি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন বাঁধন। শরীরের গোপন অঙ্গে মাদকের বড়ি বহন করে এক নারী। জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে এই পেশা বেছে নিয়েছেন। কনডমে মাদকের বড়ি রেখে সেই কনডম গোপন অঙ্গে ঢুকিয়ে নিয়ে রেলগাড়ি সহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে তা ঢাকায় পাচার করেন ওই নারী। বাঁধনকে ওই নারীর চরিত্রে অভিনয় করতে হবে। স্ক্রীপ্ট পাবার পরই নিজেকে বদলে ফেলার সংগ্রাম শুরু করেন বাধন। গোপন অঙ্গে মাদকের বড়ি ঢুকিয়ে হাটবেন একজন নারী। তার হাটা চলা, শরীরের যন্ত্রনা, কষ্ট কেমন হবে? সেটা কি শুধু অনুভব করলেই হবে? ভাবো, তুমি একজন সংগ্রামী নারী। কনডমের ভেতর মাদকের বড়ি। সেই কনডম তুমি গোপন অঙ্গে ঢুকিয়ে নিয়েছ। তারপর তুমি, ট্রেনে বাসে যাতায়ত করছ। তোমার শরীরের কষ্ট কেমন হবে? এটা কি শুধুই অনুভবের ব্যাপার? বাঁধনের মনে হল, না শুধু অনুভব করলেই হবে না। কষ্টটা নিজের মধ্যে নিতে হবে। আর তাই কনডমে মাদকের বড়ি ঢুকিয়ে সেই কনডম নিজের গোপন অঙ্গে ‘পুষ’ করেছেন বাঁধন। কষ্ট, যন্ত্রনাটা বোঝার চেষ্টা করেছেন।
বাঁধন যখন নিজের মুখেই এই কথাগুলো বলছিলেন তখন সত্যি বলতে কী, আমরা অবাক হয়ে শুনছিলাম। বাঁধনের অভিনয়ের টানে ‘গুটি’ একাধিকবার দেখেছি। বার বার প্রশ্নটা মাথায় এসেছেÑ এতা নিখুত অভিনয় কিভাবে সম্ভব? আমার ধারনা যারা ‘গুটি’ দেখেছেন তারা সবাই বাঁধনের জন্য কষ্ট পেয়েছেন। একজন শিল্পীর তো এখানেই স্বার্থকতা। বাঁধনকে প্রশ্ন করেছিলাম, গুটি নিয়ে প্রস্তুতিটা কেমন ছিল? বাঁধন বললেন, গল্পের চরিত্রটাকে প্রথমে আমি ধারন করার চেষ্টা করি। একজন সংগ্রামী নারী তার গোপন অঙ্গে মাদকের বড়ি সহ কনডম ঢুকিয়ে নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে বাসে, ট্রেনে চড়ে ঢাকায় যায়। তার শারিরীক, মানসিক কষ্ট কেমন হতে পারে তা বোঝার জন্য আমি নিজের গোপন অঙ্গে মাদকের বড়ি সহ কনডম ঢুকিয়ে বোঝার চেষ্টা করেছি। এধরনের অনেক ভিডিও দেখেছি, জার্নাল পড়েছি। তারপর নিজেকে চরিত্রটির জন্য তৈরি করেছি। পরিচালক শংকর দাস গুপ্তর কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তিনি আমাকে চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে অনেক সহযোগিতা করেছেন। তবে হ্যা, আজকের আজমেরি হক বাধনের জন্য আমি অবশ্যই বিশেষ একজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাব। তিনি হলেন, রেহানা মরিয়ম নূর এর পরিচালক আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ। মূলতঃ রেহানা মরিয়ম নূরই আমার অভিনয় জীবন বদলে দিয়েছে। রেহানা মরিয়ম নূরে অভিনয়ের পর থেকেই আমি মূলতঃ অভিনয়কে ভালোবাসতে শিখি। এর আগে বহু নাটক, সিনেমায় অভিনয় করেছি। সত্যি বলতে কি ভালোবাসা, ডেডিকেশন বলতে যা বুঝায় তা ছিল না মোটেই। সেজে গুজে অভিনয় করতাম। কিন্তু রেহানা মরিয়ম নূর এ এসে বুঝলাম অভিনয় এতো সোজা নয়। অভিনয়ের জন্য প্রস্তুতি লাগে। মানসিক, শারিরীক সব প্রস্তুতি জরুরি। রেহানা মরিয়ম নূরের জন্য টানা প্রায় দেড় বছর সময় দিয়েছি। আমরা যখন রিহার্সেল করতাম তখন কস্টিউম পরতে হতো। কস্টিউম পরেই রিহার্সেল করা বাধ্যতামূলক ছিল। আমাদের পরিচালক সাদ এই নিয়মটা জারী করেছিল। কস্টিউম পরে রিহার্সেল করতে গিয়ে দেখেছি, সত্যি সত্যি ক্যারেক্টারটা শরীরে এসে ভর করে। কারণ কস্টিউম জোগাড় করাও একটা প্রস্তুতি। রেহানা মরিয়ম নূর আমাকে জীবনের অনেক বাস্তব সত্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। আমি জীবনকে নতুন ভাবে বুঝতে শিখেছি। শুধু অভিনয় নয় জীবন সম্পর্কেও আমার অনেক উপলব্ধি ঘটেছে। যখনই নতুন কোনো কাজে হাত দেই তখনই রেহানা আমার পাশে এসে দাঁড়ায়। আমি অলৌকিক একটা শক্তি পাই। এজন্য সাদ এর প্রতি আমার অনেক
কৃতজ্ঞতা। অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেন, বাঁধনের আজকের সাফল্যের গল্পটা কেমন? তখন আমি মনে মনে অনেক কিছুই ভাবি। আমরা আসলে সাফল্যটাকেই বড় করে দেখি। ব্যর্থতা দেখি না। শিল্পীর সংগ্রামটা দেখি না। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার আমার অভিনয় জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রেরনা। সাহসও বলতে পারেন। তবে আমার ব্যক্তি জীবনের সংগ্রাম ছিল অন্যদের চেয়ে একেবারেই আলাদা। ব্যক্তিজীবনে আমি অনেক অবিচারের সম্মুখীন হয়েছি। রেহানা মরিয়ম নূর আমার ব্যক্তি জীবনের সাহস হয়ে দেখা দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন করেন, আপনার আজকের সাফল্যের পিছনে মূলমন্ত্রটা কি ছিল? তার একটাই উত্তর দিতে চাইÑ অনেস্টি, পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাসীই আমার অভিনয় জীবনের একমাত্র প্রেরনা।
জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। বর্ণময় জীবন তাঁর। কখনও হিংসা, আবার কখনও পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নিজের অস্তিত্ব নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। এক কন্যাসন্তানের মায়ের লড়াইটা সহজ ছিল না।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্রী ছিলেন। পড়াশোনার প্রতি তার বরাবরের টান। তাঁর দাবি, বিবাহিত জীবনে চূড়ান্ত অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছিল তাকে। এক সাক্ষৎকারে তিনি বলেন, ‘স্বামী জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতেন। যা ভালো না লাগলেও আমাকে সহ্য করতে হয়।’
২০১০ সালে আচমকাই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন বাঁধন। তার প্রাক্তন স্বামীর নাম মাশরুর সিদ্দিকী। মাশরুর এবং বাঁধনের একমাত্র মেয়ে সায়রা। সকলের অজান্তেই যেমন বিয়ে করেছিলেন, তেমনই বিচ্ছেদও হয় আচমকাই। ২০১৪ সালে তাদের আইনত বিচ্ছেদ হলেও তা সকলের আড়ালে রেখেছিলেন নায়িকা।
বাঁধনের বিরুদ্ধে চরিত্রহীনতা এবং প্রতারণার মামলা করেন তার প্রাক্তন স্বামী। কিন্তু নায়িকার দাবি, তাকে মারধর করতেন তার স্বামী। চূড়ান্ত অত্যাচারও করতেন। যার জন্য তিনি এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চান। কারণ, বাঁধন চাননি তার পারিবারিক সমস্যার প্রভাব পড়ুক সন্তানের উপর।
সায়রা জন্মানোর আগে থেকেই ছোট পর্দায় জনপ্রিয় মুখ বাঁধন। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার পর থেকেই দর্শকের নজরে আসেন। ঝুলিতে বহু বহু ধারাবাহিক।
২০১০ সালে বাঁধনের প্রথম অভিনীত সিনেমা ‘নিঝুম অরণ্য’। প্রথম সিনেমার প্রায় ১১ বছর পর মুক্তি পায় নায়িকার দ্বিতীয় সিনেমা। সেই সিনেমার নাম ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। রেহানায় অভিনয়ের পর বদলে যায় বাঁধনের জীবন। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁর অভিনীত সিনেমা মনোনীত হওয়ার পর ক্যারিয়ার বাঁক নেয় সাফল্যের পথে। সারা বিশ্বে সেই সিনেমা প্রশংসিত হয়েছিল।
বিদেশের মাটিতে জামদানিতে রেহানার লুক নজর কেড়েছিল সকলের। বাংলাদেশের ঐতিহ্য তুলে ধরেছিলেন গোটা বিশ্বের সামনে। বিদেশি চলচ্চিত্র উৎসবে বাঁধন কোনও পেশাদার রূপটান শিল্পীকে নিয়ে যাননি তার সঙ্গে। নিজের মেকআপ নিয়ে তিনি বরাবরই আত্মবিশ্বাসী। তাই সেই বিশেষ দিনেও নিজের মতো করে সেজে উঠেছিলেন বাঁধন।
বাঁধনের এই সাফল্যে এখন চাপা পড়ে গিয়েছে সেই কষ্টের দিনগুলো। একটা সময় পড়াশোনা করার অধিকারও ছিল না অভিনেত্রীর। সে যেন সব বিভীষিকাময় দিন! নিজের বন্ধুদের সঙ্গেও কোনও যোগাযোগ ছিল না তার। অতি কষ্টে নাকি পালিয়ে এসেছিলেন।
নিজের জেদে চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। সেই সময় ‌পাশে নিজের পরিবারকেও পাননি। সিনেমা জগতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন, কিন্তু সেই কাজ করার সিদ্ধান্তে সহমত ছিলেন না অভিনেত্রীর মা-বাবা।
যদিও সকলের অমতেই নিজের স্বপ্ন পূরণের পথে এক এক ধাপ এগিয়ে যান তিনি। বাংলা সিনেমার জগতে প্রচুর কটু ইঙ্গিতও পেয়েছেন তিনি। যদিও সেই সব কিছু থেকে নিজেকে সাবধানে গুটিয়ে নিয়েছিলেন।
এত যুদ্ধ যার জীবনে, তার জীবনে কি অবসাদ আসেনি? হ্যাঁ, এসেছিল। মেয়ে হওয়ার পর প্রাক্তন স্বামীর অত্যাচার আর সহ্য করতে পারছিলেন না তিনি। দিনে দিনে অবসাদ গ্রাস করছিল।
সন্তান যাতে বাবার স্নেহ থেকে বঞ্চিত না হয়, তাই জন্য বিচ্ছেদের পরও প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলার চেষ্টা চালিয়ে যান অভিনেত্রী। তাই শত ঝামেলার পরও ৩ জন একসঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলেন মালয়েশিয়া।
২০১৭ সালের জুলাই মাসে মেয়ের মুখ চেয়ে আরও এক কঠিন সিদ্ধান্ত নেন বাঁধন। কী সেই সিদ্ধান্ত? নিজের প্রাক্তন স্বামীকে দ্বিতীয় বার বিয়ে করবেন বলে ঠিক করেন তিনি।
এই সিদ্ধান্ত নেয়ার পর আবার আরও এক ধাক্কার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। নায়িকার স্বামী রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। বিয়ের সমস্ত ব্যবস্থাও হয়ে গিয়েছিল। তার পরই ঘটে আরও ভয়ঙ্কর ঘটনা।
সব কিছুর পর আবারও স্বপ্নভঙ্গ। আগস্ট মাসে নায়িকা জানতে পারেন, তার প্রাক্তন স্বামী আরও একটি বিয়ে করেছেন। কিন্তু পুরো বিষয়টাই তাদের থেকে লুকিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
এত কিছুর পরও বাবার বাড়িতে সময় কাটানোর জন্য মেয়েকে তার বাড়িতে পাঠাতেন বাঁধন। সেখানে ঘটে আরও এক বিপত্তি। মেয়েকে ভুল জিনিস বোঝাতে থাকেন বাঁধনের প্রাক্তন স্বামী।
নিজের বাড়িতেই মেয়েকে আটকে রেখেছিলেন নায়িকার প্রাক্তন স্বামী, এমনটাই দাবি বাঁধনের। মেয়েকে কানাডা নিয়ে চলে যাওয়ার হুমকিও দেন। জীবনে আরও এক ঝড় শুরু হয় তার। যদিও তিনি হার মানেননি। সায়রার তখন বয়স মাত্র ৬। ২০১৭ সালের কথা। মেয়ের অভিভাবকত্ব পেতে আইনি সাহায্য নিতে বাধ্য হন নায়িকা।
২০১৪ সালে বাঁধনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন তার প্রাক্তন স্বামী। যদিও তার কোনও অভিযোগই ধোপে টেকেনি। সেই মামলা জিতে গিয়েছিলেন নায়িকা।
২০১৭ সালে মেয়ের অভিভাবকত্ব দাবি করে মামলা করেন নায়িকা। ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল মেয়ের অভিভাবকত্ব পান বাঁধন। এই সময় দীর্ঘ দিন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হয়েছিল তাকে। সেই চিকিৎসক তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, সায়রার বাইরেও বাঁধনের একটি জগৎ আছে। সেই জগতের সঙ্গে মেশা উচিত।
সেই শুরু নতুন বাঁধনের পথ চলা। এর আগে শুধু মাত্র টাকার জন্য কাজ করতেন। তাই তেমন ভাবে কাজটাকে ভালবাসতে পারছিলেন না। তবে তার পর কাজ, চরিত্র নিয়ে ভাবা শুরু করেন বাঁধন।
অথচ এক সময় আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন এই নায়িকা। নিজের সংগ্রামমুখর জীবনের কথা বলতে গিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘২০০৫ সালে আমার সঙ্গে অনেক অবিচার হয়েছে এবং আমি পারিবাহিকভাবে অনেক সহিংসতার শিকার হয়েছি।
তখন আমি দুবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছি। সব মিলিয়ে ওই সময়টা আমার জন্য খুবই কঠিন ছিলো। তখন যদি আমি মরে যেতাম অনেক নিউজ হতো যে যুদ্ধ করতে করতে মরে গেলো মেয়েটি। নির্যাতিতা হতে হতে মারা গেলো। যেহেতু আমি মারা যাইনি, তাই আমি মনে করি এখন জীবিত ডাইনি হয়ে গেছি।’
বাঁধনের সংসার জীবন সুখের হয়নি। একমাত্র মেয়ে সায়রাকে নিজের কাছে রাখতেও এই অভিনেত্রীকে আদালতে আইনি লড়াই করতে হয়েছে। বাঁধন বলেন, ‘আমার বাচ্চাকে নিয়েও অনেক ঝামেলার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তখন আমার হাতে ছিল দুবছর। ভাবলাম যা আছে কপালে, এবার আমি বিসিএস দেবোই।
আমার নিজের ওপর যত না কনফিডেন্স, তারচেয়ে বেশি কনফিডেন্স আমার শিক্ষকদের, ফ্রেন্ডদের। কেননা, আমি পড়াশোনায় খুবই ভালো ছিলাম। তারা বললো, তুমি দিলেই হয়ে যাবে। কোচিং সেন্টারেও ভর্তি হয়েছি। ফরম পূরণের সময় আমি প্রথম পছন্দ দিয়েছি পুলিশ, সেকেন্ডেও পুলিশ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, দুটিই কি পুলিশ দেয়া যায়? আমাকে বলল যায় না। যাহোক, ওই পড়ার ভলিউম দেখে, আর আমার বাচ্চাকে লালন-পালন, তাছাড়া টাকাও ইনকাম করতে হবে।
যার কারণে বিসিএসটা দেয়া হয়নি। বাট, ওই পরীক্ষায় আমার নাম থাকবে, আমার অভিনীত সিনেমার নাম থাকবে এটা আমি কল্পনাও করিনি।’ বাঁধন অভিনীত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছবিটি ঘিরে ৪৩তম সিভিল সার্ভিস (বিসিএস)-এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে দুটি প্রশ্ন রাখা হয়। এটাকে নায়িকা দারুণ অর্জন বলেই মনে করেন। বাঁধনের সংগ্রামী জীবন এখন অনেকের কাছেই অনুকরণীয়। এই অভিনেত্রীর অর্জনকে কোনো কোনো নারী নিজের অর্জন বলে মনে করেন।
এমন প্রসঙ্গ টেনে এনে বাঁধন বলেন, ‘একসময় আত্মহত্যা করতে চাওয়া এই আমার বেঁচে যাওয়া জীবনটা এখন সমাজের অন্য নারী যারা বন্দিদশা থেকে মুক্তি চান, তাদের জন্য অনুপ্রেরণার, সাহস সঞ্চয়ের।’ বাঁধন আরও বলেন, ‘এখন যখন সবাই আমাকে বলেন বাঁধন, এখন তোমার এতো এতো অ্যাচিভমেন্ট, তুমি এতো এতো কিছু করে ফেলছো, তুমি কানে চলে গেছো, তুমি বলিউডের বিশাল রাজ্যে কাজ করছো। তোমাকে নিয়ে এতো আলোচনা হচ্ছে… কিন্তু আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে আমার মেয়ে আমাকে হেরে যেতে দেখছে না। এটাই আমার বড় প্রাপ্তির জায়গা।’