Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

এতো শর্ত আমি মানতে পারবো না

অমিতাভ রেজা

সরকারি অনুদানের ছবি ‘পেন্সিলে আঁকা পরী’ নির্মাণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার অমিতাভ রেজা। ছবিটি নির্মাণের জন্য সরকারি ভাবে ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন অমিতাভ রেজা। প্রথম কিস্তির ১৮ লাখ টাকা তার অ্যাকাউন্টে জমাও হয়েছে। কিন্তু তিনি ছবিটি নির্মাণ করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকারি অনুদান পেয়েও কেন তিনি ছবিটি নির্মাণ করবেন না এব্যাপারে খোলাখুলি কিছু বলেননি। তবে কাহিনী স্বত্ব সম্মর্কিত বিষয়ে লেখকের (হুমায়ূন আহমেদ) পরিবার থেকে অমিতাভ রেজাকে কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়ায় অমিতাভ ছবিটি নির্মাণ করবেন না বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন? এই প্রশ্ন করা হয়েছিল অমিতাভ রেজাকে। মনে হল তিনি কিছুটা বিব্রত। কণ্ঠে অভিমানও প্রকাশ পেল। বললেন, বিষয়টি আমি মিডিয়াকে জানাতে চাইনি। এক অর্থে নির্মাতা হিসেবে এটাতো আমার ব্যর্থতাই। কত মানুষ অনুদান চেয়ে পান না। আর আমি অনুদান পেয়েও ফেরৎ দিচ্ছি। এজন্য আমি দুঃখিত।
সরকারি অনুদান পেয়েও কেন ছবি নির্মাণ করছেন না অমিতাভ রেজা? এনিয়ে মিডিয়ায় অনেকে অবাক হয়েছেন। ঘটনার পিছনের কারণ কি জানার আগ্রহ সবার। একটি সূত্রের মতে, হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস নিয়ে সিনেমা বানানোর ক্ষেত্রে তার পরিবার থেকে অমিতাভকে এমন কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে যা মেনে একটি ভালো ছবি নির্মাণের ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন না অমিতাভ। উপন্যাসের স্বত্ব নিয়েই সমস্যাটা জোড়ালো হয়েছে। পুরো ছবি বানানোর জন্য সরকারী ভাবে অনুদান পাওয়া যাবে ৬০ লাখ টাকা। অথচ হুমায়ূন আহমেদের পরিবার থেকেই নাকি উপন্যাস স্বত্ব হিসেবে দাবী করা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। পরে টাকার অংক ২০ লাখে নেমে আসে। কিন্তু বাড়তি শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। পেন্সিলে আঁকা পরী যদি শুধু বাংলা ভাষায় সিনেমা হলের জন্য নির্মাণ করা হয় তাহলে শর্ত থাকবে এক রকমের। কিন্তু ছবিটি যদি বিদেশী ভাষায় হয় এবং বিদেশী মুক্তি দেওয়া হয় তাহলে শর্ত হবে অন্যরকমের। আবার এই ছবি যদি ওটিটি প্লাটফরমে মুক্তি দেওয়া হয় তাহলে শর্ত হবে ভিন্ন ধরনের। এত শর্তের বেড়াজালে আবদ্ধ হতে চান না নন্দিত চিত্র পরিচালক অমিতাভ রেজা। তাই তিনি পেন্সিলে আঁকা পরী সিনেমা নির্মাণ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
প্রসঙ্গক্রমে অমিতাভ রেজা বললেন, বাংলা ভাষার নন্দিত লেখক হুমায়ূন আহমেদ বেঁচে থাকতেই আমি তাঁর পেন্সিলে আঁকা পরী নিয়ে সিনেমা বানানোর অনুমতি নিয়েছিলাম। হুমায়ূন স্যার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার আগে যখন তাঁর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম তখন তিনি তাগাদা দিয়ে বলেছিলেন ‘ছবিটা বানাচ্ছ না কেন?’ তাড়াতাড়ি বানাও। তখন আমি ‘আয়নাবাজি’ ছবিটি নিয়ে দারুণ ব্যস্ত ছিলাম। ফলে পেন্সিলে আঁকা পরীর জন্য তখন কিছু করতে পারিনি। হুমায়ূন স্যার মারা যাবার পর ব্যাপারটা আমি তার পরিবারের সদস্যদের কাছে বলেছি। সবাই উৎসাহ দিয়েছেন। সরকারি অনুদানে ছবিটা বানাবো এমন বাসনাও ছিল। অনুদান পেলাম। অথচ ছবিটি বানাতে পারছি না। এটাই চরম বাস্তবতা।