Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

যেতে চান কি নাটোর উত্তরা গণভবনে?

সুদীপ্ত শাহিন, নাটোর থেকে

আশার কথা দেশে করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করেছে।তবুও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন সবাই। অবসর সময়ে ঘুরে আসতে পারেন নাটোর উত্তরা গণভবন থেকে।তবে একটু খেয়াল রাখবেন গণভবন দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে কিনা। কেন যাবেন উত্তরা গণভবনে? কি আছে এখানে? চলুন একটা ধারনা দেই আপনাদের।

এই রাজবাড়ির পুরো সীমানা একটি বিশাল পরিখা ও উঁচু প্রাচীরে ঘেরা। পিরামিড আকৃতির বিশাল প্রবেশদ্বারে রয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন ইতালীয় ঘড়ি। এই ঘড়ির ঘন্টার ধ্বনি আশেপাশের এক-দুই কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। শুরুতেই এই প্রবেশদ্বার দর্শনার্থীদের নজরে কাড়বে।প্রবেশের পর দুপাশে রয়েছে সুসজ্জিত পাম গাছের সারি। নানান বাহারি ফুলের বাহার আছে এই প্রাসাদের ভেতরে। দেশি গাছের পাশাপাশি বিদেশি গাছের সমাহারও চোখে পড়বে। ফুল ও ফলের বাগানের ফাঁকে দেখা মিলবে শ্বেত পাথরের নানা ভাষ্কর্য। মূল প্যালেসের দক্ষিণে ইতালির মার্বেল পাথরের কারুকারে্য সুসজ্জিত ‘ইতালি গার্ডেন’ এখানকার অন্যতম আকর্ষণ। মোট ছয়টি পুকুর আছে এই রাজবাড়িতে। এছড়াও পুরো বাড়ির চারপাশের পরিখায় শানবাঁধানো একাধিক ঘাট আছে। রানীর বিশ্রামের জন্য ‘লেডিস পার্ক আছে পুকুরের সাথেই।
এই রাজবাড়িতে মোট ভবন আছে ১২টি। প্রতিটি ভবনের নিজস্ব বিশেষত্ব রয়েছে। ভবনে নির্মাণের সকল সরঞ্জাম বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আনা। দরজা ও আসবাবপত্র নির্মাণে মূল্যবান কাঠ ব্যবহৃত হয়েছে। প্রধান প্রাসাদের প্রবেশমুখে রয়েছে দুটি কৃষ্ণমূর্তি। এর পাশেই রাজার যুদ্ধে যাবার বর্ম রাখা আছে। এই প্রাসাদের বড় হল রুমে বিদেশি ঝাড়বাতি ও নানা শৌখিন আসবাবপত্র রয়েছে। সেই প্রাচীন সময়েও নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থাকায় এই ভবন সন্ধ্যার পর আলো ঝলমলে হয়ে থাকতো। ভবনের বাইরে রয়েছে ব্রিটিশদের নির্মিত কামান।

সম্পর্কিত

আসুন জেনে নেই যাবেন কিভাবে
রাজধানী থেকে নাটোর বা রাজশাহীগামী বেশ কিছু বাস আছে। ভোরবেলা থেকে শুরু করে সারাদিনই চলে বাস । দেশ ট্রাভেলস, ন্যশনাল ট্রাভেলস, হানিফ, শ্যামলী, গ্রামীণ ট্রাভেলসের যে কোন বাসে চড়ে মাত্র সাড়ে ৪ ঘন্টায় পৌঁছে যাবেন নাটোর। ভাড়া পড়বে নন এসি বাসে ৪০০ ও এসি বাসে ১০০০ টাকা। এছাড়াও বেশকিছু ট্রেন আছে নাটোর যাবার জন্য। উত্তরবঙ্গের প্রায় ৭টি ট্রেন নাটোর স্টেশনে থামে। নীলসাগর, পঞ্চগড়, রংপুর, একতা এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়াও বেশ কিছু লোকাল ট্রেনও আছে। নাটোর শহরের মাদ্রাসা মোড় থেকে সিএনজি চালিত বা ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় করে ১৫ মিনিটেই চলে যেতে পারবেন দিঘাপতিয়া রাজবাড়িতে।
রাজবাড়ি পরিদর্শনের সময়সূচী
উত্তরা গণভবন গ্রীষ্মকালে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শীতকালে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। সাপ্তাহিক ছুটি থাকে রবিবার। এই রাজবাড়িতে প্রবেশের জন্য ২০টা মূল্যের টিকিট রয়েছে।

কি খাবেন
নাটোরের বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা পেয়ে যাবেন হাতের নাগালেই। উত্তরা গণভবন থেকে ফেরার পথে কালীবাড়ি মন্দিরে মিলবে কাঁচাগোল্লা। এখানে চাইলে সকালের নাস্তাও সেরে নিতে পারেন। এছাড়াও নাটোর শহর মিষ্টির জন্য বিশেষভাবে বিখ্যাত। মৌচাক, নবরূপ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে পাবেন বাহারি মিষ্টি ও দই। চলন বিল খুব কাছে হওয়ায় নাটোরে দুপুরের খাবারে পাবেন চলন বিলের সুস্বাদু মাছ। মাদ্রাসা মোড়ের পাশেই।‘ইসলামীয়া পচুর হোটেল’ দুপুরের খাবারের জন্য আদর্শ জায়গা। মাছের পাশাপাশি হরেক রকমের ভর্তা, সবজি ও তরকারি পাবেন এখানে।

কোথায় থাকবেন
নাটোর ছোট একটি জেলা শহর হওয়ায় এখানে খুব ভালো মানের হোটেল নেই। হোটেল ভিআইপি, হোটেল প্রিন্স, হোটেল রুখসানা থাকার জন্য মোটামুটি মানের। এখানে রুম ভাড়া ২৫০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা পর্যন্ত।