Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

আমি আবার ফিরে আসব – লিওনেস মেসি

২১ বছরের সম্পর্ক।সুখ দুঃখের কতই না স্মৃতি আছে। কাজেই এই সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়া মানেই তো বুকভরা কান্না। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন না বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। বার্সেলোনার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার সংবাদ জানালেন এক সাংবাদিক সম্মেলনে। কাঁদতে কাঁদতে বললেন বুকের গভীরে জমানো অনেক কষ্টের কথা-
‘এখানে কী বলব, সেটা গত কয়েক দিন অনেক ভেবেছি। সত্যিটা হচ্ছে, কী বলব বুঝে উঠতে পারছি না। জীবনের এতগুলো বছর এখানে কাটানোর পর আমার জন্য দিনটা অনেক বেশি কঠিন। আমি সারা জীবন এখানে ছিলাম; কিন্তু এ রকম কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। গত বছর এত কিছুর পরও আমি এখানে থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম। কিন্তু এই বছর বিষয়টি আর একই নেই।
এই বছর এখানে থাকার জন্য আমি এবং আমার পরিবার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিলাম। অন্য যে কোনো কিছুর চেয়ে এ বিষয়টাই আমাদের চাওয়া ছিল। আমরা নিশ্চিত ছিলাম যে, বার্সেলোনাতেই থাকছি। এই শহর এবং এখানকার দুর্দান্ত ফুটবল আমাদের জন্য এখন কঠিন হয়ে গেল। আজ এই সবকিছুর জন্য আমাকে বিদায় জানাতে হবে।
১৩ বছর বয়সে আমি এখানে এসেছিলাম। ২১ বছর পর আমি যাচ্ছি স্ত্রী ও তিনজন কাতালান-আর্জেন্টাইন সন্তান নিয়ে। কেমন লাগছে, সেসব পুরোপুরি বলতে পারব না। আমি কেবল আপনাদের বলতে পারি, কয়েক বছরের মধ্যে আমরা এখানে ফিরে আসব। কারণ এটা আমার বাড়ি। আমি আমার সতীর্থ, সাবেক সতীর্থ এবং আমার পাশে যারা ছিলেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।
এই ক্লাবের জন্য আমার ভীষণ শ্রদ্ধা। এখানে আমার সঙ্গে অনেক চমৎকার সব জিনিস ঘটেছে। অনেক খারাপ অভিজ্ঞতাও রয়েছে। তবে এই সবকিছু আমাকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করেছে, আমাকে আজকের আমিতে পরিণত করেছে। প্রথম দিন থেকে একেবারে শেষ দিন সময় এই ক্লাবের জন্য নিজের সেরাটা দিয়েছি। কিন্তু সত্যি হচ্ছে, আমি আজ চলে যাচ্ছি। ভিন্নভাবে যেতে পারলে আমার ভালো লাগত। কখনও ভাবিনি যে, এভাবে বিদায় নিতে হবে। আসলে এই ক্লাবকে বিদায় জানানোর কথা কখনও চিন্তাই করিনি।
আমার কল্পনা ছিল, বিদায়টা হবে মাঠে ফ্যানদের হর্ষধ্বনির মধ্য দিয়ে। বেশ কিছু দিন ধরে আমরা দর্শকশূন্য গ্যলারিতে খেলছি এবং তাদের না শুনতে পারাটা আসলে ভীষণ কঠিন। দেড় বছর ধরে তাদের দেখি না। এ অবস্থার মধ্যেই আমাকে যেতে হচ্ছে। আমার আশা, আমি ফিরব এবং আবার এই ক্লাবের অংশ হবো। এই ক্লাবকে বিশ্বসেরা বানাতে আমি কাজ করব। মহামারি প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমে আসায় এই বছর থেকে হয়তো বা আমরা দর্শকদের সামনে খেলতে পারব। আসলে তাদের হর্ষধ্বনি ছাড়া, আমার নাম ধরে তাদের চিৎকার করা ছাড়া খেলা অনেক কঠিন। দেড় বছর ধরে সেই ফ্যানদের না দেখেই আমি এই ক্লাব ছেড়ে যাচ্ছি। দর্শকপূর্ণ ন্যু ক্যাম্প থেকে বিদায় নিতে পারলে কী যে ভালো লাগত! কিন্তু এভাবেই যেতে হচ্ছে। আমি এখানে যে ভালোবাসা পেয়েছি, তার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। এখানে বছরের পর বছর দারুণ সব মুহূর্ত পেয়েছি আমি। কিন্তু বাজে অভিজ্ঞতাও ছিল। কিন্তু মানুষের ভালোবাসা সবসময় একই ছিল।’