Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

ওরা কিসের মডেল? আমরা ওদের চিনি না…

মডেল হওয়া কী এতই সহজ? নাটক, সিনেমায় পাসিং শট দিলাম আর মডেল হয়ে গেলাম। তথাকথিত মডেল পরিচয়ধারীরা মিডিয়ার ক্ষতি করছে। ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট জনেরা।
অভিনয় শিল্পী সংঘ তাদের বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের প্রচুর অভিনেতা-অভিনেত্রী, মডেল তাদের কাজ দিয়ে সম্মান অর্জন করেছেন, পরিবারের জন্য গর্বিত হয়েছেন, পেয়েছেন মানুষের অকুণ্ঠ ভালোবাসা, সামাজিক ও জাতীয় স্বীকৃতি, হয়েছেন কোটি মানুষের আদর্শ। কোথাও পুলিশি অভিযানে ধরপাকড় হলে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় হেডলাইন হয় অমুক মডেল বা অভিনেতা/অভিনেত্রী গ্রেপ্তার; যা অবধারিতভাবে হয়ে ওঠে আকর্ষণীয় সংবাদ। এ ধরনের হেডলাইন সর্বজন শ্রদ্ধেয়, প্রথিতযশা অভিনেতা-অভিনেত্রী, মডেলসহ বিনোদন মাধ্যমে নিষ্ঠার সঙ্গে কর্মরত সবার জন্য সামাজিকভাবে অত্যন্ত বিব্রতকর এবং অসম্মানজনক হয়ে ওঠে।’
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, এত এত সম্মানিত ব্যক্তি, নানান প্রতিকূলতার মধ্যে স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া স্ট্রাগলার এবং ভবিষ্যতে বিনোদনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে উদগ্রীব নতুন প্রজন্মকে এই রকম বিব্রতকর প্রশ্নের সম্মুখীন যেন না হতে হয় সেটা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে নিশ্চিত করার দায়িত্ব অনেকটাই আপনাদের। তাই গণমাধ্যম যখন হেডলাইন করবে, সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো থেকে যাচাই এবং সংশ্লিষ্ট কাজে তার নিষ্ঠা, তার অবদান প্রভৃতি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে তার তার পেশা উল্লেখ করবে এটাই প্রত্যাশিত।
এ বিষয়ে ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি ও অভিনয়শিল্পী সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, গ্রেপ্তার দুজনের কাউকে আমরা কখনোই মডেল বা অভিনেত্রী হিসেবে দেখিনি। চিনিও না। বাংলাদেশের দর্শকরা কিন্তু এই অঙ্গনের মানুষকে অনেক সম্মান করে। এটা অর্জন করতে অনেক বছর ধরে সময় লেগে যায়। গুটিকয়েক অপকর্মের দায় যেন বিনোদন অঙ্গনের সবার ওপর না পড়ে। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, আমরা দেখছি, কোনো মডেল ও অভিনয়শিল্পী পরিচয়ধারী কেউ যখন এই ধরনের ঘটনা ঘটায় আমাদের অঙ্গনের সত্যিকারের শিল্পী ও মডেলদের বিব্রত হতে হয়। সামাজিকভাবে হেয় হতে হয়। মানুষও ঢালাওভাবে নেতিবাচকভাবে দেখা শুরু করে।’
অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, একটা প্রবণতা আমরা ইদানীং দেখছি, একটা ছেলে বা মেয়ে কোথাও অপরাধ করে নিজেদের মডেল বা অভিনয়শিল্পী দাবি করছে। যারা গ্রেপ্তার করেন, তারাও মনে হয়, এসব পরিচয়ে গ্রেপ্তার করতে পুলকিত হন। মডেল অমুক ধরা পড়েছে, সংবাদমাধ্যমেও সেভাবে লেখা হয়। এভাবে লেখা বা প্রচারের কারণে সত্যিকারের শিল্পীরা বিব্রত হন। সমাজের মানুষের কাছে তাদের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। অসম্মান করা হয়! সংবাদ পরিবেশন এবং গ্রেপ্তারের সময় কেউ যদি অভিনয়শিল্পী বা মডেল দাবি করে, তাহলে কী করেছে তা জানতে চাওয়া অবশ্যই উচিত। সত্যিকারের মডেল ও অভিনয়শিল্পীকে প্রমাণ করারও তো কিছু নেই, তারা সবার কাছে পরিচিত। অখ্যাতরা অপরাধ করে ইন্ডাস্ট্রির সুনাম নষ্ট করছে, এটা তো মানা যায় না। কোথাও কেউ নিজেকে মডেল বা অভিনয়শিল্পী দাবি করলে আমাদের সংগঠনের যে কাউকে ফোন করলে নিশ্চিত হতে পারবেন। যথার্থতা যাচাই করতে পারবেন, আদৌ তারা অভিনয় বা মডেলিংয়ের সঙ্গে যুক্ত কি না। সমস্ত পরিচালক, প্রযোজক, অভিনয়শিল্পী, কলাকুশলীর সাংগঠনিক পরিচয়পত্র আছে।’
দীর্ঘদিন ধরে মডেলিংয়ের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন মডেল বুলবুল টুম্পা। তিনি বলেন, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের সঙ্গে কখনো কাজ করিনি। তাদের বিষয়ে কিছু বলতেও চাই না। তবে এসব মডেল নামধারীদের জন্য প্রকৃত মডেলদের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এটা দুঃখজনক। আমাদের মিডিয়া ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও সতর্ক হতে হবে।’ ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জয়া আহসান, সাজু খাদেম সহ জনপ্রিয় তারকারাও।