Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

আহা! জীবন কত সুন্দর!

রেজানুর রহমান : করোনা-অদৃশ্য এক ঘাতকের সাথে যুদ্ধ করছে গোটা পৃথিবীর মানুষ। আমাদের নিকটতম প্রতিবেশি ভারতের অবস্থা মোটেই ভালো নয়। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। আমাদের বাংলাদেশেও করোনার ছোবল মানুষের মাঝে চরম আতংক ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যে দেশের অসংখ্য গুণী মানুষের মৃত্যু হয়েছে করোনার কারণে। মাথার ওপর থেকে নির্ভরতার একেকটা ছাদ সরে গেছে। চোখের সামনে তাদের মুখ গুলো ভেসে উঠলে কান্না থামানো মুশকিল হয়ে পড়ে। আমাদের পরম পুজনীয় শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামান এখন আর আমাদের মাঝে নেই। বিশিষ্ট ফোকলোরবিদ সবার প্রিয়, অনেক শ্রদ্ধার মানুষ শামসুজ্জামান খানও এখন না ফেরার দেশের বাসিন্দা। একে একে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ নাসিম, সাহারা খাতুন, ড. এমাজ উদ্দীন আহমেদ, বিজ্ঞানী আলী আসগর, সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব ড. সাদাত হুসাইন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী, আজাদ রহমান, কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম বাবুল, রাজনীতিবিদ শাজাহান সিরাজ, ড. বোরহান উদ্দিন জাহাঙ্গীর, ভাষা সংগ্রামী ড. সাঈদ হায়দার, ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ মো: আব্দুল্লাহ, সাংবাদিক রশীদুন্নবী বাবু, শিক্ষাবিদ সুফিয়া আহমেদ, বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক রাহাত খান, শিশুসাহিত্যিক আলম তালুকদার, অনুবাদক জাফর আলম, কথাসাহিত্যিক মকবুলা মনজুর, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বদর উদ্দিন কামরান সহ অনেকে। দেশের এতো এতো বিশিষ্টজন বেঁচে নেই।

ভাবতে গেলেই বুকের ভেতরটা হাহাকার করে ওঠে। আবার করোনার সাথে যুদ্ধ করে অনেকেই বেঁচে উঠেছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনেরই অনেক প্রিয়জন করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মহান সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে রোগমুক্ত করেছেন। বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, বিশিষ্ট অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার, বিশিষ্ট অভিনেতা আবুল হায়াত, বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী এস আই টুটুল, চিত্র নায়িকা পপি, বিশিষ্ট টিভি অভিনেতা অপূর্ব, চিত্রনায়ক রিয়াজ, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন যাদুকর জুয়েল আইচ, বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ, অভিনেতা আহসান হাবিব নাসিম, আজিজুল হাকিম, প্রবীর মিত্র, বিশিষ্ট চিত্রনায়িকা রোজিনা, বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী তাহসান খান, ক্রিকেটার ও সাংসদ মাশরাফি বিন মোর্তুজা, শাহরিয়ার নাফিস, আকরাম খান, চিত্র নায়িকা শশী, বিশিষ্ট চিত্রনায়ক আলমগীর, টিভি অভিনেতা তৌসিফ মাহবুবসহ অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। মহান সৃষ্টিকর্তার অপার রহমতে তারা এখন সবাই সুস্থ। অভিন্ন সুরে প্রায় সকলেই দেশবাসীর প্রতি একটি আরজি করেছেন। আরজিটি হলোÑ করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন।
তাঁরা বলেছেন, করোনা থেকেই বাঁচতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নাই। যারা ভাবছেন, আমার করোনা হবে না। তারা ভুল ভাবছেন। অদৃশ্য এই ভাইরাস যে কোনো সময় যে কাউকেই আক্রান্ত করতে পারে। আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি অর্থাৎ নিয়মিত মাস্ক পড়ি, ঘরে ফিরে সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলি, ভীড় এড়িয়ে চলি তাহলেই করোনা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। করোনা সতর্কতায় টিকা গ্রহনের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। ঈদের কেনাকাটায় বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকতে বলেছেন সবাই। ঈদ আবার আসবে। নিশ্চয়ই তখন এই ধরনের দুঃসহ পরিস্থিতি থাকবে না। তখন আমরা আবার আনন্দ করবো। জীবন সুন্দর। কিন্তু জীবনকে সুন্দর রাখতে সাবধানতার কোনো বিকল্প নাই!

হাসপাতালের দুঃসহ ১৯ দিন…
জুয়েল আইচ, যাদু শিল্পী
আমার তো বেঁচে ওঠার কথা নয়। মহান সৃষ্টিকর্তার অপার রহমতে বেঁচে উঠেছি। করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলাম। তারপর বলতে গেলে আমার কিছুই মনে নেই। ১৯ দিন হাসপাতালে ছিলাম। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর ১০/১২ দিন আমি কাছের মানুষকেও ভালো ভাবে চিনতে পারিনি। স্ত্রীকে দেখিয়ে অন্যকে জিজ্ঞেস করতামÑ উনি কে? আবার মেয়ের পরিচয় জানতে চাইতামÑ মেয়েটা কে? ও আমাদের বাসায় কেন? কাজেই বুঝতে পারছেন কী এক করুণ বাস্তবতার মুখোমুখি পড়েছিলাম আমি?
হাসপাতালে ভর্তি হবার পর পত্র-পত্রিকা ও বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে খবর প্রকাশ ও প্রচার হতে থাকে। সারাদেশে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরার পর আমি ব্যাপারটা টের পেয়েছি। প্রচার মাধ্যম ও দেশের সকল মানুষের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। অশেষ কৃতজ্ঞতা মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি। সৃষ্টিকর্তাই আমাকে নতুন জীবন দিয়েছেন। একই সাথে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সম্মানিত চিকিৎসকদের প্রতি। শুধু আমার বেলায়ই নয় প্রতিটি করোনা রোগীর প্রতি চিকিৎসকদের আন্তরিক সেবা মানবিক উদ্যোগের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
আমার ভক্ত শুভাকাঙ্খি ও দেশবাসীর প্রতি একটাই অনুরোধ, করোনার ব্যাপারে মোটেই হেলাফেলা করবেন না। এখনও যারা করোনার টিকা গ্রহণ করেননি তারা দ্রুত টিকা নিন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। জরুরি প্রয়োজন না থাকলে ঘরের বাইরে যাবেন না। যদি বাইরে যেতেই হয় তাহলে মুখে মাস্ক পড়বেন। অবশ্যই সামাজিক দুরত্ব মেনে চলবেন। একটা কথা মনে রাখবেন করোনা মারাত্মক রোগ। যে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। কাজেই সাবধান!

ferdous-wahid

যেন নতুন জীবন পেয়েছি
ফেরদৌস ওয়াহিদ, সঙ্গীত শিল্পী
বেঁচে উঠবো। এমনটা চিকিৎসকরাও ভাবেননি। কিন্তু রাখে আল্লাহ মারে কে? মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে নতুন জীবন দিয়েছেন। এ জন্য অনেক শুকরিয়া।
দেশে যখন করোনার সংক্রমন শুরু হয় তখনই আমি গ্রামের বাড়ি বিক্রমপুরের শ্রীনগরে চলে যাই। সেখানেই করোনায় আক্রান্ত হই। আমাকে ঢাকায় এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বলতে গেলে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়েছি। ডাক্তারদের অনেকই তো আমার বাঁচার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে বাঁচিয়ে তুলেছেন। অশেষ কৃতজ্ঞতা মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি।
এখনও আমি গ্রামের বাড়িতেই থাকি। বলতে গেলে গান ছেড়ে দিয়েছি। চ্যানেল আই এর অ্যাওয়ার্ড প্রদানের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। এরপর আর কোথাও কোনো অনুষ্ঠানে যাইনি। গানও করিনি। আমার পুরনো কিছু গানই বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে মাঝে মাঝে প্রচার করা হচ্ছে।
নতুন জীবনে আমার একটি আরজি আছে সবার প্রতি। জীবন অনেক সুন্দর। কিন্তু জীবনকে সুন্দর রাখার জন্য যত্নেরও প্রয়োজন। করোনা নিয়ে হেলাফেলা করবেন না। রোগটা কতটা মারাত্মক আমি টের পেয়েছি। কাজেই সাবধান থাকবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। বাইরে যেতে হলে অবশ্যই মাস্ক পড়বেন। চিকিৎসকদের মতে, নিয়মিত মাস্ক পরিধান করলে করোনার সংক্রমণ থেকে শতকরা ৮০/৮৫ ভাগ রেহাই পাবার সম্ভাবনা থাকে। ভীড় এড়িয়ে চলবেন। যারা এখনও টিকা নেননি তারা দ্রুত টিকা নিন। সবার জন্য রইল পবিত্র ঈদের অনেক শুভেচ্ছা।

আমার কোনো সিমটমই ছিল না
আজিজুল হাকিম, অভিনেতা
বলতে গেলে কোনো সিমটমই ছিল না। আমার স্ত্রী জিনাত সারারাত জেগে নতুন নাটক লিখেছে। ওই নাটক নিয়ে আমরা পাহাড়ে স্যুটিং করতে যাবোÑ এমনই পরিকল্পনা ছিল। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতিও শুরু হয়েছিল। কিন্তু সারারাত ধরে নাটক লিখে পরের দিন জিনাত অসুস্থ হয়ে গেল। বলল, আমার খুব খারাপ লাগছে।
চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করলাম। তিনি পরিবারের সব সদস্যের করোনা টেস্ট করতে বললেন। আমাদের একমাত্র ছেলে ও স্বামী-স্ত্রী তিনজনই করোনার টেস্ট করালাম। পজিটিভ রেজাল্ট এলো। অথচ জিনাত ছাড়া আমাদের বাপ-ছেলের তেমন কোনো সিমটমই ছিল না। না কাশি, জ্বর, গলাব্যথা কিছুই ছিল না। প্রথম প্রথম বাসায় বসেই চিকিৎসা নেয়া হলো। কিন্তু এক পর্যায়ে আমার অবস্থার অবনতি হলো। আমাকে আইসিইউতে নেয়া হলো। কী এক দুর্বিসহ ভয়ংকর সময় গেছে। বলে বোঝাতে পারব না। সৃষ্টিকর্তার রহমতে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছি। ভক্ত শুভাকাঙ্খিদের প্রতি আমার একটা আরজি আছে। করোনার ব্যাপারে একদম হেলা ফেলার করবেন না। কখনই ভাববেন না আপনি করোনা থেকে নিরাপদ। অনেকেই ঈদের কেনাকাটার জন্য মার্কেটে গিয়ে ভীড় করছেন। স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তারা মারাত্মক ভুল করছেন। ঈদ আবারও আসবে। পরিবেশ-পরিস্থিতি নিশ্চয়ই আবার আগের মতো হবে। তখন না হয় আমরা হই চই করে ঈদের আনন্দ করব। এবার বাড়িতেই ঈদ করুন। জীবন অনেক সুন্দর। আপনার সামান্য ভুলে জীবনের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। কাজেই সাবধান থাকবেন।

হেলাফেলা করবেন না প্লিজ…
রামেন্দু মজুমদার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
সত্যি কথা বলতে কী, চারপাশে এতো মৃত্যু দেখেও আমরা অনেকেই সচেতন হচ্ছি না। পাশের দেশ ভারতের অবস্থা খুবই খারাপ। করোনায় আক্রান্ত শত শত রোগী প্রতিদিন মারা যাচ্ছে। লাশ দাহ ও কবর দেবার মতো জায়গা পাচ্ছে না ভারত। প্রচার মাধ্যমে এমন করুণ দৃশ্য দেখেও আমরা অনেকে মোটেই সচেতন হচ্ছি না। অথচ একমাত্র সচেতনতাই পারে করোনা থেকে মুক্তি দিতে। আমার অভিজ্ঞতা বলি, করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলাম। কী এক ভীতিকর সময় কেটেছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী স্বান্থ্যবিধি মেনেই সুস্থ হয়েছি। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে সুস্থ করে তুলেছেন। একটা কথা জোর দিয়ে বলি, করোনা থেকে মুক্ত হতে গেলে সাবধানতার কোনো বিকল্প নাই। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে করোনার সাথে যুদ্ধ করেই সামনের পৃথিবীকে চলতে হবে। অতএব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আবশ্যক। অনেকেই হয়তো ভাবছেন আমি করোনার টিকা নিয়েছি। কাজেই আমার আর কিছুই হবে না, এটা ভুল ধারনা। টিকা নিলেই যে আপনি করোনা মুক্ত এমনটা ভাববেন না। তবে হ্যা, টিকা গ্রহণ করলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। আপনি হয়তো সহজেই করোনায় আক্রান্ত হবেন না!
সবচেয়ে বড় কথা হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। ঘরের বাইরে বের হলেই মাস্ক পরতে হবে। বাইরে থেকে ঘরে ফিরে অবশ্যই সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। ভীড় এড়িয়ে চলতে হবে। এই নিয়ম গুলো পালনের জন্য বাড়তি কোনো টাকা পয়সার দরকার পড়ে না। শুধুমাত্র সতর্কতায় যথেষ্ট। অথচ আমরা অনেকে মোটেই সচেতন নই। করোনার ভয়াবহতাকে মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছি না। ভীড় করে বাজার করছি। কেনাকাটার জন্য মার্কেটে মার্কেটে ভীড়ের সাথে প্রতিযোগিতা করছি। এই প্রবনতা আমাদেরকে সমূহ বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারে। কাজেই সাবধান। হেলাফেলায় জীবন নষ্ট করবেন না।

জীবন কিন্তু একটাই
চয়নিকা চৌধুরী
জীবন অদ্ভুত। জীবন সুন্দর। জীবন কিন্তু একটাই। কাজেই জীবনের যত্ন নিন। করোনা নিয়ে মোটেই হেলা ফেলা করবেন না। কথা গুলো বলেছেন বিশিষ্ট নাট্য নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ৪ এপ্রিল থেকে ২৭ এপ্রিল নিজের বাসায় একটি ঘরে একাকী জীবন কাটিয়েছেন। নিজে ঘরের কাজ করেছেন। কাপড় ধুয়েছেন। ঘর মুছেছেন। এ ঘর থেকে ও ঘরে ফোনে অথবা ভিডিও কলে কথা বলেছেন। প্রসঙ্গ তুলতেই বললেন, সে এক কঠিন অভিজ্ঞতা। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রায় সারাদিন শহীদুজ্জামান সেলিম ও রোজী দম্পতির বাসায় সময় কাটিয়েছি। সাথে ছিল আমাদের প্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী। দুই দিন পর শুনি শহীদুজ্জামান সেলিম ও রোজী করোনায় আক্রান্ত। রোজী আমাকে করোনা টেস্ট করার পরামর্শ দিলেন। করোনার টেস্ট করালাম। রেজাল্ট পজিটিভ। খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ঘরেই নিজেকে বন্দী করে ফেললাম। বই পড়ে ও মুভি দেখে সময় কাটিিেছ। তবে ১১ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল আমার খুব খারাপ সময় গেছে। প্রতিদিন প্রিয়জনের মৃত্যু সংবাদ শুনছি। চিত্রনায়িকা কবরী, নাট্য ব্যক্তিত্ব কে এম মহসিন, চিত্র নায়ক ওয়াসিম, আমাদের লোদী ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ আমাকে মানসিক ভাবে কাহিল করে তুলেছিল। তবে শোবিজের আমার সহকর্মী ও বন্ধুদের প্রতি আমি অনেক কৃতজ্ঞ। ঘরবন্দী জীবনে তাদের অনেকে ফোন করে, মেসেজ পাঠিয়ে সাহস দিয়েছে। সুবর্না আপার নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে চাই। তিনি একাধিকবার ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম কুরিয়ারে আমার জন্য তার লেখা বই পাঠিয়েছেন। ফপলে ঘরবন্দী জীবন তেমন কষ্টের মনে হয়নি।
যারা আমার এই লেখা পড়ছেন তাদেরকে একটা কথাই বলব, করোনার ব্যাপারে হেলাফেলা করবেন না। ঘরের বাইরে বের হলেই মাস্ক পড়বেন। ভীড় এড়িয়ে চলবেন। আর মনে সাহস রাখবেন। সবার জন্য রইল অনেক শুভ কামনা।