Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

মাসুদ রানার কিং খান হয়ে ওঠার গল্প

মামুনুর রহমান

আসল নাম মাসুদ রানা। গোপালগঞ্জের মকসুদপুরের রাঘধিতে জন্ম। মাসুদ রানার শৈশব কৈশর কেটেছে নারায়নগঞ্জে। কারণ মাসুদ রানার বাবা আব্দুর রব ছিলেন সরকারি কর্মচারী। মাসুদ রানার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবেন। চলচ্চিত্রে নাম লেখাবেন এমন ইচ্ছা তার কখনোই ছিল না। লেখাপড়াতেও তুখোড় ছিলেন মাসুদ রানা। শারিরিক গঠন ও চেহারার গাঁথুনী চকোলেট বয় নামে পরিচিতি তুলে ধরে তার নামের পাশে। নৃত্যপরিচালক আজীজ রেজা মাসুদ রানাকে নিয়ে আসেন চলচ্চিত্রের রঙ্গিন এই ভুবনে। হাতে ধরে শিখিয়ে বুঝিয়ে দেয়ার কাজ থেকে শুরু করে এমন কোন কাজ বাদ নেই যা আজীজ রেজা মাসুদ রানার জন্য করেননি। মাসুদ রানা থেকে শাকিব খান হতে আজীজ রেজার অবদান অনেকটাই ১৯৯৯ সালে ‘সবাইতো সুখি হতে চায়’। সিনেমার মাধ্যমে রুপালী পর্দায় চুক্তি বদ্ধ হন শাকিব। আফতাব খান টুলু পরিচালিত এই সিনেমার মাধ্যমে জীবনে প্রথমবারের মতো সিনেমার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর সুযোগ পেলেন তিনি। তবে শাকিব খান অভিনীত প্রথম মুক্তি প্রাপ্ত চলচ্চিত্র অনন্ত ভালোবাসা। এতে শাকিবের সাথে জুঁটি বেধেছিলেন ইরিন জামান।
দুই নবাগত নায়ক নায়িকার সিনেমাটি খুব একটা ব্যবসা সফল না হলেও নায়ক হিসেবে শাকিব খান সকলের দৃষ্টি অর্জন করেন ২০০০ সালে চিত্র নায়িকা শাবনুরের সাথে জুটি বাঁধার সুযোগ আসে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত গোলাম চবির মাধ্যমে। এই একই বছরে শাকিব চিত্রনায়িকা পপির সাথে দুজন দুজনার, চিত্র নায়িকা পূর্ণিমার সাথে আজকের দাপট ও চিত্রনায়িকা মুনমুনের সাথে বিষে ভরা নাগিন ছবিতে কাজ শুরু করেন। পরের বছর ২০০১ সালে মাত্র এক বছরে শাকিবের ৬টি সিনেমা মুক্তি পেলে দর্শক হৃদয়ে শাকিব খান থেকে কিং খান বনে যান তিনি। এফ আই মানিক পরিচালিত ‘স্বপ্নের বাসর’ সিনেমায় শাকিবের অভিনয় ব্যাপক প্রশংসিত হয়। শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস জুটির সিনেমা তুমুল ভাবে জনপ্রিয় হয়। সেই যে শুরু হলোÑ এখনও পর্যন্ত এগিয়ে চলেছেন তিনি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র তো অবশ্যই এখন দুই বাংলার সুপার হিরো তিনি। একের পর এক ভালো সিনেমা উপহার দিয়ে চলেছেন ভক্তদের। সেরা নায়ক হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিন বার।
দুই বাংলার এই সেরা অভিনয় তারকা অভিনয় করেছেন মান্না, রিয়াজ, আমিন খান, আলমগীর, বাপ্পারাজ, বুলবুল আহমেদ সহ আরো অনেকের সাথে। সালমান-শাবনুর জুঁটির পর বাংলা সিনেমার সেরা জুঁটিতে পরিণত হন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস জুঁটি। অসংখ্য ব্যবসা সফল চলচ্চিত্রের জন্ম দেয় এই জুঁটি। পরিচালক, প্রযোজকদের আস্থার জায়গা হয়ে ওঠেন তারা। যৌথ প্রযোজনার সিনেমায় ইতিমধ্যেই পর্দা কাঁপিয়েছেন শাকিব। জুঁটি বেঁধেছেন টালিউডের শ্রাবন্তির সাথে। এছবিতে দর্শক হৃদয় জয় করার পর সুযোগ আসে ‘নবাব’ এ অভিনয় করার। ‘নবাব’ রিলিজের পর তা ইতিহাসের অংশ হয়ে যায়। রেকর্ড গড়ে নবাবের ব্যবসা। দুই বাংলায় তুমুল আলোচিত হয় নবাব। বর্তমান সময়ে তাই দুই বাংলা একাই কাঁপাচ্ছেন আমাদের শাকিব খান।
শাকিব খান সম্পর্কে এক সাক্ষাৎকারে চলচ্চিত্র পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান বলেছিলেন-শাকিবের খোঁজ আমাকে দিয়েছিল নৃত্যু পরিচালক আজিজ রেজা। ওর জোরাজুরিতেই সামনা সামনি শাকিবকে দেখতে চাই আমি। শাকিবকে দেখেই পছন্দ হয় আমার। ওর যোগ্যতা ছিল নায়ক হবার। ওকে চলচ্চিত্রে নেয়ার জন্য অনুরোধ এসেছে সত্য। তবে আসল কথা হলো ও যোগ্য ছিল।