সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2001-2021 - আনন্দ আলো
ড. আব্দুর রাজ্জাক, কৃষিমন্ত্রী
সহজ কথা যায় না বলা সহজে। আবার কম সময়েও প্রয়োজনীয় কথা বলা সহজ হয় না। এসো আড্ডা দেই, পাঁচ মিনিট… এ ধরনের কথা শুনলে প্রথমেই অনেকে না-না করে উঠবেন। বলবেন, আরে ভাই মাত্র পাঁচ মিনিটের আড্ডায় কি বলব? শুরু করতে করতেই তো শেষ হয়ে যাবে। এতো গেল ব্যক্তিগত পর্যায়ের আড্ডা। কিন্তু আড্ডাটা যদি হয় কোনো টেলিভিশন অনুষ্ঠানের জন্য। সময় মাত্র পাঁচ মিনিট অর্থাৎ ৩০০ সেকেন্ড। উপস্থাপক প্রশ্ন করবেন। অতিথি উত্তর দিবেন। বাস্তবেও তাই হয়েছে। চ্যানেল আইতে শাহরিয়ার নাজিম জয়-এর উপস্থাপনায় ৩০০ সেকেন্ড নামের একটি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান বেশ জমে উঠেছে। এই অনুষ্ঠানেরই বাছাই করা ১০০জন বিশিষ্ট ব্যক্তির ৩০০ সেকেন্ড অর্থাৎ পাঁচ মিনিটের সাক্ষাৎকার নিয়ে আনন্দ আলোর ঈদ সংখ্যার একটি বিশেষ আয়োজন এখন বাজারে। আজ থেকে অনলাইনে শুরু হলো এই সংখ্যার অন্তর্ভুক্ত একশজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সাক্ষাৎকার…
জয়: কৃষিমন্ত্রী বলতেই আওয়ামী লীগ সরকারে দেখা যায় মতিয়া চৌধুরী। সফল মন্ত্রী আমরা জানি। আপনার সফলতা কিভাবে তার সফলতাকে ছড়িয়ে যায়?
আব্দুর রাজ্জাক: আমাদের দলের প্রিয় সভাপতি, আমরা বলি কৃষকরত্ন, দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তিনি সবর্দাই কৃষিকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশের ৬০/৭০ ভাগ মানুষ এখনও গ্রামে বাস করে। এখনও ৪৫ ভাগ মানুষের জীবিকা কৃষি। কৃষি ক্ষেত্রের প্রেরনা নিয়েই আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশ। আমরা এখন উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছি। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা সমৃদ্ধশালী দেশ হবো। পদ্মা সেতু, কৃষি, শিল্প বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। যা অভূতপূর্ব। এটাকে আমরা অব্যাহত রাখতে চাই, বেগবান করতে চাই। এটাকে আমরা গতিশীল করতে চাই।
জয়: মানুষ তো ভয় পায় কিছু খেতে। ফরমালিন মেশানো… বিষ মেশানো… এইভাবে যদি খাদ্যে ভেজাল দিয়ে মানুষকে প্রতারণা করা হয় তাহলে সফল এচিভেন্টই মুলহীন হয়ে যাবে।
আব্দুর রাজ্জাক: বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্যের ব্যাপারে ১৯৫৮ সালের একটা অডিনেন্স করে আইন প্রনয়ন করা হয়েছিল। ২০১৩ সাল পর্যন্ত এটিই ছিল। আমরা নিরাপদ খাদ্যের ওপর একটা আইন করেছি এবং নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ করেছি। আমি আপনার সাথে একমত যে, খাদ্যে ফরমালিন, অনেক ক্যামিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে। সময় বাড়ানোর জন্য… বেশী দিন যাতে থাকে। সহজেই যাতে পচে না যায়। কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহার করাটা খারাপ। এসকল বিষয়ে সরকারকে আরও বেশী তৎপর হতে হবে।
জয়: এক ফোটা ভেজালও তো গ্রহণযোগ্য নয়।
আব্দুর রাজ্জাক: অবশ্যই না। আমার জন্য না, আপনার জন্যও না।
জয়: তাহলে যারা এই ভেজাল কর্মকান্ডের জড়িত তাদেরকে গুলী করে মেরে ফেলা হচ্ছে না কেন?
আব্দুল রাজ্জাক: এটা কি সম্ভব? ইচ্ছে করলেই তো একটা মানুষকে মারা যায় না। প্রচুর শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পদক্ষেপ এখন নেয়া হচ্ছে। নিরাপদ খাদ্যের ব্যাপারে আমরা খুবই সচেতন। মানুষের আয় কম। এটাই হল মূল্য সমস্যা। মাত্র ২০০০ ডলার হলো মাথা পিছু আয়। এমন গরীব মানুষ আছেন যাদের আয় খুব কম। সেটি দিয়ে তারা প্রয়োজনীয় মাছ, মাংস কিনে খেতে পারে না।
জয়: আপনার এই কথা কি সরকারের সাফল্যের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে না? আপনি বলছেন আয় কম। কিন্তু সরকার বলছে সকল ক্ষেত্রে মানুষের আয় বেড়েছে।
আব্দুর রাজ্জাক: আয় বেড়েছে। ২০০০ ডলার আয় আন্তর্জাতিক মানে খুব কি বেশী আয়? আগে ছিল ৫৬০ ডলার। প্রায় চারগুণ বেড়েছে। এটা বড় সাফল্য বটে। তবে যখন এদেশের মানুষের গড় আয় ৪/৫ হাজার ডলার হবে তখন ক্রয় ক্ষমতা বাড়বে। সবাই তখন পুস্টি জাতীয় খাবার খেতে পারবে।
জয়: পেঁয়াজের দাম যেভাবে নাড়া দিয়ে গেল….
আব্দুল রাজ্জাক: পেঁয়াজ আমাদের দেশে যথেষ্ট হয়। গত বছর খুব আগে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার ফলে জমিতে যে পেঁয়াজ ছিল সেই পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। একই সাথে ভারতেরও পেঁয়াজের সমস্যা ছিল। হঠাৎ ভারত পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। ফলশ্রুতিতে মানুষের অনেক কষ্ট হয়েছে। অনেক দাম দিয়ে পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। যা কোনো ক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।
জয়: এখনও তো দেড়শ টাকা কেজি। তাড়াতাড়ি কমবে বলে কি এমন কোনো রিপোর্ট আছে?
আব্দুর রাজ্জাক: পেঁয়াজ কিন্তু এসেনশিয়াল না যে পেঁয়াজ না খেলে জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠবে…
জয়: কিন্তু সমস্যা তো হচ্ছে….
আব্দুর রাজ্জা: হ্যা পেঁয়াজ আমাদের খাদ্যের বড় উপাদান বটে। মুড়ি মাখতেও পেঁয়াজ লাগে। পেঁয়াজ জরুরি পণ্য। আমরা এব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছি। এ বছর পেঁয়াজের উৎপাদন যথেষ্ট ভালো হবে। যদি না হয় তাহলে অলটারনেট সোর্স থেকে অর্থাৎ বিদেশ থেকে আনার ব্যবস্থা করা হবে। পেঁয়াজের চাহিদা মেটানো আমাদের জন্য কঠিন হবে না।
জয়: আপনি দলের অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ পদে আছেন এবং গুরুত্বপুর্ণ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বেও রয়েছেন। আমরা এমন কথা শুনেছি যে যারা মন্ত্রী হবেন তারা দলের পদ হারাবেন….
আব্দুর রাজ্জাক: দেশের মানুষকে ভালোবেসে তাদের কল্যাণের জন্য কাজ করি। মন্ত্রী থাকলেও করব। না থাকলেও করব। যে অবস্থায়ই থাকি না কেন সর্বোচ্চ ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে দেশের জন্য কাজ করে যাব।
প্রচার: ৭ জানুয়ারি ২০২০