Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

টিভিতে ঈদ নাটক কম ছিল কিন্তু দর্শক বেশি

প্রতিবারের মতো এবারের ঈদুল ফিতরে কয়েকশ নতুন নাটক প্রচার হয়নি। যে সময়ে ঈদের নতুন নাটকের কাজ হওয়ার কথা তখন করোনার প্রভাবে সবাই ঘরবন্দি ছিলেন। ফলে লকডাউনের আগে শ্যুটিং হওয়া অল্প কিছু নাটক প্রচারিত হয়েছে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে। বেশিরভাগ টিভি চ্যানেল সাত দিনের ঈদ অনুষ্ঠানমালা সাজাতে গিয়ে নতুন নাটকের সঙ্গে পুরনো নাটক যোগ করেছে। শুধু বাংলাভিশনে কোনো পুরনো নাটক দেখানো হয়নি। চ্যানেলটির অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান তারেক আখন্দ বলেন, ‘এবার আমাদের চ্যানেলে তিনটি সাত পর্বের ধারাবাহিক নাটক আর ডজনখানের খণ্ড নাটক প্রচার হয়েছে। প্রতিটি নাটকই নতুন। যেহেতু এ বছর নতুন নাটক কম, এজন্য আমাদের চ্যানেলের প্রতিটি নাটকই ভালো দর্শক পেয়েছে। তাছাড়া আমাদের চ্যানেলের নির্দিষ্ট কিছু দর্শক আছেন যারা বাংলাভিশনের অনুষ্ঠানমালার প্রতি আলাদা ভালোবাসা দেখিয়ে থাকেন। সব মিলিয়ে এবারের ঈদের নাটকের দর্শক সাড়ায় আমরা আনন্দিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘এবার ঈদের নাটক কম হলেও সব চ্যানেলেই ভালো দর্শক ছিল। কারণ, লকডাউনের কারণে বেশিরভাগ মানুষ ঘরেই ছিল। সারা দিন করোনা আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে সবাইকে। তাই মনটাকে একটু রিফ্রেশ করতে দর্শক টিভির সামনে বসেছে। নতুন নাটক হলে তা আগ্রহ নিয়েই দেখেছে।’
চ্যানেল আইয়ের অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘এবার চ্যানেল আইয়ে অল্প কিছু নতুন নাটক প্রচার হয়েছে। সেগুলোর সাড়া সন্তোষজনক। কিন্তু আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি দুটি আইডিয়াতে। আমরা হুমায়ূন আহমেদের ক্লাসিক নাটক ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সিনেমাগুলো দেখিয়েছিলাম। দর্শক খুব পছন্দ করেছে এগুলো। টিআরপি রিপোর্ট এখনো হাতে আসেনি, তবুও মনে হচ্ছে আমরাই শীর্ষে থাকব এই দুটি আইডিয়ার জন্য।’
ইটিভির অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান ও জনপ্রিয় অভিনেতা জাহিদ হোসেন শোভন বলেন, ‘এবার ঈদে ইটিভিতে মোট ১৪টি খণ্ড নাটক ও তিনটি সাত পর্বের নাটক প্রচার হয়েছে। অন্যবারের চেয়ে এবারের দর্শক ভালো ছিল। আমি প্রায় সবগুলো কাজই দেখেছি। কারণ আমাকে প্রিভিউ করতে হবে কাজগুলোর। আমার ব্যক্তিগত মত ও দর্শক সাড়া অনেকটাই মিলে গেছে। আবুল হায়াত ও মিশু সাব্বির অভিনীত খণ্ড নাটক ‘আড়াল’ খুব ভালো ছিল। অপূর্বর ‘কিলার’ ও আফরান নিশো-শখের নাটকটিও খুব ভালো হয়েছে।’
নির্মাতা তুহিন হোসেনের একাধিক নতুন নাটক প্রচার হয়েছে কয়েকটি চ্যানেলে। তিনি বলেন, ‘আমি এবার সাফা কবির ও তৌসিফ মাহবুব জুটিকে নিয়ে দুটি নাটক নির্মাণ করেছিলাম। একটি সাত পর্বের, নাম ‘ওএমজি’; অন্যটি খণ্ড নাটক, নাম ‘বিবাহ ডটকম’। একটি বাংলাভিশন, অন্যটি এটিএন বাংলায় প্রচারিত হয়েছে। এছাড়া এনটিভিতে প্রচারিত হয়েছে ফজলুর রহমান বাবু ও মোমেনা চৌধুরীকে নিয়ে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নিঃশব্দ’। তিনটি কাজের জন্যই দারুণ সাড়া পেয়েছি। আমি মূলত নিজেকে টেলিভিশন নির্মাতা মনে করি। অনলাইনে কাজের ধরন আলাদা। একটি ড্রইং রুমে পুরো পরিবার মিলে একটি নাটক দেখে তৃপ্তি পেলে সেই আনন্দ যে কতখানি তা বোঝাতে পারব না। আমি মূলত সিরিয়াস নাটকই বেশি করি। কিন্তু এবার একটু হাস্য-রসাত্মক কাজ করেছি। তবে শর্টফিল্মটি ছিল সিরিয়াস গল্পের। এমন সাড়া অনেক দিন পাইনি। ২০১৫-১৬ সালে একটি নাটক প্রচার হলে দর্শক যেভাবে ফোনে অভিনন্দন জানাতেন, এবার তেমন হয়েছে।’
এ সময়ের অন্যতম ব্যস্ত অভিনেত্রী সাফা কবির। এ ঈদে তার এক ডজন নতুন নাটক প্রচার হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আসলে কোনো নাটকই ঈদ উপলক্ষে করা হয়নি। যেহেতু সারা বছর খণ্ড নাটকই করি, তাই হয়তো অনেক নাটক করা হয়েছে। সেই নাটকগুলোই দেখানো হয়েছে। আমি সৌভাগ্যবান, প্রতিটি নাটকই ভালো ছিল। তৌসিফ মাহবুবের সঙ্গেই বেশি কাজ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রিসেন্ট প্রেম, ও মাই ডার্লিং, গিফট গার্ল, ও মাই গড, বিবাহ ডটকম। অপূর্বর সঙ্গে করেছি টেক কেয়ার, আফরান নিশোর সঙ্গে করেছি শু মেকার। এই নাটকগুলোর জন্য সবচেয়ে বেশি সাড়া পেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবার ঈদের নাটকের জন্য গল্প, চরিত্র, নির্মাতা বাছাই করে কাজ করি। কারণ অনেক প্রতিযোগিতা থাকে। এবারের কাজগুলো সে অর্থে ঈদের কথা ভেবে করিনি। তবে কাজগুলোর মান ভালো। তাই হয়তো বেশি দর্শক নাটকগুলো দেখেছে।’