সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2001-2021 - আনন্দ আলো
শাবনূর বেশ কয়েক বছর ধরে পরিবারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। সেখান থেকে ফোনে কথা বলেন। তাঁর কথোপকথন তুলে ধরা হলো।
প্রশ্ন: সালমান শাহর মৃত্যু নিয়ে পিআইবি তাদের তদন্তে যা পেয়েছে, তা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে, শুনেছেন?
শাবনূর: না, শুনিনি তো। আমি মেলবোর্নে একটি বিয়ের দাওয়াতে গিয়েছিলাম। এইমাত্র সিডনিতে পৌঁছলাম। কী হয়েছে বলেন তো!
প্রশ্ন: তদন্তে এসেছে, সালমান শাহর সঙ্গে আপনার সম্পর্ক নিয়ে পারিবারিক কলহ ছিল।
শাবনূর: আমাকে জড়িয়ে এমন কথা কেন বলা হচ্ছে, তা আমি জানি না। সালমান ও আমাকে জড়িয়ে এ ধরনের কথা কেউ যদি বলেও থাকে, সেটার আমি ঘোর বিরোধিতা করছি। সালমান শুধুই আমার নায়ক ছিল, সহশিল্পী ছিল, বন্ধু ছিল—এর বাইরে আর কোনো সম্পর্ক ছিল না। একজন মৃত মানুষকে নিয়ে এত বছর পর এত বিশ্রী কথা বলার মানসিকতা কীভাবে সবার হয়, সেটাও আমি বুঝি না।
প্রশ্ন: তদন্তে এসেছে, আপনি তাঁকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন।
শাবনূর: এটা পুরোপুরি বানোয়াট কথা। আমি তখন অবিবাহিত আর সালমান বিবাহিত। ওর স্ত্রীর সঙ্গেও আমার একটা ভালো সম্পর্ক ছিল। শুটিংয়ে সালমানের স্ত্রী সব সময় আমাদের সঙ্গেই থাকত। প্রেমের সম্পর্কের কিছু একটা যদি হতো, এটা তখন সবাই বুঝতে পারত। এত বছর পর এই ব্যাপারটা নিয়ে আমাকে জড়িয়ে নোংরা উক্তি করার ব্যাপারটি মোটেও ভালো লাগছে না। কিছু মানুষ আমাকে জড়িয়ে গুজব ছড়িয়েছে। এখনো ছড়াচ্ছে। আমি নিজের চোখে দেখেছি, সামিরাকে অতিরিক্ত ভালোবাসত সালমান। সেই ভালোবাসার মধ্যে আরেকজন ঢোকার কোনো প্রশ্নই আসে না।
প্রশ্ন: সামিরা আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছেন, তাঁকে জানিয়ে সালমান আপনাকে নিয়ে ভারত ও সিঙ্গাপুরে যান।
শাবনূর: এসব কথা কেন ছড়ানো হচ্ছে, আমি বুঝতে পারছি না। এ ধরনের কিছু যদি আদৌ ঘটত, তাহলে কারও অজানা থাকার কথা নয়। কারও সঙ্গে বেশ কয়েক দিন কথা বলার একটা পর্যায়ে সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হয়। সালমান আর আমি অনেকগুলো ছবিতে কাজ করেছি। সুন্দর ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। সালমান আর আমার মনমানসিকতা মোটেও ও রকম ছিল না।
প্রশ্ন: তাহলে তো আপনাকে নিয়ে তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল, সেটা তো আপনার জানার কথা।
শাবনূর: তাঁদের পারিবারিক কলহের খবর আমার তো জানার কথা নয়। আমাকে নিয়ে যদি দ্বন্দ্ব হয়ও, সালমান শাহর স্ত্রী এত বছর কখনোই তো সামনাসামনি এসে বলেনি। সেও তো আমার বন্ধু। এমনকি সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীও তো কখনোই আমাকে কিছু বলেননি। সালমানের মা অনেক জায়গায় বলেছেন, আমাকে সালমান ছোট বোনের মতো দেখত। ঘটনা যদি আমার জন্যই ঘটত, সামনে এসেই বলত, তোমার কিংবা তোর জন্য আমাদের সর্বনাশ হয়েছে। যাঁরা এ ধরনের বাজে কথা ছড়াচ্ছেন, তাঁদের কী বলা উচিত, তা আমার জানা নেই।
প্রশ্ন: এফডিসিতে একবার আপনাকে নিয়ে রাগারাগি করেছিলেন সামিরা, এটা কি ঠিক?
শাবনূর: সালমান ও আমাকে নিয়ে সব সময় গুজব ছড়াতে সবাই আনন্দ পেত। আমরা কাজ করে যার যার গন্তব্যে চলে যেতাম। আমাকে নিয়ে যদি সমস্যা হতো, এত বছরে এতগুলো তদন্ত হলো, কখনো আমাকে নিয়ে কিছু বলা হয়নি।
প্রশ্ন: তাহলে আপনাকে নিয়ে এত কথা কেন বলা হচ্ছে?
শাবনূর: আমি এখন জোর গলায় বলব, এটা রীতিমতো ব্যবসা হচ্ছে। কিছু কিছু মানুষ সালমান ও আমাকে জড়িয়ে ব্যবসা শুরু করেছে। একটা মৃত মানুষকে এভাবে টানাহেঁচড়া করার নিন্দা জানাচ্ছি।
প্রশ্ন: সালমান তো আপনার বন্ধু। তাঁর মৃত্যুর পর আপনি তাঁর বাসায় যাননি, পরিবারের সঙ্গে দেখা করেননি, কথাও বলেননি।
শাবনূর: সালমানের মৃত্যুসংবাদটা যখন পাই, তখন আমি বাসায় ছিলাম। হঠাৎ কে যেন ফোন করে জানায়, সালমান শাহ মারা গেছে। আমি উল্টো ধমক দিয়ে বলি, কী বলো এসব! আমার ছোট বোন বাইরে গিয়ে সালমানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়ে আসে। আমি তখন পুরোপুরি হতবাক হয়ে যাই। এরপর এফডিসিতে সালমানের লাশ দেখতে যাই।