Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

নিশ্চিত না কতদিন সিনেমায় থাকব!

বেশকিছু সিনেমার শুটিং নিয়ে ব্যস্ত আছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। সামনে মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত নতুন ছবি। কথা হলো মাহির সঙ্গে-
আনন্দ আলো: ইদানীং চলচ্চিত্রে আপনি আগের মতো নিয়মিত নন, অথচ দর্শকপ্রিয়তা আগের মতোই আছে। এর কারণ কী বলে মনে হয় আপনার?
মাহি: সিনেমার কারণেই আমার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর সুযোগ হয়েছিল। তখনই আমাকে অনেকে বলেছিলÑ ছবি মুক্তির পর পরিচিতি অনেক বাড়বে, কিন্তু কখনো তাদের ওই কথা বিশ্বাস করিনি। আমার সিনেমা দেখতে মানুষ প্রেক্ষাগৃহে যাবে, সেটাও কখনো চিন্তা করিনি। তবে ছবি মুক্তির পর আগের চিন্তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। দর্শকরা প্রেক্ষাগৃহে ভিড় করেছিল আমার সিনেমা দেখতে। এই ভালোবাসার প্রধান কারণ হলো, আমি অনেক ভাগ্যবান। তাদের ভালোবাসা আর ভাগ্যের কারণেই আমি একাধিক হিট ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছি।
আনন্দ আলো: আপনি অনেক নারীকেন্দ্রিক ছবিতে অভিনয় করেছেন। এটা কি পরিকল্পিত ছিল?
মাহি: না, কাকতালীয়ভাবে হয়ে গেছে। তবে এটাও ঠিক, নারীকেন্দ্রিক চলচ্চিত্রগুলোই আমার বেশি দেখা হয়, কারণ ‘পোড়ামন’ ও ‘অগ্নি’ নারীকেন্দ্রিক হওয়ার কারণেই হিট হয়েছে।
আনন্দ আলো: আপনি কি সবসময় সিনেমায়ই অভিনয় করতে চান?
মাহি: অভিনেত্রী হবো এটাই কখনো চিন্তা করেনি। আমি টিভিতে প্রচুর নাটক ও সিনেমা দেখতাম। সেখানে নারীকেন্দ্রিক চরিত্রগুলোতে দেখতাম বাড়ির ক্ষমতাধর নারীর ছবি ঘরের দেয়ালে ঝুলানো থাকত। আমি চাইতাম বাড়িতে আমার একটি ওইরকম ছবি টানানো থাকুক। এই চিন্তা থেকেই আশীষ সেনগুপ্তের কাছে গিয়ে ছিলাম ফটোশুট করতে। ছবি তোলার পর তিনি আমাকে বললেন, অনেক সুন্দর হয়েছে। আমার মনে হয়, এগুলো কোনো পরিচালকের কাছে পাঠানো উচিত। এরপর প্রযোজনা সংস্থা জাজ মাল্টিমিডিয়া থেকে প্রথম ফোন আসে। তখন মাকে বলেছিলাম, একটি নাটকের প্রস্তাব পেয়েছি। পরবর্তীতে পরিচালক আমাকে বললেন, এটা আসলে সিনেমার প্রস্তুাব।
আনন্দ আলো: সাধারণত এটি ভাবা হয় যে, কোনো নতুন অভিনেত্রীর যদি পূর্ব থেকে শিল্প সংশ্লিষ্ট না হন, তবে টিকে থাকতে হলে নিজের দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি প্রয়োজন হয়। আপনি কি তাই মনে করেন?
মাহি: অবশ্যই, ইচ্ছাশক্তি এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে, আমার ক্ষেত্রে ‘ভাগ্য’ একটি কারণ ছিল। আমার প্রথম কাজ ছিল জাজ মাল্টিমিডিয়ার সাথে। ক্যারিয়ারের প্রথম তিন বছর আমি জাজ ছাড়া অন্য কোথাও কাজ করিনি।
আনন্দ আলো: আপনি কি চুক্তির কারণে প্রথম তিন বছর তাদের সাথে কাজ করতে বাধ্য ছিলেন?
মাহি: একদমই না; এরকম কোনো চুক্তি ছিল না। তারাই আমাকে প্রথম কাজের সুযোগ দিয়েছিল এবং সময়ের সাথে সাথে তারা আমার পরিবারের মতো হয়ে যায়। জাজের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক তৈরি হওয়ার কারণেই অন্য কোথাও কাজ করা হয়নি। যখন আমার মনে হয়েছে, নিজস্ব একটি জায়গা তৈরি করতে পেরেছি, তখন অন্যদের সাথেও কাজ করা শুরু করি।
আনন্দ আলো: জাজ থেকে বেরিয়ে আসার সময় বেশ কলহ সৃষ্টি হয়েছিল, এটা আসলে কেন?
মাহি: কলহটা হয়েছিল ভুল বোঝাবুঝির কারণে। এরপর থেকে আমি তাদের সাথে কাজ করি না। তবে আমি জাজ ছাড়ার পরও ‘অগ্নি-২’ ছবির শুটিং করেছি।
আনন্দ আলো: একপর্যায়ে আপনি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দেয়ার কথা চিন্তা করেছিলেন। এটা কি ঠিক ছিল?
মাহি: জাজ ছেড়ে যাওয়ার পর মনে হয়েছিল আর সিনেমা করব না। তখন আমি স্নাতক শেষ করতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলাম। তবে ১৫ দিনের মধ্যেই আমি বুঝতে পেরিছিলাম, দীর্ঘ দিন সেখানে আমার পক্ষে থাকা সম্ভব নয়।
আনন্দ আলো: এখন কি মনে হয়, দীর্ঘ দিন চলচ্চিত্রের সাথে থাকবেন?
মাহি: সত্যি বলতে কি, এই প্রশ্নের উত্তর আমি নিশ্চিতভাবে দিতে পারব না। জীবন নিয়ে আমি খুব বেশি পরিকল্পনা করি না। এমনও হতে পারে, একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বললাম, এখন থেকে আর চলচ্চিত্রের সাথে থাকব না। তবে আমার মনে হয় এমনটা ঘটবে না। কারণ আমি অভিনয়টাকে উপভোগ করি। মাঝে মধ্যে এটা আমার যন্ত্রণার কারণ হয়, তারও আমি এটা ছাড়তে পারি না।
আনন্দ আলো: আপনার পরবর্তী পরিকল্পনা কী?
মাহি: স¤প্রতি নতুন দুটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। একটির শুটিংও শুরু হয়েছে। তবে আমি মানহীন কাজ করে সংখ্যা বাড়াতে চাই না, ভালো কাজ অল্প হলেও মনে প্রশান্তি লাগে।