Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

ইফতেখার হাসানের ডিজাইন রাজ্য

স্থাপত্য শিল্পে যারা দেশের জন্য সৃষ্টিশীল কাজ করে চলেছেন তাদের মধ্যে স্হপতি ইফতেখার হাসান রাফিন অন্যতম।  বুয়েট থেকে পড়াশোনা করেছেন।  ২০০৫ সালে তিনি স্হাপত্য অধিদপ্তরে সহকারি স্হপতি হিসেবে যোগদেন।  সেখানে ৫ বছর চাকরি করেন।  তারপর ২০১০ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে নিজে গড়ে তোলেন ‘স্হাপনা কৌশল’ নামের একটি কনসালটেন্সি ফার্ম।  এ যাবৎ তিনি বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন স্হাপনার ডিজাইন তৈরি করেছেন।  ছবি অাঁকাঅাঁকিতে পারদর্শী ছিলেন।  এবার শাহ সিমেন্ট সুইট হোমে তাকে নিয়ে প্রতিবেদন।  লিখেছেন- মোহাম্মদ তারেক।

তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সবার ছোট আর্কিটেক্ট ইফতেখার হাসান রাফিন।  তার গ্রামের বাড়ি রংপুর জেলায়।  সেখানেই তার বেড়ে ওঠা।  ইফতেখার হাসানের বাবার নাম মহিউদ্দিন আহমেদ।  মা ইসমত আর গৃহিনী।  ইফতেখার হাসান রাফিনের ছবি অাঁকাঅাঁকির বীজটা ছোটবেলায় রোপন হয়েছিল স্কুলে পড়ার সময়।  যেখানেই ছবি অাঁকার প্রতিযোগিতা হতো সেখানেই তাকে দেখা যেত।  বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার।  ছোটবেলা থেকেই তার ইচ্ছা ছিল আর্কিটেক্ট হওয়া।  সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।  তিনি হয়েছেন একজন সফল স্হপতি।  রংপুর জেলা স্কুল থেকে তিনি এসএসসি পাস করেন ১৯৯৩ সালে।  ১৯৯৫ সালে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন বুয়েটের স্হাপত্য বিভাগে।  থাকতেন তিতুমীর হলের ৪০১ নম্বর রুমে।  স্হাপত্য নিয়ে পড়াশোনা চলাকালীন সহপাঠি বন্ধুদের মধ্যে আছেন স্হপতি লিমন, ফয়সাল, রাহাত, মহিউদ্দিন ও জাহিদ।  বন্ধুরা সবাই বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত আর্কিটেক।  তার প্রিয় শিক্ষকের তালিকায় আছেন স্হপতি শামসুল ওয়ারেস ও মুস্তাফা খালিদ পলাশ।  ইফতেখার হাসান ব্যাচেলর অব আর্কিটেকচার ডিগ্রি লাভ করেন ২০০৩ সালে।  পাস করে বের হওয়ার পর রূপায়ন হাউজিং কোম্পানিতে যোগ দেন।  সেখানে তিনি দেড় বছর চাকরি করেন।  তারপর ২০০৫ সালে তিনি স্হাপত্য অধিদপ্তরে সহকারি স্হপতি হিসেবে যোগ দেন।  ২০১০ সালে প্রতিষ্টিত স্হাপনা কৌশল নামের কনসালটেন্সি ফার্মে অভিজ্ঞ স্হপতিসহ মোট ১২ জন কমর্ী নিয়ে কাজ করে চলেছেন তিনি।  ইতিমধ্যে ইফতেখার হাসান দেশের নামকরা কমার্শিয়াল টাওয়ার, অফিস বিল্ডিং, গার্মেন্টস, স্কুলসহ অসংখ্য বিল্ডিংয়ের কাজ করেছেন।

Rupayan-Delphenium-a#B87228তার উলে­খযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম আগ্রাবাদের তনু টাওয়ার, কাঁঠালগঞ্জের সোবহান টাওয়ার, বাসাবোর ইবনে সিনা মডেল স্কুল, আফতাবনগরের এএলজেড এর আফতাব নগর, আশুলিয়ার আলিফ গ্র“পের মেহনাজ গার্মেন্টস, নারায়ণগঞ্জের রূপায়নের হুজাইফা অ্যাপার্টমেন্ট, মালিবাগের কমরউদ্দিন টাওয়ার, আশুলিয়ার দেওয়ান ট্রেড সেন্টার, আলিফ গ্র“পের অ্যামব্রয়ডারি ভিলেজ, ধানমন্ডির নগর হোমস এর সপ্তডিঙ্গা, চিটাগাং-এর রূপায়নের সেঞ্চুরী ল্যান্ডডেড কমার্শিয়াল বিল্ডিং, বাড্ডার মিলিনিয়াম স্কয়ার বাণিজ্যিক ভবন, বারিধারার ডোমেন্ট ড্রীম, বারিধারার মিঃ আকবর রেসিডেন্স, বসুন্ধরায় অবস্হিত ১০ তলা নূরুন্নাহার আবাসিক ভবন, নবাবপুরের এস কে পি এল এর বাণিজ্যিক ভবন, চিটাগাং লালখান বাজারের বিএনএস গ্র“পের কনডেমিনিয়াম প্রজেক্ট, সার্কেল প্রপার্টিজের বিভিন্ন প্রজেক্টসহ অসংখ্য বিল্ডিং।

ইফতেখার হাসান তার সব ধরনের কাজ স্হাপত্যনীতি ও রাজউকের নিয়ম মেনেই করেন।  ২০০২ সালে তিনি বিয়ে করেন।  স্ত্রীর নাম মারজিয়া হাসান।  এই দম্পতি দুই সন্তানের জনক-জননী।

স্হপতি ইফতেখার হাসান বলেন, সিমপি­সিটি আমার ডিজাইনের অন্যতম বৈশিষ্ট।  বিল্ডিং ডিজাইনকে অহেতুক জটিল না করে আমি বেসিক জ্যামিতিক ফর্মগুলো আমার নিজস্ব আঙ্গিকে প্রকাশ করি।  ডিজাইনের ক্ষেত্রে আমি সব সময় লক্ষ্য রাখি ভবনটির স্থাপত্যিক বিন্যাস, স্পেস কোয়ালিটি, নান্দনিকতা এবং অবশ্যই এর ব্যবহার উপযোগিতা।  প্রতিটি স্পেসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি ন্যাচারাল এবং ভেন্টিলেশনের ওপর জোড় দেই।  ক্লায়েন্টের চাহিদা জেনে নেওয়ার পর নিজস্ব স্হাপত্য স্টাইলে সেটির রূপান্তর ঘটাই।  এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় রাজউক ও সিডিএ এর নিয়ম অনুসরণ করে যতটা সম্ভব সবুজের সমাবেশ ঘটিয়ে ভবন ও এর চারপাশকে পরিবেশ বান্ধব ভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করি।  বাংলাদেশের আবহাওয়া, জলবায়ু, প্রকৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি কাজে নজর দেন স্হপতি ইফতেখার হাসান রাফিন।  এই স্হপতি তার কাজ সততা ও নিষ্ঠার সাথে করতে ভালোবাসেন।  পেশার কাছে দায়বদ্ধ থেকে সেটাকে সততার সাথে শেষ করতে চেষ্টা করেন।  স্হাপত্য নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে স্হপতি ইফতেখার হাসান বলেন, আমার ফার্মের সক্ষমতা বাড়িয়ে আরও ভালো কাজ উপহার দিতে চাই।  বিল্ডিং ডিজাইন এবং কন্সট্রাকশনে আরও উচ্চ প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটাতে চাই।