Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

আমাদের সাহিত্য পরিবার

বই হলো ভালো বন্ধু। একটি বই মানুষকে স্বপ্ন দেখায়। ভালো কাজে উৎসাহ দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, মানুষ নিয়মিত বই পড়েন তিনি কখনও অপরাধ প্রবণ কোনো ঘটনায় জড়িত হন না। সৎ থাকতে চেষ্টা করেন। সাধারণত কাউকে ঠগান না। অন্যের ক্ষতিও করেন না। বই বন্ধুর মতো তাকে ভালো কাজে সহায়তা করে। সেই বই যারা লিখেন তারা লেখক ও কবি। সমাজ ও রাষ্ট্রের অগ্রসরমান অংশের প্রতিনিধিত্ব করেন তারাই। হতে চাই তাঁদের মতো। কারা তারা? অবশ্যই আমাদের প্রিয় কবি ও লেখকদের মতো হতে চাই।
আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি আমাদের দেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লেখক পরিবার আছেন। অনেকের পুরো পরিবারই লেখালেখিতে ব্যস্ত সময় কাটান। তাদের লেখালেখির উজ্জ্বল আলোয় আমাদের সাহিত্য জগৎ আজ এতটা আলোকিত। আমাদের বাংলা সাহিত্য তাদেরই লেখালেখির দ্যুতি ছড়িয়ে বিশ্বমানের স্বীকৃতি লাভ করেছে।
প্রয়াত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক বাংলা সাহিত্যে অনন্য ভ‚মিকা পালন করেছেন। তার স্ত্রী আনোয়ারা সৈয়দ হক একজন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক। তাদের পুত্র দ্বিতীয় সৈয়দ হকও লেখালেখির জগতে পা রেখেছেন।
Shahitto-Poribar-1আমাদের বাংলা সাহিত্যে রাবেয়া খাতুন একটি অনন্য নাম। উপন্যাস, ছোটগল্প আর ভ্রমণ সাহিত্যে রাবেয়া খাতুনের লেখার জগৎ অনেক বড়। তাঁর সুযোগ্য পুত্র বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগর আমাদের শিশুসাহিত্যে অনন্য ভ‚মিকা পালন করে চলেছেন। রাবেয়া খাতুনের আদরের কন্যা দেশ বরেণ্য রন্ধনবিদ কেকা ফেরদৌসীও একজন লেখক। পুত্রবধূ নারী উদ্যোক্তা কনা রেজা এবার বইমেলায় লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। ছোটপুত্র বিশিষ্ট টেলিভিশন উপস্থাপক ফরহাদুর রেজা প্রবালও লেখালেখি করেন।
হুমায়ূন আহমেদ, এই একটি নামই তো আমাদের বাংলা সাহিত্যকে স্বমহিমায় উজ্জ্বল করেছে। বইয়ের প্রতি পাঠককে ফিরিয়ে এনেছেন কথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর বাবা ফয়েজুর রহমানও লেখালেখি করতেন। বাবার গুণ পেয়েছে সব সন্তানই। হুমায়ূন আহমেদের ছোট ভাই বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল দেশের শিশুসাহিত্য এক অনন্য নাম। আরেক ছোট ভাই আহসান হাবিব বিশিষ্ট রম্য লেখক। হুমায়ূন আহমেদের মা আয়েশা ফয়েজও লেখালেখি করতেন। হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রী গুলতেকিনও লেখালেখি করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনেরও লেখালেখির প্রতি ঝোঁক আছে। পুত্র নুহাশ আহমেদও একজন তরুণ লেখক ও নাট্য নির্মাতা।
গুণী সংগীতজ্ঞ মোস্তফা জামান আব্বাসী অনেক দিন ধরেই লেখালেখি করেন। তাঁর মেয়ে সামিরা জামান আব্বাসীও একজন লেখিকা। ভাতিজী নাশিদ কামালও লেখালেখির জগতে জড়িত। কবি আহসান হাবিব, বাংলা কবিতায় উজ্জ্বল এক নাম। তাঁর সুযোগ্য পুত্র মঈনুল আহসান সাবের একজন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক।
মাসুদ রানা খ্যাত কাজী আনোয়ার হোসেনের পুত্র কাজী শাহেনরও লেখালেখি করেন। বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহফুজ আনাম নিজে লেখালেখি করেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা তাহমিনা আনাম লেখালেখির ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপি আলোচিত হয়ে উঠেছেন।
দেশের আরও একটি বড় সাহিত্য পরিবার হলো প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী পরিবার। কবীর চৌধুরী একজন বিশিষ্ট লেখক ছিলেন। বড় ভাই মুনীর চৌধুরীর সাহিত্য প্রতিভা তার মাঝে প্রভাব ফেলেছিল। বোন ফেরদৌসী মজুমদারও লেখালেখি করেন। এই পরিবারের পরের প্রজন্ম আশফাক মুনীরও লেখালেখির সাথে জড়িত।
Shahitto-Poribarজহির রায়হান আমাদের বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য নাম। তাঁর সুযোগ্য দুই পুত্র অনল রায়হান ও বিপুল রায়হানও লেখালেখির সাথে জড়িত।
বিশিষ্ট শিল্পপতি কাজী শাহেদ আহমেদ একজন সুলেখকও বটে। তাঁর পুত্র লেখালেখির সাথে জড়িত।
কবি নির্মলেন্দু গুণ আমাদের বাংলা কবিতাকে অনেক সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা মৃত্তিকা গুণও কবিতার জগতে পা ফেলেছেন।
বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত একজন সুলেখকও বটে। তাঁর কন্যা গুণী অভিনেত্রী বিপাশা হায়াত, জামাতা তৌকির আহমেদও লেখালেখির সাথে জড়িত।
প্রথা বিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদ আমাদের বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর মেয়ে মৌলী আজাদও লেখালেখির সাথে জড়িত।
শওকত ওসমান আমাদের বাংলা সাহিত্যে অনন্য একটি নাম। তার নাতি আসমার রুপেন লেখালেখির সাথে জড়িত।
বিশিষ্ট প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম নিজে লেখেনও। তার মাও লেখালেখি করতেন। তার পুত্রও লেখালেখির জগতে পা ফেলেছে।
বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার নিজে একজন লেখক। তার স্ত্রী গুণী অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার এবং মেয়ে ত্রপা মজুমদারও লেখালেখি করেন।
বিশিষ্ট অভিনেতা ইনামুল হকও লেখালেখি করেন। তাঁর স্ত্রী লাকী ইনামও সাহিত্য জগতে পা ফেলেছেন।
বিশিষ্ট প্রকাশক ওসমান গণিও লেখালেখি করেন। এবার তার মেয়ের একটি নতুন বই বেরিয়েছে।
আমাদের দেশে এরকম আরও অনেক লেখক পরিবার আছেন। যাদের লেখালেখির আলোয় আমাদের বাংলা সাহিত্য প্রতিদিন আলোকিত হচ্ছে। সবার কথা এই লেখায় তুলে ধরা সম্ভব হলো না। তবে আগামীতে তাদের কথা আমরা অবশ্যই তুলে ধরবো।