Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৫ হাসি আনন্দে জমলো মেলা!

তিনি হাসলেন, কাঁদালেনও। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা প্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বললেন, চলচ্চিত্রই আমার জীবন। বর্তমান সময়ে দেশের চলচ্চিত্র নিয়ে অনেক নেতিবাচক কথা বলা হচ্ছে। তবুও আমি আশাবাদী। যে দেশের সড়কের ওপর আধুনিক উড়াল সেতু হচ্ছে, যে দেশে পদ্মা সেতুর মতো বিরাট এক কর্মকাÐ সমাপ্তির পথে সেই দেশে চলচ্চিত্রের সমস্যার সমাধান হবে না আমি এটা বিশ্বাস করি না। আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এক্ষেত্রে অনেক আন্তরিক। আমি বিশ্বাস করি তিনিই সকল সমস্যার সমাধান করবেন। তবে আমাদেরকে এ ব্যাপারে আন্তরিক হতে হবে।

কথাগুলো বলেছেন জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী শাবানা। এবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৫ অনুষ্ঠানে তাকে ও গুণী শিল্পী ফেরদৌসী রহমানকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ফেরদৌসী রহমান অসুস্থতার কারণে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তার পক্ষে তার পুত্রবধূ প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে সম্মাননা পদক গ্রহণ করেন। চলচ্চিত্রসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের গুণী ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তথ্য সচিব মরতুজা আহমদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বিটিভি অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে। পুরস্কার বিতরণ শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে দেশের গুণী শিল্পীরা অংশ নেন।

এবারের অনুষ্ঠানটি নানা কারণে অন্যান্য বারের তুলনায় ছিল বৈচিত্র্যময় ও আকর্ষণীয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়নে সমন্বিত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন। আমাদের চলচ্চিত্রের উম্মেষ ধারায় ভালো পাÐুলিপির অভাব রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এক্ষেত্রে দেশের গুণী কবি, লেখকদের সহযোগিতা প্রয়োজন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে যোগ্যতর চলচ্চিত্র ও যোগ্য নির্মাতা কলাকুশলীরা যাতে আরও সুযোগ পান সেদিকে আন্তরিক দৃষ্টি দেবার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহŸান জানান।

কয়েকটি স্মরণীয় মুহূর্ত!

মঞ্চে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান কর্মসূচি চলছে। পুরস্কার প্রাপ্ত গুণী শিল্পীরা পুরস্কার গ্রহণ করার মঞ্চে উঠছেন। তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়ার আগে ও পরে প্রধানমন্ত্রী প্রায় সকলের সঙ্গে কথা বলেন। শিল্পীদের অভিনয়ের প্রশংসা করেন। অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ উচ্ছ¡াস প্রকাশ করে বললেনÑ আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক খোঁজ রাখেন। আমাকে দেখে তিনি বললেনÑ আমি কিন্তু তোমার অভিনয়ের একজন ভক্ত। দেশের প্রধানমন্ত্রীর এমন উদারতা সত্যি অবিশ্বাস্য! আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।

জিরো ডিগ্রী ছবির জন্য জয়া আহসান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন। অন্য একটি পুরস্কার গ্রহণের জন্য তার দেশের বাইরে যাবার কথা ছিল। কিন্তু তিনি তা করেননি। মাকে সঙ্গে নিয়ে দেশের পুরস্কার গ্রহণ করার জন্য এসেছেন। একথা শুনে প্রধানমন্ত্রী অভিভূত কণ্ঠে জয়ার প্রশংসা করেন।

নাট্যকার মাসুম রেজা পুরস্কার গ্রহণের জন্য মঞ্চে উঠা মাত্রই প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়ে বলেন, তোমরা কীভাবে এত ভালো স্ক্রীপ্ট লেখো? তোমাদেরকে ধন্যবাদ।

এভাবে প্রায় পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেক শিল্পী ও নির্মাতার সঙ্গে পুরস্কার প্রদানের ফাঁকে ফাঁকে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এই আন্তরিক ¯েœহাশীষ পেয়ে সকলেই খুশি। আমরা চাই আমাদের গোটা চলচ্চিত্রাঙ্গনে এই খুশি আর আনন্দ ছড়িয়ে পড়–ক। জয় হোক বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের।

 

২৫টির মধ্যে ৯টিই ইমপ্রেস এর

এবার ২৫টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেয়া হয়েছে। ২৫টির মধ্যে ৯টি পুরস্কার পেয়েছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম এর ছবি। এর মধ্যে ইমপ্রেস এর ছবি জিরো ডিগ্রী পেয়েছে ৪টি, প্রার্থনা পেয়েছে ২টি, নদীজন পেয়েছে ১টি, জালালের গল্প ১টি এবং মহুয়া সুন্দরী পেয়েছে ১টি পুরস্কার। উল্লেখ্য, জিরো ডিগ্রী’র টিভি স্বত্ব এখন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম এর।

 

এক নজরে বিজয়ীরা

আজীবন সম্মাননা: চিত্রনায়িকা শাবানা ও সংগীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমান

শ্রেষ্ঠ অভিনেতা: শাকিব খান (আরো ভালোবাসব তোমায়) ও মাহফুজ আহমেদ (জিরো ডিগ্রী)

শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী: জয়া আহসান (জিরো ডিগ্রী)

শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র: বাপজানের বায়োস্কোপ ও অনিল বাগচীর একদিন

শ্রেষ্ঠ পরিচালক: মো. রিয়াজুল মওলা রিজু (বাপজানের বায়োস্কোপ) ও মোরশেদুল ইসলাম (অনিল বাগচীর একদিন)

শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্ব চরিত্রে: গাজী রাকায়েত (অনিল বাগচীর একদিন)

শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব চরিত্রে: তমা মির্জা (নদীজন)

শ্রেষ্ঠ অভিনেতা খল চরিত্রে: ইরেশ যাকের (ছুঁয়ে দিলে মন)

শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী: যারা যারিব (প্রার্থনা)

শিশু শিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার: প্রমিয়া রহমান (প্রার্থনা)

শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: সানী জুবায়ের (অনিল বাগচীর একদিন)

শ্রেষ্ঠ গায়ক: সুবীর নন্দী (গান: তোমারে ছাড়িতে বন্ধু, মহুয়া সুন্দরী) ও এস আই টুটুল (গান: উথালপাথাল জোয়ার, বাপজানের বায়োস্কোপ)

শ্রেষ্ঠ গায়িকা: প্রিয়াংকা গোপ (আমার সুখ সে তো, অনিল বাগচীর একদিন)

শ্রেষ্ঠ গীতিকার: আমিরুল ইসলাম (উথালপাথাল জোয়ার, বাপজানের বায়োস্কোপ)

শ্রেষ্ঠ সুরকার: এস আই টুটুুল (উথালপাথাল জোয়ার, বাপজানের বায়োস্কোপ)

শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার: মাসুম রেজা (বাপজানের বায়োস্কোপ)

শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: মাসুম রেজা ও মো. রিয়াজুল মওলা রিজু (বাপজানের বায়োস্কোপ)

শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: হুমায়ূন আহমেদ (অনিল বাগচীর একদিন)

শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: মেহেদী রনি (বাপজানের বায়োস্কোপ)

শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক: সামুরাই মারুফ (জিরো ডিগ্রী)

শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: মাহফুজুর রহমান খান (পদ্মপাতার জল)

শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রতন কুমার পাল (জিরো ডিগ্রী)

শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা: মুসকান সুমাইকা (পদ্মপাতার জল)

শ্রেষ্ঠ মেকআপ-ম্যান: শফিক (জালালের গল্প)

মুক্তি পেলো গ্রাস

ইমপ্রেস টেলিফিল্মের নতুন ছবি ‘গ্রাস’ মুক্তি পেয়েছে ২৮ জুলাই। ছবিটির কাহিনী, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন মারিয়া আফরিন তুষার। অভিনয় করেছেন তমা মির্জা, আর.বী প্রীতম, জ্যোতিকা জ্যোতি, রিপন নাথ, কচি খন্দকার, শিখা খান, শেলী আহসান, মুনিরা মিঠু, বাদল শহীদ, রানী সরকার  প্রমুখ। ছবিটি মুক্তি পেয়েছে ঢাকার বলাকা সিনেওয়ার্ল্ড-সহ, খুলনা, ময়মনসিংহ এবং পটুয়াখালীর বিভিন্ন সিনেমা হলে। ছবির গল্পে দেখা যায়- শাহরিয়ার তন্ময় একজন স্বপ্নবাজ তরুণ। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান তন্ময় চলচ্চিত্র নির্মাতা হতে চায়। কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতা করার মত কেউ থাকে না তার। বড় বোনের টাকায় সংসার চলে। বাবা রিটায়ার্ড। সব মিলিয়ে পরিবেশ পরিস্থিতি তার অনুকুলে থাকে না। পরবর্তীতে প্রেমিকার দেয়া বুদ্ধি অনুযায়ী সে বাবার কাছে টাকা চায় বিজনেস করার জন্য যেটা দিয়ে সে ফিল্মের কাজ শুরু করে। বাবাকে কথা দেয় ৬ মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেয়ার; কারণ পেনশনের এই টাকা তার বড় বোনের বিয়ের জন্য রেখেছিল তার বাবা। ইতিমধ্যে একজন প্রযোজকের কাছ থেকে ও কিছু টাকা নেয় সে। তারপর ফিল্মের কাজ শেষ করে। কিন্তু সকল ঝামেলা দেখা দেয় তারপর। কেউ তার ফিল্ম হলে চালাতে চায় না।বাবাকে দেয়া কথা রাখতে পারে না। গল্প মোড় নেয় ভিন্নদিকে।

 

শেষ হলো আলতাবানুর শুটিং!

শুটিং শেষ হয়েছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম এর নতুন ছবি অরুণ চৌধুরীর ‘আলতাবানু’। গত ৬ই জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন নদীর পাড়ে চলে ছবিটির শুটিং। তবে ছবির বেশিরভাগ অংশের শুটিং মানিকগঞ্জ ও এর আশপাশের এলাকায় হয়েছে বলে জানান নির্মাতা অরুণ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ছবিটির শুটিং টানা শেষ করতে পারায় বেশ স্বস্তি লাগছে। এখন চলছে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ। একেবারেই ভিন্ন ধারার একটি গল্পের ছবি ‘আলতাবানু’। দর্শকরা সত্যিই বেশ আনন্দ পাবেন। মম, আনিসুর রহমান মিলনকে এতোদিন দর্শকরা যেভাবে দেখে এসেছেন- আলতাবানুতে একেবারইে অন্যরকমভাবে দেখবেন। আর মম’র বোনের চরিত্রে যে মেয়েটি অভিনয় করেছে তার নাম রিক্তা। সেও অনেক ভালো অভিনয় করেছে।’

আলতা ও বানু নামের দুই বোনের জীবনের নানা ঘটনা নিয়ে এগিয়েছে চলচ্চিত্রটির গল্প। এতে দেখা যাবে, বড়বোন আলতার বিয়ের ঘটনার সূত্র ধরে হঠাৎ করে হারিয়ে যায় ছোটবোন বানু। ছোটবোনকে খুঁজতে বের হয় আলতা। এর পরই নানা চড়াইউৎরাই পেরুতে হয় আলতাকে। ছবিতে আলতা চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাকিয়া বারী মম এবং বানু চরিত্রে ফারজানা রিক্তা। আরও আছেন দিলারা জামান, আহসানুল হক মিনু ও সাবেরী আলম। অভিনয় প্রসঙ্গে মম বলেন, ‘ছবির গল্পটি বেশ দারুণ। একটা টান টান উত্তেজনা আছে। শুটিং ইউনিটটাও চমৎকার ছিল। ভালো একটা সিনেমা দর্শক উপহার পাচ্ছে বলে আমার বিশ্বাস। এই ছবিতে দর্শক একেবারেই অন্যরকম এক মমকে দেখবেন। বিষয়টা নিয়ে আমি বেশ রোমাঞ্চিত।’ পরিচালক সূত্রে জানা যায়, সম্পাদনাসহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে এ বছরই ছবিটি মুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে।