Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

বারোর বাজনা আলোয় ভরা আনন্দ আলো

আনন্দ আলো প্রতিবেদন

মঞ্চে অনেক তারকার ভিড়। যেই সেই মঞ্চ নয়। হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণের আলোকিত মঞ্চ। গত ছয় বছর ধরে চ্যানেল আই ও সুরের ধারার যৌথ আয়োজনে বাংলা নববর্ষ বরণের এই মঞ্চে আনন্দ আলোর জন্মদিন পালন হয়ে আসছে। পহেলা বৈশাখ বাঙালির বড়ই আনন্দের দিন। আজ থেকে ১২ বছর আগে বাংলা নববর্ষের আনন্দমুখর একটি দিনে রমনার বটমূলে ছায়ানটের ঐতিহাসিক বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম-এর বিনোদন পাক্ষিক সবার প্রিয় পত্রিকা আনন্দ আলোর আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের উন্মুক্ত চত্বরে চ্যানেল আই ও সুরের ধারা আয়োজিত হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে প্রতিবছর আনন্দ আলোর জন্মদিন পালন হয়ে আসছে।

এবার আনন্দ আলোর যুগপূর্তি হলো। যুগপূর্তির বিশাল কেক বানিয়েছে ইয়াম্মি। হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণ মঞ্চে সেই কেক কেটে যুগপূর্তির আনন্দ উৎসবে মিলিত হবেন সবাই। মঞ্চে ইতোমধ্যে উপস্থিত হয়েছেন ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক, উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আনন্দ আলোর সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি ফরিদুর রেজা সাগর, চ্যানেল আই-এর পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, চ্যানেল আই-এর পরিচালক জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুন, স্বর্ণ-কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশনের সিইও ফারজানা ব্রাউনিয়াসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক গুণীজন। চ্যানেল আইতে তখন অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছিল। অনুষ্ঠান সূচির মধ্যে ছিল ফারজানা ব্রাউনিয়া অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করবেন। তারপর অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে আনন্দ আলোর জন্মদিনের কেক কাটা হবে।

নির্ধারিত সিডিউল অনুযায়ী মঞ্চে ডেকে নেয়া হলো অতিথিদের। একে একে সকলে বক্তৃতাও করলেন। অনুষ্ঠান প্রায় শেষের পথে। অথচ বহুকাক্সিক্ষত জন্মদিনের কেক-এর হদিস নেই। ঘটনা কি? ঘটনা হলো এবার বর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছিল। মহিলারা ভেনেটি ব্যাগ নিয়েও কোনো অনুষ্ঠানে ঢুকতে পারবেন না। ব্যাগ আর একটি কেক কি এক হলো? সেটাই বোঝানো যাচ্ছে না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে। অফিসারদের মধ্যে একজন রাজি হলেও অন্যজন দায়িত্ব নিতে রাজি নয়। যদি কেকের ভিতর বিস্ফোরক জাতীয় কিছু থাকে? এই ধরনের দোদুল্যমানতায় কেক ভিতরে ঢোকার ছাড়পত্র পাচ্ছিল না। এদিকে অনুষ্ঠান প্রায় শেষ হয় হয়… হঠাৎ আনন্দ আলোর কর্মীরা অনেকটা হৈচৈ করেই মাথায় বয়ে নিয়ে এলো জন্মদিনের বিশাল কেকটি। অতপর অতিথিরা সকলে মিলে আনন্দ আলোর জন্মদিনের কেক কাটলেন। যুগ পেরিয়ে নতুন যুগে পা ফেলল সবার প্রিয় পত্রিকা আনন্দ আলো।

প্রতিবারই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের খোলা আঙিনায় হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান মঞ্চে আনন্দ আলোর জন্মদিনের কেক কাটার পর কেকটি অনুষ্ঠানে আগত অতিথি ও দর্শকদের মাঝেই বিতরণ করা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মঞ্চে কেক কাটার পর কেকটি যখন আনন্দ আলোর নির্ধারিত স্টলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল দেখা গেল তার আগেই স্টলের সামনে লম্বা লাইন পড়ে গেছে। জন্মদিনের কেক বলে কথা। সবাই খেতে চায়। লাইনে দাঁড়ানো সবার হাতে এক টুকরো করে কেক দেয়া হচ্ছিল। হঠাৎ এক ভদ্রমহিলা বেঁকে বসলেন। তার এক টুকরোয় হবে না। কেকের অর্ধেকটা তার চাই। গাজীপুর থেকে এসেছেন চ্যানেল আই ও সুরের ধারার বর্ষবরণ অনুষ্ঠান দেখতে। এখানে আনন্দ আলোর জন্মদিনের কেক কাটা হবে তা জানতেন না। জানলে আরো সেজেগুজে আসতেন। মহিলা নাছোড়বান্দা। একটুকরোয় তার চলবে না। কেকের অর্ধেকটা তার চাই। আমাদের কারও কারও মনে হলো মহিলা হয়তো মানসিক রোগী। তাই অবিন্যস্ত আচরণ করছেন। তাকে স্টলের পাশে ডেকে নিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করা হলো অর্ধেক কেক আপনাকে দেয়া সম্ভব নয়। দেখছেন না কত মানুষ এক টুকরো কেকের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েছে। সেখানে আপনাকে অর্ধেক কেক দেই কি করে?

মহিলা এবার আশ্বস্ত হলেন। বললেন, গাজীপুরে তারা ২৭ সদস্যের একান্নবর্তী পরিবারে বসবাস করেন। আনন্দ আলোও এই পরিবারের সদস্য। আনন্দ আলোর নতুন সংখ্যা পাওয়া মাত্রই নাকি গোটা পরিবারে আনন্দের ঢেউ খেলে যায়। বিশেষ করে আনন্দ আলোর জন্মদিন ও ঈদ উপলক্ষে ‘একব্যাগ আনন্দ একব্যাগ আলো’র বর্ণাঢ্য আয়োজন গোটা পরিবারকে দারুণ আনন্দ দেয়। ঈদ উপহার হিসেবে আনন্দ আলোকেই বেছে নেন পরিবারের সদস্যরা।

ভদ্রমহিলা আনন্দ আলোর কেক পরিবারের সকল সদস্যকে দেখাতে চেয়েছিলেন। কাজেই এক টুকরোয় হবে না। তার অর্ধেক কেক চাই। সব শুনে আমরা আনন্দ আলোর পরিবার অভিভ‚ত। মনে হচ্ছিল পুরো কেকটাই পরিবারটির জন্য পাঠালে মন্দ হতো না। কিন্তু ততক্ষণে বিশাল কেকের ৯০ ভাগ বিতরণ শেষ। ভাবলাম মহিলার ঠিকানাটা নেই। একটা কেক পাঠিয়ে দিব। কিন্তু ভদ্রমহিলা কোথায়? ধারে কাছে খুঁজেও তাকে পাওয়া গেল না।

ভদ্রমহিলা যেহেতু আনন্দ আলোর নিয়মিত পাঠক কাজেই তার সঙ্গে আবার নিশ্চয়ই দেখা হবে। দেখা যদি নাও হয় তার কথা অনেকদিন মনে থাকবে। কারন তিনি আনন্দ আলোকে তার পরিবারের সদস্য করে নিয়েছেন। এমনি করে যারাই আনন্দ আলোকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছেন, আনন্দ আলোর সঙ্গে হেঁটে চলেছেন তাদের সকলের প্রতি রইলো বিন¤্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। আবারও আনন্দ আলোর জন্মদিনের শুভেচ্ছা নিন। ভালো থাকবেন সবাই। অনেক শুভ কামনা সবার জন্য।

 

সঙ্গে আছি ভবিষ্যতেও থাকব

-ইমদাদুল হক মিলন

কথাসাহিত্যিক

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান মঞ্চে আনন্দ আলোর জন্মদিন উপলক্ষে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, আনন্দ আলো আমার অনেক প্রিয় পত্রিকা। আমি পত্রিকাটির নিয়মিত পাঠক। আমাদের বিনোদন জগৎ এখন অনেক সমস্যা সংকটের মুখোমুখি। আকাশ সংস্কৃতির দাপটে অনেকে দিশেহারা। কি করবে? কি করা উচিত সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে কেউ কেউ। এক্ষেত্রে ইমপ্রেস-এর বিনোদন পাক্ষিক আনন্দ আলো সর্বদাই দেশীয় সংস্কৃতিকে আলোকিত ও বিকশিত করার লক্ষ্য পূরণের পথে অবিচল আস্থা নিয়েই হেঁটে চলেছে। আনন্দ আলোর জন্মলগ্ন থেকেই আমি সঙ্গে আছি। ভবিষ্যতেও থাকব। একযুগ পার করলো আনন্দ আলো। সত্যিই এটি অনেক আনন্দের সংবাদ। আনন্দ আলোর ভবিষ্যৎ সাফল্য কামনা করছি।

 

আনন্দ আলোকে অনেক পছন্দ করি

-আনিসুল হক

মেয়র, ঢাকা উত্তর

গত বারো বছরে আনন্দ আলোয় একাধিকবার সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আনন্দ আলোর জন্মদিনের কেক কাটতে গিয়ে সেই স্মৃতি রোমন্থন করে বললেন, আনন্দ আলো আমার অনেক প্রিয় পত্রিকা। দেশে বিনোদন পত্রিকার জগতে আনন্দ আলোর জুড়ি নেই। পত্রিকাটির বিষয় ভাবনা, গেটআপ, মেকআপ সবকিছুই আধুনিক। সবচেয়ে বড় কথা আনন্দ আলোয় গসিপ থাকে না। আনন্দ আলো কাউকে অহেতুক আঘাত করে না। বিষয়টি আমার অনেক পছন্দের। তাই আনন্দ আলোকে আমি পছন্দ করি। ছিমছাম সুন্দর চেহারার আনন্দ আলো একযুগ পার করলো। এখন আরো বেশি দায়িত্ব নিয়ে সামনে হাঁটতে হবে। আনন্দ আলোর জন্য অনেক শুভ কামনা।