Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

ভালোবাসাময় ভালোবাসার পোশাক

সৈয়দ ইকবাল

পোশাক আর সাজে এখন পহেলা ফালগুন এবং বিশ্ব ভালোবাসা দিবস মিলেমিশে একাকার। ইট পাথরের এই নগরে প্রকৃতিজুড়ে সেভাবে হয়তো স্পর্শ মেলে না বসন্তের রঙিন হাওয়ার। তবে বাসন্তী রঙা বসনে নগরবাসী ঠিকই বরণ করে রঙিন বসন্তকে। আর বসন্তের একদিন পরই বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে কপোত-কপোতীদের রঙিন বিচরণ নগরবাসীকে ভালোবাসার কথা অন্যভাবে মনে করিয়ে দেয়। তাই তো রঙিন পোশাক সাজে ফালগুন আর ভালোবাসার রংয়ের ছোঁয়া পাওয়া যায় একই সঙ্গে। ভালোবাসার দিন বলে কথা। যদিও একদিনের ভালোবাসায় হয়তো  অনেকেই বিশ্বাসী নয়। তারপরও একটি বিশেষ দিনে ভালোবাসার আলাদা একটা গুরুত্ব তো অবশ্যই থাকে। কেননা একটি দিন ভালোবাসার স্পেশাল দিন মানে প্রিয় মানুষটিকে চমকে দেয়ার বিষয় তো থাকেই। আর তাই তো নিজের প্রেজেন্টেশন কিংবা উপহার দিয়ে মুহূর্তেই প্রিয় মানুষকে সারপ্রাইজ দিতে পারেন। তবে সবকিছুর আগে ভালোবাসা দিবসে নিজেকে পোশাক-আশাক থেকে শুরু করে সবকিছুতেই একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করতে পারেন। ঠিক যেমনটি বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজে পাবেন ভালোবাসা দিবস উপযোগী বিভিন্ন পোশাক।

সম্পর্কিত

নগরের বিভিন্ন দেশীয় ফ্যাশন হাউজের দোকানগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে এবারও ভালোবাসা দিবসে ফ্যাশন ডিজাইনাররা যুগল পোশাকের ডিজাইন করেছেন। এতে পরিবারের সকলের উপযোগী করে পোশাকের উপস্থাপনায় আনা হয়েছে মেলবন্ধন। সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি কিংবা শাড়ি সবকিছুতেই থাকছে ফেব্রিক, ডিজাইন বা মোটিফের যুগল উপস্থাপনা। সালোয়ার-কামিজ আর কুর্তার প্যাটার্নে এবারও থাকছে লং এবং গাউন স্টাইল, কিছু কাটিংয়ে থাকছে ঘের এবং বডি ফিটিংস। মূলত ভালোবাসা দিবসকে সামনে রেখে পোশাক ডিজাইনাররা যুগল আর পরিবারের সদস্যদের কথা চিন্তা করে একই রংয়ের পোশাক তৈরি করেছেন। রং বাংলাদেশ-এর নির্বাহী ও ফ্যাশন ডিজাইনার সৌমিক সাহা বলেন, ‘বিশেষ দিন কিংবা উৎসবে মূলত প্রিয়জনের সঙ্গে মিলিয়ে অনেকেই একই রকম পোশাক পরে থাকে। সে কারণে রং বাংলাদেশ-এর পোশাকগুলোতে একটু রংয়ের বাহার ব্যবহার করা হয়েছে। এসব পোশাকে একই রকমের এমব্রয়ডারি, ব্লক, স্ক্রিন প্রিন্ট, অ্যাপ্লিকসহ মিক্সড মিডিয়ার কাজ রয়েছে। দামের ক্ষেত্রে এমনভাবে রেঞ্জ ঠিক করা হয়েছে যেন সবাই কিনতে পারেন। এ বছর ভ্যালেন্টাইন ডে এবং ফালগুনের জন্য বেশকিছু নতুন ডিজাইনের পোশাক আনা হয়েছে। পোশাকের প্যাটার্ন এবং রংয়ের ক্ষেত্রে রয়েছে ভিন্নতা।’ উৎসবে কালারফুল পোশাকের উপর জোর দিয়ে অঞ্জন’স-এর প্রধান নির্বাহী ও ফ্যাশন ডিজাইনার শাহীন আহম্মেদ বলেন, ‘যেকোনো বিশেষ দিন কিংবা উৎসবে কালারফুল ডিজাইনের পোশাক পরতে চায় সকলে। তাই তো অঞ্জন’স এবার ফালগুন ও ভালোবাসা দিবসে ভিন্ন টাইপের কিছু পোশাক এনেছে। ফালগুনের শাড়িতে বাসন্তী ও হলুদ রংয়ের আধিপত্য বেশি রয়েছে। নতুন পাতার রং সবুজও এসেছে শাড়ির ডিজাইনে। পাশাপাশি লাল-কমলা রংয়েরও ব্যবহার রয়েছে। আর ভ্যালেন্টাইন ডে’কে মাথায় রেখে লাল রংয়ের শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ ও কুর্তি এনেছে অঞ্জনস। এরমধ্যে কাপল ড্রেসও করা হয়েছে। অর্থাৎ ছেলে এবং মেয়ের পোশাকে ম্যাচিং করে পোশাক ডিজাইন করা হয়েছে। এসব পোশাকের সুতি কাপড়ে কাজের মাধ্যম হিসেবে এসেছে টাই-ডাই, ব্লক, অ্যাপ্লিক, কাটওয়ার্ক, স্ক্রিনপ্রিন্ট, হ্যান্ডপেইন্ট, বাটিকসহ কারচুপি, হ্যান্ডিক্র্যাফট ও মেশিন এমব্রয়ডারির কাজ।’

Kona-Konalকয়েক বছর ধরে বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসে টি-শার্টও পরতে দেখা যায় তরুণদের। নিত্য উপহারের স্বত্বাধিকারী বাহার রহমান বললেন, ‘ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে তরুণদের মাঝে টি-শার্ট বা গেঞ্জির জনপ্রিয়তা রয়েছে।

বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসকে মাথায় রেখে ফ্যাশন হাউজগুলোতে যেন বসন্তের রং লেগেছে। বাংলার ছয় ঋতুর ছয় রং। তবে কোনো কোনো ঋতুতে বাঙালি মেতে ওঠে সর্বজনীন রংয়ে। তেমনই এক ঋতু বসন্ত। আর তাই এখন দেদারসে বিক্রি হচ্ছে বাসন্তি, গেরুয়া, লাল রংয়ের শাড়ি। অফিস করবেন যারা, তারা কিন্তু মোটেই ভাববেন না আমাদের আর বসন্ত কী? নতুন শাড়ি না কিনলেও একটা হলুদ, লাল বা সবুজ জাতীয় শাড়ি বেছে নিয়ে পরে ফেলুন না। সঙ্গে একটা বিপরীত রঙা চুন্দ্রি বাটিক বা লেইস বসানো ব্লাউজ হলে মন্দ হয় না। অফিসে একটা ক্যাজুয়াল ভাব রাখতে চাইলে আর কিছু নয়, একটা ছোট্ট টিপ পরে ফেলুন। আর ভালোবাসা দিবসে লাল-নীল কিংবা উজ্জ্বল যেকোনো রংয়ের পোশাক পরতে পারেন। ব্যস, অফিসের গাম্ভীর্যও নষ্ট হবে না আবার কাজের মধ্যেই উৎসবের আমেজে থাকতে পারেন।

ভ্যালেন্টাইনস ফ্যাশনে লাল, নীলসহ উজ্জ্বল রংকে প্রাধান্য দিয়েছে ফ্যাশন হাউজগুলো। শাড়ি, থ্রি-পিস, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট, শীতের শাল, ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়েছে সুতি কাপড়। কাজ হয়েছে ব্লক, স্প্রে-বাটিক, স্ক্রিন প্রিন্ট, টাই-ডাই, এমব্রয়াডারি. এ্যাপলিকে-এর। সব পোশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভালোবাসার সমার্থক অনেক ধরনের মোটিফ। আড়ং, অঞ্জন’স, বিশ্বরঙ, বাংলারমেলা, প্রবর্তনা, নগরদোলা, নিপুণ, বিবিআনা, নিত্য উপহার, অন্যমেলা, এড্রয়েট, রঙ বাংলাদেশ, ফড়িং, ইন্ডিগো, এমপ্রেসসহ বেশকিছু হাউজের আউটলেটে আপনি পাবেন ভালোবাসা দিবসের চমৎকার সব পোশাক। এছাড়াও আজিজ সুপার মার্কেটে বেশকিছু দোকানেও পাবেন এই স্পেশাল দিনের নানা রংয়ের পোশাক। সুতি কাপড়ে স্ক্রিনপ্রিন্ট, ব্লক, সিকোয়েন্সের মিশেলে ফ্লোরাল ও ঐতিহ্যবাহী আল্পনার মোটিফে তৈরি হয়েছে পোশাকগুলো। প্রতিটি পোশাকে উজ্জ্বল রং প্রাধান্য পেয়েছে। মেয়েদের জন্য রয়েছে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া ও পাঞ্জাবি। ছেলেদের জন্য থাকছে পাঞ্জাবি। এসব পোশাকের বেশিরভাগই সুতি। শাড়ি, থ্রি-পিস, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট, শীতের শাল ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়েছে সুতি কাপড়। ফ্যাশন হাউজগুলোতে পোশাকের পাশাপাশি পাবেন নানান ধরনের গিফট বক্স। সাধারণত আপনি ১২ শ টাকা থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে চাইলেই নিজের পছন্দমতো পোশাকটি বেছে নিতে পারবেন এসব হাউজগুলো থেকে। আর আজিজ সুপার মার্কেটে গেলে আরো কমেও কিছু পোশাক পেয়ে যাবেন। আর কেউ কাপল পোশাক কিনতে চাইলে বিভিন্ন ডিজাইনের উপর দাম নির্ভর করবে। ৩০০০ থেকে ৪০০০ টাকার মধ্যে আপনি ‘কাপল’ পোশাক কিনতে পারবেন।

মডেল: কক্তশিল্পী কোনাল, কনা ও ন্যান্‌সি এবং নীল, অর্নব ও সন্ধ্যা।

পোশাক: বিশ্বরঙ।

মডেল: সুকর্ন হাসান, রুপা, শারমিন নিপু ও নিরব।

পোশাক: ইন-টোটো