সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2001-2021 - আনন্দ আলো
হ্যাঁ এটি একটি সত্যি গল্প। সত্যি… সত্যি… সত্যি…। তিন সত্যি মানেই বুঝতে পারছেন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। হ্যাঁ সত্যি ঘটনা। ইউসুফ-জুলেখা, দেবদাস-পার্বতী, রোমিও-জুলিয়েট, লাইলী-মজনু, রাধা-কৃষ্ণ এবং আমাদের রূপা ও হিমু সেদিন আনন্দ আলো কার্যালয়ে এসেছিলেন। কাজেই বুঝতে পারছেন আনন্দ আলোর কর্মীদের মাঝে কী পরিমাণ আনন্দ আর আলো ছড়িয়ে পড়ার কথা? হলোও তাই। ঘটনাতো আর সামান্য নয়। অসামান্য। অভূতপূর্ব। যা ইতিপূর্বে ঘটে নাই। তাই ঘটলো। ভালোবাসা ও প্রেম কাহিনির বিশ্বখ্যাত প্রেমিক জুটির উজ্জ্বল উচ্ছ্বল উপস্থিতিতে বদলে গেল পরিবেশ। সবার মুখে শুধুই ভালোবাসার গল্প। এই গল্প যেন আর ফুরায় না।
দেখে মনে হলো সবাই বেশ খুশি। আর খুশি হবেই বা না কেন? প্রিয় মানুষের হাত ধরে কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়াই সবাই এসেছেন ভালোবাসা দিবসের এক অনুষ্ঠানে আড্ডা দিতে। দিন পাল্টে গেছে। তাই এখন ভালোবাসা নিয়েও আড্ডা হয়। সারা পৃথিবী জুড়ে একটা দিন ‘ভালোবাসা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। অথচ একটা সময় এই ভালোবাসার কথা প্রকাশ্যে বলাটা ছিল মারাত্মক অপরাধ। আর তাই লুকিয়ে, চুপিসারে বলতে হতো ভালোবাসার কথা। আর আজ? বিশ্বব্যাপি হৈচৈ আর আনন্দ করে ভালোবাসার কথা বলা হয়। তাহলে কি প্রেমিক-প্রেমিকারা এখন স্বাধীন? এমন তরো আলাপ-আলোচনাই হবে আজ।
সবার দৃষ্টি দেবদাস আর পার্বতীর দিকেই। কারণ এই দেশে, শুধু এই দেশেই বা বলব কেন? গোটা উপমহাদেশে দেবদাস আর পার্বতীর অমর প্রেম কাহিনি ব্যাপক জনপ্রিয়। কোনো তরুণ হঠাৎ বদলে যাচ্ছে, কখনো কখনো হঠাৎ আনমনা হয়ে যায়, কী যেন ভাবে। তখন বন্ধুরা তাকে টিপ্পনী কাটেণ্ড কিরে দেবদাস হয়ে গেলি নাকি? দেবদাস হওয়া মানেই প্রেমে পড়ার লক্ষণ। দেবদাস প্রেমে পড়েছে। কাজেই মেয়েটির নাম নির্ঘাত পার্বতী। এমন সমীকরণে বন্ধুরা আনন্দ খোঁজে। প্রেমিক বন্ধুকে সাহস যোগায়ণ্ড চালিয়ে যা দোস্ত আমরা আছি।
দেবদাস আর পার্বতীর দিকে প্রথম নজর ফেলেছে রোমিও আর জুলিয়েট। রোমিও বলে উঠলোণ্ড দেবদাস তোমাদের কথা বল। কেমন আছো? কেমন চলছে দিনকাল? রোমিওর কথা শুনে দেবদাস একটু যেন লজ্জা পায়। মৃদু হেসে বলেণ্ড ব্রাদার আপনি হলেন প্রেমের রাজা। আপনার সামনে আমি প্রথমে আড্ডা শুরু করবো তা হয় না। আপনিই শুরু করেন। দেবদাসের কথা শুনে রোমিও মৃদু হাসতে থাকে। এসময় মজনুর দিকে চোখ ফেলে পার্বতীণ্ড ভাই আপনিই শুরু করেন। আপনারা লাইলী-মজনু প্রেমের অমর কাব্য রচনা করেছেন। আপনাদের কাছে আমরা কিছুই না। নস্যি! ভাই আপনি কিছু বলেন।
পার্বতীর দিকে মিটিমিটি চোখে তাকায় মজনু। মৃদু হেসে বলেণ্ড সবাইকে কাছে পেয়ে আমার খুউব ভালো লাগছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো ‘ভালোবাসার ব্যাপার স্যাপার এখন বেশ খোলামেলা বিষয়’। আর আমাদের সময় কী কষ্টটাই না করেছি আমরা। প্রকাশ্যে ভালোবাসার কথা বলা ছিল চরম অন্যায় কাজ। আর আজ কত সহজে একে অপরকে ভালোবাসার কথা বলে। দেবদাস আর পার্বতীর কথাই যদি বলি। আহারে কী কষ্টই না করেছে দুজন। দেবদাস তুমিই বল। ঠিক আছে আমি তোমাকে একটা ক্লু ধরিয়ে দেই। আমাদের সময়তো আজকের মতো ফেসবুক, ভাইবার, ইন্টারনেটের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছিল না। যদি থাকতো তাহলে কি তোমাদের প্রেম কাহিনি অন্যরকম হতো?
মজনুর কথা এতক্ষণ মনযোগ দিয়ে শুনছিল দেবদাস। মজনুর কথা শেষ হতেই বিনয়ের সঙ্গে বলতে শুরু করলোণ্ড দাদা, আপনাদের প্রেম কাহিনির কাছে আমাদের প্রেম কাহিনি কিছুই না। লাইলী আর মজনু, শিরি-ফরহাদ, রোমিও-জুলিয়েট আমার কাছে, আমাদের কাছে প্রেমের ঈশ্বর। প্রথমে আমি শরৎ বাবুকে শ্রদ্ধা জানাই যে তিনি আমাকে এবং পারুকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমাদের স্রষ্টা। আমাদের প্রেম কাহিনি নিয়ে বাংলা ভাষার পাশাপাশি একাধিক ভাষায় ২০টিরও বেশি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে। সবগুলোই আমরা দুজন দেখেছি। অসাধারণ। তবে আমার নিজের মতামত বর্তমান সময়ের জন্য আমি আর পার্বতী প্রেমিক-প্রেমিকা হিসেবে পারফেক্ট না। কেন কথাটা বলছি? এর পেছনে অনেক যুক্তি আছে। তার আগে রবীন্দ্রনাথের কথা বলি। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আজকের সময়ে তিনি যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে তাঁর কবিতা, উপন্যাস ও ছোট গল্পে ইন্টারনেট, ফেসবুক, টুইটার, ভাইবার ও মোবাইল ফোনের বর্ণনা নিশ্চয়ই থাকতো। তেমনি শরৎ বাবু যদি আজকের সময়ে এসে দেবদাস লিখতেন তাহলে আমার এবং পারুর অর্থাৎ পার্বতীর এমনতর দশা হতো না। আমাদের হাতে মোবাইল থাকতো। আমরা মোবাইল ফোনে কথা বলতাম। আমি কোথায় আছি, পার্বতী কোথায় আছে সেটা সহজেই জানা যেত। আমাদের জীবনটা বিচ্ছেদের হতো না? কি বলো পার্বতী?
পার্বতী সবার মাঝে বসে দেবদাসের কথা শুনছিল। দেবদাসের কথা শেষ হতেই বললণ্ড হ্যাঁ আমি দেবুদার কথার সঙ্গে একমত। আজকের যুগের দেবদাস লেখা হলে আমার আর দেবুদার মধ্যে মিল ঘটতো। বিচ্ছেদ হতো না।
তার মানে আজকের সমাজ সংস্কৃতি বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কি ভালোবাসার রূপ পাল্টে দিয়েছে? প্রশ্ন করলো লাইলী। এতক্ষণ সবার কথা মনযোগ দিয়ে শুনছিল রূপা আর হিমু। রূপাই মুখ খুলল। সবার প্রতি বিনয় প্রকাশ করে বললণ্ড ব্যক্তিগতভাবে আমি আজ নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করছি। কারণ যুগে যুগে যারা প্রেমের অবিস্মরণীয় কাহিনি রচনা করে গেছেন তাদের অনেকের সঙ্গে আমি এখন বসে আছি। রোমিও-জুলিয়েট, লাইলী-মজনু, শিরি-ফরহাদ, দেবদাস-পার্বতী… আপনাদের প্রেম কাহিনি সবার জানা। প্রশ্ন উঠেছে ভালোবাসার সেই যুগ আর এই যুগ নিয়ে। আমার ধারণা ভালোবাসা যুগে যুগে বদলায়। এক সময় প্রেমিক-প্রেমিকার উদ্দেশ্যে পায়রার পায়ে চিঠি বেঁধে দেয়া হতো। চিঠিতে লেখা থাকতো ‘যাও পাখি বল তারে সে যেন ভুলে না মোরে।’ আর আজ মোবাইলে পাঠানো হয় শর্ট মেসেজণ্ড অ ী খ অর্থাৎ আইতে আমি, এল-এ লাভ আর ইউতে তুমি। তোমাকে ভালোবাসি এইকথা বলার কত যে সংক্ষিপ্ত সংস্করণ বেরিয়েছে তা বলে বোঝানো যাবে না। আগের দিনে ভালোবাসা প্রকাশের জন্য লম্বা চিঠি পাঠাতো প্রেমিক-প্রেমিকারা। আর আজ চিঠি লেখা যেন ভুলে গেছে সবাই। বরং ফেসবুক আর টুইটারে মেতে থাকে সবাই। এর ফলে অবশ্য ‘ভালোবাসা’ বিষয়টাই গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে।
রূপার কথা শুনে লাইলী-মজনু, রোমিও-জুলিয়েট, দেবদাস-পার্বতীসহ সবাই একসঙ্গে আঁতকে উঠলো। দেবদাস সিরিয়াস ভঙ্গিতে প্রশ্ন করলোণ্ড রূপা বিষয়টা পরিষ্কার করে বলতো! ‘ভালোবাসা’ গুরুত্বহীন হয় কি করে? ভালোবাসার জন্যই তো মানুষ হাসে, কাঁদে, মানুষ বারবার স্বপ্ন দেখে। অথচ সেই বিষয় গুরুত্বহীন হয় কি করে? আমার তো মাথা কাজ করছে না…।
হিমু এতক্ষণ মনযোগ দিয়ে সবার কথা শুনছিল। এবার সে মুখ খুললো। বললণ্ড রূপা যা বলেছে তা অনেকটাই সত্যি। সামাজিক যোগাযোগের অনেক মাধ্যম তৈরি হওয়ায় ভালোবাসা এই শব্দটা এখন অনেক ‘খেলো’ হয়ে পড়েছে। আপনার কাছে মোবাইল ফোন আছে। একটি মেয়েকে ভালো লেগে গেল। তার মোবাইল নাম্বার জোগাড় করে মেসেজ পাঠালেনণ্ড অ ী খ। ব্যাস শুরু হয়ে গেল ভালোবাসার মেসেজ আদান প্রদান। হঠাৎ করে হয় ছেলেটি না হয় মেয়েটি মেসেজ পাঠানো বন্ধ করে দিল। ব্যাস আরেকটি শব্দের জন্ম হলো ‘ব্রেকআপ’ মানে দু’জনের মধ্যে ছাড়াছাড়ি…
হিমুর কথা শুনে লাইলী হঠাৎ আঁতকে উঠে বললণ্ড এও কি সম্ভব? যাকে ভালোবাসি তার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি… না না এটা আমি মেনে নিতে পারছি না। আমাদের সময়টাই ভালো ছিল। ভালোবাসার মানুষকে আমরা কেউ দুঃখ দিতাম না। ভালোবাসার জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত ছিলাম সবাই…।
হঠাৎ আড্ডাটা যেন একটু বিষাদে রূপ নিল। ভালোবাসার এমন করুন হাল মেনে নিতে নারাজ সকলে। হঠাৎ রোমিও সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললণ্ড হিমু যা বলল তার সবটাই বোধকরি সত্য না। একটা কথা যেন আমরা ভুলে না যাই সময় ও পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে ভালোবাসা তার রূপ পাল্টায়। আমি নিশ্চিত আজকের যুগে রোমিও ও জুলিয়েটকে নিয়ে কাহিনি লেখা হলে যুগটার পরিবেশ পরিস্থিতি প্রাধান্য পাবে। তবে আমরা বোধকরি একটা ব্যাপারে জোর দিতে পারি, এ যুগের প্রেমিক-প্রেমিকাদের উদ্দেশ্যে বলতে পারিণ্ড ভালোবাসলে মন দিয়ে বাসো। কারণ ভালোবাসার চেয়ে প্রেরণাদায়ী শক্তি পৃথিবীতে আর কিছু নাই। ভালোবেসে শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার মন জয় করা যায় না, পৃথিবীকেও জয় করা যায়।
রোমিওর কথায় সবাই সায় দিল। একবাক্যে সমর্থন জানালো সবাই। এরপর শুরু হলো ফটো সেশন। বিশ্বরঙ-এর কর্ণধার বিপ্লব সাহা এসেছিলেন এই আড্ডায়। তারই কোরিওগ্রাফিতে রোমিও-জুলিয়েট, দেবদাস-পার্বতী, ইউসুফ-জুলেখা, লাইলী-মজনু, শিরি-ফরহাদ, রাধা-কৃষ্ণ ও রূপা-হিমু জুটি ফটোসেশনে অংশ নিলেন।
গল্প শেষে অল্প গল্প
প্রিয় পাঠক, আবারও বলছি আনন্দ আলোয় সেদিন সত্যি সত্যি কিংবদন্তি এই প্রেমিক জুটিদের আবির্ভাব ঘটেছিল। কিন্তু সেটা ছিল সাজানো গল্প। আনন্দ আলোর ভালোবাসা সংখ্যায় কিংবদন্তি প্রেমিক-প্রেমিকাদের কথা স্মরণ করার জন্যই আমাদের এই আয়োজন। তবে কথা একটাই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভালোবাসা তার রূপ পাল্টায় একথা ঠিক। কিন্তু ভালোবাসা নিয়ে রং ঢং আর তামাশা করা ঠিক নয়। যাকে ভালোবাসবেন তাকে মন দিয়েই শ্রদ্ধা করুন, গুরুত্ব দিন। আবারও বলি এই পৃথিবীতে ‘ভালোবাসার’ চেয়ে আর কোনো বড় শক্তি নাই। জয় হোক ভালোবাসার।
দেবদাস-বাঙালির প্রেমের অমর আখ্যান
চন্দ্রমুখী না পারু? পারু কি শুধুই ছোটবেলার সাথী না চিরদিনের ভালোবাসা? এই দ্বন্দ্ব থেকে মুক্তি মেলেনি দেবদাসের। মৃত্যুর আগে পারুর দরজায় এসে পৌঁছাতে পারলেও সমাজের অচলায়তন ভাঙা যায়নি, শেষ স্পর্শটুকু পাওয়া হয়নি প্রেমিকার। এই ট্র্যাজেডি সম্ভবত দেবদাসকে অমর করেছে। আর তাই রূপালী পর্দায় বারে বারে ফিরে এসেছে দেবদাসের প্রেম।
মাত্র ৭ বছর বয়সে ‘দেবদাস’ উপন্যাসটি লিখেছিলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। শিল্পগুণে ও কাহিনি বিন্যাসে ‘দেবদাস’-এর চেয়ে অনেক বেশি সমৃদ্ধ তার ‘শ্রীকান্ত’, ‘গৃহদাহ’, ‘শেষ প্রশ্ন’, ‘পল্লীসমাজ’ণ্ডএর মতো উপন্যাস। শরৎচন্দ্রের ‘দেবদাস’ অবলম্বনে প্রথম চলচ্চিত্র নির্মিত হয় কলকাতায় ১৯২৭ সালে। নির্বাক এই ছবিটি পরিচালনা করেন নরেশ মিত্র। এই ছবিতে দেবদাস, পার্বতী ও চন্দ্রমুখীর ভূমিকায় ছিলেন ফণী শর্মা, তারকবালা ও নিহার বালা।
এরপর সবাক চলচ্চিত্রের বা ‘টকি’র যুগ শুরু হয়। ১৯৩৫ সালে কলকাতায় আবার নির্মিত হয় সবাক ‘দেবদাস’। এর পরিচালক ছিলেন সে যুগের বিখ্যাত অভিনেতা ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব প্রমথেশ বড়ুয়া। তিনি নিজেই দেবদাসের ভূমিকায় অভিনয় করেন। পার্বতী ও চন্দ্রমুখী ছিলেন যমুনা ও চন্দ্রাবতী দেবী। বড়ুয়া-যমুনার জুটি দর্শকদের মুগ্ধ করে। এই দেবদাস দুর্দান্ত বাণিজ্যিক সাফল্য পায়। এই ছবির বাণিজ্যিক সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯৩৬ সালে হিন্দিতে ‘দেবদাস’ নির্মাণ করেন বড় য়া। এতে দেবদাস , পারু ও চন্দ্রমুখী ছিলেন সে যুগের বিখ্যাত অভিনেতা কুন্দলাল সায়গল, যমুনা ও রাজকুমারী। এটিও বাণিজ্যিক সাফল্য পায়। প্রমথেশ বড়ুয়া ছিলেন আসামের গৌরীপুর জমিদার বাড়ির ছেলে। তিনি এবার অহমিয়া ভাষায় ‘দেবদাস’ নির্মাণে উদ্যোগী হন। ১৯৩৭ সালে তার পরিচালনায় অহমিয়া ভাষায় নির্মিত ছবিতে তিনটি চরিত্রে অভিনয় করেন ফণী শর্মা, জুবাইদা ও মোহিনি। এই ছবির বাণিজ্যিক সাফল্য ভারতের অন্যান্য ভাষাভাষী অঞ্চলে ‘দেবদাস’ নির্মাণে প্রেরণা জোগায়। ১৯৫৩ সালে তেলেগু ও তামিল ভাষায় নির্মিত হয় ছবিটি। পরিচালক ছিলেন বেদান্তম রাঘোবৈঁয়া। তিন চরিত্রে ছিলেন আক্কিনেনি নাগেশ্বর রাও, সাবিত্রী ও ললিতা। ছবিটির নাম ছিল ‘দেবদাসু’। ১৯৫৫ সালে বলিউডের বাঙালি পরিচালক বিমল রায় আবার হিন্দিতে ‘দেবদাস’ নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। দেবদাস চরিত্রে অভিনয় করেন দিলিপ কুমার। পার্বতীর ভূমিকায় ছিলেন সুচিত্রা সেন।
১৯৬৫ সালে পাকিস্তানে উর্দু ভাষায় নির্মিত হয় ‘দেবদাস’। পরিচালক ছিলেন খাজা সারফারাজ। তিনটি প্রধান ভূমিকায় ছিলেন হাবিব তালিশ, শামীম আরা ও নায়ার সুলতানা। সে সময় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। অথচ প্রেমের এমন মহিমা যে ভারতীয় কাহিনি গ্রহণ করতে পাকিস্তানের দর্শকের কোনো সমস্যা হয়নি।
১৯৭৪ সালে তেলেগু ভাষায় ‘দেবদাসু’ নির্মিত হয় বিজয়া নির্মলার পরিচালনায়। অভিনয় করেন ঘাট্টামানেনি কৃষ্ণা, বিজয়া নির্মলা (পারু) এবং জয়ন্তি। ১৯৭৯ সালে কলকাতায় দিলিপ রায়ের পরিচালনায় নির্মিত হয় দেবদাস। অভিনয় করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সুমিত্রা মুখোপাধ্যায় এবং সুপ্রিয়া দেবী। এ ছবিতে চুণীলাল হয়েছিলেন উত্তম কুমার। এ ছবিতে চুণীলালের লিপসিংয়ে খুব লাগসইভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল ‘শাওন রাতে যদি’ গানটি।
১৯৮২ সালে বাংলাদেশে চাষী নজরুল ইসলামের পরিচালনায় নির্মিত হয় ‘দেবদাস’। এ ছবিতে নাম ভূমিকায় ছিলেন বুলবুল আহমেদ, পারু ছিলেন কবরী সারোয়ার এবং চন্দ্রমুখী ছিলেন আনোয়ারা। চুণীলালের ভূমিকায় ছিলেন রহমান। এ ছবিটিকে বলা যায় মূল উপন্যাসের সবচেয়ে বিশ্বস্ত চিত্রায়ণ। বাংলাদেশে দুর্দান্ত বাণিজ্যিক সাফল্য পায় ছবিটি। পরবর্তীতে অসংখ্যবার যাত্রায় দেবদাস হন বুলবুল আহমেদ।
১৯৮৯ সালে মালায়াম ভাষায় নির্মিত দেবদাস পরিচালনা করেন ক্রসবেল্ট মানি। অভিনয় করেন বেনু নাগাবল্লী , পার্বতী এবং রামাইয়া কৃষ্ণা। ২০০২ সালে বলিউডে বেশ শোরগোল তুলে নির্মিত হয় ‘দেবদাস’। পরিচালক সাঞ্জায় লিলা বানসালির দারুণ উচ্চাকাঙক্ষী উদ্যোগ ছিল এটি। ২০০৯ সালে বলিউডে অনুরাগ কাশ্যপ পরিচালিত ‘দেভ ডি’ মুক্তি পায়। দেবদাসের কাহিনিকে বর্তমান কালের প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা হয়। এতে অভিনয় করেন অভয় দেওল, মাহি গিল ও কালকি কোয়েচলিন। ব্ল্যাক কমেডি ড্রামা ঘরানার এ ছবিটিও ব্যবসা সফল হয়।
২০১০ সালে পাকিস্তানে ‘দেবদাস’ নির্মিত হয়। ইকবাল কাশ্মিরি পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেন নাদিম শাহ, জারা শেখ এবং মীরা। ২০১৩ সালে বাংলাদেশে চাষী নজরুল ইসলাম নতুন ভাবে ‘দেবদাস’ নির্মাণ করেন। দেবদাসের ভূমিকায় শাকিব খান, পার্বতীরূপে অপু বিশ্বাস এবং মৌসুমী চন্দ্রমুখী হন। শহীদুজ্জামান সেলিম হন চুণীলাল।
মডেল: সানী ও সেরা
ইউসুফ-জোলেখা
ইউসুফ-জোলেখা মধ্যযুগের পুঁথি লেখকদের রচিত বাংলা সাহিত্যের একটি আলোচিত প্রণয়-কাব্য। বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলমান কবি শাহ মুহম্মদ সগীর, গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রাজত্বকালে (১৩৯৩-১৪০৯ খ্রিস্টাব্দ) ইউসুফ-জোলেখা কাব্য রচনা করেন। শাহ মুহম্মদ সগীর ছাড়াও মধ্যযুগের আরো অনেক কবি ইউসুফ-জোলেখা নাম দিয়ে কাব্য রচনা করেন। তার মধ্যে আবদুল হাকিম, শাহ গরিবুল্লাহ, গোলাম সফাতুল্লাহ, সাদেক আলী এবং ফকির মোহাম্মদণ্ডএর নাম উল্লেখযোগ্য।
ইউসুফ-জোলেখা কাব্যের বিষয়বস্তু ইউসুফ ও জোলেখার প্রণয়কাহিনি। তৈমুস বাদশাহের কন্যা জোলেখা আজিজ মিশরের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেও ক্রীতদাস ইউসুফের প্রতি গভীর ভাবে প্রেমাসক্ত হন। নানাভাবে আকৃষ্ট করেও তিনি ইউসুফকে বশীভূত করতে পারেন নি। বহু ঘটনার মধ্য দিয়ে ইউসুফ মিশরের অধিপতি হন। ঘটনাক্রমে জোলেখা তখনও তার আকাঙক্ষা পরিত্যাগ করেন নি এবং পরে ইউসুফের মনেরও পরিবর্তন ঘটে। ফলে তাদের মিলন হয়। কাব্যের এই প্রধান কাহিনির সঙ্গে আরও অসংখ্য উপকাহিনি স্থান পেয়েছে।
মডেল: বিপু ও রুহী
লাইলি-মজনু
মধ্যযুগের ইরানি কবি নিজামী তার কাব্য লাইলি-মজনুর জন্য ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। আরব মিথ ‘লায়লা-মজনু’ অবলম্বনে তিনি তার কাব্য রচনা করেন। অধরা প্রেমের এক বিয়োগান্ত গাঁথা এ কাব্য। কাব্য লিখিত হওয়ার আগে শতাব্দী থেকে শতাব্দীতে এই মিথ আরবে প্রচলিত ছিল। প্রেমের ইতিহাসে, বিশেষ করে এই উপমহাদেশীয় মুসলিম সমাজে কালজয়ী হয়ে উঠে দুটি চরিত্র, লাইলি ও মজনু। স্বর্গীয় প্রেমের প্রতীক মানা হয় এই জুটিকে। বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে অর্থাৎ বাল্যকাল থেকেই লায়লা এবং কায়েস একে অপরের প্রেমে পড়েন। তাদের প্রেম সমাজের নজরে এলে দুজনের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করা হয়। বলা আছে, লায়লার পিতা মজনুকে আহত করলে লায়লাও আহত হতো, এমননি ছিল তাঁদের সেই স্বর্গীয় প্রেম। নিঃসঙ্গ কায়েস মরুপ্রান্তরে নির্বাসনে যান। বিরহকাতর কায়েসের ক্ষ্যাপাটে আচরণের জন্য তাকে ডাকা হতো মজনুন (পাগল) নামে। পরে বেদুইনের দল মজনুর হার না মানা ভালোবাসা দেখে তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে এবং তাদের মধ্যে এক বৃদ্ধ বেদুইন লড়াই করে লায়লাকে পাওয়ার জন্য কায়েসকে প্রেরণা দেন। তাদের সহযোগিতায় যুদ্ধে লায়লার গোত্র ক্ষমতাচ্যুত হয়, তারপরও লায়লার বাবা কায়েসের সঙ্গে লায়লার বিয়েতে সম্মতি দেন না। লায়লাকে তাঁর পিতা জোর করে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেয়। স্বামী মারা যাবার পর, যদিও লায়লা মজনুর কাছে ফিরে আসে, কিন্তু প্রচণ্ড দুঃখ আর অনাহারে মজনু মারা যায়। লায়লাও তাঁর ভালোবাসা মজনুর পথ অনুসরণ করে। মৃত্যুর পর তাদের পাশাপাশি সমাধিস্থ করা হয়। “দুই দেহ এক আত্মা,” নামক বহুল প্রচলিত কথা এই যুগলের অনুপ্রেরণায় পাওয়া। স্বর্গে গিয়েও ভালোবাসার মানুষকে চাওয়ার তৃষ্ণার্ত হৃদয়ের আকুতি এই কাহিনিকে অমর করে রেখেছে।
মডেল: চৈতি ও রিজভী
রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট
নিঃসন্দেহে রোমিও এবং জুলিয়েটের প্রেমের আখ্যান দুনিয়ার অন্যতম বিখ্যাত প্রেম কাহিনী। যে ভালোবাসার অপর নাম রোমিও-জুলিয়েট। বিশ্ব বিখ্যাত ইংরেজ লেখক উইলিয়াম শেক্সপিয়ারণ্ডএর কালজয়ী ট্রাজেডি হলো রোমিও-জুলিয়েট। সারা বিশ্বে যুগ যুগ ধরে পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে এ বিয়োগান্ত প্রেম কাহিনি।
রোমিও আর জুলিয়েটের পরিবারের মধ্যে শত্রুতার সম্পর্ক ছিল। দুটি ভিন্ন পরিবারের পূর্ববর্তী রেষারেষি, বংশীয় অহঙ্কার ভেদ করে দুজন তরুণ-তরুণী প্রথম দর্শনে প্রেমে পড়ে যায়। পরবর্তীতে পরিবারের শত বাধা উপেক্ষা করে নানা নাটকীয়তার মাঝে তারা বিয়ে করে। সবশেষে, দুই পরিবারের শত্রুতার জেরে এবং ভুলবোঝা-বুঝি জনিত কারণে বিষপানে আত্মহত্যা করে এই প্রেমিক যুগল। তাই পৃথিবীতে যখনই প্রেমের জন্য ত্যাগ- তিতিক্ষার কথা বলা হয়, সবার আগেই উঠে আসে এই তরুণ যুগলের নাম! তরুণ এ যুগলের ভালোবাসার জন্য মৃত্যুবরণ আজো পৃথিবীর মানুষকে একই আবেগে নাড়া দেয়।
মডেল: অবাক ও রুহী
হিমু-রুপা
হিমু হচ্ছে বাংলাদেশি কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ সৃষ্ট একটি জনপ্রিয় ও কাল্পনিক চরিত্র। হিমু একজন বেকার যুবক যার আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক।
নব্বইয়ের দশকে হিমুর প্রথম উপন্যাস ময়ূরাক্ষী প্রকাশিত হয়। প্রাথমিক সাফল্যের পর হিমু চরিত্র বিচ্ছিন্নভাবে হুমায়ূন আহমেদের বিভিন্ন উপন্যাসে প্রকাশিত হতে থাকে। হিমু ও মিসির আলি হুমায়ূন আহমেদ সৃষ্ট সর্বাধিক জনপ্রিয় দুইটি কাল্পনিক চরিত্র।
হিমু চরিত্রের আসল নাম হিমালয়। এ নামটি রেখেছিলেন তার বাবা। লেখক হিমুর বাবাকে বর্ণনা করেছেন একজন বিকারগ্রস্ত মানুষ হিসেবে; যার বিশ্বাস ছিল ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার যদি প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা যায় তবে একইভাবে মহাপুরুষও তৈরি করা সম্ভব। তার মহাপুরুষ তৈরির বিদ্যালয় ছিল যার একমাত্র ছাত্র ছিল তার সন্তান হিমু। হিমুর পোশাক হলো পকেটবিহীন হলুদ পাঞ্জাবি। ঢাকা শহরের পথে-পথে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানো তার কর্মকাণ্ডের মধ্যে অন্যতম। উপন্যাসে প্রায়ই তার মধ্যে আধ্যাত্মিক ক্ষমতার প্রকাশ দেখা যায়। যদিও হিমু নিজে তার কোনো আধ্যাত্মিক ক্ষমতার কথা স্বীকার করে না। হিমুর আচার-আচরণ বিভ্রান্তিকর। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তার প্রতিক্রিয়া অন্যদেরকে বিভ্রান্ত করে, এবং এই বিভ্রান্ত সৃষ্টি করা হিমুর অত্যন্ত প্রিয় একটি কাজ।
হিমু উপন্যাসে সাধারণত হিমুর কিছু ভক্তশ্রেণির মানুষ থাকে যারা হিমুকে মহাপুরুষ মনে করে। এদের মধ্যে হিমুর খালাতো ভাই বাদল অন্যতম। মেস ম্যানেজার বা হোটেল মালিক- এরকম আরও কিছু ভক্ত চরিত্র প্রায় সব উপন্যাসেই দেখা যায়। এছাড়াও কিছু বইয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাস সৃষ্টিকারী ও খুনি ব্যক্তিদের সঙ্গেও তার সু-সম্পর্ক ঘটতে দেখা যায়। হিমুর একজন বান্ধবী রয়েছে, যার নাম রূপা; যাকে ঘিরে হিমুর প্রায় উপন্যাসে রহস্য আবর্তিত হয়। নিরপরাধী হওয়া সত্ত্বেও সন্দেহভাজন হওয়ায় হিমু অনেকবার হাজতবাস করেছে এবং বিভিন্ন থানার ওসি ও সেকেন্ড অফিসারের সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। মডেল: হিমি ও শুভ
রাধা-কৃষ্ণ
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন মধ্যযুগে রচিত বাংলা ভাষার প্রথম কাব্য গ্রন্থ। এটিই প্রথম বাংলায় রচিত কৃষ্ণকথা বিষয়ক কাব্য। মনে করা হয়, এই গ্রন্থের পথ ধরেই বাংলা সাহিত্যে বৈষ্ণব পদাবলির পথ সুগম হয়। রাধা-কৃষ্ণের প্রেম কাহিনি মানবীয়ভাবে উঠে এলেও, মূলত রাধা-কৃষ্ণকথার আড়ালে ঈশ্বরের প্রতি জীবকুলের মিলনের চরম আকুলতা প্রকাশিত হয়েছে এই কাব্যে। শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের প্রধান চরিত্র তিনটি। কৃষ্ণ, রাধা, বড়ায়ি। কৃষ্ণ পরমাত্মা বা ঈশ্বরের প্রতীক, রাধা জীবাত্মা বা প্রাণিকুলের প্রতীক ও বড়ায়ি এই দুইয়ের সংযোগ সৃষ্টিকারী অনুঘটক।
চর্যাপদের পর ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ বাংলা ভাষার দ্বিতীয় প্রাচীনতম আবিষ্কৃত নিদর্শন। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে (১৩১৬ বঙ্গাব্দ) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং পুথিশালার অধ্যক্ষ বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কাকিল্যা গ্রামে জনৈক দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের পুথি আবিষ্কার করেন। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে (১৩২৩ বঙ্গাব্দ) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় পুথিটি ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
পুথির প্রথম দুটি ও শেষ পৃষ্ঠা পাওয়া যায় নি বলে এর নাম ও কবির নাম স্পষ্ট করে জানা যায় নি। কাব্যে বড় চণ্ডীদাসের তিনটি ভণিতা পাওয়া যায় ‘বড় চণ্ডীদাস’, ‘চণ্ডীদাস’ ও ‘অনন্ত বড় চণ্ডীদাস’। এর মধ্যে ‘বড় চণ্ডীদাস’ ভণিতা মিলেছে ২৯৮টি স্থানে ও ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা মিলেছে ১০৭ বার। ৭টি পদে ব্যবহৃত ‘অনন্ত’ শব্দটি প্রক্ষিপ্ত বলেই মনে করা হয়। ডঃ মিহির চৌধুরী কামিল্যা মনে করেন, চণ্ডীদাস তাঁর নাম এবং বড় প্রকৃত পক্ষে তাঁর কৌলিক উপাধি বাঁড় জ্যে বা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অপভ্রংশ।
আবিষ্কর্তা ও সম্পাদক বসন্তরঞ্জন রায় প্রাচীন বৈষ্ণব লেখকদের ইঙ্গিত অনুসরণ করে গ্রন্থের নামকরণ করেন শ্রীকৃষ্ণকীর্তন। অবশ্য পুথিতে প্রাপ্ত একটি চিরকুটে ‘শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ’ লেখা থাকায় অনেকে গ্রন্থটিকে ‘শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ’ নামকরণের পক্ষপাতী।
মডেল: হিমি ও বিপু