সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2001-2021 - আনন্দ আলো
মো: শরিফুর রহমান। বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য প্রকৌশলী। ১৯৯৭ সালে ডুয়েট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পাস করে বের হওয়ার পর ‘লেবএইড প্রপার্টিজ লিমিটেড’-এ যোগদেন। তারপর আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন লিমিটেড-এ প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার ও ডেপুটি ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০৪ সালে তিনি যোগদেন বিটিআইতে প্রজেক্ট কো-অডিনেটর হিসেবে। বর্তমানে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের এক্সকিউটিভ ডিরেক্টর, কন্সট্রাকশন্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এযাবৎ তিনি এই প্রতিষ্ঠানটির হয়ে বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। স্কুল জীবনে খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বইপড়া তার পছন্দের বিষয়। এবার শাহ্ সিমেন্ট সুইট হোমে তাকে নিয়ে প্রতিবেদন লিখেছেন মোহাম্মদ তারেক।
ছয় ভাই, দুই বোনের মধ্যে পঞ্চম ইঞ্জিনিয়ার মো: শরিফুর রহমান। তার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয়ে। সেখানেই তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। শরিফুর রহমানের বাবার নাম এম. এ মুন্নাফ। তিনি একজন ব্যবসায়ী। মা মনোয়ারা বেগম গৃহিণী। শরিফুর ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মো: শরিফুর রহমান ডুয়েট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন ১৯৯৭ সালে। পাস করে বের হওয়ার পর ‘লেবএইড প্রপার্টিজ লিমিটেড’ নামের একটি কোম্পানিতে যোগদেন। সেখানে তিনি দুই বছর চাকরি করেন। এরপর প্রকৌশলী শরিফুর রহমান প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদেন ‘আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন লিমিটেড-এ’। সেখানে তিনি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে চার বছর চাকরি করেন। ২০০৪ সালে তিনি যোগদেন বিটিআইতে প্রজেক্ট কো-অডিনেটর হিসেবে। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের এক্সকিউটিভ ডিরেক্টর কন্সট্রাকশন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রতিষ্ঠানের হয়ে তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে বাড্ডার বিটিআই প্রিমিয়ার প্লাজা, ধানমন্ডির দি গ্র্যান্ড রেসিডেন্স, শ্যামলীর বিটিআই অ্যাম্পোরিয়াম, গুলশান-২ এর জাহাঙ্গীর ভিলা, ধানমন্ডির দি পিলার্স, গুলশান-১ এর দি রিজেন্ট, উত্তরার দি ক্রীড, দি রোজমিড, দি ইলান, বসুন্ধরার দি রেঁনেসা, দি ক্যাসিলডা, মিরপুর-৫ এর দি অচার্ড, বারিধারার ডেপলোমেটিক জোনে দি অ্যাকোরেস, দি সুপরিম, ওয়ারীর বেলা গার্ডিনিয়া, বনানী ডিওএইচএস-এর দি রয়েল ক্রেস্ট, ক্রেস্ট বনানী, উইলস বনানী, মগবাজার দিলুরোডের দি লিজেন্ড, নাখালপাড়ার দি জুরিলেশন, হাতিরপুলের দি অকটেভ, কলাবাগানের তালুকদার লজসহ অনেক অ্যাপার্টমেন্ট ও কমার্শিয়াল বিল্ডিং। এছাড়াও নতুন কাজের মধ্যে রয়েছে গুলশান এভিনিউর বিটিআই ল্যান্ডমার্ক কমার্শিয়াল লিড সাটিফাইড বিল্ডিং ইত্যাদি। প্রতিষ্ঠানটির সব ধরনের কাজ স্থাপত্য নীতি ও রাজউকের নিয়ম অনুযায়ী হয়ে থাকে।
২০০৬ সালে তিনি বিয়ে করেন। স্ত্রীর নাম শামীমা হোসেন। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা। এই দম্পতি দুই সনৱানের জনক-জননী। বড় মেয়ের নাম সারফ আঞ্জুম তোরসা। ছোট মেয়ে আফরাম আঞ্জুম তনয়া। প্রকৌশলী মো: শরিফুর রহমান বলেন, একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কন্সট্রাকশন ম্যানেজমেন্টে কাজ করছি। সঠিক সময়ে সর্বোচ্চ গুণগতমান অক্ষুণ্ন রেখে নির্মাণ করাই আমার কাজ। আমার প্রতিষ্ঠান বিটিআই জমি নির্বাচনের ক্ষেত্রে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করে। নির্ভেজাল, নিঙ্কণ্টক জমি নিয়ে থাকে। যাতে ভবিষ্যতে ক্রেতারা কোনো প্রকার ভোগানিৱর সম্মুখীন না হন। আমরা আমাদের নিজস্ব দক্ষ স্থপতি এবং বাহিরের খ্যাতনামা দক্ষ স্থপতি দ্বারা রাজউকের নীতিমালা যথাযথভাবে মেনে ডিজাইন করে থাকি। ডিজাইনের ক্ষেত্রে প্রতিটি জায়গার সঠিক ব্যবহার, আলো-বাতাসের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় এনে তথা গ্রাহকের চাহিদাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকি। স্ট্রাকচারাল ডিজাইনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড এবং এসিআই কোড অনুযায়ী ডিজাইন সম্পন্ন করি এবং ভূমিকম্প নিরোধক ব্যবস্থা নিশ্চিত করে থাকি। ভূমিকম্প নিরোধক ব্যবস্থা নিশ্চিতকল্পে আমরা ইতোমধ্যেই আমাদের নতুন প্রযুক্তি হিসেবে কলাম জেকেটিং সিসটেমের ব্যবহার শুরু করেছি। বিটিআই-এর ব্র্র্যান্ড ইমেজ ও বিশ্বস্ততা এবং নির্ভর যোগ্যতার জন্য একজন ক্রেতা বিটিআই থেকে ফ্ল্যাট কিনে থাকেন। আমার কাছে বিশ্বস্ততার ভিত্তি হলো- বাস্তবতার আলোকে কার্যকারিতা এবং ব্যবহারিক বিষয়কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মানসম্পন্ন নির্মাণ, সঠিক সময়ে হসৱানৱর এবং সর্বোচ্চ সেবা। আমাদের আছে বাংলাদেশের বৃহত্তম প্রকৌশলী দল, যাদের আধুনিক কলাকৌশল সম্পর্কে তথা অধিকতর দক্ষ করে গড়ে তোলার নিমিত্তে আমরা ধারাবাহিকভাবে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিং, টেকনিক্যাল ট্রেনিং এবং কালচারাল প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। শুধু তাই নয় আমাদের প্রকল্পে কর্মরত সকল নির্মাণ শ্রমিককে আমরা নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি এবং আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে অবহিত করি। শ্রমিকদেরকে কাজে মনোসংযোগ বৃদ্ধির জন্য ত্রৈমাসিক ইনডোর গেমস প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করে থাকি।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের গ্রাহককে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এই লক্ষ্যে স্ট্রাকচারাল এবং ফিনিশিং কাজের শুরুতে জমির মালিক ও গ্রাহককে অবহিত করে থাকি যাতে প্রতিটি কাজে সম্পৃক্ততার মধ্য দিয়ে গ্রাহকের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। আমরা প্রকল্পে দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন ব্র্র্যান্ডের উচ্চমান সম্পন্ন মালামাল ব্যবহার করি এবং দক্ষ শ্রমিক নিয়োগের মাধ্যমে কাজের গুণগতমান নিশ্চিত করে থাকি। আমাদের সুদক্ষ প্লামবিং এবং ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার দ্বারাও বিশেষভাবে উক্ত কাজের গুণগতমান নিশ্চিত করা হয়। বিটিআই ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে চার ধরনের প্রোডাক্ট তৈরি করে থাকে। যেমন- প্রিমিয়াম ক্যালেকশন, ক্ল্যাসিক কালেকশন, স্ট্যান্ডার্ড কালেকশন ও কমার্শিয়াল। ঢাকা, কুমিল্লা এবং চট্টগ্রামে আমাদের অনেক প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। আমার সরাসরি তত্ত্বাবধানে দেড়শতাধিক প্রকল্প হসৱানৱর সম্পন্ন করেছি। আমাদের কাছ থেকে ফ্ল্যাট হসৱানৱর গ্রহণ করার পর ক্রেতা বসবাস করতে যেয়ে যদি কোনো সমস্যার সম্মুখীন হন সেক্ষেত্রে আমাদের এই পোস্ট হ্যান্ডওভার সার্ভিস প্রদান করা হয়। পরিবর্তনের কোনো বিকল্প নাই। বিটিআই প্রতিনিয়তই নতুন পণ্য এবং প্রযুক্তি ব্যবহারকে উৎসাহিত করে। এই লক্ষ্যে আমরা সবসময় আমাদের প্রযুক্তিগত ও পদ্ধতিগত বিষয় নিয়ে গবেষণা করে থাকি। এছাড়াও আমাদের আছে নলেজ ক্লাব। যার মাধ্যমে আমরা আমাদের মেধার উপযুক্ত বিকাশ ঘটাতে পারি।