Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

তিনি শিক্ষক তার চেয়ে বেশী বন্ধু

বাংলাদেশ ক্রিকেটের আলোচিত কোচ তিনি। জাতীয় দলে পাঁচ বছর কোচিং করেছেন ফিল্ডিং ও বোলিং-এ। ক্লাব পর্যায়ে একজন সফল কোচ হিসেবে নিজের যোগ্যতা অর্জন করেছেন। মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও সিঙ্গাপুর জাতীয় ক্রিকেট দলের হেড কোচ হিসেবে সাফল্য দেখিয়েছেন। বর্তমানে গাজী গ্রুপের ক্রিকেট ট্যালেন্ট হান্ট পরিচালনা করছেন তিনি। তার চেয়ে তিনি বেশি আলোচিত সাকিব, তামিম, মুশফিক এর মতো তারকা ক্রিকেটারদের নানান সমস্যা নিরসনে ভূমিকা রাখার জন্য। এই আলোচিত ক্রিকেট কোচের নাম মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। সাভারে বিকেএসপি ক্যাম্পাসে বসে ক্রিকেটের বিভিন্ন প্রসঙ্গে তার সঙ্গে কথা হয় আনন্দ আলোর। সেই আলাপচারিতার চুম্বক অংশ পত্রস্থ হলো। লিখেছেন জাকীর হাসান।

আনন্দ আলো: আপনার ক্রিকেটে যুক্ত হওয়ার গল্পটি কেমন?

মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: আমি মূলত একজন ক্রিকেট খেলোয়াড়। এখন অবশ্য খেলার মধ্যে নেই। কোচিং করেই আমার জীবন চলছে। একজন ভালো ক্রিকেট খেলোয়াড় হওয়ার জন্য ১৯৮৭ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হই। ৬ বছর পড়াশোনা শেষ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে মাস্টার্স শেষ করি। পড়াশোনারত অবস্থায় ঢাকা লীগে ওয়ারী ক্লাবের হয়ে ক্রিকেট খেলা শুরু করি। ২ বছর ওয়ারীতে খেলার পর ব্রাদার্স ইউনিয়নে যোগ দেই। পরে খেলার সময় ব্যাক ইনজুরিতে পড়ি। ৩ বছর ধরে ব্যাক ইনজুরি সারানোর জন্য বিকেএসপিতে যেতে হয়েছে। ওই সময় বিকেএসপি আমাকে সহকারী কোচ হওয়ার অফার দেয়। সহকারী কোচ হিসেবে পার্ট টাইম কাজ করার পর এক সময় পারমানেন্ট কোচ হিসেবে চাকরি হয়। ৬ বছর চাকরি করার পর এক সময় বিসিবি আমাকে কোচ হিসেবে কাজ করার অফার দেয়। প্রথমে যোগ দিয়েছিলাম জুনিয়র পেস বোলিং স্পেশাল কোচ হিসেবে। পরে জাতীয় দলের সঙ্গে স্পেশাল ফিল্ডিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পাই। জাতীয় দলের সঙ্গে ফিল্ডিং কোচ হিসেবে সাড়ে পাঁচ বছর ছিলাম। পরে মালয়েশিয়ার একটি ইউনিভার্সিটিতে ক্রিকেট কোচের দায়িত্ব নেই। সেখানে পাঁচ বছর কোচের দায়িত্ব পালন করার পর চলে যাই সিঙ্গাপুরে। এর মধ্যে বিপিএল-এও কোচিং করি। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ক্রিকেট টীম-এর সঙ্গে তিনমাস ছিলাম দু’টি টুর্নামেন্টের জন্য। দু’টি টুর্নামেন্টে সিঙ্গাপুর জয়ী হয়। এক বছর হলো- সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরেছি। এখন গাজী গ্রুপে ডিরেক্টর অব কোচিং হিসেবে চাকরি করছি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ বিপিএল-এ গতবার কুমিল্লা দলের সঙ্গে ছিলাম। এবার চট্টগ্রাম দলের কোচিং করছি।

আনন্দ আলো: আলোচনায় লাইটে এলেন মূলত কবে থেকে?

salahuddin-4মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: আমি আসলে আমার নিজের প্রশংসা, খ্যাতি নিয়ে ভাবি না। তবে নিজের যোগ্যতা প্রমাণের চেষ্টা আমার মধ্যে প্রবল ভাবে ছিল, এখনও আছে। ২০০১ সালে আমি ভিক্টোরিয়ার ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে প্রথম দায়িত্ব পালন করি। পর পর দুই বছর অর্থাৎ ২০০১-২০০২ সালে ঢাকা লীগ চ্যাম্পিয়ন হয় ভিক্টোরিয়া ক্লাব। এরপর একটি  কর্পোরেট লীগও চ্যাম্পিয়ন হয় ভিক্টোরিয়া। পরপর তিনটি শিরোপা জয় করার পর দেশে চলে আসি। বোধকরি এই সাফল্যই আমাকে আলোচনায় নিয়ে আসে।

আনন্দ আলো: আপনি ক্রিকেটের কোন শাখায় কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধকরেন?

মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: ক্রিকেটের সব শাখায় কাজ করতে আমি স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। কারণ এই কাজটি আমি খুব এনজয় করি। খেলোয়াড় হিসেবে ছিলাম পেস বোলার। কোচিং করেছি ফিল্ডিং, স্পিন এবং হেড কোচেরও দায়িত্ব পালন করেছি।

আনন্দ আলো: ক্রিকেট কোচিং-এর পাশাপাশি মনস্তত্ত্ববিদ হিসেবেও কি কাজ করেছেন?

মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: আসলে কোচরা প্রত্যেকেই বড় মনস্তত্ত্ববিদ। এটা রপ্ত করতে হয় না। কোচরা যদি খেলোয়াড়দের না বুঝতে পারে তাহলে মনস্তত্ত্ববিদ ডিগ্রিধারীরা তো খেলোয়াড়দের বুঝতে পারবে না। একজন ক্রিকেটারের মানসিক, শারীরিক ফিটনেস ও মাঠের দুর্বলতা সবার আগে কোচকে বুঝতে হবে। সত্যিকারের কোচের চোখকে এসব ফাঁকি দিতে পারবে না কখনো। তবে আমার কাছে ক্রিকেটারের মনস্তাত্বিক বিষয় মুখ্য নয়। খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করা আসলে কোচের সবচেয়ে বড় কাজ। এ জন্য একজন কোচের পড়াশোনার পাশাপাশি সবদিক নজর রাখা জরুরি। আমি পড়তে ভালোবাসি, বিশেষ করে খেলা বিষয়ক এবং খেলোয়াড়দের আত্মজীবনী। এছাড়া আমি সিনেমা দেখতে খুব ভালোবাসি। প্রচুর সিনেমা দেখি হলিউডের। আমার এই পড়াশোনা ও সিনেমা দেখা লব্ধজ্ঞান কোচিং-এ বেশ কাজে দেয়।

আনন্দ আলো: আইপিএল-এ সাকিব আল হাসান লাগাতার রান ও উইকেট পাচ্ছিলেন না। দেশে এসে আপনার পরামর্শ নিয়ে দুর্দানৱ পারফর্ম করলেন?

মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: আমি তো কোনো ম্যাজিক জানি না। যা দিয়ে একজন ক্রিকেটারের সমস্যা সমাধান করা যায়। তবে আমি বর্তমান জাতীয় দলের প্রতিটি ক্রিকেটারকে চিনি ও জানি। তাদের সম্পর্কে আমার যেমন সব কিছু জানা আছে, তেমনি সখ্যতাও আছে। সেই সম্পর্কের রেশ ধরে ওরা আমার কাছে আসে নিজেদের সমস্যা নিয়ে আলাপ করে। আমি যতদূর পারি সমাধানের পথ খুঁজে দেয়ার চেষ্টা করি।

salahuddin-2সাকিব আল হাসান শুধু আইপিএল নয় মাঝে মধ্যে আমার সঙ্গে দেখা করে। ক্রিকেট নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়। ওর কিছু জানার থাকলে আমাকে বলে। আমি সহজভাবে সেগুলো সমাধানের পরামর্শ দেই। এটা যে শুধু সাকিবের বেলায় ঘটে তা নয়। মুশফিক, তামিম, মাহমুদউল্লাহ এদের সবার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক আছে। ওরা যখন জাতীয় দলে ঢুকে আমিও তখন জাতীয় দলে কোচিং সহকারী হিসেবে ঢুকি। ওরা বিকেএসপি থেকে পড়াশোনা শেষ করেছে। আমিও বিকেএসপির ছাত্র। ওদেরকে ছোটবেলা থেকে চিনি। এছাড়া মোমিনুল, নাসিরকেও কাছ থেকে দেখেছি। এই কারণে ওদের সঙ্গে আমার বোঝাপড়াটা ভালো এবং ওদের মনের অবস্থাও বুঝি এই আর কি। এর মধ্যে ম্যাজিক কিছু নেই। আর সাকিব আমার সঙ্গে কথা বলে এটা ওর মানসিক প্রশানিৱর জন্য হয়তো। কখনো আমিও ওর কাছে ছুটে যাই। আসলে খেলোয়াড়দের মানসিক প্রশানিৱ খুবই জরুরি। মাঠে আত্মবিশ্বাসী কি না সেটা আগে দেখা দরকার। আত্মবিশ্বাসী না হলে ভালো পারফর্ম করা যায় না। আমার সঙ্গে সাকিবের ভালো বোঝাপড়া আছে। আমার সঙ্গে কথা বললে ওর বোধ হয় ভালো লাগে। এজন্যই ছুটে আসে।

আনন্দ আলো: জাতীয় দলের অন্য তারকা খেলোয়াড়দের সঙ্গে আপনার গুরু শিষ্য সম্পর্ক। তারাও কি পরামর্শের জন্য আপনার কাছে ছুটে আসেন?

মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: ঠিক গুরু শিষ্য বলা যাবে না। ওদের সঙ্গে আমার একটা চমৎকার সম্পর্ক আছে। যখন যার যেমন প্রয়োজন আমার কাছে আসে দেখা করে। কিছু বলার থাকলে বলে। এটা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। কোচের কাছে ছাত্ররা আসবে এটাই স্বাভাবিক।
আনন্দ আলো: গত দুই বছরে আমাদের ওয়ানডে ক্রিকেটের উন্নতির মূলে কি?

মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: এর মূলে অনেক কিছুই রয়েছে। আমাদের বোলিং ডিপার্টমেন্ট এখন খুবই শক্তিশালী। আগে থেকে স্পিন বোলিং অনেক ভালো এরপর পেস বোলিং অনেক শক্ত হয়েছে। মাশরাফি, রুবেল, তাসকিন, মোস্তাফিজ, শফিউলদের হাত ধরে আমাদের ক্রিকেট অবকাঠামো আনৱর্জাতিক সর্বোচ্চ মানের। খেলোয়াড়দের কম্বিনেশন, অভিজ্ঞতা ও আত্মবিশ্বাসের কারণে ভালো করা সম্ভব হয়েছে। আমাদের জাতীয় দলের চার খেলোয়াড় সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ এখন অনেক অভিজ্ঞ, পরিপক্ব। তাদের নামের পাশে ওয়ানডে ও টেস্টে ৭/৮ হাজার রান। এরা বিশ্বের নামীদামী খেলোয়াড়দের কাতারে অবস্থান করছে। এই তারকারা দলে থাকলে সেই দল জয়ী না হয়ে যাবে কোথায়? এই তারকারা আগামী দিনে আরো অভিজ্ঞ হবে। আগামী চার পাঁচ বছর এরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলে বড় বড় জয় এনে দেবে বাংলাদেশের মানুষকে।

আনন্দ আলো: আমাদের ক্রিকেট অধিনায়ক মাশরাফি সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কেমন?

মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: মাশরাফি দারুণ অধিনায়কত্ব করছেন। তার অভিজ্ঞতা পরিপক্বতা আগের চেয়ে অনেক ভালো। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ যে সাফল্য দেখাচ্ছে, সেখানে মাশরাফির অবদান অনেক। মাশরাফির পর যেই বাংলাদেশের অধিনায়ক হবে তার খুব একটা অসুবিধা হবে না কারণ একজন অধিনায়ক মাশরাফি সেই জায়গাটা তৈরি করে রেখেছেন। পুরো টিমকে তিনি আগলে রাখার যে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন সেটা ভবিষ্যতে খুব কাজে দেবে।

আনন্দ আলো: ইনজুরি তো মাশরাফিকে ছাড়ছে না?

মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: ইনজুরিতো খেলোয়াড়দের নিত্যসঙ্গী। তবে আগের চেয়ে মাশরাফি ইনজুরি মোকাবিলা এখন কম করছেন। যতটুকু ইনজুরি আছে এটুকু সে কাটিয়ে উঠবে তাড়াতাড়ি। আগামী কয়েক বছর মাশরাফি অধিনায়কত্ব করে যাবেন।

আনন্দ আলো: পেসার মোস্তাফিজের ইংল্যান্ড যাওয়া কি ঠিক ছিল? মোস্তাফিজ থাকলে ইংল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ জেতা যেত এটা কি ঠিক?

মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: খেলোয়াড়দের সীমার মধ্যে বেধে রাখা ঠিক না। ইংল্যান্ডে কয়দিন খেলার পর মোস্তাফিজের অভিজ্ঞতা বেড়েছে। পুরো সিজন খেলতে পারলে অনেক ভালো করতো। অভিজ্ঞা বাড়তো। আর ইনজুরিতে যে কোনো ক্রিকেটার যে কোনো সময় পড়তে পারে। ধরে নিতে হবে এটা খেলার একটা অংশ। আর মোস্তাফিজ থাকলে ইংল্যান্ডের সঙ্গে জেতা যেত এমন ধারণা পোষণ করা ঠিক নয়। বাংলাদেশ এখন সেই দল নয় যে, একজন দু’জন ক্রিকেটারের উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশ অত্যনৱ নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে ছাড়াও তো সিরিজ জিতেছে। তো কেউ দলের জন্য একেবারে অপরিহার্য নয়। তবে মোস্তাফিজ থাকলে ভালো হতো।

আনন্দ আলো: অনূর্ধ্ব ১৯ বা অনূর্ধ্ব ১৬ থেকে কি আগামীতে একজন সাকিব বা একজন মোস্তাফিজের মতো ক্রিকেটার পাব আমরা?

salahuddin-3মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: এমন ক্রিকেটার বলে কয়ে আসে না। আবার হয়তো আগামীতে দেখা যাবে ওদের চেয়ে ভালো ক্রিকেটার পেয়ে গেছি আমরা। যেহেতু আমাদের ক্রিকেট অবকাঠামো ভালো। একটা অবস্থানে আছে। যেমন সাকিব। ও কিন্তু আমাদের একটা পথ দেখিয়ে যাচ্ছে মেধা, মনন, প্রতিভা থাকলে পৃথিবীর এক নম্বর খেলোয়াড় হওয়া যায়। তরুণদের মধ্যে ক্রিকেট নিয়ে আলাদা উচ্ছ্বাস ও আগ্রহ আছে। তাই আগামীতে বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক প্রতিভাধর খেলোয়াড় আসবে এটা আমি আশাবাদী।

আনন্দ আলো: একজন ভালো ক্রিকেটার হতে চাইলে কি করণীয়?

মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: মেধা মনন আর প্রতিভা থাকতে হবে। এবং টেকনিক্যালী অনেক সমৃদ্ধ হতে হবে। সব দিকে কান খোলা রাখতে হবে। ফিজিক্যাল ফিটনেস থাকতে হবে। সব কিছুতে আপডেট থাকতে হবে। এবং নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে। সবকিছুর কম্বিনেশনে একজন ভালো ক্রিকেটার হয়। তবে বর্তমানে বিশ্বে ক্রিকেটারদের ফিজিক্যাল ফিটনেসটাই বড় করে দেখা হচ্ছে। আমাদের দেশের ক্রিকেটাররা এখন ফিজিক্যাল ফিটনেসের ব্যাপারে খুব সচেতন। এখন আর এসব বিষয়ে কাউকে কিছু বলতে হয় না।

আনন্দ আলো: অনেকেই বলেন, বিদেশি কোচদের সঙ্গে কথা বলার ব্যাপারে ক্রিকেটারদের দূরত্ব ছিল বা আছে বিশেষ করে ইংরেজি ভাষা না জানার কারণে। আপনার ব্যাখ্যা কি?

মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: না এটা কোনো বিষয় নয়। ভাষা কোনো বিষয় নয়। কোচ একজন খেলোয়াড়কে দেখেই বুঝতে পারে সে কি বলতে চাচ্ছে। তার কি কি অসুবিধা রয়েছে। ইংরেজি ভাষা না জানার কারণে এ পর্যনৱ কারো কোনো সমস্যা হয়নি। ক্রিকেটের একটাই ভাষা। এই ভাষা সব ক্রিকেটারই বোঝেন।

আনন্দ আলো: আমাদের কোচিং এর মান এখন কেমন?

মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: আমাদের দেশ ক্রিকেটের প্রতিটি শাখায় আনৱর্জাতিক মান অর্জন করেছে। শুধু ক্রিকেট কোচিং-এ আমরা পিছিয়ে আছি বাইরের দেশের বা টেস্ট প্লেইং দেশগুলোর তুলনায়। এখনও আমরা বিদেশিদের উপর নির্ভরশীল। এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠা জরুরি। এখানে আরো একটু যোগ করতে চাই তাহলো কোচিং-এ যারাই আসছে বা আসতে চায় তাদের প্রতি ট্রাস্টের জায়গাটাও নড়বড়ে। জাতীয় দল থেকে শুরু করে সবাই আত্মবিশ্বাস রাখতে পারছে না দেশি কোচদের প্রতি। তবে এবারের বিপিএল-এ এই অচলায়তন অনেকটা ভেঙে গেছে। এবারের বিপিএলের সাত দলের মধ্যে চারটি দলের কোচ বাংলাদেশি। এটা সুখবর। দলগুলোর উচিত দেশের কোচদের প্রতি আত্মবিশ্বাস রাখা। আমি চাইব আগামীতে এই সংখ্যা যেন সাত-এ পৌঁছায়। আমি মনে করি খেলোয়াড়, দল, বোর্ড এবং সাধারণ মানুষের উচিত দেশি কোচদের প্রতি আত্মবিশ্বাস রাখা এবং তাদের নিয়ে কাজ করা। নইলে দেশে প্রতিভাবান কোচ তৈরি হবে না।

আনন্দ আলো: গাজী গ্রুপের ট্যালেন্ট হান্ট-এ কেমন সাড়া পেলেন?

মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন: এই ট্যালেন্ট হান্টে ২৫ হাজার প্রতিযোগী অংশ নেয়। তাদের মধ্য থেকে ১৫ হাজার ছেলে রেজিস্ট্রেশন করে। ২৫ হাজারের মধ্যে ১৫ হাজার রেজিস্ট্রেশন করার কারণ হলো ১০ হাজারের কাগজপত্র, শিক্ষা, ফিটনেস ঠিক ছিল না। এই পনের হাজার ছেলের মধ্য থেকে আশা করছি বেশ কিছু প্রতিভা বের হয়ে আসবে। তবে এই প্রতিভাদের বের করে সঠিক পরিচর্চা করা ও গ্রুমিং করে খেলার জন্য তৈরি করাই হবে প্রধান কাজ। এরই মধ্যে ১৫ হাজার থেকে ৬৮ জনকে সিলেক্ট করা হয়েছে। এই ৬৮ জন থেকে মেধার ভিত্তিতে যাদের সিলেক্ট করা হবে তাদের নিয়ে ফাইনালি গ্রুমিং করা হবে।