Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

সামাজিক সচেতনতা একটি শুভ উদ্যোগ!

একটা সময় আনন্দ আলো সামাজিক সচেতনতা নামে একটি বিভাগ চালু করেছিল। বিভাগটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল পাঠকের কাছে। এই বিভাগে অনেক টিভি, চলচ্চিত্র ও সঙ্গীত তারকার সামাজিক সচেতনতা বিষয়ক কর্মকান্ড গুরুত্ব পেত। নতুন সংখ্যার কাজ শুরুর আগে সম্পাদকীয় মিটিং-এর শুরুতে আনন্দ আলো সম্পাদক বিশিষ্ট নাট্যকার, কথাসাহিত্যিক রেজানুর রহমান সকল রিপোর্টারকে একটি বিষয়েই বারবার তাগাদা দেন- আগামী সংখ্যায় সামাজিক সচেতনা বিভাগে কোনো তারকাকে নিয়ে লেখা চাই। যার যার জায়গা থেকে চেষ্টা করুন।

রিপোর্টাররা প্রাণপণ চেষ্টা করেন কিন্তু সামাজিক সচেতনতা মূলক কাজ করছেন গত কয়েক বছরে এমন তারকা খুঁজে পাওয়া গেছে হাতে গোনা কয়েকজন। এ প্রজন্মের তারকাদের সামাজিক সচেতনতামূলক কাজ করার সময় কোথায়? রাতদিন কাজ করে সময় পার করছেন। শুটিং ডাবিং, বিজ্ঞাপন চিত্রে কাজ, শোরুম উদ্বোধন, বিদেশে কলশো এসবের বাইরে অন্য কাজ করার যে কারো সময় নেই।

তবুও কেউ কেউ সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সে সবের খবরা খবর মিডিয়াতে খুব একটা প্রচার পায় না। এবারের কোরবানি ঈদের একটি ঘটনা পুরো মিডিয়া শুধু আলোড়নই তোলেনি, সবাইকে অবাকও করে দিয়েছে। আর সেই আলোড়িত সংবাদটি হচ্ছে দুস্থ চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য এই জন্মের প্রজন্মের নায়িকা পরীমনি একটি গরু কোরবানী দিয়েছেন। আমরা এই সংবাদটি আনন্দ আলো সামাজিক সচেতনতা বিভাগে স্থান দিতে চাই।

বর্তমান সময়ের চলচ্চিত্র ব্যবসা বান্ধব নয়। কোনো কোনো ছবির পুঁজি ফেরত পাওয়া গেলেও বেশির ভাগ ছবির পুঁজির বড় অংশ লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছে সিনেমা হল দর্শক শূন্য হওয়ায়। তবে তারকা সম্মানী বা পারিশ্রমিক তারকারা ঠিকই বুঝে নিচ্ছেন কড়ায় গণ্ডায়। ছবি চলছে না কিন্তু সম্মানী বা পারিশ্রমিক দিন দিন বাড়ছে। অর্থ, বিত্ত, পতিপত্তি যশ খ্যাতি সবই আছে অধিকাংশ তারকার। প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন তারা প্রতিমাসে। ইচ্ছে করলে এই জনপ্রিয় তারকারা সমাজের অনেক জনহীতকর কাজ করতে পারেন। কিন্তু কেন জানি তারা সেই দিকে পা বাড়ান না।

এ প্রজন্মের জনপ্রিয় তারকা পরীমনি। মাত্র ক’বছরের ক্যারিয়ার তার। এই অল্প সময়ে পরীমনি বোধ ও বুদ্ধিতে এগিয়ে গেছেন অনেক দূর। এবারের ঈদে তার ‘রক্ত’ নামে একটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। ছবিটি মুক্তির আগেই আলোচনার ঝড় তুলেছিলেন ডানাকাটা পরী আইটেম সং-এ। এরপর ঝড় তুললেন সহশিল্পীদের জন্য গরু কোরবানি দিয়ে।

পরীমনি এবারের কোরবানি ঈদে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনে এফডিসিতে কোরবানি দিয়েছিলেন সহশিল্পীদের জন্য। তিনি ঈদের দিন সকালে নিজে এফডিসিতে উপস্থিত থেকে কোরবানি করে অর্ধশতাধিক সহশিল্পীদের মাঝে মাংস বিতরণ করেন। মাংস বিতরণ শেষে বাসায় পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন। পরীমনি এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমি শুধু একজন চলচ্চিত্র নায়িকা নই, আমি মানবিক গুণ সম্পন্ন একজন মানুষ। আমার এই ছোট্ট ক্যারিয়ারে যতটুকু অর্থবিত্ত, যশ, খ্যাতি পেয়েছি তাতে আমি খুশি। এই খুশি আমার সহশিল্পী যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল তাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতেই এই কোরবানির আয়োজন।

কোরবানির মাংস সহশিল্পীদের হাতে দেয়ার পর তাদের মুখে যে হাসি দেখেছি এটাই আমার কাছে পরম পাওয়া। একজন শিল্পী হিসেবে সহশিল্পীর পাশে দাঁড়ানো আমার নৈতিক দায়িত্ব এবং এই দায়িত্ব সবার পালন করা উচিত। আমি মনে করি শিল্পীরা এই ধরনের সামাজিক দায়িত্ব পালন করলে আর্থ- সামাজিক উন্নয়নে পজেটিভ ভূমিকা রাখবে।

পরীমনির কোরবানি দেয়া নিয়ে চলচ্চিত্র অঙ্গনে আলোচনার কমতি নেই। কমবেশি সবাই এটাকে পজেটিভ দৃষ্টি ভঙ্গিতে দেখছেন। এফডিসিতে এই প্রথম দুস্থ শিল্পীদের জন্য কোনো নায়িকা গরু কোরবানি দিলেন। এটা চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের কাছেও প্রশংসা পেয়েছে।