Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

বয়স যখন আঠারো!

আনন্দ আলো প্রতিবেদন

আঠারো বছর বয়সের অনেক মজা। এই বয়সে হঠাৎ করেই অনেক স্বাধীনতা পাওয়া যায়। দৃশ্যমান স্বাধীনতা এক. তরুণ-তরুণীরা জাতীয় নির্বাচনে ভোটের অধিকার পায়। দুই. মেয়েদের ক্ষেত্রে বিবাহ করার স্বীকৃতি মেলে। তবে অদৃশ্যমান স্বাধীনতা অনেক। যেমন- এইতো সেদিন বাবা-মা বলতেন এখানে যেও না, ওখানে যেও না। এটা করো না, ওটা করো না। আঠারোতে পা দিতেই এসে গেল স্বাধীনতা। বাবা ছেলে-মেয়েকে একটু বকাঝকা করলেই মা হয়তো বলে বসেন- ওকে এভাবে বলছ কেন? ছেলে-মেয়ের বয়স হয়েছে কথাটা মনে রেখ। হ্যা এই বয়সটাই গুরুত্বপূর্ণ। বারো/তেরো বছরের কোনো কিশোর অন্যায় করলে অথবা ক্ষতির কারণ হয় এমন কিছু কাজ করলে আমরা সহজ একটা মনোভাব পোষণ করি- বাচ্চা মানুষ। একটা ভুল করে ফেলেছে। এবারের মতো ক্ষমা করে দেয়া যায়। কিন্তু সতের আঠারোয় ভুল করার সুযোগ নেই। একটু ঝামেলা করলেই কটূক্তি শুনতে হয়- তোমার মতো একজন দায়িত্ববান মানুষের কাছে আমরা এটা আশা করতে পারি না। না, তোমাকে মাফ করা যায় না।

rising-star-1 rising-star-3তার মানে আঠারোয় যেমন মজা আছে, তেমনি দায়িত্বের ব্যাপারটাও চলে আসে। ভালো-মন্দ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারিশমা দেখানোতেই এই বয়সের মজা। এটা করতে পারলেই অন্যরা আকৃষ্ট হয়। ভরসা খুঁজে পায়- হ্যাঁ, একে দিয়েই হবে। তার মানে আঠারোর ব্যাপারটা নিশ্চিত হওয়া গেল। আঠারো মানেই নতুন সম্ভাবনার স্বপ্ন, নতুন উদ্দীপনা।

এতক্ষণ একথা বলা হলো মানুষের বেলায়। একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ক্ষেত্রে কি একথা প্রযোজ্য? আঠারো বছর মানুষের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ বয়স সে রকমই কী একটি টেলিভিশনের জন্যও ? এ ব্যাপারে নানা মত থাকতে পারে। তবে একথা সত্য আঠারো বছর বয়স একটি টেলিভিশন চ্যানেলের জন্যও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময়। সব ক্ষেত্রেই শেখার, দেখার এবং বলার একটা বয়স থাকে। কথায় আছে মানুষ দেখে শিখে। পথে হাঁটতেই হাঁটতেই নতুন পথের সন্ধান করে। তারপর একদিন নিজের জন্য পথ বানিয়ে নেয়। টেলিভিশনের ক্ষেত্রে এই পথ কাদের জন্য? সহজ উত্তর- পথটা অগণিত দর্শকের জন্য।

rising-starআনন্দের খবর। দেশের প্রথম ডিজিটাল স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল, লাল সবুজের বাংলাদেশ চ্যানেল আই সাফল্যের আঠারো বছরে পা রেখেছে। আঠারোয় টিভি চ্যানেলটি শ্লোগান নির্ধারণ করেছে ‘আঠারোয় জয়ধ্বনি। এই জয়ধ্বনি কিসের? কোন্‌ সাফল্যের? এর উত্তর অনেক বড় করে দেয়া যায়। চ্যানেল আই একমাত্র চ্যানেল আই-এর কল্যাণে দেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেক শুভ পরিবর্তন এসেছে। সারাদেশে যদি সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে মেধা বিকাশের কথা বলি, মেধাবীদের উত্তরণের কথা বলি সেখানে চ্যানেল আই-এর ভূমিকাই অগ্রগণ্য। সংস্কৃতির প্রতিটি শাখায় চ্যানেল আই-এর বিভিন্ন ইভেন্ট থেকে উঠে আসা মেধাবী তরুণ-তরুণীরাই সাফল্য দেখাচ্ছে। প্রথমে যদি টিভি নাটকের কথা ধরি। দেখব চ্যানেল আই-এর বিভিন্ন ইভেন্ট থেকে উঠে আসা তারকারাই সমান তালে আলো ফেলছে। চলচ্চিত্র সঙ্গীত, নৃত্যসহ সংস্কৃতির অন্যান্য শাখাতেও চ্যানেল  আই-এর বিভিন্ন ইভেন্ট থেকে উঠে আসা তরুণ-তরুণীরাই সাফল্যের পথে হাঁটছে।

লেখার শুরুতে একটা প্রসঙ্গ তুলেছিলাম। আঠারোয় পা রাখলো চ্যানেল আই। সাফল্যের জায়গাগুলো কি কি? অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সাফল্যের অনেক জানালা খুলেছে চ্যানেল আই। সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো- চ্যানেল আই তার নানামুখি ইভেন্টের মাধ্যমে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একঝাঁক তারকা তৈরি করেছে। যারা বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে তো বটেই, দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রতিদিন উজ্জ্বল আলো ফেলছে। প্রতিভার দ্যুতি ছড়াচ্ছে। নাটক, চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, নৃত্যসহ সংস্কৃতির যে শাখাতেই ঢুকবেন সেখানেই পাবেন চ্যানেল আই থেকে উঠে আসা কোনো না কোনো তারকাকে। তার মানে চ্যানেল আই শুধু নিজেদের চ্যানেলের জন্য নয় অন্যদের জন্যও তারকা তৈরির দায়িত্ব পালন করছে।

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে গত ১৭ বছরে চ্যানেল আই-এর বিভিন্ন ইভেন্ট থেকে প্রায় ৩শ মেধাবী তারকা উঠে এসেছে। যারা বর্তমানে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলসহ সংস্কৃতির নানা শাখায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

প্রথমে লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টারের কথাই যদি ধরি তাহলে সাফল্যের জায়গাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। দেশের টিভি নাটক ও সিনেমায় যারা প্রতিনিয়ত প্রতিভার দ্যুতি ছড়াচ্ছেন তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠরাই চ্যানেল আই-এর তারকা। মীম, মম, বাঁধন, মৌসুমী হামিদ, মুনমুন, চৈতি, বিন্দু, শানু, অর্ষা, নিশা, ঈশানা, তাহসিন, নাদিয়া, সামিয়া, সামিহা, প্রসুন আজাদ, জেরিন আহমেদ নীলা, টয়া এবং মেহজাবিনসহ অন্যান্য যারা এখন টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করছেন তারা সবাই চ্যানেল আই-এর তারকা।

সেরা নাচিয়ের শায়লা সাবী, মীম, তুষার, হৃদিসহ অন্যরাও নাটক, সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয় করছেন। ভীট সুন্দরীদের মধ্যে মিথিলা, হাসিন, অঞ্ঝরা, মুন, তাহা, রাখি, চন্ডমনি, জেবা আনিকা আমাদের শোবিজে ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন।

rising-star-2এদিকে চ্যানেল আই ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম তারকাদের মধ্যে সাজ্জাদতো এখন টিভি নাটকের ব্যাপক আলোচিত তারকা। পাশাপাশি আজাদ, অবাক, আলভী, আরিফ, অর্কসহ অনেকে টিভি নাটকে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন।

আর গানের জগতে যারা প্রতিভার দ্যুতি ছড়াচ্ছেন তাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠরাই চ্যানেল আই-এর ক্ষুদে গানরাজ ও সেরাকণ্ঠ থেকে উঠে আসা তারকা। এদের মধ্যে প্রথমেই আসে কোনাল, ইমরান, ঝিলিক ও পড়শীর নাম। তাদের সঙ্গে আমাদের গানের দুনিয়ায় সমানতালে পা ফেলছেন আশিক, মেহেদি, মনির, রাফসান, লুইপা, বিউটি, আলীক লায়লাসহ অনেকে। অতি সম্প্রতি চ্যানেল আইতে আড়ং ডেইরি বাংলার গান নামে একটি ব্যতিক্রমধর্মী সঙ্গীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সঙ্গীতাঙ্গনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে প্রতিযোগিতাটি। প্রথমবারে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শারমিন। প্রথম রানারআপ হয়েছে খায়রুল ইসলাম। দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে যৌথভাবে অংকন ও আল আমীন। বাংলার গানের এই প্রতিযোগিতা থেকে একঝাঁক নতুন সঙ্গীত প্রতিভার আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। যা ভবিষ্যতে আমাদের সঙ্গীতাঙ্গনকে সমৃদ্ধ করবে বলে ধরে নেয়া যায়।

চ্যানেল আই-এর একটি হৃদয় ছোঁয়া শ্লোগান আছে ‘হৃদয়ে বাংলাদেশ। চ্যানেল আই-এর প্রতিটি অনুষ্ঠানেই এই শ্লোগানের মাধুর্য লক্ষণীয়। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়েই এগিয়ে চলেছে চ্যানেল আই। আঠোরোর যাত্রাপথে একটি ছোট্ট পরামর্শ দিতে চাই। নতুন বছরে বিভিন্ন ইভেন্টের আওতায় নিশ্চয়ই আরো কিছু নতুন তারকার জন্ম হবে। তারাও ছড়িয়ে যাবে সংস্কৃতির নানা অঙ্গনে। নাটক, সিনেমা, সঙ্গীত ও নৃত্যে প্রতিভার দ্যুতি ফেলবে। এই যে সারাদেশে এত তারকার জন্ম দিচ্ছে চ্যানেল আই তাদেরকে নিয়ে বছরে একবার মহাসম্মেলনওতো হতে পারে।

জয়তু চ্যানেল আই।