Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

গান এখন ভালো চলছে-ন্যান্‌সি

দেশের জনপ্রিয় সঙ্গীত তারকা নাজমুন মুনিরা ন্যান্‌সি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে ধারাবাহিকভাবে অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন তিনি। স্টেজ, অ্যালবাম, চলচ্চিত্রসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। গেল ঈদেও তার বেশ কিছু নতুন গান প্রকাশিত হয়েছে এবং প্রশংসিত হয়েছে শ্রোতামহলে। নিজের সফলতার ধারাবাহিকতা তিনি এর মাধ্যমে অব্যাহত রেখেছেন। ঈদের গান নিয়ে আবারও ব্যসৱ হয়ে উঠেছেন ন্যান্‌সি। সম্প্রতিক সময়ে তার ব্যসৱতা এবং সঙ্গীতের নানা বিষয় নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। লিখেছেন মোহাম্মদ তারেক

আনন্দ আলো: বর্তমানে আপনার ব্যসৱতা কী নিয়ে?

ন্যান্‌সি: বর্তমানে ব্যসৱতা শুধু রেকডিং নিয়ে। এখন শোর অবস্থা যতটা খারাপ আবার বিপরীতে অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা ততটাই ভালো। অনেক গান হচ্ছে। কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করছে। গেল ঈদে তো অনেক প্রকাশ হয়েছে। আমিও বেশ কিছু গান করেছি। এখনও নতুন গান নিয়েই ব্যসৱতা যাচ্ছে।

আনন্দ আলো: সম্প্রতি কি কি কাজ করলেন?

ন্যান্‌সি: কোরবানি ঈদের জন্য আমি প্রস্তুত। শফিক তুহিন ভাইয়ের সুরে গান করেছি দুটি। এ অ্যালবামে আরো গান গাইছেন কনা, ইমরান ও তুহিন তাই। এছাড়াও আহমেদ রিজভী ভাইয়ের কথায় কোরবানি ঈদে সাউন্ডটেকের ব্যানারে একটি দ্বেত গানের অ্যালবাম আসার কথা রয়েছে আমার। একই ব্যানারে প্রদীপ সাহার কথায়ও একটি গান করেছি। এছাড়া সিডি চয়েজের ব্যানারে দ্বৈত অ্যালবামের কাজ শেষ করেছি।

আনন্দ আলো: হঠাৎ দ্বৈত অ্যালবাম করার ভাবনা এলো কী করে?

ন্যান্‌সি: বিভিন্ন অ্যালবামে অন্য শিল্পীদের সঙ্গে হর হামেশাই আমার দ্বৈত গান গাওয়া হয়। নিজের একক অ্যালবামেও অন্যদের সঙ্গে গান গেয়েছি। হঠাৎ মাথায় চিনৱা এলো একটি দ্বৈত গানের অ্যালবাম প্রকাশ করলে মন্দ হয় না। কথা অনুযায়ী কাজ শুরু।

আনন্দ আলো: ‘ন্যান্‌সি উইথ ষ্টার’ অ্যালবামটি সম্পর্কে কিছু বলুন?

ন্যান্‌সি: এই অ্যালবামটিতে গান থাকছে মোট পাঁচটি। গান গুলোতে আমার সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠ দিয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ, বাপ্পা মজুমদার, মিনার ও ইমরান। আর একটি গান এখনো শেষ করতে পারেনি। সব গানের কথা লিখেছেন স্নেহাশীষ ঘোষ। সুর ও সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন ইমরান। অ্যালবামের সুবাধে এবারই প্রথম মিনারের সঙ্গে গান গাইলাম। দীর্ঘদিন পর বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গেও গাইলাম। বাপ্পা দা একজন গুণী কণ্ঠ শিল্পী। আমার অ্যালবামে তার কণ্ঠ নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই গানটি নিয়ে আমি খুবই আশাবাদী। অ্যালবামের কিছু গান শ্রোতাদের মনে দাগ কাটবে বলেই আমার বিশ্বাস।

আনন্দ আলো: এ অ্যালবামের বিশেষত্ব কী?

ন্যান্‌সি: ‘ন্যান্‌সি উইথ স্টার’ অ্যালবামের গানগুলো সব প্রেমের। সব গানের পেছনে সুন্দর একটি গল্প আছে। আশা করি গানগুলো শ্রোতাদের তা ভালো লাগবে।

আনন্দ আলো: অ্যালবামটি নিয়ে আপনি কতটুকু আশাবাদী?

ন্যান্‌সি: এটি আমার প্রথম দ্বৈত অ্যালবাম। সে হিসেবে এটি নিয়ে প্রত্যাশাও রয়েছে বেশ। সিনিয়র থেকে শুরু করে চলতি প্রজন্মের শিল্পীরা অ্যালবামে আমার সঙ্গে গেয়েছেন। ইমরান অনেক ভালো কিছু গান তৈরি করেছেন। সব মিলিয়ে আমি অ্যালবামটি নিয়ে বেশ আশাবাদী। আর এ কারণেই তাড়াহুড়া করতে চাইনি। সেটা করলে হয়তো অ্যালবাম প্রকাশ করতে পারতাম। কিন্তু মানটা পুরোপুরি ধরে রাখা যেত না।

আনন্দ আলো: অ্যালবামটি কবে নাগাদ প্রকাশ করবেন?

ন্যান্‌সি: কোরবানি ঈদের আগেই দ্বৈত অ্যালবামটি প্রকাশ করবো বলে ঠিক করেছি। এটি প্রকাশ হবে সিডি চয়েসের ব্যানারে। এছাড়াও কোরবানি ঈদের জন্য বেশ কিছু অ্যালবাম করেছি। আশা করছি ভালো কিছু গান শ্রোতাদের উপহার দিতে পারবো।

আনন্দ আলো: শুনলাম ফোক গানের  অ্যালবামও করছেন?

ন্যান্‌সি: হ্যাঁ। গানচিলের ব্যানারে প্রকাশিত একটি মিক্সড অ্যালবামে ফোক গান গাওয়ার কথা ছিল। তবে ব্যসৱতার কারণে তা আর হয়নি। এরপরই সিদ্ধানৱ নেই একটি ফোক গানের একক অ্যালবাম বের করবো। এ লক্ষ্যে কাজও শুরু করেছি। আশা করি খুব শিগগিরই ফোক গানের অ্যালবামটি প্রকাশ হবে।

আনন্দ আলো: নতুন কোনো মিউজিক ভিডিও?

Nancy-1ন্যান্‌সি: আমার প্রথম একক অ্যালবামের একটি গান মিউজিক ভিডিও আকারে প্রকাশ করা হচ্ছে। এর শিরোনাম হলো- ‘তুমি ভালোবাসবে বলে’। মিউজিক ভিডিওটি নির্মাণ করছেন চন্দন। কিছুদিনের মধ্যে এটি প্রকাশ করবে সাউন্ডটেক।

আনন্দ আলো: আপনার গানের মিউজিক ভিডিওর সংখ্যা কম কেন?

ন্যান্‌সি: আমার কিন্তু মিউজিক ভিডিওর সংখ্যা একদমই হাতে গোনা। নিজের উদ্যোগে তেমন ভিডিও করিনি আমি। তবে আমি আমার কথায় এখনও অনড়। একটি গানের অডিও ভালো হতে হবে আগে। কারণ গান শোনার বিষয়। শুনতে ভালো লাগলে তবেই সেটার ভিডিও করা যেতে পারে। আর আমি ব্যয়বহুল মিউজিক ভিডিওতে বিশ্বাসী নই। এখন অনেক মিউজিক ভিডিওতে দেখা যায় উগ্র মডেল ব্যবহার করা হয়। মিউজিক ভিডিওর সঙ্গে এটা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আমি খুব সিম্পলের মধ্যে ভিডিও করতে চাই।

আনন্দ আলো: চলচ্চিত্রের গানের কী খবর?

ন্যান্‌সি: ঈদের আগে ‘হৃদয় ছোঁয়া ভালোবাসা’ চলচ্চিত্রের একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছিলাম, গানটিতে আমার সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন ইমরান। ঈদের পর একই ছবিতে আরও একটি দ্বৈত গান করেছি। এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি ছবিতে প্লেব্যাক করার কথা রয়েছে।

আনন্দ আলো: আপনি নিয়মিত নতুন গানে কণ্ঠ দিচ্ছেন, কখনও কী আগে থেকে বুঝতে পারেন কোন্‌ গানটি শ্রোতাদের মাঝে সাড়া জাগবে?

ন্যান্‌সি: অনেক গান আছে যে গুলো রেকর্ড করতে গিয়ে মনে হয়েছে গানটি শ্রোতাদের মাঝে সাড়া জাগাবে এবং অনেকদিন বেঁচে থাকবে। প্রথমেই বলব ‘দ্বিধা’ গানটির কথা। মারজুক রাসেলের লেখা এবং হাবিবের সুর ও সঙ্গীতায়োজন আমাকে মুগ্ধ করেছিল। অনুমান করেছিলাম এটি হবে আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম একটি গান। একই ভাবে আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা ছবির ‘পৃথিবীর যত সুখ’, সুইট হার্ট ছবির ‘ভালোবাসাই হলো না’ থেকে শুরু করে আনন্দের গান-১ মিক্সড অ্যালবামের ‘চাঁদের আলোয় মুখটা তোমার’ গানটি নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলাম।

আনন্দ আলো: আজকাল নতুনদের সঙ্গে বেশি কাজ করছেন। এ ব্যাপারে কিছু বলুন?

ন্যান্‌সি: গীতিকার-সুরকার কিংবা সঙ্গীত পরিচালক নবীন বা প্রবীণ তা নিয়ে খুব বেশি ভাবি না। যে গান গাইব, তার কথা ও সুর শ্রোতাদের ভালো লাগবে কী না সেটা আগে ভাবি। এ জন্য জনপ্রিয়দের পাশাপাশি তরুণদের সঙ্গেও কাজ করতে ভালো লাগে।

আনন্দ আলো: অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন  মনে হচ্ছে?

ন্যান্‌সি: অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা এখন ভালোর দিকেই যাচ্ছে। কারণ সব কোম্পানি বিনিয়োগ করছে। ভালো ভালো গান তৈরি হচ্ছে। ভালো গানগুলোই শ্রোতারা গ্রহণ করছেন। আসলে সিডি এখন না চললেও গান কিন্তু ভালো চলছে।

প্রযুক্তির কারণে গান শোনা অনেক সহজ হয়ে গেছে। আমরাও সেই সহজলভ্যতার বিষয়টি গ্রহণ করেছি। এভাবেই এখন কাজ হচ্ছে, হবে। মানুষ এখন মোবাইল ও ইউটিউবেই গান বেশি শোনে। বিষয়টিকে আমি ইতিবাচক মনে করি। সব কোম্পানিই ভালো করছে। তবে আমি গানচিলের একটি উদ্যোগকে এপ্রিসিয়েট করি। তারা শিল্পীকে এককালীন অর্থ প্রদানের পাশাপাশি রয়্যালিটির একটা অংশ দিচ্ছেন। আমি গত কয়েক মাস ধরে আমি ছুঁয়ে দিলেই গানটির জন্য প্রতি মাসে রয়্যালিটি পাচ্ছি। এটা খুবই ভালো একটা উদ্যোগ। এটা যদি সব অডিও কোম্পানি করতো তাহলে খুব ভালো হত।

আনন্দ আলো: আপনি গান গেয়ে মানুষকে বিনোদিত করেন। আপনার বিনোদন কী?

ন্যান্‌সি: আমি গান করতে বেশি পছন্দ করি। এটা আমার বিনোদন।