Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

আমি এক গানওয়ালা – মেহেদী হাসান

মোহাম্মদ তারেক:  সঙ্গীত প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে আমাদের সঙ্গীত জগতে যারা উঠে এসেছেন তাদের সঙ্গীত ক্যারিয়ার নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেন। অবশ্য তার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। প্রতিভার ঝলক দেখিয়ে এরই মধ্যে কেউ কেউ হারিয়ে গেছেন। আবার অনেকেই আছেন যারা একটু একটু করে বেশ ভালোই এগিয়ে যাচ্ছেন। মেহেদী হাসান তেমনই একজন। ২০১০ সালে চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছিলেন। সেটিকেই জীবনের অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট মনে করেন মেহেদী। ইতিমধ্যে প্লেব্যাক, অডিও অ্যালবাম, মিউজিক ভিডিও এবং স্টেজ প্রোগ্রামে নিজের যোগ্যতা মেলে ধরেছেন তিনি। সঙ্গীতের প্রতিটি মাধ্যমেই সমান তালে এগিয়ে চলেছেন সেরাকণ্ঠের এই আলোচিত শিল্পী। ধীরে ধীরে তার পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে। ২০১৪ সালে ‘এক পৃথিবী’ মিক্সড অ্যালবামে মাহিয়া কেন কাছে আসনা গানটি দিয়ে সঙ্গীতানুরাগীদের নজরে আসেন মেহেদী। এরপর বেশ কয়েকটি মিক্সড অ্যালবামে কণ্ঠ দিয়েছেন। তবে তার স্বপ্ন ছিল সলো অ্যালবামকে ঘিরে। সেই স্বপ্নটাই সত্যি হয়েছে। সম্প্রতি গানচিল প্রকাশনীর ব্যানারে প্রকাশিত হয়েছে সেরাকণ্ঠ খ্যাত মেহেদী হাসানের প্রথম একক অ্যালবাম ‘আয় না ফিরে’। এ উপলক্ষে ১০ই মে চ্যানেল আই ভবনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সঙ্গীতজ্ঞ আজাদ রহমান, খালিদ হোসেন, শেখ সাদী খান, শাহিন সামাদ, ফেরদৌস আরা, সাদী মহম্মদ, বাসু দেব, ভাস্কর রাসা, ইবরার টিপু, ইমন সাহা, অনিমা রায়, অভিনেত্রী কংকন, শিরীন বকুল ও সেরা কণ্ঠের শিল্পীরা।  ‘আয় না ফিরে’ অ্যালবামে গান রয়েছে মোট ৮টি। গান গুলো হলোÐ ‘গানওয়ালা’, ‘আয় না ফিরে’, ‘ভালোবাসা’, ‘দু চোখের খামে’, ‘অবহেলা’, ‘নীল আকাশ’, ‘না বলা কবিতা’ এবং ‘তুমি ছাড়া আমি একা’। গানের কথা লিখেছেন আমীরুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম জীবন, ওমর ফারুক, আব্দুর জাহের রুবেল, অন্তরা, এইন এম রিপন। সুর করেছেন সাজেদুর সাহেদ ও মেহেদী হাসান। প্রথম একক অ্যালবাম প্রকাশ পাওয়ার পর শ্রোতাদের কাছ থেকে অনেক সাড়া পাচ্ছেন মেহেদী হাসান। একক অ্যালবাম প্রসঙ্গে মেহেদী জানান, জীবনের প্রথম সলো অ্যালবামটি নিয়ে এতো সাড়াপাব কখনো ভাবিনি। সবার পজেটিভ রেসপন্স দেখে আমি খুবই আনন্দিত। বেশ যতœ নিয়ে অ্যালবামের গান গুলো করেছি। প্রতিটি গানের মধ্যে ভিন্নতা আছে। এই বছরে শেখার পাল­াটা যেমন ভারি হয়েছে ঠিক তেমনি ভারি হয়েছে অভিজ্ঞতার পাল­াও। এই জন্য আমি কৃতজ্ঞ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল স্যার, ইমন সাহা, বাপ্পা মজুমদার সহ যাদের সাথে আমার কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে সবার কাছে। তাদের সাথে কাজ করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছি, নিজের ভুলত্র“টি গুলো জানতে পেরেছি। গুরুজনদের আশীর্বাদ নিয়েই আগামী দিন গুলোতে এগিয়ে যেতে চাই। এরই মধ্যে ‘আয় না ফিরে’ অ্যালবামের ‘আমি এক গানওয়ালা মেহেদী হাসান’, ‘অবহেলা’ ও ‘আয় না ফিরে’ গান গুলো শ্রোতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।  রাজশাহী শহরে বেড়ে উঠেছেন মেহেদী হাসান। এখন বসবাস করছেন ঢাকায়। ৯ বছর বয়স থেকে হারমোনিয়াম দিয়ে গান শেখা শুরু তার। মেহেদীর গানে হাতে খড়ি শিশু একাডেমি এবং শিল্পকলা একাডেমী থেকে। ওস্তাদ রবিউল হোসেনের কাছে ছয় বছর ক্লাসিক্যালের উপর তালিম নেন। এরপর রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমির গানের শিক্ষক আব্দুর রশীদের কাছে তালিম নেন ফোক ও আধুনিক গানের উপর। রবীন্দ্রসঙ্গীতের ওপর তালিম নেন ওস্তাদ মধুসূদন দত্তের কাছে। সেই দশ-বারো বছর বয়স থেকেই যার প্রাপ্তির ঝুলিতে রয়েছে আন্তঃস্কুল, বিভাগীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে গানের অসংখ্য পুরস্কার। জীবনে প্রথম প্লেব্যাক করেন ২০১৪ সালে। ছবির নাম ‘মানে না মন মানে না’। এ ছবির টাইটেল গানটিতে সেরাকণ্ঠের আরেক শিল্পী লুইপার সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠ দেন তিনি। গানটির কথা ও সুর করেছেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। ইমন সাহার সঙ্গীত পরিচালনায় আরও একটি প্লেব্যাক করার সুযোগ হয় তার। সম্প্রতি ওয়াহিদুজ্জামান ডায়মন্ড পরিচালিত ছবিতে ‘কতটা আড়াল হলে’ শিরোনামের গানটিতে একক ভাবে কণ্ঠ দিয়েছেন মেহেদী। গানটির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন বাসুদেব ঘোষ। এছাড়াও বেশ কয়েকটি ছবিতে প্লেব্যাক করার কথা চলছে বলে জানান মেহেদী। বর্তমানে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সাথে মিউজিক বিষয়ে কাজ করছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সঙ্গীত বিষয়ক অনুষ্ঠান এবং স্টেজে পারফর্ম করে যাচ্ছেন নিয়মিত।  বতর্মানে মেহেদী চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ও ক্ষুদে গান রাজের নতুনদের নিয়ে ঈদের জন্য একটি মিউজিক ভিডিওর কাজ নিয়েও ব্যস্ত রয়েছেন। ভিডিওটি রোজার ঈদে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে প্রচার হবে।  অডিও চলচ্চিত্র ও স্টেজ আপনি কোন মাধ্যমে গান গাইতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন? প্রশ্নের উত্তরে মেহেদী বলেন, অডিও মাধ্যমে সুবিধা হলো এখানে নিজের ইচ্ছে মতো গান করা যায়। আবার চলচ্চিত্রের গান অনেক দিন বেঁচে থাকে। স্টেজে গান গাওয়ার মধ্যে রয়েছে অন্য রকম এক আনন্দ। স্টেজ থেকে সরাসরি দর্শকের উচ্ছ¦াস দেখার মজাই আলাদা।  ভবিষ্যতে ভালো কিছু গান করার ইচ্ছা মেহেদীর।