Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

গানবাজনা

এক নির্ঝরের গান

সম্প্রতি কলকাতায় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস (আইসিসিআর) মিলনায়তনে ‘এক নির্ঝরের গান’ অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গানশালা কলকাতা ও সারেগামা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী হৈমনত্মী শুক্লা, দেবজ্যোতি মিশ্র, জয় সরকার, অনিন্দিতা কাজী, প্রমিতা মল্লিক, সারেগামার এসএফ করিম প্রমুখ। ‘এক নির্ঝরের গান’ অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন ছাড়াও অন্যতম আকর্ষণ ছিল দুই বাংলার শিল্পীদের গান। এই আয়োজনে গান গেয়েছেন ঢাকার সঙ্গীত শিল্পী সভ্যতা, লিমন ও মুন। আর কলকাতার কিঞ্জল, অঙ্কন, সুদীপ্ত, জয়, প্রিয়ংবদা ও সৌমদত্তা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অনিন্দিতা কাজী। ‘এক নির্ঝরের গান’ আয়োজনের প্রথম অ্যালবাম ঢাকায় বেরিয়েছে গত বছরের ১২ জুন।

ভালো গান হচ্ছে তবে সংখ্যায় কম

জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী ফাহমিদা নবী। বর্তমানে অডিও অ্যালবাম, প্লে ব্যাক, ও ষ্টেজ শো নিয়ে ব্যসত্ম সময় পার করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তার ব্যসত্মতার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো আনন্দ আলোর পাঠকদের জন্য

আনন্দ আলো: আপনার নতুন অ্যালবামের কী খবর?

Fahmida-Nobiফাহমিদা নবী: নতুন বেশ কয়েকটি মিশ্র অ্যালবামের জন্য গান করেছি। এ প্রজন্মের মেধাবীদের সঙ্গে কাজ করতে আমার ভালোলাগে। সেই ভালো লাগা থেকেই গানগুলো করা। এর বাইরেও আমার একটি গান প্রকাশ হয়েছে ভিডিও সহ। একটি গানই অ্যালবাম আকারে প্রকাশিত হয়েছে। গানের শিরোনাম ‘মেঘলা মন’। কথা লিখেছেন ড. আতিউর রহমান। সুর করছেন রাজন সাহা। সিডি চয়েস থেকে অ্যালবামটি বের হয়েছে।

আনন্দ আলো: প্লে ব্যাকের কী খবর?

ফাহমিদা নবী: চলচ্চিত্রে আমি যে গানগুলো করেছি, সেগুলো গ্রহণ করেছে শ্রোতারা। তাই খুব বেছে বেছে কাজ করি প্লেব্যাকে। দীর্ঘদিন পর নতুন একটি ছবিতে প্লেব্যাক করেছি। অনন্য মামুন পরিচালিত ‘অসিত্মত্ব’ ছবির জন্য ‘মা’ কে নিয়ে একটি গান গেয়েছি। গানটির কথা লিখেছেন কবির বকুল। সুর-সঙ্গীতায়োজন করেছেন ইবরার টিপু। সিনেমায় গান গাইতে সব সময়ই ভালো লাগে। গানটি অসাধারণ লিখেছেন কবির বকুল।

আনন্দ আলো: এ সময়ে কেমন গান হচ্ছে? তরুণদের মধ্যে কতটুকু মেধা ও যোগ্যতা দেখতে পান?

ফাহমিদা নবী: ভালো খারাপ নিয়েই গান হচ্ছে। তবে খারাপটা কিন্তু বেশিদিন টিকতে পারবে না। আর তরুণরা আমার মনে হয় অনেক ভালো কাজ করছে। অনেকের মাঝে মেধা ও যোগ্যতা রয়েছে। তবে আরও সচেতন হতে হবে গান সম্পর্কে। নিজের যোগ্যতাটাকে মেলে ধরতে না পারলে তো আর হলো না। তাই অবশ্যই গানের কথা, সুর ও সঙ্গীতায়োজনের ক্ষেত্রে মানের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। আর শেখার ব্যাপারটায় গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি চর্চা চালিয়ে যেতে হবে সবসময়। চর্চার ওপরে আমার মনে হয় কোনোকিছু নেই। এখন ভালো গান হচ্ছে, কিন্তু সেটা সংখ্যায় কম। তবে যেদিন সংখ্যায় ভালো গান বেশি হবে সেদিনই বুঝবো যে সুদিন ফিরেছে।

ফেরদৌস আরার নজরুল সঙ্গীত সমগ্র ষষ্ঠ খণ্ড

সম্প্রতি ইমপ্রেস অডিও ভিশনের ব্যানারে প্রকাশিত হয়েছে বিশিষ্ট নজরুল সঙ্গীত শিল্পী ফেরদৌস আরার নজরুল সঙ্গীত সমগ্র এর ষষ্ঠ খণ্ড। ইমপ্রেস অডিও ভিশন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গীতের সমগ্র ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশনার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে নজরুল সঙ্গীত সমগ্র এর প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে একই প্রতিষ্ঠান থেকে। নজরুল সঙ্গীত সমগ্র এর ষষ্ঠ খণ্ডের এই অডিও সিডিতে রয়েছে নজরুলের ১২টি গান। গানগুলো হলো- ‘টলমল টলমল পদভরে’, ‘নূপুর মধুর রুনুঝুনু বোলে’, ‘উতল হল শানত্ম আকাশ তোমার কলগীতে’, ‘সঙ্ঘ শরণতীর্থ যাত্রা ভরা জল গো তোমার’, ‘শঙ্কাশূন্য লক্ষ কণ্ঠে বাজিছে শঙ্খ ঐ’, ‘ওগো পূজার নালায় আছে আমার’, ‘সাপুড়িয়া রে! বাজাও বাজাও সাপ খেলানোর বাঁশি’, ‘ত্রাণ কর মওলা মদিনার’, ‘ঝড়-ঝঞ্ঝায় ওড়ে নিশান’, ‘সুবল শখা! এই দেখ’,। সঙ্গীত তত্ত্বাবধান করেছেন ইদরিস আলী। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন আহমেদ ফরিদ। নজরুল সঙ্গীত সমগ্র ষষ্ঠ খণ্ডটি নিবেদন করেছে সামিট।

একসঙ্গে মনির খান-ন্যানসি

এবার চলচ্চিত্রের গানে জুটি বেঁধেছেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী মনির খান ও ন্যানসি। নতুন একটি ছবিতে গান গাইলেন তারা। ছবির নাম ‘মরণ নেশা’। এটি পরিচালনা করছেন মিজানুর রহমান শামীম। গেল বছর এ ছবির শুটিং শুরু হয়েছিল। এ ছবিতে অভিনয় করছেন চিত্রনায়ক রুবেল সহ অনেকে। এরই মধ্যে ছবিটির পাঁচটি  গানের মধ্যে তিনটি গানের রেকর্ডিং সম্পন্ন হয়েছে। ছবির চার নম্বর গানটিতে কণ্ঠ দিলেন মনির খান ও ন্যানসি। ‘সারাটি জীবন ধরে, ভালোবেসে যাব আমি তোরে, ও জান আমার জান, ও আমার প্রাণ’- শিরোনামের এ গানটি লিখেছেন আফজাল হোসেন। আর গানটির সঙ্গীতায়োজন করেছেন ইথুন বাবু। এ বিষয়ে মনির খান বলেন, নতুন ছবির গান করেছি। এখানে আমার সহ শিল্পী ন্যানসি। আশা করছি গানটি ভালো লাগবে সবার। ন্যানসি বলেন, চলচ্চিত্রে গাইতে সব সময়ই ভালো লাগে। এবার ‘মরণ নেশা’ ছবিতে গাইলাম। দ্বৈত গানটিতে আমার সঙ্গে কণ্ঠদেন মনির খান। তিনি আমার প্রিয় একজন শিল্পী। আশা করছি ভালো কিছু হবে।

সাউন্ডস অব বাংলাদেশ

বাপ্পা মজুমদার, অর্ণব ও তাহসান এ সময়ের জনপ্রিয় তিন শিল্পী। সম্প্রতি কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তারা। বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে নতুন অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ইয়োনডার। প্রতিষ্ঠানটির থিম সং হিসেবে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন এই তিন শিল্পী। গানটির শিরোনাম সাউন্ড অব বাংলাদেশ। জানা গেছে এতে আরো কণ্ঠ দেবেন পান্থ কানাই, হাবিব ওয়াহিদ, বালাম, কনা, আরমিন মুসা, জুয়েল মোর্শেদ এবং ব্যান্ড চিরকুট। সঙ্গীতয়োজনে আছেন অর্ণব। শিল্পীদের প্রত্যেকেই ইয়োনডারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে প্রতিষ্ঠানটির। এরপরই গানটির ভিডিও প্রচার করা হবে।

 

রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে -বেলাল খান

গত কয়েক বছরে শিল্পী ও সুরকার হিসেবে বেশ কিছু জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন বেলাল খান। চলচ্চিত্র ও অডিও অ্যালবামে নিয়মিত গান করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৪ এর সেরা সুরকার হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে বেলাল খানের নাম। বিষয়টি নিয়ে বেশ খুশ তিনি। জাতীয় পুরস্কার পাবার অনুভূতি এবং গানের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে।

আনন্দ আলো: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৪ এর সেরা সুরকার হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়েছে আপনার। অনুভূতি কেমন?

বেলাল খান: অনুভূতি একদমই অন্যরকম। কারণ শ্রোতাদের ভালোবাসা অনেক আগেই পেয়েছি। এবার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির ঘোষণা এলো। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে। খবরটি শোনার পর থেকে আমি আনন্দ ধরে রাখতে পারছিনা। এ অনুভূতি আসলে বলে প্রকাশ করা যাবে না। মনে পড়ে যাচ্ছে সঙ্গীতে ক্যারিয়ারের শুরুর স্ট্রাগলের সময়টা। তবে আমি অনেক ভাগ্যবানও বটে। কারণ বেশ অল্প সময়ের মধ্যে এত বড় স্বীকৃতি পেলাম। এ জন্য আমার সব ভক্ত, শ্রোতা ও শুভাকাঙক্ষীর প্রতি অনেক ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

আনন্দ আলো: কখনো ভেবেছিলেন কী ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ ছবির নিশিপক্ষী গানটির জন্য পুরস্কার পাবেন?

বেলাল খান: মাসুদ পথিক পরিচালিত ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ ছবিতে দুটি গান করেছিলাম। এর মধ্যে স্টেশন, গানটি আমি নিজে গেয়েছিলাম। আর আমার সুরে মমতাজ আপা গেছিলেন নিশিপক্ষী গানটি। গানগুলো প্রকাশের পর অনেকে বলেছিলেন স্টেশন গানটিতে আমি গায়ক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাবো। নিশিপক্ষী গানটিরও প্রশংসা পেয়েছি অনেক। অবশেষে মমতাজ আপার এ গানটির জন্য সেরা সুরকারের ঘোষণা এলো।

আনন্দ আলো: এখন আপনার লক্ষ্য কী?

বেলাল খান: এ পুরস্কারের ফলে উৎসাহ যেমন বাড়লো, তেমনি দায়িত্ব আরো বেড়ে গেল। সামনে আরও ভালো ভালো কাজ উপহার দিতে চাই। মানের সঙ্গে কখনও আপোষ করতে চাই না।

আনন্দ আলো: বর্তমানে আপনার ব্যসত্মতা কী নিয়ে?

বেলাল খান: বর্তমানে আমি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের কাজ করছি। এর মধ্যে প্রেম রিটার্নস ছবির জন্য দুটো গান করেছি। মাসুদ পথিকের নুতন ছবি মায়ার জন্য গান করেছি। আরো বেশ কিছু ছবির কাজ করছি। এছাড়া গড়পড়তা মিশ্র অ্যালবামে কাজ আর করবো না বলে সিদ্ধানত্ম নিয়েছি। সিঙ্গেল গান প্রকাশ করবো বলে ঠিক করেছি। এর বাইরে একক অ্যালবাম ও চলচ্চিত্রের গানে মনোযোগী হবো।