Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

স্বর্ণ কিশোরী ফাউন্ডেশন এগিয়ে যাবার গল্প!

নীলফামারী থেকে ফিরে রেজানুর রহমান

লাকার অতি সাধারণ একজন মানুষ। চেহারায় বিনীত সারল্য। সবার সঙ্গে ভিড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে আছেন। নীলফামারী স্টেডিয়ামে মানুষের এই ভিড় শুরু হয়েছে সকাল থেকে। ভিড়ের মানুষগুলো, কেউ এসেছে দিনাজপুর থেকে কেউবা লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম থেকে। নীলফামারীর মানুষজন তো আছেনই। অধিকাংশরাই স্কুলের ছাত্রী। সঙ্গে তাদের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা অথবা বাবা-মা।

খাড়া দুপুর। নীলফামারী স্টেডিয়ামে অপেক্ষমান হাজার খানেক মানুষের উৎসুখ দৃষ্টি আকাশের দিকে। এই মাত্র আকাশ কাঁপিয়ে দৃশ্যমান হয়েছে ইমপ্রেস এভিয়েশনের একটি হেলিকপ্টার। তাই দেখে মঞ্চ থেকে দু’জন কিশোরী ঐশী ও আনিকা বিপুল আনন্দ-উল্লাসে ঘোষণা দিয়ে চলেছে- আমাদের পাখি বন্ধুকে আকাশে দেখা যাচ্ছে। ঐতো আমাদের পাখি বন্ধু… আসুন আমরা সকলে হাত তালি দিয়ে আমাদের পাখি বন্ধুকে স্বাগত জানাই…

মঞ্চের ঘোষণা শুনে মানুষটির চোখে-মুখে বিস্ময় খেলা করছিল। পাখি আবার কারও বন্ধু হয় নাকি? কিন্তু পাখিই বা কোথায়? হেলিকপ্টার স্টেডিয়ামের আকাশে চক্কর দিয়ে স্থির হয়ে আছে আকাশে। হেলিকপ্টার থেকে লিফলেট ফেলা হচ্ছে। ছাত্র ও শিক্ষক, অভিভাবকদের মধ্যে আনন্দ উত্তেজনা। লোকটি ভিড় ঠেলে এগিয়ে এসে কয়েকবার আকাশের দিকে তাকাল। পাখি তো খুঁজে পাচ্ছে না। পাশেই দাঁড়ানো একজনকে জিজ্ঞেস করল- পাখি বন্ধুর কথা বলতেছে। কিন্তু পাখি তো দেখতেছি না। বলেন তো পাখি বন্ধুটা কে?

যাকে পাখি বন্ধু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে তিনি একজন অভিভাবক। আকাশে হেলিকপ্টারকে স্থির হয়ে থাকতে দেখে বিস্মিত তিনি। কিন্তু লোকটির কথায় আরও বেশি বিস্ময় ঘিরে ধরলো তাকে। এই লোক বলে কী! ‘পাখি বন্ধু’ কে চিনে না। অবাক হয়েই বলল- পাখি বন্ধু কে চিনেন নাই। ঐতো আকাশে পাখি বন্ধু। বোঝেন নাই? আরে ঐ যে হেলিকপ্টার… পাখির মতো দেখতে না? এক্কেবারে পাখির মতোই তো…

আকাশে হেলিকপ্টারের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে লোকটি বোধকরি স্থির হলো। হ্যাঁ, হেলিকপ্টার তো পাখির মতোই দেখতে। পাখি আকাশে ওড়ে। হেলিকপ্টারও আকাশে ওড়ে। কিন্তু পাখির শরীরে তো বসা যায় না। হেলিকপ্টারে বসা যায়। ঐতো হেলিকপ্টারের ভেতর মানুষ দেখা যাচ্ছে। কী আচানক ব্যাপার।

Shorna-Kishoriহ্যাঁ, কয়েকদিন ধরে নীলফামারী শহরে আচানক ব্যাপারই ঘটছে। ঢাকা শহর থেকে এসেছে একদল মানুষ। তারা কিশোরী মেয়েদের শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে কি সব কথা বার্তা বলছে। কিশোরীর প্রজনন স্বাস্থ্য, বাল্যবিবাহ, যৌন সম্পর্ক, বয়োসন্ধিকাল… এসব কথা কি এভাবে প্রকাশ্যে বলতে আছে…? লোকটি যেন একটু লজ্জা পাচ্ছে।

লোকটিকে অনুসরণ করছিলাম অনেক আগে থেকে। ঢাকা থেকে আকাশ পথে সৈয়দপুরে নেমে নীলফামারী এসেছি স্বর্ণ কিশোরী ফাউন্ডেশনের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। নীলফামারী স্টেডিয়ামে স্বর্ণ কিশোরী ইউনিয়ন কার্যক্রমের  আওতায় রংপুর বিভাগীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। নীলফামারী, লালমনির হাট, কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর অঞ্চলের স্বর্ণ কিশোরীরা এই  কাউন্সিলে অংশ নিবে। কাউন্সিলের কার্যক্রম সরাসরি দেখব এই প্রত্যাশা নিয়ে নীলফামারী এসেছি। স্টেডিয়ামের ভেতর বিরাট মঞ্চের সামনে সকাল ১০টায় কাউন্সিল শুরু হয়েছে। ধাপে ধাপে নানা পর্ব সম্পন্ন করা হচ্ছে। অনুষ্ঠান চলছে। পাশাপাশি অপেক্ষা শুরু হয়েছে একটি হেলিকপ্টারের জন্য। ঢাকা থেকে ঐ হেলিকপ্টারে স্বর্ণ কিশোরী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী ফারজানা ব্রাউনিয়া, শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইনসহ অন্যান্য অতিথি আকাশ পথে উড়ে নীলফামারীর এই অনুষ্ঠানে এসে যোগ দিবেন। জানা গেল হেলিকপ্টার আসবে দুপুরের দিকে। কিছুটা সময় পাওয়া যাবে ভেবে স্টেডিয়ামের বাইরে এসে রাসৱার পাশে একটি ছোট্ট চায়ের দোকানের সামনে রাখা বেঞ্চির উপর বসলাম। জনা তিনেক মানুষ চা খাচ্ছে। একজন উদাস মনে বসে আছে। ভাবলাম তার সঙ্গে একটু কথা বলব। সালাম দিয়ে তাকে প্রশ্ন করলাম- চাচা আপনার বাড়ি কি এই এলাকায়?

লোকটি মাথা নেড়ে বলল- হ্যাঁ।

আপনি কি এই অনুষ্ঠানে এসেছেন? উত্তরে মাথা নেড়ে বলল- না। আমি এই অনুষ্ঠানের কেউ না। শুনছি আকাশ থেকে হেলিকপ্টার নামবে। দেখতে আসছি।

আজ এই স্টেডিয়ামে কি হচ্ছে আপনি জানেন? আমার প্রশ্ন শুনে লোকটি একটু যেন বিব্রত হলো। বলল- শুনছি মেয়েদের শরীর, স্বাস্থ্য নিয়া আলাপ আলোচনা হবে। একথা বলেই আমাকে পাল্টা প্রশ্ন করল- আপনি কি এই অনুষ্ঠানের লোক?

উত্তরে বললাম- হ্যাঁ।

লোকটি আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল- আপনাকে একটা প্রশ্ন করবো?

করেন।

লোকটি এবার একটু ইতস্তত ভঙ্গিতে এদিক ওদিক দেখে নিয়ে বলল- মেয়েদের শরীর স্বাস্থ্য নিয়া এইভাবে প্রকাশ্যে আলাপ-আলোচনা করা কি ঠিক?

তাকে পাল্টা প্রশ্ন করলাম- কেন ঠিক নয়? আপনি এইখানে খারাপের কি দেখলেন?

Shorna-Kishori-2লোকটি আমার সঙ্গে তর্ক করতে চেয়েও করল না। হঠাৎ আমাকে কিছু না বলে হন হন করে চলে গেল। দোকানের সামনে বসে চা খাচ্ছি আর ভাবছি- এই লোকের নিশ্চয়ই কিশোরী মেয়ে আছে? আহারে! মেয়েটি কি তার প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানে? সঙ্গে সঙ্গে স্বর্ণ কিশোরী ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ফারজানা ব্রাউনিয়ার কাছ থেকে শোনা একটি করুণ বাস্তব ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। এটি এক দুখী কিশোরীর বাস্তব জীবনের করুণ গল্প। মেয়েটির মাসিক হয়েছে। মাসিকের রক্তশ্রাব প্রটেকশনের জন্য প্রথম দিন পুরনো শাড়ির ছেঁড়া অংশ ব্যবহার করেছে মেয়েটি। বিকেলে শাড়ির সেই অংশটি ধুয়ে বাঁশের বেড়ায় শুকাতে দিয়েছে। বৃষ্টিস্নাত দিনে আবহাওয়া ছিল স্যাঁতস্যাঁতে। সেই কাপড় ভালো করে শুকাওনি। পরের দিন স্কুলে যাবার আগে তড়িঘড়ি মেয়েটি আবার শাড়ির সেই অংশটিই তার গোপন অঙ্গে জড়িয়ে নেয়।

স্কুলের ক্লাসে বসে মেয়েটি বুঝতে পারে তার গোপন অঙ্গে জোক ঢুকেছে। গল গল করে রক্ত ঝরছে তার গোপন অঙ্গ থেকে। আবহাওয়া স্যাঁতস্যাঁতে থাকায় বাশের বেড়ায় শুকাতে দেওয়া শাড়ির সেই ছেঁড়া অংশে জোক আশ্রয় নিয়েছিল। জোক সমেত মেয়েটি শাড়ির ছেঁড়া অংশটি তার গোপন অঙ্গে জড়িয়ে নেয়। তারপর যা হবার তাই হয়েছে। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেই প্রচুর রক্তক্ষরণে মেয়েটি মারা যায়।

ব্রাউনিয়ার কাছ থেকে এই গল্প শোনার পর থেকেই আমি কিশোরীর প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানার এবং এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করার ব্যাপারে তৎপর হই।  আমার মেয়ে বিদেশে পড়াশুনা করে এসেছে। তার নিশ্চয়ই বিষয়গুলো জানার কথা। তবুও তাকে একদিন জিজ্ঞেস করি। তার সহজ সরল উত্তর ছিল-বাবা আমি সবকিছু জানি! প্রতি মাসে একবার ও অসুস্থ হয়। মাসিকের কারণে প্রচণ্ড ব্যাথায় কুকড়ে যায়। ও তখন সবকিছু শেয়ার করে আমার সঙ্গে। মেয়ের জন্য আমি অস্থির হয়ে যাই। মেয়েই তখন বুঝায় বাবা, এত অস্থির হবার কিছু নাই। নারীর ক্ষেত্রে এটা ঘটবেই। তুমি এক কাজ করো আমার জন্য কিছু স্যানেটরি ন্যাপকিন এনে দাও তো…

আমার মেয়ে সব জানে। কিন্তু যে লোকটি চলে গেল তার কিশোরী মেয়ে কি সব জানে? আজকের অনুষ্ঠানে লোকটির উপস্থিত থাকা উচিত ছিল।

হেলিকপ্টার স্টেডিয়ামের মাঠেই নামল। শিক্ষা সচিবকে সঙ্গে নিয়ে ফারজানা ব্রাউনিয়া সহ অন্যান্য অতিথিরা হেলিকপ্টার থেকে নেমে মঞ্চের দিকে এগিয়ে এলেন। একটু আগেই স্বর্ণ কিশোরীদের সামনে স্বর্ণ কিশোরীর থিম সং গেয়ে শুনিয়েছেন এ সময়ের বহুল আলোচিত সঙ্গীত শিল্পী চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ খ্যাত কোনাল। আলোচনা পর্বের শুরুতেই রংপুর রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম  নূর-উন-নবী অনুষ্ঠানে উপস্থিত কিশোরীদের উদ্দেশে বললেন, তোমরা কি জানো আমার বয়স কত? আমার বয়স উনিশ। তোমাদেরকে একটা গল্প বলি। একদিন এক বাবার কাছে তার আদুরে ছোট মেয়ে এসে হাজির। হাফাচ্ছে সে। বাবা আমার একটা সমস্যা হয়েছে। বাবা উৎকণ্ঠা নিয়ে তার কাছে জানতে চাইল- কি সমস্যা? আমাকে খুলে বল। মেয়েটি তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলল- বাবা আমার শরীরে একটা পরিবর্তন এসেছে। আমার গোপন অঙ্গে ব্যথা হচ্ছে। রক্ত ঝরছে…

মেয়ের কথা শুনে বাবা খুশি হয়ে বললেন- মা তোমাকে অভিনন্দন। তুমি যৌবনবতী হতে যাচ্ছে প্রতিমাসে এভাবেই তোমার শরীরে পরিবর্তন আসবে। ভয় পাবার কিছু নাই। এটাই নারীর প্রকৃত সৌন্দর্য!

গল্পটি বলে অধ্যাপক নূর-উন-নবী একটু থামলেন। তারপর সমবেত কিশোরীদের উদ্দেশে বললেন- তোমরা কি শুনতে চাও বাবাটি কে? সেই বাবা হলাম আমি। আমার কাছে আমার মেয়ে এতটাই খোলামেলা। ওর সব গোপন কথাই আমাকে বলে। আমরা খুবই ভালো বন্ধু।

প্রফেসর নূর-উন-নবীর পর মঞ্চে একে একে বক্তৃতা দিলেন এলাকার সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ, নীলফামারীর জেলা প্রশাসক মো: জাকির হোসেন, নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা রংপুর-এর পরিচালক একে এম সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রংপুর-এর পরিচালক ডা: মো: মোজাম্মেল হক ও নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডা. আব্দুর রশীদ।

সব শেষে বক্তৃতা দিবেন স্বর্ণ কিশোরী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী ফারজানা ব্রাউনিয়া।

আমি তখনও ভাবছি সেই লোকটির কথা। তিনি কি অনুষ্ঠানের কাছাকাছি কোথাও আছেন! আহারে লোকটির সঙ্গে যদি আর একবার কথা বলতে পারতাম।

ফারজানা ব্রাউনিয়া বক্তৃতা শুরু করেছেন। তার বক্তৃতায় জানা গেল স্বর্ণ কিশোরী নেটওয়ার্কের যাত্রা শুরু ২০১৩ সালে। ২০১৪ সালে এর বিভাগীয় কার্যক্রম শুরু হয়। জেলা পর্যায়ের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৫ সালে। চলতি বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে দেশের ৪৯১টি উপজেলায় এর কার্যক্রম বিস্তৃত করা হয়েছে। ২০১৭ সালে দেশের ৪৫৫৫টি ইউনিয়ন পরিষদকে এর কার্যক্রমের আওতাভুক্ত করা হবে। কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ে সহজ সরল ভাষায় বক্তব্য রাখলেন ব্রাউনিয়া। অনুষ্ঠানে উপস্থিত কিশোরীদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল তারা নিজেদের সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। বিশেষ করে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সবাই।

অনুষ্ঠান প্রায় শেষের পথে। সেই লোকটির কথা ভাবছিলাম। আর একবার দেখা হলে জানতে চাইতাম তার কি কিশোরী মেয়ে রয়েছে? থাকলে মেয়েটির প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে তাকে কিছু বুঝিয়ে বলতাম।

হঠাৎ লোকটির সঙ্গে দেখা। আগের চেয়ে এবার একটু হাস্যোজ্জ্বল, প্রসন্ন। হাতে ধরা একটি ছোট্ট বই। বইটির কভারে লেখা কিশোরী ও নারীদের ঋতুকালীন স্বাস্থ্যবিধি সহায়িকা। আমাকে বইটি দেখিয়ে বললেন- দেখেন তো এই বইটি আমার মেয়ের কাজে লাগবে কি না? স্বর্ণ কিশোরী ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত বইটি দেখে আমি খুশি হয়ে বললাম- হ্যাঁ, এই বই আপনার মেয়ের কাজে লাগবে। লোকটি বইটির বিশেষ অংশ পড়া শুরু করলেন-

Shorna-Kishori-1নারীর শরীর বিকাশের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলো- মাসিক বা ঋতুস্রাব। কুসংস্কারে আবব্ধ হয়ে এসময় মেয়েদের কষ্ট দেয়া যাবে না। মাসিক চলাকালে তার বিছানা আলাদা করার প্রয়োজন নেই।

মা-বাবার উচিত মাসিক বা ঋতুস্রাব বিষয়ে মেয়েকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করা এবং মাসিক চলাকালে তাকে সহযোগিতা করা।

নারী শরীরের এই স্বাভাবিক বিষয়টি নিয়ে স্কুলের শিক্ষিকাদেরও উচিত যথাযথভাবে আলোচনা করা এবং মানসিক সমর্থন দেয়া।

রোগজীবাণুর অনাকাঙিক্ষত সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবার জন্য মাসিকের সময় কখনই ময়লা ছেঁড়া কাপড় ব্যবহার করা যাবে না।

মাসিকের সময় পরিষ্কার কাপড় অথবা সম্ভব হলে স্যানিটারি ন্যাপকিন/প্যাড ব্যবহার করা উচিত। এটি স্বাস্থ্যসম্মত।

মাসিকের সময় ব্যবহৃত কাপড় নোংরা পানিতে ধুলে রোগজীবাণু সংক্রমণের ভয় থাকে।

রোগজীবাণু সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নিরাপদ পানি, সাবান, প্রয়োজনে ডেটল বা স্যাভলন দিয়ে মাসিকের সময় ব্যবহৃত কাপড় পরিষ্কার করা উচিত।

ছায়াযুক্ত স্থানে বা স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় মাসিকের সময় ব্যবহৃত কাপড় শুকাতে দিলে ছত্রাক বা অন্যান্য জীবাণু সংক্রমণের ভয় থাকে।

রোগজীবাণু সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে রোদ আছে এমন পরিষ্কার জায়গায় মাসিকের সময় ব্যবহৃত কাপড় শুকাতে দেয়া উচিত।

মাসিকের সময় ব্যবহৃত কাপড় শুকানোর পর তা অপরিষ্কার ও অন্ধকার জায়গায় রাখলে পোকা-মাকড় ও রোগজীবাণু সংক্রমণের ভয় থাকে।

রোগজীবাণু সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মাসিকের সময় ব্যবহৃত কাপড় সবসময় পরিষ্কার শুকনো জায়গায় সংরক্ষণ করা উচিত।

মাসিকের সময় শরীর থেকে রক্ত বেরিয়ে যায়, তাই বাড়তি খাবার না দিলে মেয়েরা দুর্বল হয়ে যায়। এসময় মেয়েকে আলাদাভাবে খেতে দিলে সে কষ্ট পেতে পারে।

মায়ের উচিত মাসিকের সময় তার মেয়েকে একটু বাড়তি খাদ্য দেয়া। এটি তার শরীর বিকাশে এবং অপুষ্টিরোধে সহায়তা করে।

মাসিকের সময় ব্যবহৃত কাপড়/প্যাড/স্যানিটারি ন্যাপকিন যেখানে সেখানে ফেললে তা পরিবেশ দূষিত করে। আর ল্যাট্রিনের মধ্যে ফেললে সেই ল্যাট্রিন ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যায়।

পরিবেশ দূষণ এড়াতে নির্দিষ্ট জায়গায় অন্যান্য ময়লা আবর্জনার সঙ্গে মাসিকের সময় ব্যবহৃত কাপড়/প্যাড/স্যানিটারি ন্যাপকিন ফেলা উচিত।

বইপড়া শেষ করে লোকটি বললেন- কথাগুলো তো বেশ কাজের। যাই এক্ষুণি গিয়া মেয়ের হাতে বইটি তুলে দেই। বলেই লোকটি হন হন করে সামনের দিকে হাঁটতে থাকলেন। মনে হলো ঐতো এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি। দৃশ্যটি অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে।