Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

সিনেমার স্বার্থে পারিশ্রমিক কম নিবেন তারকারা

করোনাভাইরাস দুর্যোগের আগে থেকেই বাংলাদেশের সিনেমার অবস্থা শোচনীয় ছিল। দুর্যোগ শুরু হওয়ার আগেই চলচ্চিত্রের সংগঠনগুলো সিনেমার খরচ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। এমনকি নায়ক-নায়িকাদের পারিশ্রমিক কমানোর দাবিও তারা তুলেছিল। তা বাস্তবায়িত হয়নি তখন। মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে বন্ধ রয়েছে সিনেমা হল। ১ জুনের আগ পর্যন্ত বন্ধ ছিল সব ধরনের শ্যুটিংও। সিনেমার নাজেহাল অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার প্রচেষ্টা হিসেবে তারকারা একে একে পারিশ্রমিক কমানোর ঘোষণা দিচ্ছেন।
ঢাকার সিনেমার শীর্ষ নায়ক শাকিব খান তিন ভাগের এক ভাগ পারিশ্রমিক নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। গণমাধ্যমকে শাকিব খান বলেন, ‘করোনার পর অনেক প্রেক্ষাগৃহ খুলবে কি না- তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। ৫০টি সিনেমা হল নিয়েই এগোতে হবে আমাদের। ভালো গল্প, ভালো পরিচালক, ভালো টেকনিশিয়ান আর একজন চলচ্চিত্রপ্রেমী প্রযোজক থাকলে দরকার হয় আগের মতো দিনরাত পরিশ্রম করে শ্যুটিং করব। পারিশ্রমিক নিয়ে এখন ভাবার সময় নয়।’
এদিকে মাহিয়া মাহি, সাইমন সাদিক, বাপ্পি চৌধুরীর মতো অনেক তারকাও পারিশ্রমিক কমানোর কথা জানিয়েছেন।

মাহিয়া মাহি বলেন, ‘করোনার কারণে সবকিছু থমকে গেছে। এমন বিপর্যয় কবে নাগাদ কাটবে তা জানি না। ভবিষ্যতে কী হবে সেটাও বলা যাচ্ছে না। সিনেমা হলের পরিবেশ আবার কবে স্বাভাবিক হবে সেটাও প্রশ্নবিদ্ধ। আর পারিশ্রমিকের বিষয়টি নিয়ে আমি আগে থেকেই ভাবছি। করোনার এই সময়ে আমাদের সবারই উচিত চলচ্চিত্রের পাশে দাঁড়ানো। যে কারণে আমি ৩০ শতাংশ পারিশ্রমিক কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এত দিন আমি একটি সিনেমায় ১০ লাখ টাকা নিয়েছি। এখন থেকে সাত লাখ টাকা নেব। আমাদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব লাইফস্টাইল রয়েছে। সবদিকই মেনটেইন করতে হয়। তবু চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ছাড় দিতে আমি প্রস্তুত।’

সাইমন সাদিক বলেন, ‘করোনার কারণে বিপর্যস্ত চলচ্চিত্র শিল্প। সিনেমা হল কবে খুলবে জানি না। করোনা-পরবর্তী সিনেমাশিল্প হয়তো বিকল্প পথে এগোবে। তবে সিনেমা-নাটক বন্ধ হবে না। আর সব সময় আমি পরিচালক-প্রযোজকদের পাশে ছিলাম। আমি ভালো গল্প ও ভালো প্রজেক্ট পেলে আগেও পারিশ্রমিকের ব্যাপারে ছাড় দিতাম। আর এখন তো করোনা, এই পরিস্থিতিতেও আমি আমার পারিশ্রমিক কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অর্থ বড় বিষয় নয়, মূল বিষয় হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিকে টিকিয়ে রাখতে হবে।’
নায়িকা মৌসুমী বলেন, ‘আমাদের চলচ্চিত্রের এখন যে অবস্থা, অবশ্যই সবার এক হয়ে কাজ করা উচিত। চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে ছাড় দিতে দ্বিধা নেই। তবে ভালো গল্প নিয়ে কাজ করতে হবে। গল্পের চরিত্র আমার পছন্দ হতে হবে। অভিনয়টা আমার শুধু পেশা নয়, এটি আমার নেশাও। মনের তাগিদেই ভালো কাজের অংশ হতে চাই। চলচ্চিত্রকে বাঁচাতে যেকোনো সিদ্ধান্ত হাসিমুখে গ্রহণ করব।’
চিত্রনায়ক ফেরদৌস বলেন, ‘বেশি বেশি টাকা নিয়ে চলচ্চিত্রকে পথে বসিয়ে দেব, এমনটি আমি কখনো করিনি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আমি কম্প্রোমাইজ করেছি শুধু ভালো চলচ্চিত্র উপহার দেওয়ার জন্য। টাকার বিষয়ে আমি কখনোই বিশেষ কোনো দাবি করে বসিনি। ফ্রিতে কাজ করেছি অনেক। চলচ্চিত্রের ক্লান্তিকালে এখন এটা দায়িত্ব, আমি চলচ্চিত্রকর্মী হিসেবে আমার দায়িত্ব অবশ্যই পালন করব।’
চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী বলেন, ‘আমিও তাই মনে করি। এখন চলচ্চিত্র রক্ষার জন্য আমাদের সবারই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। পারিশ্রমিক বিষয় নয়।’